![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উৎসর্গঃ বাংলাদেশের সকল সম্ভাবনাময় হারিয়ে যাওয়া ছাত্রনেতা।
পর্ব-১
ক্লাস এইটে সবাই যখন এইম ইন লাইফ রচনায় ডাক্তার,ইনজিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছিলো তখন ছেলেটি জাল বুনেছিলো একজন মাহান রাজনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্ন।স্কুলে মেধাবী এবং ভালো সংগঠক হওয়ায় সে ছিলো সবার প্রিয় পাত্র।প্রথমে ক্লাস ক্যাপ্টেন তারপর হাউস লীডার সবকিছু মিলে স্কুলের সহপাঠী থেকে শুরু করে টিচাররা পর্যন্ত সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করলো এই ছেলে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিবিদ হবে।
মেট্রিকে স্ট্যান্ড করে সে তার মেধার স্বাক্ষর রাখলো।কলেজে পা রাখার আগেই বেচমেট (অন্যান্য স্কুল থেকে আসা ছেলে মেয়েরা) সবাই তাকে চিনতো। সে মিশুক স্বভাবের ছেলে সারাক্ষণ জমিয়ে রাখতো এবং সবার সাথে বন্ধুত্ব করতে ভালোবাসতো। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের কলেজের স্যার ম্যাডাম সবার কাছেই সে জনপ্রিয় হয়ে উঠলো।
হঠাৎ একদিন ক্লাসের শুরুতে কলেজের আধিপত্য বিস্তারকারী ছাত্রশিবির এসে কলেজের একাদশ শ্রেণীর কমিটি (বোর্ডে প্লেস করা সবাই কমিটিতে ছিলো) ঘোষণা করলো।কমিটির মেম্বাররা সবাই নিজেদের নাম শুনে অবাক কিন্তু কারো কিছু বলার সাহস নাই।যথারীতি সভাপতি বানালো হলো সবার প্রিয় আবিরকে।সবাইকে ক্লাসের মঞ্চে যেতে বলা হলো।সবাই শিবিরের বড় ভাইদের আদেশে গিয়ে দাঁড়ালো। উপস্থাপক বড় ভাই সভাপতিকে(আবীরকে) সবার পক্ষ থেকে কিছু বলতে বললেন(কমিটির সভাপতি হয়ে কেমন লাগছে এবং শিবিরের বড় ভাইদের কেমন লাগলো এইসব)।সাবলীল ছেলে আবীর সংকোচ না করে বলতে শুরু করলো------"আমি জানি না আমার সহপাঠী যারা কমিটিতে আছেন তারা আগে থেকে জানো কিনা(কমিটিতে থাকার ব্যাপারটা) বাট অনেস্টলী স্পীকিং আমি কিছু জানতাম না।জানলে আমার প্রান থাকতে শিবিরের কোনো কমিটিতে আমার নাম ঘোষণা হতো না কারণ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে রাজাকারদের করা দলের কমিটির সদস্য হতে পারি না"...আবিরের কথা বলার মাঝখানেই শিবিরের এক বড়ভাই ধমক দিয়ে বললেন এই কমিটি কলেজের ডিসিপ্লিন দেখার জন্য এবং তোমাদের ভালোর জন্য করা হয়েছে।তখন আবির বললো সরি ভাইয়া এই দয়িত্ব অন্য কাউকে দিন আমাকে দিয়ে হবে না।
সেদিন আবিরের সাহস আমাদের কাছে আবিরকে একজন নির্ভীক ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয় (যদি ও সে তখন পর্যন্ত কোনো ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলো না)।
পর্ব-২
আবির সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। চার ভাই বোনের মধ্যে আবির ছিলো ২য়( ইমিডিয়েট বড় বোন ছিলো)।খুব ভালো ক্রিকেট খেলতো।আবির ছিলো ফ্যামিলির বড়ছেলে।আবির কাউকে কখনো মন খারাপ করে থাকতে দিতো না।কেউ মন খারাপ হওয়াটা সম্ভবত আবির অলৌকিকভাবে বুঝে ফেলতো!!! আমাদের স্কুলে কখনো গড়(১ম সাময়িক+২য় সাময়িক+বার্ষিক) হতো না। অনেকটা শেষ ভালো যার সব ভালো তার টাইপ ব্যাপার।আবিরের ক্লাস সিক্স টু নাইন ১ম সাময়িকে ফেল করতো,২য় সাময়িক কোনোরকম টেনেটুনে পাস এবং বার্ষিকে গিয়ে রীতিমতো ১ থেকে ৫ এর মধ্যে।আবার অনেকেই সারাবছর ভালো করে বার্ষিকে এসে আবিরের কাছে হেরে যেতো।এইজন্য অনেকেই আবিরের ব্যাপারে জেলাস ছিলো।এরপরো আবিরকে ভালোবাসত না পুরো স্কুলে এরকম একটা ছেলে খুঁজে পাওযা কষ্টসাধ্য ছিলো।
কেমন যেনো সপ্রতিভ,প্রান চাঞ্চল্যে ভরা,টেনশন ফ্রি যেন মানুষকে ভালোবাসাটাই সব এরকম একটা ব্যাপার ছিলো ওর মধ্যে।প্রচন্ড সহজ-সরল এবং মানুষকে খুব বিশ্বাস করতো।পুরো ক্লাসে কার ফ্যামিলিতে কি সমস্যা,কে কেনো স্কুলে আসেনি সবকিছু আবির জানতো।আমি নিজেই পার্সোনালী আবিরের সাথে অনেক কিছুই শেয়ার করতাম।ওকে দেখলেই কেমন যেনো একটা ভালো লাগা ভর করতো।মনে হতো একজন সত্যিকার বিশ্বাসী বিপদের বন্ধু।
ক্লাস টেনে সাত্তার স্যারের বউয়ের জন্য আবিরের উদ্যেগে ফান্ড রেইজ করা হলো (আমরা এসব ব্যাপারে কিছু জানতাম না,আবির কিভাবে যেন জানতে পেরেছিলো স্যারের বউয়ের হার্টের সমস্যা,ইমিডিয়েট অপারেশন করা জরুরী।আবির আমাদের সবাইকে বুঝিয়ে বললো আমাদের স্যারের দুঃসময়ে স্যারের পাশে থাকতে হবে)।এখনো চোখে ভাসে স্যারের হাতে সংগৃহীত টাকা তুলে দেয়ার সময় স্যার আবিরকে জড়িয়ে ধরে কেদেঁছিলেন।
এবার আসি আবার কলেজ লাইফে-----
শিবিরের সাথে বিরোধীতা করে আবির শিবিরের চক্ষুশূল হয় ঠিকই কিন্তু সেটা তেমন ব্যাপার হয়নি কারণ সরকারী কলেজে ক্লাসের তেমন বালাই ছিলো না।আমরা বেশীর ভাগ সময় কলেজে আড্ডা দিতে যেতাম আর পড়াশুনার ব্যাপরটা ছিলো স্যারের বাসাকেন্দ্রিক।আবিরের ছিলো অসীম স্বাধীনতা।সারাদিন সে অনেক কিছু করে বেড়াতো (আমি নিজে মাম্মী-ড্যাডী টাইপ ছিলাম)।একদিন আবির আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবে বললো এইজন্য আমাকে বাসা থেকে পুরো দিন ম্যানেজ করতে বললো।আমি অনেক সিস্টেম করে সকাল বেলা বাসা থেকে বেরিয়ে কলেজে এসে হাজির।কলেজে ঢুকতেই দেখলাম আবির আমার জন্য অপেক্ষা করছে।তারপর আবির আমাকে নিয়ে রওনা দিলো(আমি কিন্তু কিছুই জানি না কোথায় যাচ্ছি)।প্রথমে গেলাম সদর ঘাট।কর্ণফুলী নদীতে ফেরী পার হয়ে গেলাম পশ্চিম পটিয়ার একটি গ্রামে(দুঃখিত গ্রামের নামটা আমার মনে নেই)।আমি আবিরকে জিজ্ঞেস করলাম এখানে আসলাম কেনো? আবির বললো দেখ বাংলাদেশের ৮০% মানুষ গ্রামে থাকে আর যে পলিটিসিয়ান হতে চাইবে তাকে অবশ্যই গ্রামকে ভালোভাবে জানতে হবে,জানতে হবে গ্রামের মানুষগুলোকে।আমার এমনিতেই গ্রাম ভালো লাগতো।কারণ আমার জন্ম,বেড়ে ওঠা সবকিছু চট্টগ্রাম শহরে তাই গ্রাম ছিলো আমার কাছে ভেরিয়েশনের মতো।ওখানে গিয়ে দেখলাম সবাই আবিরকে চেনে,জানে এবং আবিরের অনেক পরিচিত।আবির নাকি সেখানে নিয়মিত যায় এবং ওখানে সমাজসেবামূলক অনেক কিছুই করে এই যেমন আমাদের বয়সী ছেলেপেলে নিয়ে সমবায় করে একটা লাইব্রেরী করেছিলো(এরকম আরো অনেক কিছুই)।
ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় আবির মোটামুটি রেজাল্ট করলো (মেট্রিকের মতো ভালো না)
ইন্টার পরীক্ষার পর পর আমরা সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিলাম।আমি ঢাকার মালিবাগে খালার বাসার থেকেছি বুয়েট কোচিং এর জন্য।অন্যান্য ফ্রেন্ডরা ও যে যার সুবিধামতো নিজের লাইফ গুছানোর কাজে ব্যস্ত ছিলো।আবির চিটাগাংয়ে কোচিং করেছিলো।
এডমিশন পিরিয়ড শেষে স্কুল লাইফের ক্লোজ ফ্রেন্ডদের বেশীর ভাগ বুয়েটে ঠিকলো মাঝখান থেকে বাদ পড়ে গেলো আমাদের আবির।ওরচে অনেক খারাপ স্টুডেন্ট(স্কুল,কলেজের রেজাল্টের হিসেবে) বুয়েটে চান্স পেয়েছিলো কিন্তু বেচারা আবির মিস করে ফেললো।পরে আবির ঢাকা ভার্সিটিতে এডমিশন নিলো।
পর্ব-৩
বুয়েটে পড়তে পারেনি এজন্য আবিরের কোনো হতাশা ছিলো না।ঢাকা ভার্সিটিতে নিজের পছন্দমতো সাবজেক্টে ভর্তি হয়ে সে খুশী ছিলো। আবির ভার্সিটি লাইফের প্রথম হোচঁট খেলো হলে উঠার সময়।ঢাবি হলে সীট না পেয়ে সে আমার সাথে বুয়েটের হলে থাকতে আসে কিছুদিনের জন্য।আমরা যারা বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলাম আমাদের কারো হলে ওঠা নিয়ে কোনো প্রবলেম ফেস করতে হয়নি।আমার ফ্রেন্ডদের সবাই জাস্ট এক সপ্তাহর মধ্যে হলে উঠতে পেরেছিলো। আবির আমাদের সাথে ডাবলিং করে থাকতে লাগলো।কিন্তু ছেলেটার আত্মসম্মানবোধ অনেক বেশী।একে তো সে বুয়েটে ভর্তি হতে পারেনি তার উপর অন্যের আশ্রিত।প্রতিদিন সকালে সে ক্লাস করতে যেতো এবং রুটিন করে বড় ভাইদের কাছে ধরণা দিয়ে আসতো হলের সীটের জন্য।একদিন এসে অনেক খুশী হয়ে বললো সে সিট পেয়েছে হলে।২/১ দিন পর আবির ঢাবির হলে গিয়ে উঠলো। হলে উঠার সপ্তাহখানেক পর একদিন আবির আমার রুমে এসে অনেক ঠান্ডা হয়ে বসেছিলো।এতো কথা বলা মাতিয়ে রাখা একজন মানুষকে হঠাৎ চুপ করে থাকতে দেখাটা একটা অসহ্যজনক ব্যাপার।জিজ্ঞেস করলাম--------
কিরে তোর টাকা-পয়সা আছে তো?
আবিরঃ হুম
তাহলে এরকম মন খারাপ করে বসে আছিস কেনো?
আবিরঃ আমার বই খঁজে পাচ্ছি না।
এটা আবার কি ধরণের কথা,বই খুঁজে পাবি না কেনো?
আবিরঃ তোদেরকে বলিনি আসলে আমি গণরুমে উঠেছি।নতুন বই কিনেছিলাম গতকাল সন্ধ্যায়।ঘুমানোর সময় মাথার পাশে রেখেছিলাম।সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বইগুলো নাই।
তখন আমি আবিরকে বললাম তুই গণরুমে না থেকে আমার সাথে আর কিছুদিন থেকে যা।
আমার অনেক পীড়াপীড়িতে আবির থাকতে রাজী হলো।
এবার দেখলাম আবির সকালে একসাথে আমার সাথে বের হয় কিন্তু রুমে ফিরে রাত ১২টার দিকে।জিজ্ঞেস করলে বলতো ভার্সিটির ফ্রেন্ড এবং সিনিয়রদের সাথে আড্ডায় ছিলো তাই দেরী হয়েছে।
৩সপ্তাহ থাকার পর আবির বললো এবার সে রুম পেয়েছে তাই চলে যাবে।
ভালো কথা আমি ওকে হলে তুলে দিয়ে আসতে চাইলাম কিন্তু ও আমকে সাথে নিতে চাইলো না। আমার অনেক অবাক লাগতো আবির কখনো আমাদের কাউকে ঢাবিতে নিয়ে যেতে চাইতো না এবং ঢাবির কোনো ফ্রেন্ডদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতো না।
আমাদের আরো কিছু স্কুল,কলেজের ফ্রেন্ড ঢবিতে পড়তো।সবাই বুয়েটে এসে থাকতো আড্ডা দিতো কিন্তু একজন(আবির) বুয়েটের রাস্তা ভূলে গেলো।অন্যদের কাছে শুনতাম আবির অনেক ব্যস্ত সময় কাটায়--রাজনীতি,ডিবেট,নাটক,আবৃত্তি এমন কোনো কাজ নাই যেটা আবির করে না।অন্য ফ্রেন্ডদের অনেকেই আবিরের জোরে হলে সিট পেয়েছিলো।অল্প কিছুদিনেই সে ঢাবির অনেকের কাছেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।আবির অনেক কিছুই করছিলো কিন্তু ওর বাবা মা ওকে ঢাকা পাঠিয়েছিলো সে কাজ অর্থাৎ পড়াশোনা থেকে আবির একটু একটু করে দূরে সরে যেতে লাগলো।
১ম বর্ষের সব বিষয় পাস করতে পারেনি। যতো সময় যাচ্ছিলো আবিরের ব্যস্ততা ততোই বাড়ছিলো।
একটা সময় ফ্রেন্ড সার্কেল থেকে আবির অনেক দূরে সরে গেলো।সবচে দুঃখজনক ব্যাপার ছিলো আবির ফ্যামিলি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলো।একদিন আন্টি(আবিরের মা) আমাকে ফোন করে কান্না করেছিলেন।আন্টি বলছিলেন আবির বাসা থেকে কোনো টাকা নেয় না,বাসার সাথে কোনো যোগাযোগ রাখে না।আমি আন্টিকে বললাম আমি ওর সাথে কথা বলে ওকে বুঝিয়ে বলবো।
আমি আবিরের সাথে দেখা করে ওকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম----
আবির তুই ভূল পথে পা বাড়িয়েছিস
আবিরঃ কোনটা ভূল পথ?পলিটিক্স!!!! আরে দূরে যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে কথা বলিস না।এটা আমার লাইফ।আমি দেশের মানুষের জন্য নিজের লাইফটাকে উৎসর্গ করেছি।আমি দেশটাকে এবং স্টুডেন্ট পলিটিক্সকে বদলে দিবো।তোদের মতো মাম্মী-ড্যাডীর ছেলে হয়ে সবাই যদি তোদের কথিত নোংরা রাজনীতি থেকে দূরে থাকে তাহলে এদেশের মানুষের কি হবে? শূণ্য স্থান কখনো খালি থাকে না।আমি ভালো চিন্তা এবং যোগ্যতা নিয়ে পলিটিক্সে না যায় তাহলে এই জায়গা পূরণ করবে কোনো নোংরা মানুষ।আমি যদি একটা পার্টির ছাত্র সংগঠনের টপমোস্ট পজিশনে যেতে পারি তাহলে আমার ভালো চিন্তাটা হবে ঐ ছাত্র সংগঠনের চিন্তা।তোদের মতো ডাক্তার,ইনজিনিয়ারের চে এখন দেশে ভালো পলিটিশিয়ান বেশী দরকার।একজন ভালো পলিটিসিয়ান পারে শুধু দেশ এবং সমাজকে চেঞ্ঝ করতে।দেশের সেরা ভার্সিটি থেকে শুধু কেমিস্ট,সফটওয়্যার ইনজিনিয়ার,ফার্মাসিস্ট বের হলে পলিটিসিয়ান হবে কারা???
আমিঃ দেখ আবির, তুই একা কিছু পারবি না।সবাই তোর মতো ভাবে না।বিরুদ্ধ স্রোতে বেশীদিন সাতাঁর কেটে ঠিকে থাকা যায় না।এসব লেজুড় পলিটিক্স তোর জন্য না। আর তাছাড়া তুই আঙ্কেল-আন্টির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলি কেনো?পলিটিক্স করার মানে কি সমাজ,ফ্যামিলি সবকিছু থেকে দূরে সরে যাওয়া ???
আবিরঃ শতাব্দী একজনকে দিয়ে শুরু হয়।আমি একলা ভালো সূচনা নিয়ে আগালে আমার সাথে অনেকেই আসবে।ভালো কিছু পেতে হলে অনেক সেক্রিফাইস করা লাগে।লেজুড়বৃত্তিটাকে আমি কম্প্রোমাইশ হিসেবে নিয়েছি।মানুষ লাইফের অনেক ক্ষেত্রেই কম্প্রোমাইশ করে আমি না হয় পলিটিক্সের জন্য একটু করলাম। এনি হাউ একবার প্লাটফরম চাই।একবার প্লাটফরমে উঠতে পারলে আমি বাংলাদেশের মানুষকে ভালো পলিটিক্সের স্বরুপ দেখাবো।আমি আমার লক্ষ্যে যাওয়ার জন্য যা যা করতে হবে তার সবকিছুই করে যাচ্ছি।শুধু মনে রাখবি পলিটিক্স হচ্চে আমার লাইফ তাই প্লিজ দয়া করে আমাকে এসব জ্ঞান দিতে আর আসিস না।
আমি আবিরকে বোঝাতে না পেরে হতাশা নিয়ে চলে আসি।
পরে জানতে পেরেছিলাম আবির ঐ বছর ঈদে বাড়ী যায়নি।
পর্ব-৪
দেখতে দেখতে আমাদের সবার ভার্সিটি লাইফ শেষ হওয়ার পথে।
ঠিক তখনি আবিরের ফ্যামিলিতে চরম দুঃসময়।একদম হঠাৎ করে আবিরের বোন মারা গেলো।এর কিছুদিন পর আবিরের বাবার ব্রেইন স্ট্রোক করলেন।সবচে বড় ঝামেলার ব্যাপারটা ছিলো বড় বোনের শোকে আবিরের ছোটো বোনের মানসিক ভাবো অসুস্থ হওয়া।সবকিছু মিলে কোনো ফ্যামিলির এরচে খারাপ অবস্থা হওয়া পসিবল না।
(আবিরের সব দুঃসময়ে আমরা ফ্রেন্ড সার্কেল আবিরের পাশে ছিলাম,এই যেমন আবিরের বোনকে বাচাঁনোর জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলের ফ্রেন্ডরা প্রানপন চেষ্টা করেছিলো।তারপর আবিরের বাবার অসুখের সময় আমাদের ডাক্তার বন্ধুদের চেষ্টাকে শুধু স্যালুট দিয়ে হয়তো মর্যাদা দেয়া যাবে না)
ততোদিনে ১/১১ হয়ে গেছে বাংলাদেশে।ফ্যামিলির আকস্মিক বিপর্যয় গুলো দেখে আর আবির তার মহান স্বপ্নের পথে ছোটার সাহস পেলো না।আমরা পাস করে বুয়েটের হল ছেড়ে নতুন বাসা নিয়েছি(৮জন বন্ধু একসাথে)।আবিরকে জোড় করে আমরা ঢাবি হল ছাড়িয়ে আমাদের বাসায় নিয়ে তুলেছি।আবির আমাদের কাছে টিউশনী চাইল।আমরা প্রানপন চেষ্টা করে আবিরকে টিউশনী যোগার করে দিলাম।মজার ব্যাপার হলো আবির আমাদের কাছে মেট্রিক-ইন্টারের পড়া গুলো পড়লো নতুন করে।একদিন আমাদের বলছিলো পলিটিক্স করে কিভাবে লিখতে হয় আমি তাই ভুলে গেছি।দেখতে দখতে আমাদের বন্ধুরা একে একে দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমাতে শুরু করলো।অনেকেই বিয়ে করলো।আবার অনেকেই চাকরী নিয়ে ঢাকার বাইরে চলে গেলো।
আবির প্রতিমাসে বাসায় টাকা দেয়।নিজের ফ্যামিলিকে আগলে রেখেছে।ছোটোবোন সুস্থ গয়ে অনার্স শেষ করার পথে।আবির হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই চাকরী করে ঘর সংসার করবে।আবির অনেক বদলে গেছে।আগের মতো অনেক কথা বলতো না।আসর জমিয়ে রাখতো না।আবিরকে দেখলে আমাদের অনেক কষ্ট হতো।আবির প্রচুর খাটতে পারতো।সারাদিন ক্লাস করে টিউশনী করে রাতে এসে পড়তো।আবির পলিটিক্সের কারণে রেগুলার ব্যাচ থেকে ৩বছর পিছিয়ে গিয়েছিলো।
আবির অনেক চাপা স্বভাবের ছেলে।মানুষের কষ্ট বুকে নিতো কিন্তু নিজের ব্যাপারে ছিলো নিশ্চুপ।আমরা ও ওকে বেশী ঘাটাতাম না।
একদিন আমাদের বাসায় একজন বন্ধু তার বাইরে যাওয়া উপলক্ষে ড্রিঙ্ক পার্টি দিলো। সবাই অনেক ফানমুডে ছিলাম।আবির মাতাল হয়ে নিজের অনেক বছরের জমানো কষ্টগুলো উগরে দিলো।আবির কাদঁছিলো আর চিৎকার করে বলছিলো--------
"আমি তো যা চেয়েছিলাম সৎ ভাবে মন থেকে চেয়েছিলাম,পেলাম না কেনো?
আমাকে হলের সীটের জন্য পলিটিক্স করতে হলো কেনো?তোরা বুয়েটে পড়েছিস তাই তোদের আমি বুঝাতে পারবোনা বাসা ছেড়ে আসা একটা ছেলের জন্য হলে সীট নিয়ে ঝামেলা পোহানো কতোটুকু কষ্টের।ওখানে কিছু নরপিশাচ থাকে যারা চানখার পুলে নিয়ে নতুন আসা ছেলেদের ভরপেট খাওযায় তারপর নিয়ে যায় মানুষ পিটানোর জন্য(যেদিন এসব পিশাচ ভরপেট খাওয়াতো সেদিন কোনো অপারেশনে যেতে হতো)।আওয়ামীলীগ,বিএনপি সব লোক দেখানো।আমি নিজের চোখে দেখেছি ওরা এক বোতলের মদ খায়,শুধু ডিফারেন্স হচ্ছে যে পাউয়ারে থাকে বোতলটা সে স্পন্সর করে।দিনের বেলায় লোক দেখানো পলিটিক্স আর রাতের বেলায় একসাথে মাস্তি করা।সব শুয়োরের বাচ্ছা হিপোক্রেট।আমি অনেক ট্রাই করেছি এসব নোংরামী এড়িয়ে পলিটিক্স চালিয়ে যাওয়ার কিন্তু পারিনি আমি হেরে গেছি।আমি এখন শুধু আমার ফ্যামিলির জন্য বেঁচে আছি।আমি ছাড়া ওদের কেউ নেই তাই আমি পৃথিবীতে মাটি কামড়ে পরে আছি,আমার আসলে বেচেঁ থাকার কোনো মোহ নেই।আমি এখন আমার নিজের পলিটিক্যাল মোটিভেশন টাকে চেঞ্ঝ করে নিয়েছি।আগে ভাবতাম দেশ এবং সমাজ বদলে দিবো আর এখন ভাবি "আমি" বাংলাদেশের সবচে ছোটো ইউনিট।আমার ফ্যামিলি বাংলাদেশের একটা ছোটো অংশ।আমি যদি নিজের যত্ন নিতে পারি তাহলে আমি ভালো থাকব এবং আমার ফ্যামিলি ভালো থাকবে।আমি বাংলাদেশের ৫জন(আবিরের ফ্যামিলি) মানুষকে ভালো রাখতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে।আমি সান্তনাসূচক ফিলোসফি দাঁড় করিয়ে কোনোরকমে নিজেকে বাচিঁয়ে রেখেছি।আমার আসলেই জীবনের প্রতি আর কোনো মোহ নেই।"
আমরা এধরণের কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।তারপরো আমরা ওকে বোঝানোর ট্রাই করলাম----
দেখ আবির আজকে কিংবা এখন হয়তো তোর সময় না কিন্তু ১০ বছর পর হয়তো সিচুয়েশান এরকম থাকবে না।যখন-তখন লীডারের জন্ম হয় না,একটা জাতি লীডার পায় ক্রান্তিকালে।তুই ইতিহাসের দিকে তাকালেই দেখবি নেলসন ম্যান্ডেলা,মাহাত্মা গান্ধী,বঙ্গবন্ধু সবাই জাতির দুঃসময়ের লীডার ছিলেন।আমাদের এখন মাঝামাঝি সময় তাই এখন তুই চাইলে ও কাউকে গরজ বোঝাতে পারবি না। ভূল সময়ের ভূল পলিটিক্সে হতাশা থেকে কেনো তুই নিজের রাজনৈতিক সত্তাকে মেরে ফেলবি।ইনশাল্লাহ একদিন তোর সময় আসবে।তুই তোর ইচ্ছে পূরণ করতে পারবি.....সব মাতাল মেনটাল স্ট্রেস নিয়ে টাইয়ার্ড হয়ে একসময় ঘুমিয়ে পরেছি।
সকালটা একটা নতুন সকাল ছিলো কেউ সচেতনভাবে রাতের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলিনি।
কিন্তু আবিরের কথাগুলো আমার মাথায় ঘোরে,আমরা কি আসলেই নিয়তির কাছে হেরে যাওয়ার জন্য এসেছি???
এভাবে আমার প্রিয় ছাত্রনেতাকে মৃত্যুবরণ করতে দেখেছি।
বিঃদ্রঃ অনেক জায়গায় "আমি" ব্যাবহার করেছি চরিত্রের আধিক্য কমানোর জন্য।"আমি" আসলে ১০-১২ জন আবিরের বন্ধুকে নিয়ে।আরো অনেক কিছু লেখার ছিলো তবু ও লেখা হলো না।সামারী করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
রিলেটেড লিঙ্ক
একজন ছাত্রনেতার মৃত্যু-১
একজন ছাত্রনেতার মৃত্যু-২
একজন ছাত্রনেতার মৃত্যু-৩
একজন ছাত্রনেতার মৃত্যু-৪(শেষ পর্ব)
আপনার কিংবা আমার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চান্স কতোটুকু?????
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২৮
নষ্টছেলে বলেছেন: সেচ্ছা নির্বাসনে...আবিরের জন্য শুভকামনা ও যেন রাজসিকভাবে ফিরে আসতে পারে।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৩৬
জাফর সািদক রুমী বলেছেন: (আর মাত্র ১ দিন বাকি) Click This Link
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৮
নষ্টছেলে বলেছেন: লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৬
উরা-ধুর০০৭ বলেছেন: কিসুই করার নাইরে ভাই.......৩৯ বছরের তিলে তিলে জমে থাকা আবর্জনা হঠাত করে একসাথে সরানো বা একা একা সরানো সম্ভব নয়.........আর এভাবে যদি কেও সরাইতে চায়...... তাইলে হয় সে ভাইঙ্গা যাবে..... নইলে মচ্কায়া যাবে............
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩২
নষ্টছেলে বলেছেন: হয়তো কিছু করার নাই তবু প্রয়োজনকে তো অস্বীকার করতে পারবোনা আমরা।ফেসবুকের ইনফো দেখলে প্রায় দেখি সবাই লিখে রেখেছে "আই হেইট পলিটিক্স" কিন্তু আমাদের এখন সবচে বেশী দরকার ভালো পলিটিশিয়ান।আবির'রা যুদ্ধ করে হয়তো হেরে যাচ্ছে কিন্তু এদের আত্মত্যাগের জন্যই একদিন পাবো আমরা আমাদের স্বপ্নের রাজনীতিবিদ এই প্রত্যাশায় আছি।
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫৮
মো: মাসুদুর রাহ্মান বলেছেন: একটানে পড়ে ফেললাম।
আবির ভাইয়ের জন্য কষ্ট লাগছে।
নিয়তি আমাদের নিয়ে খেলা করে বড়ই নিষ্ঠুর এই নিয়তি
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:০৯
নষ্টছেলে বলেছেন: নিয়তি আমাদের নিয়ে খেলা করে বড়ই নিষ্ঠুর এই নিয়তি
৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০১
নষ্ট ছেলে বলেছেন: বর্তমানে ঢাবির হলের চিত্রটা আসলে এমনই। ছাত্রনেতারা ১৫-২০ বছর ধরে হলে থাকে, কেউ কেউ বিয়া করছে এমনি বাচ্চাও আছে তারপরও হলের সিট ছাড়ে না প্রথম বর্ষের কোন সাধারণ ছাত্রকে প্রথমে গণরোম উঠা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪ জনের একটা রোমে ১৪-১৮জনও থাকতে হয়!!!! হলে উঠার পর কোন রাজনৈতিক তদবির ছাড়া দু'এক বছরের মধ্যে সিঙ্গেল সিট পাওয়া অসম্ভব!
ছাত্ররাজনীতি এখন যে পর্যায়ে আছে আমার মতে এটা একেবারে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। যার ১০টা খারাপ দিকের বিপরীতে একটাও ভাল দিক নেই সেটা রেখে কি লাভ?
যাই হোক, আবিরের জন্য শুভ কামনা রইল।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩৭
নষ্টছেলে বলেছেন: হল লাইফ যে কারো হতাশার জন্ম দিতে পারে সেটা প্রথম আবিরের কাছে জেনেছিলাম।
৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৮
স্বপ্ন ও সমুদ্র বলেছেন: বাস্তব। কঠিন বাস্তব।
রাজনীতির নোংরামীতে আর কত আবীরের জীবন নষ্ট হবে?
কিছুই কি করার নেই?
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১৩
নষ্টছেলে বলেছেন: আমাদের কি কিছুই করার নেই?
এই উত্তর যাদের কাছে চাইবেন তাদের ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে পড়াশোনা করে আর তাই আবিরের মতো নীরিহ ছেলেরা তাদের কাছে টিস্যু পেপারের মতো।
৭| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৮
উরা-ধুর০০৭ বলেছেন: আমার এক বন্ধু পলিটিক্স থেকা দুরে থাকার কারণে ঢাবিতে আজকা ৩ বছর হইলো...... এখনো গণরুমএ থাকতে হইতাসে............
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৪৭
নষ্টছেলে বলেছেন: এটাই বাস্তবতা...আমার ধারণা হল কর্তৃপক্ষ হলের সিট দেয়াটা নিজের কব্জায় ভালোভাবে নিলে অনেক ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ বেচেঁ যেতো।
৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:২০
রিক্তন বলেছেন: ভাই পড়ে খুব খারাপ লাগলো।আবির ভাইয়ের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।আর ছাত্র রাজনিতি নিয়ে কিছু না বলি।আমিও ভালো কিছু করবো ভেবে রাজনিতি শুরু করছিলাম।কিন্তু ফলাফল তো আপনি জানেন।কি হবে কিছু হবে,পরিবরতন দরকার,ইত্যাদি ইত্যাদি বলে কোনো লাভ আছে কিনা জানি না।সময়ের দিকে চেয়ে আছি।
লেখার স্টাইল টা খুব ভাল হইছে।অনেক গুলা প্লাস।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৪৮
নষ্টছেলে বলেছেন: আমরা হইলাম ম্যাংগো পিউপল তাই আমাদের চুপচাপ দেখা ছাড়া উপায় নাই তবে অনেক মিডল ক্লাস ফ্যামিলির ছেলে নোংরা রাজনীতির স্বীকার আমি ওদেরকে ট্রিবিউট দেয়ার জন্য লেখাটা লিখেছি।
ধের্য্য নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৯| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:২০
প্রিয়অপ্রিয় বলেছেন: সরাসরি বললে বলতে হয় আমাদের সুশীলগন কুশীল!তারা রাজনীতিকে গালিদেন,রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যর্থ প্রমানে ব্যস্ত,কিন্তু দেশ কিংবা রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখতে যে মানের রাজনীতিক দরকার বা যে মেধাবিদের এগিয়ে আসা দরকার ওনরা তা অস্বীকার না করলেও সে পরিবেশ তৈরিতে মোটেও আগ্রহী নন!!!!!
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪২
নষ্টছেলে বলেছেন: ১০০% সহমত।
১০| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪৩
সন্দীপন বসু মুন্না বলেছেন: রাজনীতির নোংরামীর এটাই নিষ্ঠুর নিয়তি।
হৃদয়গ্রাহী পোষ্টটার জন্য ধন্যবাদ।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:১৩
নষ্টছেলে বলেছেন: আপনি পড়েছেন তাই অনেক খুশী হয়েছি।আমি ব্লগার হওয়ার আগে থেকেই আপনার লেখার ভক্ত ছিলাম।আসলে কাছ থেকে দেখছি তাই লেখার তাগিদ অনুভব করেছি।আমি ভেবেছিলাম অনেক বড় লেখা তাই হয়তো কেউ পড়বে না কিন্তু ভালো ব্লগার আমকে উৎসাহিত করেছেন তাই আমার কষ্টটা সার্থক মনে হচ্ছে। ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
১১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ৯:২৩
বাতাসের রূপকথা বলেছেন: প্রথমে সবচেয়ে ছোট্ট ইউনিট তথা পরিবার, তারপর প্রতিবেশী এবং সবশেষে দেশের জন্য (স্পেশাল কারন ছাড়া) রাজনীতি। আমারও বন্ধু ছিলো বুয়েটে অ্যাডমিশানে দ্বিতীয় হয়ে তার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে ফিজিক্স পড়েছিল ঢাকা ভার্সিটিতে। থাকতো গেস্ট হিসাবে বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে। ওর প্রথম বর্ষের পরীক্ষার দুই দিন আগে বুয়েটের হলের পি জি (পারমানেন্ট গেস্ট) খেদাও কর্মসূচীর আওতায় সে হলছাড়া হয় এবং দ্বিতীয় বর্ষে কোন রকমে হলে সীট ম্যানেজ করে। সে পরবর্তীতে অক্সফোর্ড থেকে পি এইচ ডি। সে এখনো আগের মত নিজের এবং দেশের মুল্যবোধ নিয়ে অবিচল।
আপনার লেখার প্রথম অংশটায় তাকে অত্যন্ত নিবেদিত মনে হলেও পরবর্তীতে হল পলিটিক্সের শিকার হওয়াটা লেখার গতিময়তা অন্য দিকে নিয়ে যায়। এই অসুস্থ পরিবিশে আগে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলা এবং পরবর্তীতে দেশের জন্য ভুমিকা রাখাটাই সবচেয়ে বড় । আপনার বন্ধুটিরও দরকার ছিল স্বনির্ভর হয়ে ফ্যামিলি তথা দেশের জন্য ভুমিকা রাখা। যে নিজে স্বনির্ভর না তার দ্বারা প্রতিবাদ ছাড়া আর কি করা সম্ভব বলুন।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:০৮
নষ্টছেলে বলেছেন: সব মানুষ একরকম হয় না।একেক জনের ইমোশান একেক ভাবে কাজ করে।আমার ফ্রেন্ড ভাবতো ছাত্ররাজনীতি পলিটিসিয়ান শেখার এবং হওয়ার মূল চাবিকাঠি।যাই হোক আমরা ওকে আমদের ছোটো সামর্থ্য দিয়ে অনেক বুঝিয়ে ছিলাম স্বনির্ভর হওয়ার জন্য কিন্তু তখন আমরা ও পারিনি।আমার ধারণা আমার বন্ধুর মতো ঘটনা ভার্সিটি তে খুব কমন।
১২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:২৩
আশার রাজ্যে নিরাশার মেঘ বলেছেন: আবির ভাই এর জন্য কষ্ট লাগছে।
এটাই আমাদের নিয়তি।
এভাবেই আমাদের প্রজন্ম শেষ হয়ে যাচ্ছে দিন কে দিন।
আমরা বোধ হয় আর কখনো মাথা তুলে দাড়াতে পারব না।
কেউ কি নেই আমাদের বাচঁতে?
১৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৩০
েমা খােদমুল ইসলাম বলেছেন: +++++
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫১
নষ্টছেলে বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১৪
রাতের_আকাশ বলেছেন: রিক্তন বলেছেন: ভাই পড়ে খুব খারাপ লাগলো।আবির ভাইয়ের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।আর ছাত্র রাজনিতি নিয়ে কিছু না বলি।আমিও ভালো কিছু করবো ভেবে রাজনিতি শুরু করছিলাম।কিন্তু ফলাফল তো আপনি জানেন।কি হবে কিছু হবে,পরিবরতন দরকার,ইত্যাদি ইত্যাদি বলে কোনো লাভ আছে কিনা জানি না।সময়ের দিকে চেয়ে আছি।
লেখার স্টাইল টা খুব ভাল হইছে।অনেক গুলা প্লাস
+++++++
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫১
নষ্টছেলে বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:১২
চিকন আলি বলেছেন: দুঃখজনক....ব্যাপার। ভালো লেখছেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৪৯
নষ্টছেলে বলেছেন: থেঙ্কস ভাই।
১৬| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:৩২
হুলো বিড়াল বলেছেন: @নষ্ট ছেলে, আমি আপনার সাথে সম্পুর্ণ এক মত নই। ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। বিড়ালের সাথে রাগ করে দুধ খাওয়া বন্ধ করলে কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে?? আমার মনে হয় আপনি নিজ কানে এই কথাটা একজন শিক্ষকের কাছ থেকে শুনে ছিলেন। "উপরে আল্লাহ নিচে আমি, মাজখানে কেও নাই।" ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করলে হল গুলোর নিয়ন্ত্রন যাবে শিক্ষকদের কাছে। তখন ছাত্ররা তাদের খেলনায় পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষক রা ভাল হলে বাংলাদেশের রাজনীতি এত পচে যেত না। আমি বলছিনা যে শিক্ষক মাত্রই খারাপ। আমি অনেক ভাল শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি। তেমন ভাবে অনেক নোংরা মানসিকতার শিক্ষক অ দেখেছি।
ক্ষমতার লোভ খুব খারাপ জিনিস। অযোগ্য ব্যাক্তিরা যখন ক্ষমতাসীন হয়, তখন তারা ভুলে যায় কিজন্য তাদের এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। নিজেদের প্রয়োজন মিটাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
@নষ্টছেলে, আবির ভাইয়ের জন্য দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুএ করার নেই এখন। সব সময় ভাল রা খারাপ দের মোকাবেলা করতে পারে না, কিছু কিছু সময়, খারাপদের দিয়ে খারাপ কে মোকাবেলা করতে হয়। সব ভালরা খারাপ ও হতে পারে না, তাই আবির ভাইয়ের ছাত্ররাজনৈতিক সত্তা মিলিয়ে গেছে। প্রার্থনা করি তিনি যেন বাকি জীবন তার দুঃসহ হল-জীবনের স্মৃতি ভুলে থাকতে পারেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৩৪
নষ্টছেলে বলেছেন: বস আমি কিন্তু বন্ধ করে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে শুরু করার কথা বলেছি একদম বন্ধ করে দেয়ার পক্ষপাতি আমি নই,আপনার সাথে সহমত।কিন্তু এখন যেভাবে চলতেসে তা থেকে আমাদের ভালো কিছু পাওয়ার চান্স খুব কম।এনিওয়ে অনেক অনেক ধন্যবাদ ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য।
১৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৩৩
রোদেলা বলেছেন: এমন হাজারো ফুল মুকুলেই ঝড়ে যায়,আমরা কয়জন তার খবর রাখি ।তবে পরিবার এখানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু বাবা মায়েরি।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫৩
নষ্টছেলে বলেছেন: সবসময় বাবা মায়ের হাতে থাকে না সবকিছু।এনিওয়ে থেঙ্কস আপু
১৮| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:০৭
হুলো বিড়াল বলেছেন: ভাই, প্রথম অংশটা আপনাকে বলি নাই, অইটা লিনাক্স পেঙ্গুঈন এভাটার ওয়ালা নষ্ট ছেলে কে বলেছি।
নিয়মতান্ত্রিকভাবে শুরু করা টাও হবে না। একটা গ্লাসের পানি আপনি ফেলে দিতে পারেন। এক জগ পানি ও ফেলে দিতে পারেন, একটা পুকুর সেচে ফেলতে পারেন, কিন্ত সীমাহীন দূর্ণীতির মহাসাগর সেচে কিভাবে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি চালু করা যেতে পারে?? অন্য কোন কিছু ভেবে বের করতে হবে। আর সমাধানটা এমন কাউকে বের করতে হবে যে ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন। আমরা যদু মধু কদুরা যত সমাধান ই বের করি না কেন, বাস্তবায়ন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।
অনুগ্রহ করে আমাকে বস সম্বোধন করবেন না। ধন্যবাদ।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৫৭
নষ্টছেলে বলেছেন: হুম বুঝতে ভুল করসি
আপনার সাথে সহমত।
উখে বিড়াল মামা
১৯| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:২৫
শাওন ইমতিয়াজ বলেছেন: কমেন্ট করতে ডরাইতেছি। ব্যাপক প্লাস।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫৯
নষ্টছেলে বলেছেন: ডরানোর কিছু নাই।এসব ইস্যুতে সবাইকে নির্দ্বিধায় বলতে হবে এবং এভাবে বলতে বলতেই আমরা নতুন জানতে কিংবা শিখতে পারবো।
ধন্যবাদ।
২০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:০৯
হাম্বা বলেছেন: পড়ব
২১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫০
হাম্বা বলেছেন: ভাই রাজনিতি নিয়ে একটা সেই রকম জ্বালাময় লেখা লেখার চেষ্টা করছি অনেক দিন থেকে।
আপনার এই লেখা পড়ে আরো বেশি উৎসাহ পেলাম।
দোয়া করবেন এই রকম আবিরেরা যেন তাদের আদর্শকে হারিয়ে না ফেলে
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৮
নষ্টছেলে বলেছেন: তাড়াতাড়ি লিখে ফেলেন।অপেক্ষায় রইলাম।
রাজনীতিকে অনেকে ঘৃণা করে কিন্তু আমাদের রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করাটা এখন অনেক প্রয়োজন কারণ একজন ভালো রাজনীতিবিদ পারেন একটি জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে।
২২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ২:১৯
মিথিলা সায়মা বলেছেন: ''নির্মমতায় আচ্ছাদিত আবিরের কঠিন বাস্তবতা ''...খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন,ভালো লাগলো।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:০৫
নষ্টছেলে বলেছেন: কষ্ট করে ধৈর্য্য নিয়ে পরেছেন তাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ.
২৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১৭
আধাঁরি অপ্সরা বলেছেন: রাজনীতির প্রতি ছোট বেলা থেকেই বীতশ্রদ্ধ!
স্পেশ্যালি বাংলাদেশের ন্যস্টি রাজনৈতিক পটভূমি আমাকে কখনো টানেনি! যে দেশের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য সত্যিকার অর্থে সুনির্দিষ্ট আইডল হিসেবে কাউকে না মেনে শুধুমাত্র সামগ্রিক ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয় সেদেশে শত শত ডেডিকেটেড আবিরের প্রতিভূ গল্পের আবিরের ডিভোশনও এই অসুস্থ পরিবেশে তার ব্যাক্তিজীবনে হতাশা আর ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনতে পারেনি...পারবেওনা!
বিসমিল্লায় গলদ থাকলে যত আলোছায়াতেই বেড়ে উঠুকনা কেন চারাগাছটি সতেজভাবে বাড়তে পারবেনা...!!! আর সে গলদ একদিনে একমাসে একজন আবিরের চেষ্টায় সম্ভব নয়!শত শত আবিরের যৌথ প্রচেষ্টা আর স্বার্থ উদ্ধার বা লোক দেখানো ভালবাসা নয়.. দেশমৃত্তিকার প্রতি পলিটিসিয়ানদের সত্তিকারের ভালবাসাই একমাত্র পারবে আপনার, আমার এবং এসকল আবিরদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে!!
তবে প্রশ্ন হল... সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা আর কত আবিরের রাজনেতিক জীবন এভাবে অঙ্কুরে বিনষ্ট হবে?? কে তার দায়ভার নেবে???
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৫৮
নষ্টছেলে বলেছেন: আপ্নার কমেন্ট টা আমার পোস্টকে অলংকৃত করেছে।আপনার সুচিন্তিত মতামত পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।এরকম সচেতনতা আমাদের সবার মধ্যে থাকলে হয়ত একদিন ছাত্রনেতারা জেগে উঠবে এবং সত্যিকার কল্যাণকর ছাত্র রাজনীতির সূচনা হবে এই প্রত্যাশায় থাকলাম।
২৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫০
আমি তুমি আমরা বলেছেন: আফসোস
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৩৭
নষ্টছেলে বলেছেন: নির্মম বাস্তবতা....
২৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০২
রেজোওয়ানা বলেছেন: এখন যে ধরণের শিক্ষাক্ষেত্রের রাজনীতি চলছে আমার মতে এই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার উচিত, কোন দরকার নাই....
অনেক পুরাতন সহপাঠির কথা মনে পরে যাচ্ছে, যারা রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তাদের শিক্ষাজীবনটাই শেষ করতে পারেনি....
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০৮
নষ্টছেলে বলেছেন: আপু আমি আপনার সাথে সহমত। বন্ধ করে দেয়াটাই আপাতত সময়ুপোযোগী সিদ্ধান্ত হবে অন্তত মধ্যবিত্ত ঘরের কিছু নিরীহ ছেলের জীবন বেচেঁ যাবে।
২৬| ৩১ শে জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৩০
ত্রিনিত্রি বলেছেন: ছাত্র রাজনীতির কিছু নিয়ম মালা করা উচিত। যার মাঝে প্রথমে থাকবে যে, মোটামোটি নিয়মিত পাশ না করতে পারলে কোন কমিটির মেম্বার হওয়া যাবে না। এই রাজনীতির জন্য আমার বেশ কিছু ব্রিলিয়ান্ট ক্লাসমেট এখনো পাস করে ডাক্তার হতে পারেনাই। কবে হবে সেটা নিয়ে মনে হয় তাদের কোন আশাও নাই।
পোস্টে প্লাস, ভালো লাগলো লেখনী। যদিও ভালো লাগার মত কোন গল্প না, কষ্ট এবং হতাশার গল্প।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৩৪
জাহাজী পোলা বলেছেন: পুরোটা একসাথে দিয়া খুব ভালো করেছেন ভাই......
পড়লাম একটানা.........
আপনার বন্ধুর জন্য কষ্ট লাগছে .....
উনি এখন কই??