নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যার নীলারোণ্য

সন্ধ্যার নীলারোণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার চমক

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫০

---কেমন আছ মেঘ বালিকা?
—ভাল আছি।আপনি কেমন আছেন চিলেকোঠার রোদ্দুর?
—যেমন দোয়া করেছ ঠিক তেমনি আছি।
—হুম বুঝলাম।আপনার সেই প্রেয়সী কেমন আছে?
_হাঃ হাঃ সে তো আমার নয়।জানি না কখনো আমার হবে কিনা।
—কখনো যদি আপনার হয়ে যায় কি করবেন তখন? কিভাবে তাকে আপনার মনের কথা বলবেন?
—কিছুই বলবো না,ঝুম ঝুম বৃষ্টির মধ্যে শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকব।সেও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবে তাহলেই বুঝবে আমার মনের কথা।
—যাকে নিয়ে আপনার সব কথা,কবিতা,গান সে দেখতে কেমন?
—ও সকালের সূর্যের প্রথম কিরনের মত সুন্দর,শিশির ভেজা পাতার মত স্নিগ্ধ,নীল আকাশের মিটমিটি তারার মত কোমল।
—এই সুন্দর অপ্সরীটির নাম কি বলুন?
—নাম।তা দিয়ে কি হবে?
—কি আর হবে।খুব জানতে ইচ্ছে করছে।বলুন না প্লিজ।
—স্যরি বলা যাবে না।
—ঠিক আছে বলতে হবে না।ঘুম পাচ্ছে আমার। শুভরাত্রি।

তপন শুভরাত্রি বলার আগেই ফোনটা কেটে দিল ফারিন।তপন বুঝল রাগ করেছে ফারিন।কিন্তু বুঝেও কিছু করার নেই তার।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বারান্দায় এসে দাঁড়াল সে।পাশের বাসাটাই ফারিনদের বাসা।ফারিনকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তার।কিন্তু কিভাবে দেখবে? ফারিনকে কখনই বলতে পারবে না, যে সেই হচ্ছে চিলেকোঠার রোদ্দুর আর তার প্রেয়সী আর কেউ না ফারিন নিজে।বুক ঠেলে কান্না বের হয়ে আসল তপনের।ফারিনকে সে কখনই পাবে না কারন ফারিন এক বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে আর সে একজন গ্রাম্য ছেলে।পরের বাসায় আশ্রিত থেকে পড়াশুনা করছে।ফারিন যখন তার আসল পরিচয় জানতে পারবে তখন আর হয়ত তার দিকে মুখ তুলেও তাকাবেনা।তপন আবার ভিতরে ভিতরে গুঙিয়ে উঠল।

কয়েকদিন পার হয়ে গেল ফারিন আর ভালো করে কথা বলে না তপনের সাথে।শুধু বারবার জিজ্ঞেস করে তপনের প্রেয়সীর নাম।কিন্তু তপন কিছু না বলাতে কথা বলা একদমই বন্ধ করে দিল সে।অবর্ননাতীত কস্টে নীল হয়ে গেল তপন।ফারিনের কন্ঠ না শুনে সে আর ঘুমাতে পারে না।তাই একসময় ঠিক করল বলে দিবে সে ফারিনকে সবকিছু।তারপর চলে যাবে এখান থেকে অনেক দূরে।ফারিনকে ফোন দিল তপন কিন্তু ফোনটা কেউ ধরল না।একটা ম্যাসেজ দিয়ে ব্যাগ গোছাতে শুরু করল সে।আজকেই তপন ফিরে যাবে তার গ্রামে।এখানে আর এক মুহূর্ত থাকবে না।

ফারিন দেখল তার মোবাইলে একটা ম্যাসেজ আসছে, সেখানে লিখা-
"মেঘবালিকা আমার পরিচয় জানার পর হয়ত আমাকে ঘৃনা করবে তুমি।আমি তপন।তোমার পাশের বাসায় আশ্রিত একটি গ্রামের ছেলে।আর আমার প্রেয়সী আমার স্বপ্নের রাজকুমারী যাকে নিয়েই আমার সব ভাললাগা সেই মেয়েটা হচ্ছ তুমি।জানতাম তোমাকে ভালবাসার কোন যোগ্যতা আমার নেই তাই শুধু তোমার মিষ্টি আওয়াজ টা শুনেই কাটিয়ে দিতে চেয়েছিলাম সারাটা জীবন কিন্তু তুমি তা হতে দিলে না।তোমার ঘৃনা নিয়ে তোমার সন্মুখে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।তাই চলে যাচ্ছি তোমার থেকে অনেক দূরে।ভাল থেকো।
ইতি
চিলেকোঠার রোদ্দুর।”

ম্যাসেজটা পরে আর এক মুহূর্ত দেরী করল না ফারিন।তাকে এখন অনেক দূর যেতে হবে।

প্লাটফর্মের বেঞ্চের উপর বসে আছে তপন ট্টেনের অপেক্ষায়।হুইসেল বাজিয়ে ট্টেনটা আসতেই বেঞ্চ থেকে উঠে পড়ল সে।ট্টেনে উঠতে যাবে এইসময় পিছন থেকে কে জানি হাতটা চেপে ধরল তার।তপন অবাক হয়ে দেখল হাতটা চেপে ধরেছে তার ভালবাসার মানুষ ফারিন।

—আমি তোমাকে ভালবাসি কিনা তা না জেনেই চলে যাচ্ছ তপন?
—তোমার আর আমার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ ফারিন।এইটা হওয়া সম্ভব না।
—ভালবাসা ধনী গরিব দিয়ে নয় মন দিয়ে হয় তপন।আমিও যে তোমাকে ভালবাসি।আমি সেই প্রথম থেকেই তোমার পরিচয় জানতাম।অপেক্ষায় ছিলাম তোমার মুখ থেকে শোনার।
—হুম ফারিন হাত টা ছাড় সবাই দেখছে তো।
—না ছাড়ার জন্য তো ধরিনি।আজ তোমার প্রেয়সী তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।তাকে বলো এবার তোমার মনের কথা।
এই কথা শুনে গাড় ভালবাসা পূর্ন চোখে ফারিনের দিকে তাকালো তপন।ফারিন দেখল আসলেই তপনের চোখে ফুটে উঠেছে তার মনের কথা।ফারিনের জন্য একরাশ গাড়ো ভালবাসা।

প্লাটফর্মের মানুষগুলো অবাক চোখে দেখছে ছেলে মেয়ে দুটোকে।ঝুম বৃষ্টিতে ভিজছে দুইজনেই। তাকিয়ে আছে একে অপরের দিকে।সেই দৃষ্টিতে কোন লোভ নেই,কাম ও নেই শুধু পবিত্র ভালবাসা।

(সন্ধ্যার নীলারোণ্য)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৬

আবির আহমেদ খান বলেছেন: ভালো লিখেছেন!!! :)

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

সন্ধ্যার নীলারোণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.