নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সাদামাটা মানুষ। ভালবাসার কাঙ্গাল। অল্পতেই তুষ্ট। সবাই আমাকে ঠকায়, তবুও শুরুতে সবাইকে সৎ ভাবি। ভেবেই নেই, এই মানুষটা হয়ত ঠকাবেনা। তারপরেও দিনশেষে আমি আমার মত...

অপলক

তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।

অপলক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানি বিষয়ক নিয়ম কানুনের সার সংক্ষেপ

২২ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:৫৯

কুরবানির ঈদের আগে পোস্ট করলাম যাতে নিচের কথাগুলো মুসলমান ভাইদের মনে থাকে। কুরবানি দিতে গিয়ে ভুল কম হবে আশা করি। হয়ত একই কথা আপনি জানেন এবং ঈদগা মাঠে ইমাম সাহেব ব্যাখ্যা দিবেন। তবুও এক পলকে মিলিয়ে নিন।



১. কুরবানির পশুর রক্ত, যৌনাঙ্গ খাওয়া হারাম যদিও সেটা হালাল পশুর অংশ। গাভীর ওলান খাওয়া যায়েজ।
২. গাভীর পেটে জীবিত বাচ্চা থাকলে তাকে জবেহ করে দিতে হবে এবং মাটি চাপা দিতে হয়। তার মাংস খাওয়া নিষেধ।
৩. লেজ, মাথা, ভুড়ি, চামড়া ও পা এসব দানের হিসাবের মধ্যে পরে না। তাই কুরবানি দাতা সেগুলো নিজে ভক্ষণ করতে পারে বা অন্য মুসলিমকেও দিতে পারে। তবে বড় পশুর কুরবানিতে একাধিক পক্ষ থাকলে সেগুলো সমান ভাগে ভাগ করতে হবে। কারও মনে কোন সংশয় রাখলে কুরবানি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
৪. মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানি দিতে হলে নিয়াতে বলতে হবে, মুহাম্মদ (সা: ) ও তার সমস্ত মুসলিম উম্মাতের পক্ষে এক ভাগ দিলাম। উম্মাত বলাতে জীবত মৃত সবাই নির্দেশিত হয়।
৫. কুরবানি গোস্ত প্রস্তুতে যে কসাই বা সাহায্যকারী থাকবে, তাদেরকে কুরবানির গোস্তের দ্বারা মজুরী মিটিয়ে দেয়া যাবে না। দিলে কুরবানি শুদ্ধ হবে না। তাদের কে অর্থ দিয়ে মজুরি পরিশোধ করতে হবে। তারপরে ইচ্ছেমত গোস্ত দিতে পারবেন।
৬. কুরবানির গোস্ত দিয়ে মেহমানদারী করতে পারবেন না। যদি মেহমানদের বলার পর অনুমতি পান,তবেই কুরবানির গোস্ত দিয়ে মেহমানদারি করতে পারবেন।
৭. জেনে বুঝে কোন অমুসলিমকে গোস্ত দেবেন না বা চামড়ার টাকা দেবেন না। তাহলে আপনি অমুসলিমদের সহযোগী হয়ে গেলেন। আল্লাহর লালনত প্রাপ্ত হবেন।
৮. কুরবানি যেহেতু ত্যাগ বা উৎসর্গের বিষয় এবং আল্লাহ কে রাজি খুশি করার বিষয়, তাই আপনার উচিত বেশি বেশি গোস্ত দান করা, এমনকি নিজের অংশটুকু থেকেও। আপনি পুরো গরুর মাংস সংরক্ষণ করতে পারেন, বাধা নেই। তবে সেটা আপনার ভোগের মানসিকতা পরিচয় দেয়, ত্যাগের নয়। ১০০ জন মুসলিম যদি আপনার কুরবানির গোস্ত পায় আর মাত্র একজনের দোয়া কবুল হয়, হাসরের ময়দানে আল্লাহ হয়ত রাজি খুশি হয়ে ওটাকেই অসিলা বানিয়ে মাফ করবেন। যদি সামর্থ থাকে একাধিক কুরবানি দিন, আপনার ভাগের মাংস ফ্রিজে রাখুন। গরীবরাও বেশি গোসত পেল, আল্লাহ তায়ালাও হয়ত খুশি থাকবেন। প্রত্যেক কাজের ফল তার নিয়াতের উপর নির্ভরশীল।
৯. আপনি যেমন সন্তানদের বাজারের সেরা পোশাক পড়ান, সেরা স্কুলে পাঠান, সবচেয়ে ভাল খাবার খাওয়ান, সামর্থ অনুযায়ী হাটে গিয়ে একই মনভাব নিয়ে সবচেয়ে সেরা পশুটা কুরবানির জন্যে কিনতে চেষ্টা করবেন। অথবা নিজের গোয়ালের সবচেয়ে ভাল গরুটাই কুরবানি দেবেন।
১০. যদি পশুর কান বা নাক বা লেজ কাটা থাকে, সেটা কুরবানি দেবেন না। যদি পা ভাঙ্গা থাকে, সেটাও দেবেন না। যদি মুমূর্ষু পশু হয়, সেটাও কুরবানি দেবেন না। হাদিস দ্বারা এসব পশু কুরবানি দেয়া নিষেধ। খাসি বা বলদ পশু কুরবানী দেয়াতে কোন বাধা নেই। কুরবানি আদায় হবে।
১১. ঈদের নামায আদায়ের পূর্বে কুরবানি হয় না।
১২. লোক দেখানো মন মানসিকতা নিয়ে কুরবানি দেবেন না। কেননা আল্লাহ মনের খবর জানেন। সে কারনে ধারদেনা করে বা অবৈধ উপার্জনের টাকায় পশু ক্রয় না করাই ভাল। শুধু গোশত খাওয়ার নিয়াত থাকলে সেটা অন্য ব্যাপার। পশু এমনি জবাই করুন, কুরবানি খেতাব কেনার দরকার নাই।
১৩. ঈদের আগে বা ঈদের নামাজের আগে যদি কারও নেসাব পরিমান অর্থ হাতে এসে যায়, তার জন্যে কুরবানি ওয়াজিব।
১৪. প্রাপ্ত বয়স্ক নিখুঁত পশু কুরবানির জন্যে উপযুক্ত বলে গন্য করা হয়।
১৫. নিজ হাতে কুরবানি দেয়া উত্তম। তবে শারীরিক অক্ষমতা থাকলে বা নিয়ম জানা না থাকলে বা যথেষ্ট মনোবল না থাকলে অন্য কোন ইমানদার ব্যক্তি নির্বাচিত ব্যক্তিদের পক্ষে আল্লাহর নামে কুরবানি করে দিলে সমস্যা নাই। গ্রহন যোগ্য ওসিলা থাকলে নারীরাও কুরবানি দিতে পারবেন ।
১৬. ঈদুল আযহা ও তার পরবর্তী দুদিন কুরবানি দেয়া যায়।
১৭. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। কাজেই কুরবানির উচ্ছিষ্ট অংশ যেন পরিবশে দূষণ না ঘটায় সেটা খেয়াল রাখা ঈমানী দায়ীত্ব।
১৮. কুরবানি পশু খুব ধারালো চাকু দিয়ে জবেহ করবেন। চাকু চালানোর সময় ভেতর থেকে বাইরের দিকে চালনা করবেন। শাখের করাতের মত করে নয়। অনেকে গলার কাটা অংশ দিয়ে নার্ভ বা রগ কেটে দেয়। এতে সমস্ত শরীরের সাথে পশুর ব্রেনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই হার্ট ফেইলর হয়, পশুর শরীর থেকে সব রক্ত বের হয় না। মনে রাখবেন, বলা হচ্ছে তোমরা পশুর রক্ত প্রবাহিত করে দাও। কাজেই পশুকে খুন করা যাবে না। যদিও আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, পশু বেশি সময় বেচে আছে মানে বেশি কষ্ট পাচ্ছে, তাই ছটফট করছে। সে ধারনাটা ভুল। এ ব্যপারে ইউটিউবে সাইনটেফিক ভিডিও আছে, দেখে নেবেন যে কোন উপায়ে পশু বেশি কষ্ট পায়?
১৯. পশু জবাইয়ের পর সম্পূর্ন নি:তেজ হবার পরেই প্রসেসিং শুরু করবেন। নিজ হাতে গোসত প্রস্তুত করা ভাল।
২০. হাট থেকে পশু হেটে হেটে সাথে করে নিয়ে আসবেন। যত লোক আপনার পশুর দাম বা ভালমন্দ জিজ্ঞেস করবে। সে সময়, আপনার হাতের তালুর নীচে যত পশম থাকবে, আপনি তত পরিমান নেকীর মালিক হবেন। সুবহানাল্লাহ।

আসসালামু আলাইকুম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.