নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাদামাটা মানুষ। ভালবাসার কাঙ্গাল। অল্পতেই তুষ্ট। সবাই আমাকে ঠকায়, তবুও শুরুতে সবাইকে সৎ ভাবি। ভেবেই নেই, এই মানুষটা হয়ত ঠকাবেনা। তারপরেও দিনশেষে আমি আমার মত...

অপলক

তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।

অপলক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর ব্যাপারে আপনি যা করেন না... কিন্তু যা করা দরকার ?

০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৬



অনেক আদি রীতি নীতি, সেই সাথে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের রীতিনীতি একটি সদ্য প্রসূত ফুটফুটে শিশুর জন্যে আমাদের সমাজে রয়েছে। অথচ সব হয়ত ভাল নয়, আবার সব খারাপও নয়। তবে অতি ভদ্রতা যেমন অভদ্রতা তেমনি অতি যত্ন আত্নিও খারাপ, এই নতুন আগুন্তকের জন্যে।

যা উচিত নয়:
১. গালে মুখে ঠোঁটে স্পর্শ করে চুমু খাওয়া। এতে অগনিত ব্যাকটেরিয়া সঞ্চারিত হয় শিশুর শরীরে।
২. নোংরা কাপড় পড়ে বা বাইরে থেকে এসে শিশুকে কোলে নেয়া বা দুধ খাওয়ানো। ফলে হতে পারে বাচ্চার সর্দি জ্বর বা নিউমোনিয়া।
৩. শিশুকে ঠান্ডা লাগার ভয়ে অতিরিক্ত কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাখা। এতে শিশুটি ঘেমে ঘাম বসে গিয়েও আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। বুকে কফ বসে যায়। শ্বাস কষ্ট শুরু হতে পারে। শিশুর বৃদ্ধি কমে যাবে।
৪. শুয়ে শুয়ে দুধ পান করানো। এটা একদম উচিত নয়। যতটা পারা যায় কোলে বসিয়ে মাথা আপেক্ষাকৃত উপরে রেখে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। দেশে বহু বাচ্চা মারা যায়, বুকে দুধ আটকে। ঘুম চোখে নিয়ে শুয়ে শুয়ে বুকের দুধ পান করাবেন না।
৫. প্যামপারস ব্যবহার করেন আর পুরানো কাঁথা ব্যবহার করেন, না কান্নাকাটি করা পর্যন্ত চুপ করে থাকেন যেটা খুবই খারাপ ব্যাপার। :P সব সময় ভিজে যাবার সাথে সাথে সেগুলো চেঞ্জ করুন। এতে বাচ্চার ঘামাচি, ফুসকুরি বা চুলকানি হবে না। অনেক বাচ্চার ইউরিন ইনফেকশন হয় বেশি সময় ভেজা কাপড় পরিয়ে রাখার জন্যে। বাচ্চারা বলতে পারে না। হয়ত দেখবেন, কিডনিতে প্রবলেম হচ্ছে।
৬. পুরো শরীর তেলে চুপচুপে করে রাখবেন না। এটা করলে আপনি নিজেই নিজের সন্তানের সুন্দর ত্বকের আশা নষ্ট করলেন বলে ধরে নিন।
৭. চোখে ইন্ডাসটেরিয়াল কাজল লাগানো । অনেকে বাসায় সরিষা তেল পুরিয়ে কাজল বানায়, সেটা পিউর কিন্তু অনেক ঝাঝালো। বাচ্চারা এই ঝাঝে অনেক সময় কাদে।
৮. আপনার কোলের বাচ্চা কানে আপনার চেয়ে বেশি ভাল শোনে, চোখে কম দেখে। কাজেই আপনার লাউড স্পিকার টাইপের কন্ঠের ভলিওম কমিয়ে শিশুটির সাথে কথা বলুন। গুনগুন করে কথা বললে আরও ভাল।
৯. জোর করে দুধ খাওয়াবেন না। হয়ত খেয়েই বমি করছে, তাতে লাভ কি? আপনার বুকের দুধ বেশি আসছে মানে আপনি ফিজিক্যালী ফিট। সে ক্ষেত্রে দুধ ছেকে ফেলে দিন। না হলে আপনার স্তনে ব্যাথা হতে পারে।
১০. ফাস্ট ফুড, বিরিয়ানী বা মশলাদার যে কোন খাবার বাদ দিতে হবে। না হলে আপনার বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হবে, শিশু দুধ পানে অনীহা দেখাবে।




আরও সচেতন হতে নিচের বিষয় গুলো খেয়াল রাখবেন:
১. শিশুটির বার্থ সার্টিফিকেট বা ব্যাসিক পেপার হসপিটাল বা ক্লিনিক থেকে নিয়ে নিবেন।
২. শিশুর বুকের ভেতর কোন ঘরঘর শব্দ হয় কিনা প্রায়ই চেক করবেন।
৩. প্রশ্রাব পায়খানার সময় কান্নাকাটি করে কিনা খেয়াল করবেন।
৪. ভোরে এবং সন্ধ্যায় শিশুকে শুয়ে রাখবেন না। কাধের উপর থুতনি রেখে খাড়া করে বুকের সাথে লেপ্টে হাটাহাটি করবেন। কারন প্রাকৃতিক ভাবেই শিশুর পেটে এই দুই সময় গ্যাস জমে। কষ্ট পায়, তারপর কান্নাকাটি করে।
৫. বুকের দুধ যদি একদমই না খায়, বা নিপল নেবার সাথে সাথে মুখ সরিয়ে নেয়, তাহলে বুঝতে হবে, আপনার দুধের স্বাদে সমস্যা হয়েছে। অথবা, শিশুটির উপর বদ নজর বা বাতাস লেগেছে।
৬. দুধের শিশুকে যতক্ষণ সম্ভব বডি টাচে রাখবেন, সে জন দাদী নানী বাবা মা যেই হোন না কেন। যখন কোলে নিয়ে হাটবেন, খালি পায়ে হাটুন। আর্থিং ব্যাপারটা অনেক উপকারী।
৭. কৌটার দুধ খাওয়ালে বাচ্চা নাদুস নুদুস হবে, কিন্তু সেক্ষেত্রে মেলামিন বা প্রিজারভেটিভ থাকায় কিডনি লিভারে প্রবলেম হবে। বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। সারা জীবন অসুখ বিসুখ লেগেই থাকবে। কাজেই একান্ত বাধ্য না হলে কৌটার দুধ খাওয়াবেন না।
৮. শাক সবজি সালাদ ডিম দুধ তৈলাক্ত মাছ, কদু, কালজিরা বেশি বেশি খান। বুকের দুধ বেশি হবে। নিজে সুস্থ্য থাকুন, বাচ্চাকে সুস্থ্য রাখুন।
৯. সকাল ১১ টার আগে যে কোন সময় ৩০মিনিট সূর্যালোক বাচ্চার গায়ে লাগাতে দিন।
১০. মুড়ি মুড়কির মত এন্টিবায়োটিক খাবেন না। এন্টিবায়োটিক রেজিস্টান্ট হলে আপনার শিশুর বডিতে আর কাজ করবে না। সামান্য অসুখে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে আপনার কলিজার টুকরা।
১১. ছবি তুলতে হলে ক্যামেরার ফ্লাস অফ আছে কিনা চেক করুন, তারপর তুলুন। না হলে, আপনার বাবাইটা অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
১২. সময় মত টিকা দিন শিশুকে। যদি বিদেশে যেতে হয়, তাহলে টিকার কার্ড সাথে রাখুন। ভাল হয়, বাংলাদেশী সব টিকার গ্রুপ নেম কালেক্ট করুন। বাংলাদেশে টিকা বা ভ্যাকসিনের নাম এক রকম, অন্য দেশে অন্য রকম। তাই গ্রুপ নেম জানা জরুরি। তা না হলে ঐ দেশে টিকা দিতে সমস্যায় পড়বেন।
১৩. শিশু তার জীবনের প্রথম ৪ বছর যা শেখে বাকি জীবনে তার প্রতিচ্ছবি থাকে আচার আচরনে বা সিদ্ধান্ত গ্রহনে। কাজেই শিশুটিকে কাজের বুয়ার হাতে বড় করবেন না। আপনি সন্মানিত ব্যক্তি বা কোটিপতি হলেও আপনার বাচ্চার কালচার বা চিন্তা চেতনা হবে বস্তির ঐ মহিলাটির মত। আপনি নিশ্চয় তা চাইবেন না। তাই শিশুকে সময় দিন, তা না হলে দাদা দাদি বা নানা নানির কাছে রেখে বড় করুন।

যদি আরও কোন সচেতনাতা মূলক পয়েন্ট আপনার মনে আসে, কমেন্টে লিখুন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



আমাদের দেশে শিশুদের নিয়ে তেমন সচেতনতা নেই। সচেতনাতার জন্য প্রয়োজন পাঠ্যপুস্তকে শিশুদের বিষয়ে গল্প প্রবন্ধ রচনা। আপনার লেখাটি সময়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় লেখা। ধন্যবাদ।


০৫ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৫

অপলক বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পাঠ্যপুস্তকের ব্যাপারটা তুলে ধরার জন্যে।

২| ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: এসব আমি জানি।

০৬ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১১

অপলক বলেছেন: ড্যাম স্মার্ট... সচেতন বাবা। আপনার সন্তানেরা লাকী।

৩| ০৬ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩

শায়মা বলেছেন: এসব হসপিটালে বাবামায়েদের শিখানোর জন্য কোর্স করানো উচিৎ কিন্তু আসলেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.