নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি একটু দুর্বলতা আছে। কবিতা পড়তে ও লেখতে ভালোবাসি

নিঃস মুসাফির

বিশাল এই পৃথিবীতে অতি ক্ষুদ্র একজন

নিঃস মুসাফির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যালকুলাসের জানাযা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫২

সময়টা মাগরিবের পর।আমি ও আশরাফ নামাজ পরে আসলাম।চারিদিকে হালকা অন্ধকার।রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে বাজারের ঠিক মাঝখানে দু'জন গুরু মহোদয়ের সাথে দেখা।প্রথমেই সালাম দিলাম তারপর কুশল বিনিময়।স্যার পড়ালেখার অবস্থা জিগ্যেস করল।আমরা উত্তর দিলাম।স্যার কিছুক্ষন কথা বললেন। তারপর প্রসঙ্গক্রমে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে ধর্মের দিকে সম্পুর্ণ ঝুকে পড়াটাও যে ক্ষতিকর তা নানা নজির দিয়ে ব্যাখা করছিলেন।আমি ও আশরাফ পাশে দাড়িয়ে করে শুনছিলাম।হঠাৎ করে লম্বা-পাতলা এক ছেলের আগমন(ঠিক যেন পটল দাߘܩ।হয়তো ভার্সিটিতে পরে।স্যারের পাশে দাড়িয়ে সেও শুনছিল।স্যার তখন হুজুরদের জ্ঞানচর্চার অলসতার দিকটা তুলে ধরেছিলেন।সুযোগের অসৎ ব্যবহার করে ছেলেটি বলে উঠল, "কওমি মাদ্রাসাগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত"(কারন সেখানে জ্ঞানচর্চা হয় না)
হঠাৎ এমন কান্ডজ্ঞানহীন মন্তব্যে আমি অবাক হলাম।কিন্তু তখন কোনো উত্তর দেইনি।আসলে স্যারের সামনে তর্কে জড়াতে চাইনি তাই কিছু বললাম না। চুপ করে রইলাম।কিন্তু কওমি সম্পর্কে তার এত চুলকানি কেন তার ইতিবৃত্তান্ত আমার আর জানা হলো না।
তবে এ কথাটা হৃদয়ে একটা দাগ কেটে গিয়েছিল।দাড়ি নয় কমা নয় একেবারে ফুল স্টপ করে দেওয়া উচিত। এ কেমন কথা! তাই এই কথাগুলা আমার বলতে হচ্ছে।
কওমি মাদ্ররাসা আছে এবং ছিল বলেই এই উপমহাদেশ ইংরেজেদের শাসন ও শোষন থেকে মুক্তি পেয়েছে। কারন ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামের বীজটা কিন্তু কওমিরাই বপন করেছিল। বিনিময়ে জীবনও ত্যাগ করতে হয়েছে শত শত আলেমের।মুক্তিযুদ্ধে যে আলেমের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে সেটা আজ অনুল্লেখ্য হয়ে আছে এসব সংকীর্ণমনাদের কারনে। আলেমরা আছে বলেই আজ তোমরা স্বসম্মানে মরতে পারতেছো।তা নাহলে শুয়োর-কুকুরের মৃত্য আর তোমাদের মৃত্যুর মধ্যে ডিফরেন্ট থাকত না।
আজ তুমি ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্জিনিয়ার আর মেডিকেল থেকে ডাক্তার হয়ে বের হওয়ার আগে তোমার এত বড় গলাবাজি!
তুমি এতটা জ্ঞানচর্চা করো, আর কওমিরা সব মুর্খ (তাই বন্ধ করে দেওয়া উচিত)
আরে আমি তো বলি কওমিরা যা পড়াশুনা করে তা তো তুমি পুনর্জন্মে ফিরে আসলেও পারবা না। একবার তাকিয়ে দেখলেই তো হয়! নকলমুক্ত এক্সাম হল কোথায় আছে? কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরিক্ষার হলে মেসেন্জারে কপি মারে না? উত্তর হবে কওমি মাদ্রসার তারা।আর দেখেছো কি কখনো কোনো কওমি মাদ্রাসার হুজুর ঘুষ নিতে? কোনো ছাত্রকে দেখেছো কভু ইভটিজিং করতে? পত্রিকার শিরোনামে কি কখনো ছাপা হয়েছিল কওমি মাদ্রাসার ছাত্রের হাতে কলেজ ছাত্রী ধর্ষিতা? না কখনো হয় নাই। তাহলে কওমির সমস্যাটা কি?
শিক্ষার মানেটাই বা কি? শরীর মন ও আত্মার সর্বোচ্চ বিকাশ সাধনই হলো শিক্ষা। আর তোমার যদি শিক্ষা অর্জিত হয় তাহলে তুমি নির্লজ্জের মত চেয়ারে বসে ভিক্ষার(ঘুষ)হাতটা কিভাবে বাড়াও?কিভাবে তুমি বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসো। আজও পর্যন্ত কওমিরা যা কখনোই করে নাই।
তাহলে ভেবে দেখ শিক্ষা তোমাদের কতটুকু বিকাশ সাধন করেছে আর কওমিদের কতটুকু করেছে।
হয়তো তোমার প্রশ্ন থাকতে পারে কওমিরা কেন ডাক্তার -ইঞ্জিয়ার হচ্ছে না? তাহলে তাদের সিলেবাসে আর কিভাবে জ্ঞানচর্চা হয়?
তাহলে আমি বলব, আদার বেপারি জাহাজের খবর নেওয়াটা কতটুক বোকা হলে সম্ভব এটা তোমার কাছেই আমার প্রশ্ন।আরে কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও চুড়ান্ত লক্ষই ছিল দীনের খিদমত করা। দীনিচর্চা যাদের লক্ষ তারা কেন বস্তুচর্চা করবে? এরপরেও যদি তুমি না বুঝো। তাহলে তোমার কাছে আমার প্রশ্ন "প্রকৌশলে-মেডিকেলে পড়ে কেউ মুফতি হতে পারে না কেন?" আর তুমি জেনারেল এজুকেটেড বলে কওমি সম্পর্কে যখন তোমার এত চুলকানি, তাহলে তোমার বাবা-মায়ের জানাজায় কওমি হুজুরকে ডেকো না কিন্তু। বরং ক্যালকুলাসের সুত্র দিয়ে জানাযার নামাজটা পড়িয়ে ফেলো।আর বিয়ের সময় হুজুর ডাকার কোনো প্রয়োজন হওয়ার কথা না! কারন ত্রিকোণমিতির সুত্র দিয়ে খুউব ভালভাবেই তোমাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে বলে আমি আশাবাদি।
আর তা সম্ভব না হলে ফিরিয়ে নাও তোমার কথা।ফিরে আসো ইসলামের ছায়াতলে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.