নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নজরুল মিন্টো

নজরুল মিন্টো

সাংবাদিকতা, লেখালেখি

নজরুল মিন্টো › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারপর থেকে 'নাস্তিক' শব্দটি আমাদের

২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:০৪

সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, ব্লগার্স সম্পর্কে আমাদের দেশের অধিকাংশ রাজনীতিবিদদের কোন ধারণা নেই। সিনিয়র অনেক সাংবাদিক থেকে শুরু করে পত্রিকা সম্পাদকদের অজ্ঞতা দেখে আরও আশ্চর্য হচ্ছি। মধ্যরাতে তথাকথিত অভিজ্ঞ সাংবাদিকেরা যখন চ্যনেলে চ্যানেলে টক শোর নামে প্রতিদিন দেশের রাজনীতি নিয়ে চর্বিত চর্বন করে; ইচ্ছে করে একেকটাকে দুই গালে দুটো চড় দিয়ে বলি- ইডিয়টের বাচ্চারা, এদেশের লোকজনকে কি গরু-ছাগল মনে করছ্ যে তারা কিচ্ছু বুঝে না? টক শো গুলোতে কেবল রাজনীতি আর রাজনীতি নিয়ে কথা। দেখলে বুঝা যায় আমরা সেই প্রস্তর যুগে ফিরে যাচ্ছি। সেই আগেকার দিনে ষাড়ের লড়াই বা মোরগের লড়াই দেখে গ্রামের লোকজন যেভাবে আদিম আনন্দ পেতো এখনও তাই মনে হচ্ছে। টক শোগুলোর চেহারা প্রায় একই রকম। মাঝখানে একটা বড় ইডিয়ট বসে থেকে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে আর দুই পাশে দুটো ষাড় চিৎকার আর চেচামেচি করে। চ্যানেলগুলোর মালিকের যেন কোন দায়বদ্ধতা নেই। জানতে ইচ্ছে করে, তারা কি কোনদিন কোন সমীক্ষা বা জরিপ চালিয়ে দেখেছে যে এসব অনুষ্ঠানের দর্শক কারা? শিশু কিশোর, স্কুল পড়ুয়াদের কথা বাদই দিলাম, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৮ এর মধে্য আছে তারা কি এসব টক শো দেখে? তারাইতো ৭৩% ভোটার। চ্যানেল মালিকেরা কি জানে না যে, রাত বারোটার পর কোন ধরনের লোক জেগে থাকে? কর্মজীবীরা, ছাত্র/শিক্ষক, পেশাজীবীরা কি রাত জেগে দেখে এসব অনুষ্ঠান? বিশ্বের আর কোন দেশের কোন চ্যানেল এ ধরনের চর্চা করতে দেখি না। আমাদের দেশের টক শো গুলোতে যারা অংশগ্রহণ করে তাদের সকলের সবজান্তা ভাব। রাজনীতি থেকে আকাশবিদ্যা, প্রযুক্তি থেকে আন্তর্জাতিক বিষয়। ঘুরে ফিরে ঐ কয়েকটা লোকই। কেউ কিছু বলে না দেখে দিন দিন এদের দাপট বাড়ছে আর বাড়ছে। অজ্ঞানতা, মিথ্যাচার, ভুল তথ্য দিয়ে এদের গলাবাজি দেখলে মনে হয় গুলিস্তানের ফুটপাতের সেই মলম বিক্রেতাদের কথা যারা চ্যালেঞ্জ দেয় বড় বড় সার্জেন্টদের। ধিক্কার জানাই এসব নির্বোধ সাংবাদিক/সম্পাদক আর রাজনীতিবিদ মলম বিক্রেতা চাপাবাজদের।

বলছিলাম ব্লগ এবং ব্লগার্সদের কথা। ব্লগকে নানান ভাগে বর্ণনা করা যায়। অতি সাধারণভাবে বললে বলতে হয় ব্লগ হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাহিত্য, এখানে যে যার মতো করে লিখে তার মত প্রকাশ করে থাকে। হতে পারে সেটা ৪ লাইন, হতে পারে সেটা ৪ পৃষ্ঠা। এটাকে সিটিজেন জার্ণালিজমও বলা হয়ে থাকে। ব্লগ একটি ইন্টারেকটিভ মিডিয়া। একজন লিখলে তার লেখা পড়ে যে কেউ তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে পারে। লেখার ভুল-ক্রুটি ধরিয়ে দিতে পারে, ভিন্ন মত থাকলে সে মতও প্রকাশ করতে পারে। যে লিখে থাকে তাকে বলা হয় ব্লগার। বর্তমান বাংলাদেশে ব্লগার মানে নাস্তিক। আর এখন এ নিয়ে আমাদের ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে মুখে মুখে, কলমে-কাগজে, ইন্টারনেটে-ফেসবুকে। বলতে হচ্ছে আমরা নাস্তিক না, ব্লগার মানে নাস্তিক নয়। ভাবতে অবাক লাগে কোন যুগে বসবাস করছি আমরা। যারা লেখালেখি করেন তাদের মধে্য অনেকেই নাস্তিক আছেন; তাই বলে কি পুরো লেখক গোষ্ঠিকে কেউ নাস্তিক বলতে পারে? কণ্ঠশিল্পীদের মধে্য যদি কেউ নাস্তিক হয়ে থাকে আমরা কি সকল শিল্পীগোষ্ঠিকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারি? আমরা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করি, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করি, আমরা গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি করেছি, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী করছি, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করছি, আমরা ব্লগে ব্লগে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানীদের গৌরবগাঁথা তুলে ধরছি- এজনে্য আমাদেরকে 'নাস্তিক' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রকাশে্য এ ঘোষণাটি এসেছে একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান ব্যক্তির কাছ থেকে। নির্মলেন্দু গুণের কবিতার ভাষায় বলতে হয়- তারপর থেকে ‌'নাস্তিক' শব্দটি আমাদের।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৩২

তানজিদ_রূপক বলেছেন: একটা রুচি সম্মত অনুষ্ঠান বানিয়ে বা ক্রয় করে চ্যানেলে প্রচার করলে যে অর্থ আয় হয় তাঁর বহুগুন বেশী অর্থ এই টক শো গুলো দিয়ে আয় হয় এটা না বুঝার মতো কিছু নয়।বাংলাদেশের চ্যানেল মালিক কারা কি ভাবে তাঁরা চ্যানেল অনুমোদন পায় এটা নাজানার মতো কিছু নয়।এদের কাছ থেকে রুচি সম্মত কিছু আশা করা বৃথা।

২| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩

নজরুল মিন্টো বলেছেন: ১০০% সহমত। মালকদেরকে সাধারণ দর্শক চেনে না। যারা অংশগ্রহণ করে তারা দায়িত্বশীলতার সাথে কথা বলা উচিত।

৩| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৫৭

আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন বলেছেন: মাঝে মাঝে যে গুণীজন আসে না, তা না। তবে মাঝে মাঝেই কিছু ালপাকনা এসে নিজের পন্ডিতি জাহির করতেই বেশি ব্যস্ত।

আমি ওসব ছাই পাশ শোনা ছেড়ে দিয়েছি। আর ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বকর বকর করতে টকশো দেখার কোন মানে নেই। ওসব ঘটনা আমাদের বাসার কাজের বুয়াও জানে, সে রেগুলার দুই'টা পেপার পড়ে।

দেশের রাজনৈতিক হালচাল বেশ ভাল ভাবেই সে জানে।


টকশোতে আজ পর্যন্ত একটা ইস্যু বা সমস্যার সমাধান কি ভাবে করা যায়, কি হলে ভাল হবে, এ নিয়ে কোন কথা বলতে দেখলাম না।

এ দেশে কি পলিটিক্যাল সমস্যা ছাড়া আর কোন ইস্যু নেই ? আর কোন সমস্যা নেই ?

৪| ২৫ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:১৮

নজরুল মিন্টো বলেছেন: আমারও একই কথা। পৃথিবীতে কত বিষয় আছে। কত বৈচিত্র আছে। কত ঘটনা ঘটছে। না, এগুলো নিেয় আলোচনা করতে কারো উৎসাহ নেই। অনুষ্ঠান প্রযোজক প্রতিদিন ডেকে আনে দালাল ধরনের দুই/চারটা সাংবাদিকদের যেগুলো কেবল বস্তা পঁচা রাজনীতি নিয়ে কেবল পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলে তাদের জ্ঞান জাহির করে। নয়তোবা ডেকে আনবে ঝগড়াটে রাজনীতিবিদদের যেগুলো অন্তঃসারশুণ্য। শিষ্টাচার- সৌজন্যতাবোধও যারা জানে না। দেশের মানুষকে যদি সকাল-সন্ধ্যা এগুলো গেলানো হয় মানুষ সুস্থ চিন্তা করবে কিভাবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.