![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সাধারন মানুষ,সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক বেশি।প্রতিভা আছে কিনা জানিনা,তবু লিখতে খুব পছন্দ করি,তাই লিখি
সেদিন বেলাটি ছিল খুব রৌদ্র।আমি অপেক্ষা করছিলাম তার জন্যে।সাভার স্মৃতিশৌধের ভেতরে,একটি বেঞ্চে বসে।একটি পিচ্চি এসেছিল আমার কাছে,হাতে প্রায় কয়েকটি টকটকে লাল গোলাপ হাতে।প্রতি পিস দশ টাকা চাইছিল,আমি তবু নিয়ে নিলাম।কার পিচ্চিটাকে দেখে খুব গরিব মনে হচ্ছিল।কে জানে?এই রোজগারে যদি ও একবেলা খেতে পারে,তবে নিতে কি সমস্যা?
আমি তিনটি ফুল নিলাম।নিয়ে বসে আছি,প্রায় দুঘন্টা পার হয়ে গেলো।ও এখনও আসছেনা কেনো?ওতো বলেছিল একটু লেট হবে।কিন্তু একটু লেট মানে কি দুঘন্টা?বলা যায়না,মেয়ে বলে কথা।
জায়গাটি একদমই অপরিচিত।এখানকার কিছুই চিনিনা আমি,অচেনা জায়গায় নিজেকে খুব ভিতু টাইপ লাগছে।ওইযে,নিলা এসেছে,ও আসতেই যেনো ঘড়ির কাটা থেমে থেমে চলছিল।যেনো একদম ধির গতিতে চলছিল,ও একপা করে এগুচ্ছে আর চারিদিকে যেনো রঙিন কিছু উড়ছে।নিলা কাছে আসতেই সব যেনো ঠিক হয়ে গেলো।
"আইম সরি,অনেক দেরি করে ফেলেছি,আসলে বাবা আসতেই দিচ্ছিলনা"
-"নাহ,বেপার না,আসো বসি কোথাও"
নিলার বেপারে আমি কখনই কোন কমপ্লেন করতে পারিনি,কখনও মুখ দিয়েই বের হয়নি,ওর যেকোনো ভুলকেই কিভাবে যেনো মেনে নিতাম আমি।বলতে চাইতাম না ওকে,যদি কষ্ট পেয়ে বসে?নাকি বলতে ভয় পেতাম,যদি হারিয়ে ফেলি ওকে!আজও জানিনা সেটা।
নিলার সাথে সেদিন প্রায় তিনঘন্টা সময় কাটলো।সাভার ক্যন্টনমেন্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল নিলা।বাবা রিটায়ার্ড আর্মি মেজর।নিলা খুবই শান্ত স্বভাবের ছিল,কথা বলতে খানিকটা লজ্জা পেতো,রাগ সরাসরি দেখাতে পারতোনা,একবার ওর আমার উপর কি নিয়ে যেনো খুব রাগ হয়েছিল,আমায় শাসন করার জন্যে সে রেগো চিৎকার করে কথা বলছিল,কিন্তু মাথা নিচু করে,চোখ নামিয়ে,লজ্জা পাচ্ছিল খুব,সে দৃশ্য ভাবলে আজও হাসি পায়।
আচ্ছা আমার পরিচয়টা দেওয়া হয়নি,আমি আসিফ রহমান,বর্তমানটা শেষে বলবো,তখনকার সময় ছিল সাল ২০০৬,তখন আমি ঢাকা ভার্সিটির বিবিএ বিভাগের নতুন বর্ষের ছাত্র।নিলার সাথে পরিচয়টা আগে বলি,সেদিন আমার এক বন্ধুর সাথে সাভারের ক্যন্টনমেন্টে ঘুরতে গিয়েছিলাম,ঠিক তখনই একটা মেয়ে বেডমিন্টন খেলছিল পাশের মাঠে,বাস,চোখে চোখে দেখা আর প্রেম।এতটা সুন্দর তার চোখ,আর গালগুলো যেনো অন্যরকম সৌন্দর্য।এক কথায় মানুষের মধ্যে যদি সৌন্দর্যের শ্রেষ্ঠতা থাকে,তবে তা এই মেয়ের মাঝে ছিল।অনেক কষ্টে ওর নাম্বারটা মেনেজ করি।আমার বন্ধুই সাহায্য করেছিল।যেভাবেই হোক আমাদের সম্পর্কের শুরু হয়েই যায়।নিলা খুব ভাল মেয়ে ছিল,সবসময় আমার খেয়াল রাখতো,এমনকি চুল বড় হয়ে গেলে আমার মা যতটা আমায় বকেনি,ততটা বকা নিলার কাছে খেয়েছি।নিলার সাথে পরিচয়ের সময় ও তখন মাত্র ক্লাস নাইনে পড়তো।ধীরে ধীরে আমার ভালবাসা এতটাই বেড়েছিল যে,নিলাকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা যেনো একদমই অসম্ভবের মতই ছিল।নিলার সাথে রোজ দেখা হতো,কখনও ও আসতো আমার কেম্পাসে,বা কখনও আমাদের দেখা হতো রমনা পার্ক অথবা কোন রেস্টুরেন্টে।ওর বড় বাদাম গুলা খুব প্রিয় ছিল,ওই যে একটি খুললে পাঁচ ছয়টা বাদাম বের হয় যে?ওগুলা।যখনই দেখা হতো,তখনই ওর এটাই বায়না ছিল যে বাদাম আনতে হবেই।দু একবার ভুলেও গিয়েছিলাম,তখন অনেকবার কান ধরে উঠবস করার পরে তাকে মানাতে পেরেছিলাম।দেখতে দেখতে নিলা প্রথম বর্ষে চলে আসে,ঘটনার শুর হয় যখন আমি আর নিলা একসাথে কেম্পাসে বসেছিলাম।নিলার বাবা তার বন্ধুর সাথে দেখা করতে কেম্পাসে এসেছিলেন।কিভাবে যেনো তিনি আমাদের দেখতে পান।
নিলাকে বাসায় অনেক বকা দেওয়া হয়,আমার বেপারে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়,নিলার মা বাবা সবাই মিলে ওকে জোড় করে,কিন্তু নিলা কিছু না বলে চুপচাপ কাঁদতে থাকে।
হঠাত একদিন নিলাকে তার বাবা বলেন,
"ছেলেটাকে বাসায় ডাকো,কথা বলে দেখি,যদি ভাল লাগে,তবে বিয়ের ব্যবস্থা করবো তোমাদের"
সেদিন হয়তো নিলা খুব খুশি হয়েছিল।আমাকে যেভাবে ফোনে বলছিল কথাটি,বুঝতেই পারছিলাম যে এতটা আনন্দ সে হয়তো কখনও পায়নি।আমাকেও নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করা দরকার ছিল।মেয়ের বাবা বলে কথা।বসুন্ধরা মার্কেট থেকে তিন হাজার টাকার একটি সাদা স্ট্রিপ রঙের শার্ট কিনি এবং একটি পঁচিশ শত টাকা দিয়ে কালো রঙের প্যন্ট।দামি জুতাও কিনেছিলাম এক জোড়া,জুতা আর ব্যল্ট মিলে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়।চুল কাটিয়ে নিলাম আর্মি স্টাইলে,কে জানে?আর্মির লোক,যদি চুল দেখেই খুশি হয়!
বনফুল থেকে পাঁচ কেজি মিষ্টি কিনলাম,তাও নিলার বাবার পছন্দের মিষ্টি।
কেনো যেনো মনে হচ্ছিল দিনটি আমার জন্য ঈদের দিনের মত।এতটা খুশি লাগছিল,যেটা হয়তো এভাবে লিখে বোঝানো যাবেনা।কেন্টনমেন্টের গেটে দাঁড়িয়ে ছিলাম,আসেপাশের লোকজন অবাকের মত তাকিয়ে ছিল,তাকানোরই কথা,যেই গেটাপে এসেছি!
গেট থেকে ভেতরে ঢুকলাম,হঠাত কি যেনো হল,মাথার পেছনে অনেক জোড়ে কিছুর আঘাত লাগলো,হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে,আমি রাস্তায় পরে গেলাম,মিষ্টির প্যকেটগুলো হাত থেকে পরে গেলো,মিষ্টি গুলোও রাস্তায় পরে যাচ্ছে,আমার চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেলো।
চোখ খুললো,আমি বসে ছিলাম,হাত ঝোলানো,হাতে হেন্ডকাফ পরা।বুঝতে পারছিলাম না কোথায় আছি আমি।সামনে একজন মধ্যবয়সী লোক আমার দিকে ঝুঁকে বসে আছেন।তার তাকানোর ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল তিনি আমার জ্ঞান ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন।
হঠাত করে তিনি বললেন,
"নাম?"
-"আসিফ রহমান,আমাকে এখানে কেনো এনেছেন?কি চান?"
"প্রশ্ন আমি করবো,নিলাকে কতদিন ধরে চেনো?"
-"দুবছর,আপনি নিলার বাবা?"
"বুদ্ধিমান তুমি,তুমি জানো নিলার বিয়ে ঠিক করেছি?"
-"না,নিলা তো বলেনি,কিন্তু আপনি তো দেখা করতে চেয়েছিলেন আমার সাথে?এসব কেনো?"
"লুক ইউ ইডিয়েট,নিলা আমার একমাত্র মেয়ে,যার তার সাথে আমি ওর বিয়ে দিবোনা,তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছি ঠিক,কিন্তু সবার সামনে না,আমারও সম্মান আছে,আমি আমার মেয়েকে তো ঠিকই মানিয়ে নেবো,কিন্তু তুমি যাতে কোন প্রবলেম ক্রিয়েট না করো,সেজন্যেই এই ব্যবস্থা!"
-"আপনি নিলাকে আমার কাছ থেকে দূর করতে পারবেন না,ও আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবেনা,আমি জানি"
উনি আর কোন কথা বললেন না,কিছুক্ষন পর একজন ইউনিফর্ম পরা লোক একটি মোটা লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসলো।নিলার বাবা উঠে চলে গেলো।সেই রাত আমাকে অনেক মারা হয়েছিল,আমি চিৎকার দিয়ে কাঁদছিলাম।হাতে পায়ে মেরে ব্যথা জায়গায় আবারো মারছিলো লোকটা,ধীরে ধীরে আমি চিৎকারের শক্তিও হারিয়ে ফেলি।অজ্ঞান হয়ে পরি।পরদিন আমাকে ওখান কার এক হাসপাতালের বেডে পরে থাকতে দেখি।পকেটে কে যেনো দুহাজার টাকা দিয়ে দেয় এবং সাথে একটা চিঠি যাতে লিখা ছিল,"ফেরত আসিস না আর,নইলে মরবি"
আমি কেম্পাসে যাই,নিলাকে অনেকবার কল দেই,কিন্তু ও কল ধরেনি।একসময় ব্লেকলিস্টে নাম্বার দিয়ে দেয় আমার।আমি আমার বন্ধুদের নাম্বার দিয়েও কল দেই,নিলা আমার ভয়েস শোনার সাথর সাথেই ফোন কেটে দেয়।
প্রায় দুমাস পর,নিলা মেসেজ দেয়,
"কাল সকাল ১১টায়,সাভার স্মৃতিশৌধে আসবে,আমার একটু দেরি হতে পারে,কথা আছে"
এটা সেদিনকার ঘটনা,এসেছিল দুঘন্টা দেরিতে।
আমরা একটি বেঞ্চে বসলাম,নিলা আমাকে বলতে শুরু করলো,
"দেখো আমার বাবার অনেক সম্মান ওখানে,যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে সেও আর্মির মেজর,অনেক সম্মানী লোক,তোমার জন্য ভাল হবে তুমি আমার আশায় আর না থাকো,তুমি অন্য একটা ভাল মেয়ে দেখে বিয়ে করে নাও,আমার সামনে মাসেই বিয়ে"
সেদিন নিলা চোখে চোখ রেখেই কথা বলছিল,একটি বারও সে লজ্জা পায়নি,আমার খুব মন চাচ্ছিল ওকে বলতে,কতটা ভালবাসি ওকে,বলতে যে নিলা চল পালিয়ে যাই,জিজ্ঞেস করতে যে নিলা তুমি কি আমায় ভালবাসোনা?ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে,আর যেতে না দিতে..খুব মন চাইছিল,কিন্তু আমি একটি কথাই বলেছি,"ভাল থেকো..."
নিলা চুপ করে উঠে চলে গেলো।একটি বার ঘুরেও তাকালোনা।আমার হাতের ফুল গুলোর দিকেও চোখ পরেনি ওর...
আজ ১০ বছর পর,আমি,একটি ব্যংকের ম্যনেজার,ছুটি পেলেই সাভারে চলে যাই,নিলাকে দেখতে,ওর একটি মেয়ে হয়েছে।খুব সুন্দর মেয়েটি।নিলা খু্ব সুখেই আছে,ওকে দেখলে কেউ বলবেই না,ওর জীবনে অন্য কেউ কখনও ছিল।নিলাকে চুপচাপ দেখে চলে আসি।আমি বিয়ে করিনি এখনও,সাহস হয়নি আজও,নিলাকে ভুলে অন্য কাউকে নিলার জায়গাটা দেওয়ার...
২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৪
আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: ধন্যবাদ,আসলে ফোনে লিখেছি তো,তাই এমন হয়েছে,পরেরবার খেয়াল রাখবো...
৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: আয়মান ভাই আপনি কি আপনার অভিজ্ঞতার কথা লিখলেন??
৪| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৫
আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: না ভাই,বাস্তবতার রূপে একটি ছোট গল্প লিখলাম
৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৫
সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর ।
৬| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মননশীল ভাবনা । ভালো থাকুন।
৭| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮
আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: হুমমম,এই বাস্তবতাটাই তো সবকিছু
৮| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯
আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: ধন্যবাদ,আপনিও ভাল থাকুন
৯| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:১০
নীল আকাশ বলেছেন: আপনার প্রতি মন্তব্য জায়গা মতো হচ্ছে না। গেম চেঞ্জার ভাইয়ের এই লেখা পড়ে আসুন। খুব কাজে দিবে-
https://www.somewhereinblog.net/blog/gameChanger/30079740
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫০
নীল আকাশ বলেছেন: গল্পের থীম/প্লট ভালো। তবে আপনার বাংলা বানান ভয়ংকর খারাপ। বহু কষ্ট করে পড়তে হয়েছে।
বিরাম চিহ্নের ব্যবহারও যথাযথ হয় নি। এরপর থেকে লেখা প্যারা প্যারা করে আলাদা ভাবে দিবেন। পড়তে সুবিধা হয়।
বাংলা বানান এবং বিরাম চিহ্ন নিয়ে দ্রুতই কাজ শুরু করুন। না হলে যেকোন পাঠক লেখা পড়লে পালাবে।