নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সাধারন মানুষ,সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক বেশি,প্রতিভা আছে কিনা জানিনা,তবু লিখতে খুব পছন্দ করি,তাই লিখি

আয়মান আওসাফ নিঝুম

একজন সাধারন মানুষ,সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক বেশি।প্রতিভা আছে কিনা জানিনা,তবু লিখতে খুব পছন্দ করি,তাই লিখি

আয়মান আওসাফ নিঝুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প : আন্ডারকভার জিরো ( পর্ব : ১)

০১ লা মার্চ, ২০২০ রাত ১২:২০

ভিড়ের মাঝে দাড়িয়ে আছি।একজন একজন করে লোক যাচ্ছে,আমার কাজ প্রতিজনের দিকে লক্ষ্য করা।একটু আগে মেইল পেয়েছি,ভিকটিমের ফোটো।আর একটি সম্ভাব্য ঠিকানা।শুধু আমি একা পাইনি,আরও কিছু লোক পেয়েছে।তারা অন্য লোকেশনে খুঁজছে।এই ডিটেক্টিভের চাকরি বড়ই মজার।যখনই কোন মিশন আসে,নেমে পরা হয় সে মিশনটাকে কমপ্লিট করার জন্যে।আর যখন ভিড়ের মাঝে থাকি,তখন নিজেকে খুব স্পেশাল কেউ মনে হয়।সেই অসাধারণ ব্যক্তি যে দেশের জন্য সবার আড়াল হয়ে লড়ছে।সে জানে,তার কিছু হলে সে একজন সন্ত্রাসী ঘোষিত হয়ে থাকবে।কিন্তু তবুও কোনকিছু পরোয়া না করেই সে লড়ছে।
আমার নাম সায়েম,কোডনেম "জিরো"।ব্যচ নেই কোন।লজিকালি ধরতে গেলে একজন সরকারি আন্ডারকভার এজেন্ট।যেই কেস পুলিশ সলভ করতে পারেনা সেটা রেব বা ডিবির হাতে হেন্ডওভার করা হয়,যখন তারাও ব্যর্থ হয় তখন আমাদের হাতে এসে পৌছায়।আর কেস সলভ হবার পরে ক্রেডিটটাও তারাই পায়।
ডিটেক্টিভ হবার ইচ্ছে ছিল না,হতে চেয়েছিলাম সিভিল অফিসার।তবে ডিটেক্টিভদের খুব ভাল লাগতো।চিন্তা ভাবনাও তাদের মতই ছিল।
একটি ছোট ঘটনা মনে পরল,একদিন আমি আর এক বন্ধু চায়ের দোকানে বসে সিগারেট খাচ্ছিলাম।তখন রাত প্রায় এগারোটা।একটি রেস্টুরেন্ট থেকে একটি সতের কি আঠারো এমন বয়সী মেয়ে আর সাথে চারজন ছেলে বের হয়ে আমাদের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিল।বন্ধু দেখে বললো,
-তুই তো খুব ডিটেক্টিভগিরি করতে পারিস,তা বলতো এরা কেনো এতো খুশি?
-এই মেয়েটার আজ জন্মদিন,তাই
-কিভাবে বুঝলি?এমনও তো হতে পারে মেয়েটা আর ওদের মধ্যেই কোন ছেলে আজ পালিয়ে বিয়ে করেছে?আর তাই তারা এত খুশি?অথবা মেয়েটিরই যে বার্থডেয় এটাও তো না হতে পারে
-না,মেয়েটি উড়তি বয়সের,আর উড়তি বয়সের মেয়েরা বেলুন খুব পছন্দ করে,কিন্তু তারা কারও কাছ থেকে চেয়ে নেবেনা,এতে তারা লজ্জা পায়,তাই তার হাতে এই বেলুন কেউ দিয়েছে।আর মেয়েটি খুব লাফিয়ে হাসছে,যার কারন সে আজ খুব খুশি।আর যদি সে পালিয়ে বিয়ে করতো তবে খুশির বদলে সে আজ হেটে হেটে যেতো।আর তার মাথা থাকতো নিচের দিকে।কারন বিয়ের অন্তত দুদিন পর্যন্ত মেয়েদের মন খারাপ থাকে।আর উড়তি বয়সের মেয়েরা অন্য কারও জন্যে এতো আনন্দ পায় না।তাই তার কিছু একটা।সো বেলুন হাসি আর লাফানোর স্টাইল প্রমান করে যে তার আজ জন্মদিন।
বন্ধুটি কিছুক্ষন গম্ভীর হয়ে ছিল।

একদিন সকাল বেলা ফরমাল শার্ট পেন্ট পরে সিলেকশনের জন্যে গিয়েছিলাম ডিফেন্সে।সেদিন মেয়বি আমার লাকি দিন ছিল।
ফিটনেস,মেডিকেলসহ অনেকগুলো টেস্টে পাস করেছিলাম।তারপর ফাইনাল টাচআপের জন্যে আমাকে ভিতরে ডাকা হলো।এক গম্ভীর ভঙ্গিতে এক বড় দাদু টাইম মোছ আলা এক লোক বসেছিল।ভেতরে ঢুকতেই বললো
-বসুন
আমি বসলাম।
-ডিফেন্স কেনো বেছে নিলেন?
-দেশের সেবা করতে চাই
-ওগুলো ভুয়া কথা,সবাই তো ভাবে আমি ঢুকলে ঘুষ খাবো,এত টাকা কামাবো,এই সম্পদ বানাবো,আমিও এজন্যই ঢুকেছি,আপনারো সেরকম আমি জানি।
-না স্যার,আমি ওরকম কিছুই চাইনা,চাইলে তো আগে খুঁজতাম কাকে ঘুষ খাওয়ালে ডাইরেক্ট রেংক পেয়ে যাবো।কিন্তু সেরকম কিছুই করিনি,অনেক কষ্টে সব পাশ করে এসেছি।
-হুমমম,দেশের সেবা অন ইউনিফর্মে না করে যদি আন্ডারকভারে করতে বলা হয় তবে করবেন?
-অবশ্যই,কেনো না?কিন্তু আমি জানতাম তো আন্ডারকভার হওয়ার জন্যে খুব ভাল পার্ফর্মেন্স হতে হয়?আর তাও ডিফেন্স জয়েনিং এর পর,মুভিতে দেখেছিলাম।
-ওসব ভুয়া কথা,আপনাকে সকল টেস্টে রেংকিং ভাল পেয়েছি,আর আপনাকে পারদর্শী ও সৎ মনে হয়,তাই রেংক দিয়েছি।আর একটা কথা হয়তো ভুলে গিয়েছেন,অনেক মুভিতে রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতেও রেংক পেয়ে গিয়েছে অনেকে।
-সেটা অবশ্য ঠিক বলেছেন।
-তাহলে এখন এই মুহূর্ত থেকে আপনি একজন গভারমেন্ট আন্ডাকভার রেপিড এজেন্ট।সিল মেরে দিলাম,আপনার সব ডিটেইলস ফোনে পেয়ে যাবেন,আর মনে রাখবেন যখন আপনি আপনার বেপারে কাউকে বলবেন,সেটা আপনার এবং তার শেষ দিন হবে।এখানে সাইন করুন।

সাইন করার সময় নিজেকে মনে হচ্ছিল যেনো আমি স্বর্নপদক প্রাপ্ত কেউ,যাকে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে।কিন্তু এভাবেও চাকরি হয়,এমনটা আগে ভাবিনি।
ফোনে সব ডিটেইলস পাওয়ার পর নিজেকে মেন্টালি তৈরি করে নিলাম।
ছাদ থেকে পরে মরি,গুলি খেয়ে মরি কিংবা দূর্ঘটনায়,আমাকে আসামী ঘোষিত করা হবে।জনগন জানবে আমি কোন সরকারি কর্মকর্তা।মাস শেষে অটোমেটিক খামে ভর্তি বেতন বাড়ি পৌছে যাবে।
সবকিছু মিলিয়ে যেনো মনে হচ্ছিল কিছুটা এচিভ করেছি জীবনে।
আর আজ আমার প্রথম মিশন।আসামীকে খুঁজে তার পিছু নিতে হবে।সবার সামনে না,সে যখন কোনো আড়ালে যাবে,তখন তাকে ধরতে হবে।কানে ছোট মাইক্রোফোন আছে,সকল সাথীদের সাথে কনটেক্ট করার জন্যে।যে আগে দেখতে পাবে,সে সিগনাল দিবে,এবং একে একে এগিয়ে খুব সাবধানে আসামীকে ধরতে হবে।
দাড়িয়ে আছি।খালি হাতে দাঁড়ালে আসামী চিনে ফেলতে পরে,তাই কেউ কোক,কেউ চিপসের প্যাকেট কিংবা জুসের বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি ব্যতিক্রম কিছু পাইনি তাই আমি একের পর এক সিগারেট খাচ্ছি।

প্রায় দুঘন্টা হয়ে গেলো,না আমি দেখতে পাচ্ছি আসামী কে,না সিগন্যাল পাচ্ছি কারও কাছ থেকে।এভাবে আরো দুঘন্টা যদি না পাওয়া যায়,তবে সবাই মিলে মিশন এবর্ট করতে হবে।যার মানে হল টাস্ক বাতিল।

পনেরো মিনিট পার হওয়ার পর হঠাত একজন সিগন্যাল দিল,আসামী তাকে ক্রস করেছে।সে পিছু নিয়েছে।আমরা এলার্ট হলাম সবাই,একে একে আস্তে আস্তে করে তার নিকটে যেতে হবে।ঘড়ির মত করে তার চারপাশ ঘিরে ধরতে হবে।যেমন "টুয়েল্ভ ও ক্লক" এ একজন,অর্থাৎ তার সামনে, "থ্রি ও ক্লক" মানে বামে একজন,এভাবে করে আমি ছিলাম "সেভেন ও ক্লক" পজিশনে।অপেক্ষা করছি কখন সে একটি ফাঁকা জায়গায় যাবে।
হঠাত একজন "টু ও ক্লক" ব্যক্তি আসামীর কাছে এসে তার গলায় মিনি স্পিন পুশ দিলো,আর আসামী অজ্ঞান হয়ে গেলো।আমরা সবাই কাছে গিয়ে হেল্পের বাহানা করে তাকে আমাদের ভেনে তুলে নিলাম।বুঝতে পারলাম যে ফাঁকা জায়গায় যাওয়াটা জরুরি না।সময়মত আর সময়ের সাথে খেলতে পারাটা জরুরি।তাকে আমাদের কাস্টাডি তে নিয়ে গেলাম।ইচ্ছামত মারধর করার পর জানতে পারলাম সে একজন তিরিশটি খুনের আসামী, ষোল টি রেপ কেস ও মাদক ব্যবসার অনেক বড় ব্যবসায়ী।
আমি কমান্ডারের কাছে গেলাম,আর বললাম
-বস,আপনারা সবাই জানতেন কেসের বেপারে,কিন্তু আমাকে শুধু আসামীর ছবি আর জায়গার নাম দেওয়া হয়েছে,আর কিছু ছিলনা,কেন?
-কারন এটা তোমার প্রথম মিশন ছিল,রুলস মোতাবেক তোমাকে আজ পরীক্ষা করা হয়েছে যে তুমি ফিল্ডে পারবে কিনা?আর যাতে তুমি কোন ভুল না করতে পারো তাই জানানো হয়নি,তুমি আজ পাশ।তাই এর পরবর্তী মিশনে তুমি সব ডিটেইলস পেয়েই মাঠে নামতে পারবে।মাঝে মাঝে তোমাকে লিডও করতে হতে পারে।তাই সামলে নিতে হবে।

কমান্ডারের কথা শুনে একবার খুশি লাগলো,পরে আবার মন খারাপও হলো।পাশ যদি না করতাম?
তবে কি আমাকে মেরে ফেলতো?বেপার তো না এদের কাছে।দেশের জন্য যে কাউকেই মারতে পারে এরা।
যাহোক পাশ করেছি এটাই বড় বেপার।
ওয়েট করছি,পরবর্তী মিশন কখন আসবে,কেমন হবে,আমি এবার আগের থেকে বেশি প্রস্তুত.....

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: আন্ডারকভার এজেন্ট কি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান??

২| ০১ লা মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৩৯

আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: আমি তো সরকারি বানিয়ে দিয়েছি

৩| ০১ লা মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

খাঁজা বাবা বলেছেন: খাপ ছাড়া :(

৪| ০১ লা মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: এটা প্রথম ধাপ ভাই,পরের পর্বে রহস্য দেবো

৫| ০১ লা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শ্রুতিমধুর লেখা।

৬| ০২ রা মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫৯

আয়মান আওসাফ নিঝুম বলেছেন: ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.