নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহর স্মরণ: বিপর্যস্ত হৃদয়ের প্রশান্তি ও মুক্তির পথ

১৫ ই মে, ২০২৫ সকাল ৮:৩৫

আল্লাহর স্মরণ: বিপর্যস্ত হৃদয়ের প্রশান্তি ও মুক্তির পথ

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, যিনি এই বিশাল মহাবিশ্বের স্রষ্টা, প্রতিপালক ও পরিচালক, তিনি তাঁর ক্ষুদ্র বান্দাদের প্রতি অসীম করুণায় বলেন:

فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ

তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং অকৃতজ্ঞ হয়ো না। — সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫২

এই আয়াতের গভীরতা অপরিসীম। যিনি আকাশ-পৃথিবী, নক্ষত্র-গ্রহ, সমুদ্র-পর্বতের মালিক, তিনি আমাদের মতো তুচ্ছ বান্দাকে স্মরণ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এর চেয়ে বড় মর্যাদা, এর চেয়ে শান্তির উৎস আর কী হতে পারে? আল্লাহর স্মরণ (যিকির) শুধু ইবাদত নয়, এটি হলো বিপর্যস্ত হৃদয়ের প্রশান্তি, দুঃখ-কষ্টের মহৌষধ এবং জীবনের সকল ফিতনা থেকে মুক্তির পথ।

আল্লাহর স্মরণ: হৃদয়ের প্রশান্তির উৎস

মানুষের জীবন দুঃখ-কষ্ট, উদ্বেগ-অশান্তিতে ভরা। রোগ-ব্যাধি, অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক সমস্যা, সমাজের দুর্ব্যবহার—এসব মানুষের হৃদয়কে অস্থির করে তোলে। কিন্তু আল্লাহ তাঁর অসীম দয়ায় বলেন:

أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ

জেনে রাখো, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে। — সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ২৮

এই আয়াত হৃদয়ের জন্য সান্ত্বনার বার্তা। যখন দুনিয়ার সকল দরজা বন্ধ হয়ে যায়, যখন মানুষের মন অশান্তিতে ডুবে যায়, তখন আল্লাহর যিকিরই একমাত্র আশ্রয়। আল্লাহর নাম জপলে, তাঁর কালাম তিলাওয়াত করলে, তাঁর প্রশংসা করলে মনের সকল উদ্বেগ দূর হয়, হৃদয় শান্তিতে ভরে ওঠে। অন্য স্থানে আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا * وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর স্মরণ অধিক পরিমাণে করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর ধর্মীয় স্থাপনা করো। — সূরা আল-আহযাব, আয়াত ৪১-৪২

এই আয়াত মুমিনদের প্রতি যিকিরের পরিমাণ বাড়ানোর নির্দেশ দেয় এবং সকাল-সন্ধ্যার নির্দিষ্ট সময়ে যিকিরের গুরুত্ব তুলে ধরে।

আল্লাহর স্মরণ: মর্যাদা ও নৈকট্যের পথ

আল্লাহর স্মরণ কতটা মর্যাদার, তা হাদিসে স্পষ্ট মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী থেকে জানা যায়। আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি এতটাই কৃপাশীল যে, তিনি বলেন:

وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، إِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ

যখন সে আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সঙ্গে থাকি। সে যদি মনে মনে আমাকে স্মরণ করে, আমিও তাকে মনে মনে স্মরণ করি। আর যদি সে সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, আমি তাকে এমন সমাবেশে স্মরণ করি, যা তার সমাবেশের চেয়ে উৎকৃষ্ট। — সহীহ বুখারি, হাদিস: ৭৪০৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৭৫

এই হাদিস হৃদয়ে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করে। একজন ক্ষুদ্র বান্দা যখন ‘আল্লাহ’ বলে ডাকে, তখন মহাবিশ্বের মালিক তাকে সাড়া দেন, বলেন, “لَبَّيْكَ يَا عَبْدِي”—‘হে আমার বান্দা, আমি হাজির।’ এর চেয়ে বড় মর্যাদা আর কী হতে পারে? আল্লাহ তাঁর গুণগ্রাহী নাম الشَّكُور দ্বারা বান্দার ক্ষুদ্র আমলকেও মূল্যায়ন করেন এবং তাকে নৈকট্য দান করেন। অন্য একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলা বলেন, “আমি আমার বান্দার আমার প্রতি ধারণা অনুযায়ী তার সঙ্গে থাকি, এবং যখন সে আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সঙ্গে থাকি।” — সহীহ বুখারি, হাদিস: ৭৫০৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৭৫

এই হাদিসটি আল্লাহর নৈকট্যের সঙ্গে যিকিরের সম্পর্ক তুলে ধরে।

যিকির: দুঃখ-কষ্টের মহৌষধ

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুঃখ-কষ্ট অনিবার্য। রোগ-ব্যাধি, অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক সমস্যা—এসব মানুষের হৃদয়কে অস্থির করে। কিন্তু আল্লাহর স্মরণ এই অস্থিরতার একমাত্র প্রতিষেধক। হযরত আইয়ূব (আ.) যখন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছিলেন:

رَبِّ اَنِّیۡ مَسَّنِیَ الضُّرُّ وَاَنۡتَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ٠

হে আমার প্রভু! আমাকে কষ্ট স্পর্শ করেছে, আর তুমি তো সবচেয়ে দয়ালু। — সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৮৩

আল্লাহ তাঁর এই দোয়া কবুল করেন এবং তাঁকে আরোগ্য দান করেন। এই আয়াত প্রতিটি মুমিনের জন্য শিক্ষা—দুঃখ-কষ্টে আল্লাহর কাছে ফিরে যাও, তিনি তোমার ডাকে সাড়া দেবেন। আল্লাহ বলেন:

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ

যখন আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলো, আমি তো অতি নিকটে। যে আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দিই। — সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৬

এই আয়াত মুমিনের হৃদয়ে আশার আলো জ্বালায়। আল্লাহ কখনো তাঁর বান্দার ডাক প্রত্যাখ্যান করেন না। তিনি বান্দার দুঃখ-কষ্ট দূর করেন এবং তার হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেন।

কুরআন তিলাওয়াত: যিকিরের শ্রেষ্ঠ রূপ

আল্লাহর স্মরণের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত সর্বশ্রেষ্ঠ। কুরআন হলো হৃদয়ের আরোগ্য, বিশ্বাসের শক্তি এবং ফিতনা থেকে মুক্তির পথ। আল্লাহ বলেন:

يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ

হে মানুষ! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে উপদেশ এসেছে এবং এটি অন্তরের রোগের আরোগ্য। — সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৭

নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত মুমিনের ঈমানকে মজবুত করে, শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে রক্ষা করে এবং হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। যিনি প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করেন—এক পৃষ্ঠা হোক বা এক আয়াত—তিনি কখনো ঈমানের দুর্বলতার শিকার হন না। কিন্তু যিনি কুরআন থেকে দূরে থাকেন, তিনি বিপথগামিতার ঝুঁকিতে পড়েন। আল্লাহ বলেন:

وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَٰذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا

রাসূল বলবেন, হে আমার প্রভু! আমার সম্প্রদায় এই কুরআনকে পরিত্যক্ত করে ফেলে রেখেছিল। — সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৩০

এই আয়াত মুমিনের জন্য সতর্কবাণী। কুরআনের প্রতি উদাসীনতা পরকালে ভয়াবহ পরিণতির কারণ হতে পারে।

যিকিরের রূপ: বৈচিত্র্য ও গুরুত্ব

আল্লাহর স্মরণ শুধু মুখের কথা নয়, এটি জীবনের প্রতিটি কাজে প্রতিফলিত হয়। যিকিরের বিভিন্ন রূপ হলো:

তাসবীহ ও দোয়া: ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’—এই তাসবীহগুলো হৃদয়ে আল্লাহর নৈকট্য আনে। মসনূন দোয়া, যেমন ঘরে প্রবেশের দোয়া, খাওয়ার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা, শেষে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়া—এগুলোও গুরুত্বপূর্ণ যিকির।

নামায: নামায আল্লাহর স্মরণের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। আল্লাহ বলেন:

إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ۖ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ

নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে, আর আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। — সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫

নামাযের প্রতিটি অংশ—সানা, সূরা ফাতিহা, রুকু, সিজদা—আল্লাহর যিকিরে ভরপুর। আল্লাহ বলেন:

قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى * وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى

নিশ্চয়ই সে সফলকাম হয়েছে, যে নিজেকে পবিত্র করেছে এবং তার প্রভুর নাম স্মরণ করেছে, অতঃপর নামায আদায় করেছে। — সূরা আল-আ‘লা, আয়াত ১৪-১৫

এই আয়াতে যিকির ও নামাযকে সফলতার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

আল্লাহর হুকুম পালন: সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির করে কিন্তু তাঁর হুকুম মানে না, সে প্রকৃত যাকির নয়।” [তাফসীরে কুরতুবী, সূরা বাকারা: ১৫২] আল্লাহর হুকুম মানা—হালাল গ্রহণ, হারাম পরিহার, ফরয পালন—সবই যিকির। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ، حُطَّتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি দিনে একশত বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতো বিপুল হয়।” — সহীহ বুখারি, হাদিস: ৬৪০৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৯১

এই হাদিসটি একটি নির্দিষ্ট যিকিরের ফযিলত তুলে ধরেছে।

ফিতনার যুগে যিকির: হেফাযতের ঢাল

আজকের দুনিয়া ফিতনা-ফাসাদে ভরা। ভ্রান্ত আকীদা, বিদআত, নাস্তিকতা, কাদিয়ানি মতবাদ, মিশনারি প্রচার—সবই মুমিনের ঈমানকে ঝুঁকিতে ফেলে। এই ফিতনার মাঝে আল্লাহর যিকিরই হলো হেফাযতের ঢাল। আল্লাহ বলেন:

وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا

যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জন্য রয়েছে সংকীর্ণ জীবন। — সূরা ত্ব-হা, আয়াত: ১২৪

যিনি নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করেন, তাসবীহ পড়েন, নামায আদায় করেন, তিনি ফিতনার হাত থেকে নিরাপদ থাকেন। আল্লাহ তাঁকে সঠিক পথে রাখেন এবং তাঁর কুদরতি হাতে হেফাযত করেন। আল্লাহ বলেন:

فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

যখন নামায সম্পন্ন হয়, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো। আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। — সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত ১০

এই আয়াতে যিকিরকে দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং এটি সফলতার মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا مِنْ قَوْمٍ جَلَسُوا مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ، إِلَّا كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে সমাবেশে লোকেরা বসে আল্লাহর স্মরণ করে না, তা কিয়ামতের দিন তাদের জন্য অনুশোচনার কারণ হবে।” — সুনান আত-তিরমিযী, হাদিস: ৩৩৮০; সহীহ আল-জামি‘, হাদিস: ৫৫৫৪

এই হাদিসটি যিকিরবিহীন সমাবেশের ক্ষতির কথা বলে। অন্য একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ لَزِمَ الِاسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا، وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করে, আল্লাহ তার প্রতিটি সংকট থেকে উত্তরণের পথ করে দেন এবং প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দান করেন।” — সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১৫১৮; সহীহ আল-জামি‘, হাদিস: ৬৩১৬

ইস্তিগফার একটি গুরুত্বপূর্ণ যিকির, যা শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

উপসংহার: আল্লাহর বান্দা হওয়ার সংকল্প

আল্লাহর স্মরণ শুধু হৃদয়ের প্রশান্তি নয়, এটি জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফলতার চাবিকাঠি। এটি দুঃখ-কষ্টের মহৌষধ, ঈমানের শক্তি এবং পরকালের মুক্তির পথ। আমরা সংকল্প করি, আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর যিকিরে উৎসর্গিত হবে। আল্লাহর বাণী আমাদের পাথেয় হবে:

قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

বলো, নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার ইবাদত, আমার জীবন ও মৃত্যু সবই আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। — সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৬২

وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًا

তুমি তোমার প্রভুর নাম স্মরণ করো এবং সম্পূর্ণভাবে তাঁর প্রতি নিবেদিত হও। — সূরা আল-মুজ্জাম্মিল, আয়াত ৮

এই আয়াতে আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ নিবেদনের সঙ্গে যিকিরের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তাঁর যিকিরে মশগুল থাকার তাওফিক দান করুন। তিনি আমাদের হৃদয়কে তাঁর নূরে আলোকিত করুন এবং ফিতনার যুগে আমাদের হেফাযত করুন। আমীন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: মনে সবসময় আল্লাহর স্বরণ থাকলে সে কখনোই বিপথে যাবেনা।

১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ সৈয়দ মশিউর রহমান ভাই,
আপনার মন্তব্যটি হৃদয় ছুঁয়ে গেল। সত্যিই, মনে আল্লাহর স্মরণ থাকলে মানুষ কখনোই পথভ্রষ্ট হয় না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর স্মরণে স্থির রাখুন।

২| ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১০

যামিনী সুধা বলেছেন:



মোল্লাদের পশ্চিমের ভালো দেশগুলোতে হিজরত করার মতো দোয়া আছে কিনা দেখেন তো?

৩| ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১১

যামিনী সুধা বলেছেন:



হজ্বে গিয়ে সৌদীতে চাকুরী পাবার দোয়ার দরকার, যাতে মানুষ সেখানে থেকে যেতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.