![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছে সন্ধ্যার।২ দিন ধরে তাকে ফোন দিচ্ছে না অয়ন।অবশ্য সন্ধ্যাই ফোন করতে মানা করে দিয়েছিল অয়নকে।কিন্তু তা তো রাগের বশে।সন্ধ্যার রাগ খুব বেশি তাই প্রতিবারি এমন রাগ করলে বারবার ফোন দিয়ে স্যরি বলে অয়ন সন্ধ্যার রাগ ভাঙায়।কিন্তু এইবার আর ফোন করেনি সে।স্যরি বলেনি।অথচ সে একটা গুরুতর অপরাধ করেছে।গত পরশু তাদের ভালবাসার প্রথম বছর পূর্ন হলো অথচ অয়নের তা মনে ছিল না।সন্ধ্যাকে রাত ১২ টায় ফোন দিয়ে উইশও করেনি।সারারাত ফোন টা হাতে নিয়ে জেগে ছিল সন্ধ্যা।কিন্তু কোন ফোন আসেনি।তাই সকাল হতেই ফোন করে অয়নের কোন কথা না শুনেই তাকে কোনো দিনো ফোন না করতে নিষেধ করে দিয়েছে সন্ধ্যা।কিন্তু আজ কেন জানি খুব কস্ট হচ্ছে তার।ইচ্ছে করছে সন্ধ্যার সাথে কথা বলতে।বুকের ভিতরটা হু হু করে কাঁদছে।কস্ট টা ভুলে থাকতেই ফেসবুকে ঢুকল সে।সেইখানে একটা ভালবাসার গল্প পড়ল সন্ধ্যা।খুব সুন্দর একটা প্রেমের গল্প।কিন্তু শেষ এ দেখা যায় ছোট্ট একটা ভুল বুঝাবুঝির কারনে ছেলে মেয়ে দুটোর মধ্যে সম্পর্কটা ভেঙে পড়ে।আর ছেলেটা আত্মহত্যা করে।গল্প টা পড়েই বুক কেপে উঠে সন্ধ্যার।অনেক হয়েছে অভিমান অভিমান খেলা।সব কিছু বাদ দিয়ে ফোন দেয় সে অয়নকে।কিন্তু ফোন টা সুইচ অফ।তার অয়নের কিছু হয়ে গেল নাতো এইটা ভেবেই সন্ধ্যার বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।পাগলের মত বাসা থেকে বের হলো সে।মানুষের ভীড়ে অয়নকে খুজতে লাগল।কিন্তু এভাবে অয়নকে কিভাবে খুজে পাবে সে? ক্লান্ত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে একটা মাঠের মত জায়গায় এসে পড়ল সন্ধ্যা।এই জায়গায় প্রায় সে আর অয়ন আসত দেখা করার জন্য।তাদের কত ঝগড়া খুন্সুটির এই জায়গাটা আজ শুধুই স্মৃতি।সন্ধ্যা যখন মাঠের ভিতরে এক জায়গায় বসতে যাবে তখনি সে অয়নকে দেখতে পেল।মাঠটা থেকে একটু দূরে বসে আছে সে। কাঁদছে বারবার চোখ মুছছে।দূর থেকেও অয়নকে কাঁদতে দেখতে পেল সন্ধ্যা।কাছে গেল সে অয়নের।মাথা তুলে সন্ধ্যাকে দেখতে পেয়েই অয়ন উঠে পড়ল সেই জায়গা থেকে।চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সন্ধ্যা তাকে থামিয়ে দিল।
—কোথায় যাচ্ছ অয়ন? আমার সাথে কথা বলবে না?
—না বলব না।তোমাকে আমি ভালবাসিনা।এইজন্যই তো আমাদের ভালবাসার প্রথম বছরে তোমাকে ফোন দেইনি।
—সত্যি ভালবাস না? এই মিথ্যা কথাটা আমার চোখের দিকে চেয়ে বলতে পারবে?
সন্ধ্যার এই কথার উওর দিতে পারল না অয়ন।মাথা নিচু করে আস্তে আস্তে বলল, "সেইদিন রাতে তোমার জন্য একটা গিফট কিনতে মার্কেটে গিয়েছিলাম।মানুষের ভীড়ে ধাক্কা লেগে আমার মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে ভেঙে যায়।তা ঠিক করতে সারারাত লেগে যায়।আমি জানতাম তুমি আমাকে রাতে ফোন না করার জন্য রাগ করবে তাই ঠিক করছিলাম সকাল হতেই এক তোড়া লাল গোলাপ কিনে তোমার বাসার সামনে আসব।তোমাকে ভালবাসি বলব।কিন্তু তুমি তার আগেই ফোন দিয়ে আমাকে তোমার সাথে আর যোগাযোগ করতে মানা করে দিলে।রাগে দুঃখে মোবাইলটা আবার আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেল্লাম।প্রতিটা মুহুর্ত তোমাকে মিস করতাম।তোমার মুখ টা এক মিনিটের জন্য ভুলতে পারছিলাম না।মনে হচ্ছিল আমার আত্মাটাকে হারিয়ে ফেলেছি।
আর কিছু শুনল না সন্ধ্যা ঝাপিয়ে পড়ল অয়নের বুকে।বলতে থাকল,
"স্বার্থপর কোথাকার শুধু নিজের কথাই বলে যাচ্ছ।আমার বুঝি তোমাকে ছাড়া একটু ও কস্ট হয়নি।এই দুইদিনে আমি বুঝতে পেরেছি যে খুব ভালবাসি আমি তোমায়।খুব খুব বেশী।বাঁচব না তোমায় ছাড়া।"
—থাক ছাড় আমায়।আমি খুব কস্ট দেই তোমায়।তুমি আমার থেকে খুব ভাল ছেলে ডিজার্ভ করো।
—নাহ আমার আর কাউকে চাইনা শুধু তোমাকেই চাই।তোমাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকার অর্থ নেই।মরে যাব আমি।
—চুপ আর একবার এই কথা বলবে না।কোথাও যেতে দেব না আমি তোমাকে।আই লাভ ইউ আমার সন্ধ্যা।
—আহ কতদিন পর সন্ধ্যা বলে ডাকলে।
এই কথা বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল সন্ধ্যা অয়নকে।যেন ছেড়ে দিলে কোথাও হারিয়ে যাবে তার ভালবাসার মানুষটা।অয়নো সন্ধ্যার চুলগুলো হাত দিয়ে বুলিয়ে দিল।বুকের ভিতরে খুব শান্তি পাচ্ছে সে।মনে হচ্ছে এক যুগ পর ভালবাসার মানুষ টাকে কাছে পেল সে।ভালবাসার মানুষ টার চুলের দেই চিরচেনা সুঘ্রান টার জন্য জীবন টাও বাজি রাখতে পারে সে।
সকাল শেষ হয়ে দুপুর গড়িয়ে এল।বিকার নেই এই দুই ছেলে মেয়ের।পরম মমতা আর ভালবাসায় জড়িয়ে রেখেছে দুইজন দুইজনকে।তাদের কাছে এখন পুরো পৃথিবীর মানুষ জন সব কিছুই যেন অদৃশ্য।এটাই তো প্রেম সেই সত্যিকারের ভালবাসা।
(সন্ধ্যার নীলারোণ্য)
©somewhere in net ltd.