নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বাগতম আপনাকে এক প্রব্রজ্যার প্রবচন রাজ্যে !
নগ্নতাকে আজকাল প্রতিবাদ হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে । প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে যেহেতু কোন সীমা নির্ধারণ করা হয় না তাই নগ্নতাকেও প্রতিবাদের ভাষা বা উপভাষা বলে মনে করা হয় । তবে এই প্রতিবাদের মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে মিডিয়ার দৃষ্টিগোচর হওয়া এবং প্রতিবাদ যে হচ্ছে তা জনগণকে জানাবার এক মাধ্যম । মানুষের কাছে নগ্নতা সব সময় আলোচনা ও সমালোচনার বিষয় , আর প্রতিবাদেও যখন এই নগ্নতার ব্যবহার হয় তখন এর প্রসার ঘটে অবশ্যই , তা সে নেতিবাচক হলেও । অধিকাংশ মানুষের নাক সিঁটকানো ও আপত্তি থাকলেও প্রতিবাদের এই মাধ্যমটি অনেক বেশি অনুসৃত হচ্ছে আজকাল ।
এই নগ্ন প্রতিবাদের ইতিহাস সম্পর্কে একটা কিংবদন্তি প্রচলিত আছে । কিংবদন্তির নায়িকা অবশ্য বাস্তবে ছিলেন তবে তাকে নিয়ে প্রচলিত ঘটনাকে আধুনিক ইতিহাসবিদরা মেনে নেননি । তবুও এই ঘটনার আবেদন বেশ প্রচলিত এবং সাধারণ আলোচনায় গৃহীত । ঘটনাটি হলো ইংল্যান্ডের মার্সিয়া রাজ্যের আর্ল লিওফ্রিক এর স্ত্রী গোদিভাকে নিয়ে । গোদিভা বেশ প্রজাদরদি ছিলেন । তাই তিন তার স্বামীর প্রজাদের ওপর অহেতুক কর আরোপকে মেনে নেননি । এবং অনেকবার চেষ্টা করেছেন তার স্বামীকে এই কর আরোপ থেকে বিরত রাখতে । কিন্তু স্বামী কোনভাবেই রাজী হননি তার এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু ফিরতে । আর তাই তার স্বামী গোদিভাকে থামাতে এক অদ্ভুত শর্ত দিল । গোদিভাকে তিনি বললেন তিনি গোদিভার দাবী মেনে নিবেন , যদি সে একদম নগ্ন হয়ে ঘোড়ায় চড়ে কভেন্ট্রির রাস্তায় বের হোন তবেই ! গোদিভা প্রজাদের তার স্বামীর অযাচিত কর থেকে রক্ষা করতে রাজি হয়ে যান এবং ঘোষণা দেন তিনি যেদিন বের হবেন সেদিন যেন সবাই দরজা জানলা বন্ধ করে ঘরের ভেতরেই অবস্থান করে । সবাই ভেতরে থাকলেও থমাস নামে একজন লুকিয়ে গোদিভাকে দেখেন এবং রাজা তা জানবার পর তাকে অন্ধ করে দেন বলে জানা যায় । তবে গোদিভার এই কাজের পর প্রজাদের কোন উপকার হয় কিনা তা জানা যায়নি ।
তবে এই ধরনের প্রতিবাদের যাত্রা শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয় কানাডার ডুখোবর নামের এক খ্রিস্টান আধ্যাত্মিক সংঘের একটি অংশ থেকে যারা রাশিয়া থেকে কানাডায় এসে বসবাস শুরু করে । যারা পোশাক পরিধান করতেন না এই বলে যে ইশ্বরের তৈরী মনুষ্য চর্ম মানুষের তৈরী পোশাক অপেক্ষা অনেক বেশি উত্তম তাই উত্তমকে অধম দিয়ে আবৃত করবার কোন মানে হয় না । তারা তাদের আদর্শজাত মত বাস্তবায়নের জন্য এই নগ্নতাকেও ব্যবহার করতে শুরু করে । সেই থেকে নগ্নতাকে প্রতিবাদের একটি উপায় বলে ধরে নেয়া হয় এবং এরপর বোধহয় বর্তমান নারীবাদী সংগঠনগুলো এই ধরণের আচরণকে প্রতিবাদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন ।
স্পেনের পেটা গ্রুপের মত প্রাণীদরদি সংস্থা এভাবে প্রতিবাদ করলেও নারীবাদীরাই বেশি ব্যবহার করে এই নগ্নতাকে প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে । প্রশ্ন থাকতেই পারে যে আসলে এই প্রতিবাদের হেতু কী ? কেবল মানুষের নজর আকর্ষণ করা ? আজ পর্যন্ত এই প্রতিবাদের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আসলে কোন বাদের নাশ হয়েছে কি না তা জানা যায়নি । তবে এই ধরণের প্রতিবাদ অনেক মানুষকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে যে ফেলে দেয় তা ঠিক । কিন্তু ব্যক্তি স্বাধীনতার এই যুগে এসবও এখন স্বাধীনতার অংশ । স্বাধীনতা হরণ করা অপরাধ তাই এই বিষয়কেও আস্তে আস্তে মেনে নেয়া হচ্ছে । কিন্তু কথা থেকে যায় এই যে এই ধরনের প্রতিবাদ আসলে বিজ্ঞাপন বাদে আর কিছু কী ? কোন না কোন প্রতিবাদের একটা ফল পাওয়া যায় । কিন্তু এই ধরনের প্রতিবাদ কেবল আলোচনার রং চড়ানোর একটা উপায় বাদে আর কিছুই তো প্রসব করে না । এবং আলোচনায় উঠে আসলেও যে বিষকে ঘিরে প্রতিবাদ সেই প্রসঙ্গ থেকে অনেক দূরে চলে যায় আলাপ । তাই প্রতিবাদের মাধ্যম হলেও মোটেও ফলপ্রসু কিছু নয় কিন্তু বেশ জনপ্রিয় এই নগ্নতা প্রতিবাদ ।
যাইহোক , হয়তো এই নগ্নতা প্রতিবাদ আরও প্রসার পাবে । এক সময় পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে প্রতিবাদের এই মাধ্যমটি । ভবিষ্যতে এর আবেদন কেমন হবে তা জানা অসম্ভব তবুও বর্তমান থেকে এই কথাটা বলাই যায় যে নগ্নতার মাধ্যমে প্রতিবাদ আসলে বিজ্ঞাপন বাদে আর কিছুই নয় !
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: ধন্যবাদ । আমার আটপৌরে নবীন ব্লগাস্তানায় আপনাকেও স্বাগতম !
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:০৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভারতের মনিপুর রাজ্যে অসম রাইফেলের জওয়ানরা একবার এক মনিপুরী নারীকে গনধর্ষণ করে হত্যা করার প্রতিবাদে মনিপুরের মায়েরা সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে রাইফেলের বারাকের সামনে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সেই সময় এই ঘটনা গোটা বিশ্বে তাক লাগিয়েছিল। আপনার শেয়ার করা তথ্যের মধ্যে অসম রাইফেলসে সেই কুকৃত্তির কথাটা যোগ করতে পারেন।
শুভকামনা আপনাকে।
১৪ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:০৫
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: আমি এই ঘটনার সম্পর্কে জানতাম না । জানানোর জন্য আমার কৃতজ্ঞতা জানবেন । আল্লাহ চাইলে আগামীতে এই নিয়ে লিখলে এই বিষয়টি রাখার চেষ্টা করব !!
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৪০
পোড়া বেগুন বলেছেন:
সামু ব্লগে স্বাগতম। সুন্দর বলেছেন,
সবই এখন নিজেকে হাইলাইট করার বিজ্ঞাপন!
১৭ ই অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৯:৪৮
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: ধন্যবাদ । মন্তব্য করার জন্য আবারও ধন্যবাদ ।
আসলে আমরা সবাই নিজেকে প্রচার করতে পছন্দ করি কিন্তু একে অন্য সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়ন করাটা একেবারেই ঠিক না । নিজের প্রচারণাকে প্রতিবাদ বলে চালিয়ে দেয়াটা আসলেই আজকাল বেশি প্রচলিত হচ্ছে !!
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সামুতে স্বাগতম আপনাকে।