![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা ভ্রমণবিলাসী, ভ্রমণকন্যা বা ভ্রমনপিয়াসু যে নামে ডাকি, তিনি নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিলেন এক লাইনে “I was born to travel” - আমি ভ্রমণের জন্য জন্মেছি। বাংলাদেশের মত একটি রক্ষণশীল পুরুষ আধিপত্য সমাজে নারীরা আপন মহিমায় স্ব-স্ব অবস্থানে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে - নাজমুন নাহার সোহাগী সেসব নারীদের মধ্যে এক জ্বলন্ত দিশারী।
রবি ঠাকুরের স্ফুলিঙ্গ কবিতা [আয় চলে আয়রে ধূমকেতু, আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে, উড়িয়ে দে তোর বিজয়-কেতন] বা কাজী নজরুলের নারী কবিতা [কোন কালে একা হয়নি কো জয়ী পুরুষের তরবারী, প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী]। নজরুলের কবি কল্পিত নারী কবিতার ভাবার্থ উল্টো করে দেয়েছে আমাদের লক্ষ্মীপুরের সেই বিজয় লক্ষ্মী নারী নাজমুন নাহার সোহাগী। প্রেরণা দিতে নয়, বরং প্রেরণার উৎসে পরিণত হয়েছে লাখো ভ্রমনপিয়াসু মানুষের কাছে। বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হামছাদী ইউনিয়নে। ১৯৭৯ সালের ১২ ডিসেম্বর লক্ষীপুর হামছাদী ইউনিয়নের গঙ্গাপুর গ্রামে সোহাগীর জন্ম।
সম্প্রতি বাংলা টিভির ভাইস চেয়ারম্যান নিশাত দস্তগীর সাথে ছায়াসঙ্গী হয়ে নাজমুন নাহার সোহাগী এসেছিল কাতারে। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের চমকপ্রদ তথ্যের সাথে কম খরচে কিভাবে ভ্রমণ করা সাধ্যায়ত্ত করা যায় সেসব বিষয়ে একান্ত কথা হয়েছিল অতি বিনয়ী এই “বিরামহীন বিশ্ব-পথিকের” সাথে। সাথে থাকা অনেক স্থিরচিত্র ও চলচ্চিত্র দিয়ে গেলেন সৌজন্য দেখিয়ে। ২০১৬ ও ২০১৭- এই দুই বছরে সোহাগী ঘুরেছেন ৩৫টি দেশ। ২০০০ সাল থেকে এ যাত্রায় সব মিলিয়ে তার ভ্রমনের ডায়েরিতে যুক্ত হয়েছে ৯৩ টি দেশের নাম। নাজমুন এরমধ্যে বেশির ভাগ দেশই ঘুরেছেন একা। ১৪টি দেশ ঘুরেছেন মাকে সঙ্গে নিয়ে।
হাতের লাল সবুজের পতাকা কখনো মাথায় মুড়িয়ে, কখনো শরীরে জড়িয়ে ঘুরিয়ে বেড়িয়েছেন এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা,উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ৯৩ দেশ। এভাবে নাজমুন “বাংলাদেশকে” পরিচয় করিয়ে দিয়েছে পৃথিবীর ছয়টি মহাদেশের বিভিন্ন দেশের সাথে আর পৃথিবীকে পরিচয় করিয়েছে “বাংলাদেশের সাথে, বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিজয়ের কেতন উড়িয়ে।
প্রথমে ভারতীয় বাঙালী নারী মেজর(অব) শিপ্রা মজুমদার, পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের দুই নারী পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার নিশু (১৯ মে ২০১২) ও এখনও পর্যন্ত সর্বকনিষ্ঠ বাংলাদেশী পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন (২৬ মে ২০১২) এর এভারেস্ট জয় বহিবিশ্বে বাঙালি নারীর বিজয়ের অগ্রযাত্রা সুত্রপাত ধরা যায়। ওয়াসফিয়া নাজরীন বাংলাদেশের প্রথম পর্বতারোহী হিসেবে সেভেন সামিট (পর্বতশৃঙ্গ) জয় করেছেন। সেই অনুবৃত্তিক্রমে ১০০ শততম দেশে বাংলাদেশের পতাকা হাতে দীপ্ত পায়ে এগোচ্ছে আমাদের নাজমুন নাহার সোহাগী।
বাংলাদেশ আজ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের বুকে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনস্বত্ব বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সবাই নারী ছিলেন। নিশাত, ওয়াসফিয়া, নাজনীন ও নাজমুন নাহারের পদাংক অনুসরণ করে গোঁড়ামি ইন্দ্রজাল ভেদ করে বাঙালী নারীর জয়যাত্রার এই লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে এই প্রত্যাশা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।