নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অক্ষরসৈনিক

কি আর লিখবো?? নিজের সম্পর্কে কিছহুই বলার নাই

অক্ষরসৈনিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অধরা অনূভুতি

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১৮

বাইরে দেখেছিস?

মেঘগুলো তাদের দুঃখ আর সইতে পারছে না...

বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে চারপাশ... ঐ দূরে নারিকেল গাছে দেখছি একটা কাক আধভেজা হয়ে জড়সড়ভাবে বসে আছে। আমিও ব্যালকনিতে বসে আছি। বৃষ্টির ছিটে পা ভিজিয়ে দিচ্ছে। তাতে কি? কোন দুঃখ আমাকে ছুতে পারবেনা। পারবেনা কোন অভিমান আমার পিছু নিতে। আমি যে সব কিছুর উর্ধ্বে। তুই কি পারবি? কখনো মেঘের দেশে কাউকে কি খুজেছিস??

জানিস, সব সময় চাইতাম তোর মতো এক মৌমি আসুক আমার জীবনে। জীবনকে নতুন করে সাজাতে যে তোকে বড় দরকার। আমি যখন তোর মতো ছিলাম, অনেক দুষ্টুমি করতাম। হাজারটা মেয়ের সাথে টাংকি মারতাম। প্রচুর ভাব নিতাম। কিন্তু এখন? কিছুই যে পারিনা। নাকি ভুলে গেছি?

ব্যালকনি থেকে ঘরের ভেতরটায় একবার চোখ বুলালাম। কি আশ্চর্য এক প্রশান্তিতে আম্মি ঘুমিয়ে আছে... এই আম্মিই আমার পৃথিবী ছিলো। এখন চাইলেও আম্মি’র সাথে বাদরামি করতে পারি না। পারি না সকালবেলা আম্মিকে ঘুম থেকে ডেকে “আসসালামুআলাইকুম” বলে আবার ঘুমিয়ে যেতে বলতে।

বড় কষ্ট লাগে!



এ এক আশ্চর্য অনুভূতি! আমি কারো দৃষ্টিসীমার মাঝে নেই...



দূর আকাশের তারা অবধি মানুষ ঠিকই দেখতে পারে- কিন্তু আমাকে না!

মৌমি, তোর কি মন খারাপ?

ধুর পাগলি, মন খারাপ করিস কেন? জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। এই তো নিয়তি, এই যে বিধান... তুই এতটুকু চিন্তাও করবি না। সব ঠিক হয়ে যাবে। যদি পারতাম, তোকে সাহায্য করতাম। কিন্তু, তুই যে আমার থেকে অনেক দূরে।



ধুর... তোর মন খারাপ করে দিচ্ছি...



আচ্ছা, তোর কি মনে পরে সেদিনের কথা, যেদিন তোকে প্রথম কল দিয়েছিলাম? হিঃ হিঃ হিঃ তোকে সারপ্রাইজ দিতে কিছু না ভেবেই কল দিয়ে বসলাম। তুই সারপ্রাইজড হয়েছিলি কিনা, আজো জানিনা। কিন্তু তোকে যে ভয় পাইয়েছিলাম, এটা ভেবেই মনে প্রশান্তি আসে। হাঃ হাঃ হাঃ কিন্তু যে ঝাড়ি টা প্রথম দিনেই দিয়েছিলি, আমিতো দ্বিগুন ভয়ে কুপোকাত। ভয়ের আতিশায্যে ফোন কেটে দিয়েছিলাম।

হাসতেছিস? হাসতে থাক তুই, কিছু বলবনা আজ...



মনে আছে তোর সেদিন এর কথা, যেদিন তোর সাথে আমার প্রথম দেখা?

ভুলে গেছিস? আমার কিন্তু সব কিছুই ঠিক-ঠিক মনে আছে। পহেলা ফাল্গুন ছিলো সেদিন।

তুই পরেছিলি শাড়ি- হলুদ রঙের। আমি ক্যাটক্যাটে লাল রঙের একটা পাঞ্জাবি। দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল তোর। আর আমি তো তোর চোখের দিকে তাকাতেই পারছিলাম না। চোখে কাজল দিয়ে এসেছিলি। ডানাকাটা পরীর মতো লাগছিলো তোকে। কিভাবে কিভাবে যেন ব্যাপারটা বুঝে গিয়েছিলি তুই। ব্যাস... অমনি ফাজলেমি শুরু করে দিলি। ভালই লাগছিলো। শেষে কিন্তু অনেক ফ্রি হয়ে গিয়েছিলাম।



“তুই কি আমার তুমি হবি?”- অনেক সাহস করে একদিন তোকে প্রশ্ন করে বসেছিলাম। কতক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ সশব্দে হাসতে শুরু করলি। হাসি যেন থামতেই চায় না। ভূতে ধরলো না তো আবার? হাসি থামার পর বললি, “তোকে দিয়ে বিশ্বাস নেই। কোনদিন দেখা যাবে তুই থেকে আপনি-তে যেতে চাবি”। আমি আবার জিজ্ঞাসা করে বসলাম “ কাশফুলের শুভ্র সাদা এক মুহূর্ত অপূর্নতায় ভরে আছে আমার জীবনে। তুই কি আমার তুমি হবি?। “কিরে, কবি হলি কবে? সবাইকে জানাতে হবে তো”- বলেই দুম করে বাই দিয়ে চলে গেলি সেদিন। আমি হাবলার মতো তোর যাবার পথে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলাম।

এরপর থেকে তোর ফোন বন্ধ। ঘুমিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত তোকে কল দিয়েছিলাম, আর বারবার শুনছিলাম “এই মূহুর্তে মোবাইল সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়...”

ভোরবেলায় ঘুম ভাংলো রিংটোন এর শব্দে... “Moumi Calling…”

ঘুম উধাও হয়ে গেলো এক নিমিষে।

“হ্যালো”

“কিরে লাটসাহেব, এখনো ঘুমাস নাকি?”

“আরে না... আমি তো কুত-কুত খেলতেসি”

“বাজে কথা রাখ। তোর সাথে জরুরী কিছু কথা ছিল। সকাল ১০টায় রবীন্দ্র সরোবর থাকবি। রবীন্দ্র সরোবর চিনিস তো?”

“আচ্ছা আসবো। কিন্তু...”

কথা শেষ হয় না। এর আগেই ফোন কেটে দিয়েছিলি। তুই তো সবসময়ই এরকম। কক্ষনোই তোর সাথে কথা শেষ করতে পারতাম না।

বিছানা থেকে উঠে গেলাম। হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তোর পছন্দের পাঞ্জাবিটাই কিন্তু পরেছিলাম- পরে কি খেয়াল করেছিলি?

ঘড়ি’র দিকে তাকিয়ে দেখি মাত্র ৮টা ৪২ বাজে। আর তর সইছেনা। বের হয়ে একটা রিক্সা নিলাম- উদ্দেশ্য রবীন্দ্র সরোবর। রাস্তায় যে জ্যাম, ১০টায় যেতে পারলেই হয়।

রিক্সা থামিয়ে রবীন্দ্র সরোবরের উল্টোপাশের রাস্তায় নেমে গেলাম। আমি রাস্তা পার হয়ে আইল্যান্ড এ দাড়ালাম। কয়টা বাজে দেখার জন্যে হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলাম। এরপর শুধুই গাড়ির হর্ন এর শব্দ পেয়েছিলাম।

এরপর থেকে আমাকে কেও দেখতে পারে না, ছুঁতে পারে না...

আচ্ছা, তুই কি কেঁদেছিলি? আমি কিন্তু ১০টার আগেই পৌঁছেছিলাম...



(উৎসর্গঃ মৌমিতা- আমার সবচাইতে প্রিয় বান্ধবী।

আমার এই দোস্তমনিকে ঘিরেই আমার লেখালেখির শুরু। সবাই ওর জন্যে দোয়া করবেন- এতটুকুই চাওয়া...)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: খুব ভালো লাগলো, আপনার ও মৌমিতার জন্যে শুভকামনা আর ভালো লাগা রেখে গেলাম।


কিছুক্ষণ আগে আমিও লিখেছি একটা, সময় সুযোগ পেলে একবার পড়ে নিবেন প্লিজ?

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:৩৪

অন্ধকারের রাজপুত্র বলেছেন: ভালো লাগলো ! :|
ভালোই তো লিখো.... মাঝে মাঝে এই ধরণের পোস্ট করার ট্রাই কইরো... পড়মু নে ! :)

+++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.