নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যার নীলারোণ্য

সন্ধ্যার নীলারোণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার সার্থকতা কিসে?? একসাথে মরার মধ্যে নাকি লড়াই করে একসাথে বেঁচে থাকার মধ্যে??

০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:২৯

—কেমন আছ পারমিতা?
—আপনি কোথায় ছিলেন এতদিন?আপনি না আমাকে ভালবাসেন?এই আপনার ভালবাসা?
—তুমি এই কথা বলছ পারমিতা?সেদিন ঠিক এইখানে এই পথ,গাছপালা আর ফুল পাখিকে সাক্ষী রেখে বলেছিলাম তোমায় ভালবাসি।কিন্তু তুমি ফিরিয়ে দিয়েছিলে আমায়।নিষেধ করেছিলে আমাকে তোমার কাছে আসতে।আমিও কথা দিয়েছিলাম আর আসব না তোমার কাছে,ভালবাসি ভালবাসি বলে বিরক্ত করব না তোমায় আর।
—তাহলে কথা দিয়েও কেন আসলেন আজ আমার কাছে?
—কারন কথা দেওয়ার সময় আমি ভুলে গিয়েছিলাম,যেদিন থেকে তোমাকে ভালবেসেছি সেদিন থেকেই তোমাকে আমার জীবন আর আত্মার অংশ হিসেবে জুড়ে দিয়েছি।চাইলেও পারব না এই বাধন হতে মুক্ত হতে।ফিরে ফিরে আসব তোমার কাছে বারবার।কিন্তু আমি ভেবেছিলাম আজ আমাকে দেখে তুমি রাগ করবে,কথা রাখতে না পারার জন্য ভৎসনা করবে।কিন্তু সেই তুমি জিজ্ঞেস করছ আমি এতদিন কেন আসিনি?যদি তাই হবে তাহলে সেদিন কেন ফিরিয়ে দিয়েছিলে?
কেন নিষেধ করেছিলে তোমার কাছাকাছি আসতে?
—নিষেধ করব না কেন বলো।আমি হিন্দু আর তুমি মুসলিম।আমার বাবা জমিদার প্রতাপ নারায়ন আর তোমার বাবা হারুন চৌধুরী।ধর্মের বিরোধ এর পাশাপাশি তাদের রয়েছে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা।যেখানে পুরো সমাজ আমাদের বিরুদ্ধে সেখানে কি করে আমরা এক হবো বলো।
—ভালবাসা কি জাতি,ধর্ম বা সমাজ মানে।ভালবাসা তো অন্ধ।কিন্তু পারমিতা আমার জন্য তোমাকে সব কিছুর বিরুদ্ধে যেতে হবে না।তুমি তো আর আমাকে ভালবাস না তাই না?
—কি জানি ভালবাসি কিনা।কিন্তু সেদিন যখন তুমি চলে গিয়েছিল তখন দুই চোখ কেন জানি বারবার ঝাপসা হয়ে উঠছিল।প্রতিদিন এই রাস্তার ধারে কাকে যেন খুজতাম।তাকে খুজে না পেয়ে বুকে বিরাজ করত একরাশ শুন্যতা।যদি এই অনুভূতি গুলোকে ভালবাসা বলে তাহলে আমি তোমাকে ভালবাসি।কিন্তু?
—আর কোন কিন্তু নয় পারমিতা আমরা দুইজন দুইজন কে ভালবাসি এটাই সবচেয়ে বড় সত্য বাকি সব তুচ্ছ।জানি না আমাদের ভাগ্যে কি আছে।কিন্তু ওয়াদা করলাম আজ থেকে বাঁচলে একসাথে আর মরলে আমরা একসাথে মরব।

হিমেল আর পারমিতা ছুটছে।তাদের গন্তব্য ওই রেল লাইন।ভালবাসার নৌকায় ভাসতে দেয় নি তাদের এই সমাজ।তাই তারা আজ চলে যাচ্ছে পৃথিবী ছেড়ে।একসাথে মরার ওয়াদা পালন করার জন্যই তাদের এই ছুটে চলা।বেশ দূরে দেখা যাচ্ছে কিছু ক্রোধে দিশেহারা গ্রামবাসী কে।তারা আসছে হিমেল আর পারমিতা কে আলাদা করার জন্য।তাদের সমাজে এমন প্রেমের কোন জায়গা নেই।
হিমেল আর পারমিতা পৌছে গিয়েছে রেল লাইনে।লোহার পাতে মোড়া লাইনের উপর শুয়ে পড়ল ওরা।ট্টেন আসছে।সহসা পারমিতার মনে হলো একি করছে তারা।সব হাল ছেড়ে দিয়ে পৃথিবী ছেড়ে কেন চলে যাচ্ছে? কেন একবার একসাথে বাচার চেস্টা করছে না?ভালবেসে তো মরে যাওয়া নয় বেঁচে থাকাই সার্থকতা।
পারমিতা তার লাল ওড়নাটা তাদের দিকে আসতে থাকা ট্রেন টার উদ্দ্যেশে নাড়াল।ট্রেন টা হুইসেল বাজিয়ে থেমে গেল তাদের থেকে অল্প একটু দুরত্বে।হিমেল পারমিতা উঠে পড়ল ট্রেনে।ছেড়ে দিল রেলগাড়ি।আগ্নেয়গিরির স্রোতের মত গ্রামবাসি যখন রেল লাইনের কাছে পৌছাল তখন হিমেল আর পারমিতা চলে গিয়েছে অনেক দূর।আর কোন ভয় নেই তাদের।এবার ভালবাসার ঘর বাধার স্বপ্ন দেখবে তারা নির্ভয়ে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.