নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোলা চিঠি (দুর্বার ২২)

দুর্বার ২২

চিকিৎসা শাস্ত্রের অতি নগন্য একজন ছাত্র. নিজে কম ঘুমাই, রোগীর নিশ্চিন্ত ঘুমের আশায়!!!!

দুর্বার ২২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাক্তারের ফি

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩২



পর্ব-১

জনৈক রুগী চেম্বারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর পর ভিজিট কত জিজ্ঞেস করলে ডাক্তার বললেন ৬০০ টাকা। রুগী ডাক্তারকে ভিজিটের টাকা পকেট থেকে বের করে দিতে দিতে বললেন, "আপনাদের ডাক্তারদের ভিজিট অনেক বেশি কেন?"
ডাক্তার সাহেব রুগীকে বললেন, "আপনার এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেয়া সম্ভব নয়। আর আপনাকে ব্যখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে বললেও আপনি হয়তো শুনবেন, কিন্তু উপলব্দি করতে পারবেন না। আচ্ছা, আপনার বয়স কত?"
-৩৫ বছর।
কি করেন?
-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি।
আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন?
-এক ছেলে নির্ঝর আর এক মেয়ে নাঈমা।
তাদের বয়স?
-মেয়েটার পাচ বছর আর ছেলেটা তিন।
তাদের নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?
-মেয়েটাকে ডাক্তার বানানোর ইচ্ছা আর ছেলেটাকে ইঞ্জিনিয়ার।
তাহলেতো হয়েই গেল। দোয়া করি আপনার মেয়ে যেন অনেক বড় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হয়। যেহেতু আপনি আপনার মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চাচ্ছেন আর তার বয়স এখন পাচ বছর, ভিজিট সংক্রান্ত এই প্রশ্নের উত্তর আপনি ৩৫/৪০ বছর পরে বেচে থাকলে পেয়ে যাবেন। এই নিন আমার ব্যক্তিগত সেলফোন নাম্বার। ততদিন যদি আমি বেচে থাকি, আর আপনি যদি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যান তাহলে দয়া করে আমার সাথে দেখা করে জানিয়ে যাবেন।
জ্বী আচ্ছা বলে রুগী ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে এল।

পর্ব ২

পাচ বছরের সেই ছোট্ট নাঈমা এখন বেশ বড় হয়েছে। এইতো কিছুদিন আগে তার এইসএসসি রিটেন এক্সাম শেষ হলো। প্রাকটিক্যাল এখনও শুরুই হয়নি। এরই মধ্যে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোন কোচিং এ ভর্তি হবে তার তোরজোর শুরু হয়ে গেছে। পরীক্ষার পরে কোথায় বিশ্রাম নিবে কিংবা বেড়াতে যাবে সেসব চিন্তা বাদ। বাবা মা আত্নীয়স্বজন সকলের স্বপ্ন তাকে ডাক্তার হতে হবে। আর এই স্বপ্ন পূরনের ধারাবাহিকতায় তাকে এক এক করে অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়েছে। প্রাইমারী স্কুল পরীক্ষায় সে বৃত্তিও পেয়েছে। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষাও বৃত্তিসহ উত্তীর্ণ হয়েছে। ভালো রেজাল্ট করেছে এসএসসিতেও। আশা করছে এবারও রেজাল্ট ভালো হবে। বাবা মা বলেছে এইবারই শেষ কষ্ট। মেডিকেলে চান্স পেলে আর কষ্ট করতে হবে না। আর পিছন ফিরে তাকাতে হবে না। বাবা মা আর নিজের স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যে দৃঢ় থাকে নাঈমা।

এরপর প্রাকটিক্যাল এক্সাম শেষ করে, একটি কোচিং সেণ্টারে ভর্তি হয়ে দিন রাত আগের থেকেও বেশি পরিশ্রম করে অবশেষে পেয়ে যায় সেই কাংখিত সাফল্য। একটি সরকারী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে যায় সে। নাঈমার পুরো পরিবারে আনন্দের বন্যা। প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সের নাঈমার বাবার চোখে তখন স্বস্তির আশ্বাস। মেয়ে তার ডাক্তার হবে। এইতো দেখতে দেখতেই পাচটি বছর কেটে যাবে।

মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে কিছুদিন নাঈমার ভালোই কাটলো। এপ্রোন পড়ার আনন্দ, নতুন নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ, নতুন নতুন রঙ্গীন বই। জীবনটাকেই তার রঙ্গীন লাগছে। আরও বেশ কয়েকমাস যেতেই নাঈমা আবিষ্কার করলো তার রঙ্গীন জীবনের রংয়ে সাদাকালোর প্রোলেপ পরতে শুরু করেছে! নিয়মিত ক্লাশ, একের পর এক আইটেম, কার্ড ফাইনাল, প্রফের ধাক্কা সামলাতেই তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে খোজ নিয়ে দেখলো তার ননমেডিকেল বন্ধুরা যখন বিকেলের সোনালী রোদে আড্ডা দিয়ে কিংবা ঘুরাঘুরি করে বেড়াচ্ছে তখন সে কিংবা তার মেডিকেলের বেশিরভাগ বন্ধুরাই লাইব্রেরীর চারদেয়ালে টিউব লাইটের আলোয় বইয়ের পাতায় ডুবে আছে। সেখানে বিকেলের সোনালী রোদ স্পর্শ করে না! নাঈমার বাবা নাঈমার এই অবস্থা কিন্তু ঠিকই দেখছিল। আর তার কাছে পাচ বছরটাকে শুধু দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতরই মনে হচ্ছিল।

কিন্তু অন্ধকারের পরতো আলোর দেখা মিলবেই। ঠিক তেমনিই অনেক অনেক কষ্টের পর নাঈমাও পেয়ে গেল মেডিকেল সাইন্সে গ্রাজুয়েট ডিগ্রী। আরেকবার হাসলো তার পঞ্চাশোর্ধ বাবা। এইবার বুঝি তার কষ্টের দিন শেষ হতে চলল। ইণ্টার্নশীপ শেষ করতে করতে মেয়ের বিয়েও দিলেন। ছেলেরও ততদিনে ইঞ্জিনীয়ারিং শেষের পথে। যদিও ছেলে মেয়েকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে তাকে কি কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তা একমাত্র তিনিই জানেন।

একদিন নাইমাকে ডেকে তিনি বললেন, "মারে, ইণ্টার্নীতো শেষ করলে। এখন কি ভাবছো?
-বাবা, সামনে বিসিএস প্রীলিমিনারী পরীক্ষা। আর জানুয়ারীতে এফসিপিএস পার্ট-১ পরীক্ষা। এইসব পরীক্ষার প্রস্তুতি নিব।
আচ্ছা মা। ঠিক আছে। পড়াশুনাটা চালিয়ে যাও।
এভাবেই একটি ক্লিনিকে পার্ট টাইম চাকরী করে বিসিএস আর এফসিপিএস এর প্রস্তুতি নিতে নিতেই দিন পার করছিল নাঈমা। কিন্তু দুটোর প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কেমন যেন গোলমেলে মনে হচ্ছিল তার কাছে। দুটো পরীক্ষার প্রস্তুতি যে দুই রকম। নাহ! এভাবে হবে না। দুটো একসাথে চালানো যাবে না। অতঃপর একটার মায়া তাকে ছাড়তে হয়। এরই মাঝে সে দেখছে তার কোন কোন বন্ধু অনারারী (বিনা বেতনে) ট্রেনিংএ ঢুকেছে কোনও কোনও হাসপাতালে। তা যেন আরেক দূরহ জীবনের অধ্যায়। বিএসএমএমইউ এর লাইব্রেরীর এক একটা দিন যেন এক একটা পূর্ণদীর্ঘ চলচিত্রের কাহিনী। যা সকাল আটটায় শুরু হয়ে ৩৫ টাকার দুপুরের খাবারের মধ্য দিয়ে রাত দশটায় শেষ হয়। নাঈমা নিশ্চিত তার অনেক আত্নীয়স্বজনও এই খাবার এক বারের বেশি দুইবার মুখে দিতে পারবে না। পরীক্ষা পড়াশুনার চাপে সামাজিক অনেক অনুষ্ঠানেও আজকাল নাঈমার যাওয়া হয়ে ওঠেনা। আত্নীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব কেউ কেউ বলছে, ডাক্তার হয়ে নাঈমার ভাব বেড়ে গেছে। কেউ কেউ আবার তাকে অসামাজিকও ভাবতে শুরু করছে। গ্রাম থেকে অনেকে আসেন বেশ আশা করে। ডাক্তার দেখানোর ব্যপারে নাঈমা সাহায্য করবে বলে। ডাক্তারের সিরিয়াল দিয়ে দেয়া, ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া, হাসপাতালে ভর্তি করানো। আরও কত কি। মাঝে মাঝে নাঈমা করে ঠিকই কিন্তু সব সময় একইভাবে করা সম্ভব হয় না। তার পড়াশুনা কিংবা পরীক্ষার চাপ অন্যরা কিভাবে বুঝবে? তারা শুধু ভুলই বুঝতে পারে।

দেখতে দেখতে নাঈমা সন্তানের মা হয়ে যায়। জীবনে আনন্দের ধারা নেমে আসে। কিন্তু সমান তাল বেড়ে চলে কষ্টের ধারাও। ধীরে ধীরে সময় বেড়ে চলে। বয়স বাড়ে নাঈমার। তবুও থেমে থাকে না জীবনে বড় ডাক্তার হবার স্বপ্ন। সদ্য অবসরে যাওয়া নাঈমার বাবাও চোখের সামনে দেখতে থাকে মেয়ের জীবনযুদ্ধ। তার আশার মাঝেও যেন মেঘ জমতে শুরু করেছে ততদিনে। সবাই যেন অধৈর্য্য হয়ে পড়ছে। নাঈমার ডাক্তারী পড়া কেন শেষ হয় না! নাঈমার ভাইও যে ততদিনে ইঞ্জিনীয়ার হয়ে চাকরী শুরু করে দিয়েছে। সবার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটলেও শুধু নাঈমারই ধৈর্য্যের বাধে ফাটল ধরে না। সংসার, সন্তান লালন-পালন, চাকরী, পড়াশুনা সমান তালে এগিয়ে নিয়ে যায় সে। শুধু হারিয়ে যায় বিকেলের সোনালী রোদ, জীবনের ছন্দ, গান, কবিতা, একটুখানি অবসর। নিজেকে নিয়ে কিংবা নিজের জন্য একটুখানি সময় হয়ে ওঠে না আর নাঈমার। এক রোবটিক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে যায় সে।

এভাবেই বছরের পর বছর কেটে যায়। ভারী ভারী বইয়ের ব্যাগ বইতে যেয়ে পিঠের মাংশপেশীর ব্যথাটাও জানান দেয় মাঝে মাঝে। পয়ত্রিশোর্ধ নাঈমা একদিন নিজেকে আবিষ্কার করে একজন পোস্ট গ্রাজুয়েট ডাক্তার হিসেবে। অতঃপর চেম্বার প্রাকটিস শুরু করে নাঈমা। তার ভিজিট ১০০০ টাকা। সেই পাচ বছর থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত উঠে আসা নাঈমার প্রতিটা দিনের কালের স্বাক্ষী হয়ে থাকল পয়ষট্টিরও বেশি বয়সী তার বাবা।

পর্ব ৩ (শেষ পর্ব)

সকাল আটটা বেজে দশ। বাইরে বেশ রোদ উঠেছে। সাথে ঝিরঝিরে বাতাসও বইছে হালকা আমেজে। একটু দূরে নিম গাছে একটা কাক ডাকছে সমানে। মিরপুরের বর্ধিত পল্লবীর ২ নং রোডে খন্দকার ভিলার দোতালার বারান্দায় বসে দিনের পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডাঃ খন্দকার মোস্তফা খালেদ। দেশের নাম করা বিশিষ্ট কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ। বয়স আশির কাছাকাছি। এখন আর রোগী দেখেন না। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, প্রোস্টেট গ্লান্ড বড় হওয়া ইত্যাদি রোগে ভুগছেন তিনি। তবে মাঝে মাঝে এই বয়সেও দেশ বিদেশের বিভিন্ন সেমিনারে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। চায়ের কাপে চুমুক দিবেন এমন সময় সেলফোনে রিং বেজে উঠলো। তিনি রিসিভ করে বললেন, হ্যালো, কে বলছেন?
-স্যার আমি সাজ্জাদুর রহমান। আপনি হয়তো আমাকে নাও চিনতে পারেন। আবার চিনতেও পারেন। স্যার, আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই। আপনি কি আমাকে একটু সময় দিবেন?
"হা হা হা। আমার সময়ের কোন অভাব নাই।" এই বলে বাসার ঠিকানা দিয়ে খন্দকার সাহেব ফোন রেখে দিলেন।

বিকেল বেলা খন্দকার সাহেবের ড্রয়িং রুমে দুই জন বৃদ্ধ মুখোমুখি বসে আছেন। বয়সের ব্যবধান পনের বছর। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছেন। কারও মুখে কোন কথা নাই অনেক সময় ধরে। অবশেষে সাজ্জাদুর রহমান নিরবতা ভাংগলেন।
স্যার, আজ থেকে অনেক বছর আগে আমি আপনার চেম্বারে গিয়েছিলাম। তখন আমার মেয়ের বয়স ছিল পাচ বছর। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনাদের ডাক্তারদের ভিজিট এত বেশি কেন? আজ আমার মেয়ে একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার। কিন্তু তার এই প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠার পিছনে যে গল্প তার প্রতিটা লাইনে আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে আপনারা যা ভিজিট নেন তা হয়তো ঠিকই আছে। আমরা দূর থেকে আপনাদের শুধু ভুলই বুঝি। কিন্তু আপনাদের একজন ডাক্তার হবার পিছনে যে শ্রম, মেধা, সময় ব্যয় করেন সেই তুলনায় আপনাদের ভিজিট সত্যিই কম স্যার। এরপর সাজ্জাদুর রহমান ডাক্তার সাহেবকে সালাম দিয়ে বললেন,
স্যার আসি।
বলেই দেরী না করে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। ডাঃ খন্দকার মোস্তফা খালেদ চুপচাপ খোলা দরজার দিকে তাকিয়ে রইলেন








সংগৃহীত

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫৬

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: আমার পরিবারেও ডাক্তার আছে বেশ কয়েকজনই। আমার মামা-মামী,মামাতো ভাই,খালাতো বোন আর তার স্বামী। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। একজন ভালো ডাক্তার হওয়ার পেছনে কি পরিমাণ ত্যাগ আর কষ্ট তা আমার নিজ চোখে দেখা।
কিন্তু একজন ডাক্তারের প্রধান উদ্দেশ্য হল রোগীকে সুস্থ করে তোলার ব্যবস্থা বাতলে দেয়া। বাকিটা আল্লাহর উপর।
কিন্তু আমার মতে একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তারের ভিজিট এলাকা বুঝে নেয়া। একজন এপোলো হসপিটালের রোগী আর শহরতলীর রোগীর আর্থিক সামর্থ্য নিশ্চয়ই এক না?

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০০

দুর্বার ২২ বলেছেন: আপনার সাথে সহমত.

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ভাল লাগল গল্প ।
শুভেচ্ছা রইল

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৪

দুর্বার ২২ বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
দোয়া করবেন যেন মানবসেবার এই মহান পেশায় নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫২

আহমেদ জী এস বলেছেন: দুর্বার ২২ ,



ভালো লাগলো গল্পের ছলে বলা অনেক সত্যকথা ।
বোঝা গেলো আপনি ডাক্তার । কিন্তু ডাক্তারদের ফি রোগীর নাগালের বাইরে কেন তার গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা এটা নয় । কষ্ট করে লেখাপড়া কে না করে ? কষ্ট করেই তো প্রতিষ্ঠিত হতে হয় । শুধু ডাক্তার রা একা কেন ? কাঁধে বোঝা নিয়ে যে লোকটি সারাদিন অলি গলিতে ঘুরে ঘুরে দুটো চুড়ি ফিতে বিক্রী করে সেও তো হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। দিন শেষে তার মুনাফা কতো ? তার ঘামের মূল্য কত ? সে হয়তো লেখাপড়ার জন্য ডাক্তারদের মতো পরিশ্রম করেনি । কিন্তু তারটাও তো পরিশ্রম ! যার যেমন পেশা, সেখানে যেতে তাকে তেমন পরিশ্রমটাই করতে হয় ।

প্রার্থনা, আপনার পেশায় আপনার দায়িত্বটুকু সঠিক ভাবে পালন করার মানসিকতা যেন সৃষ্টিকর্তা আপনার মাঝে সৃষ্টি করে দেন ।

ভালো থাকুন । শুভেচ্ছান্তে ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩২

দুর্বার ২২ বলেছেন: : হ্যাঁ, ভাইয়া. পরিশ্রম সবাই করেন.আর তাই প্রত্যেক পেশার প্রতি রয়েছে আমার সন্মান. তবে অন্যান্য পেশার মানুষের চেয়ে ডাক্তারদের একটু বেশি কথা শুনতে হয়. খারাপ মানসিকতার মানুষ সব পেশায় আছে ....এর জন্য পুরো পেশাকে দায়ী করা ঠিক না. যাই হোক, ভাইয়া দোয়া করবেন যাতে আমি আমার দায়িত্ব টুকু সঠিকভাবে পালন করতে পারি. আপনাদের একটু সহযোগিতা, একটু অনুপ্রেরণা আমাদের মানবসেবার পথকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে. পরিশেষে, আমাদের ডাক্তার সমাজের প্রতি অনুরোধ পেশার পাশাপাশি সেবার মানটা ও যেন ঠিক থাকে

৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: দুর্বার ২২ ,




আপনার এই লাইনটি জন্যে .....তবে অন্যান্য পেশার মানুষের চেয়ে ডাক্তারদের একটু বেশি কথা শুনতে হয়.
নীচের লিংক দু'টো দিলুম প্রাসঙ্গিকতার কারনে ------

চিকিৎসক- রোগী: একটি জটিল মনঃস্তত্ব
চিকিৎসক- রোগী: একটি জটিল মনঃস্তত্ব

।।চিকিৎসক- রোগী: একটি জটিল মনঃস্তত্ব ।।

৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১২

আগুনে পাখি বলেছেন: আমিও পেশায় একজন ডাক্তার, আমিও এই প্রশ্নটা প্রতিদিনই শুনে থাকি।
অনেকে বলেন এলাকা বা, আর্থিক অবস্থা বুঝে ফি নিতে। কিন্তু আমার কথা হলো যার সামর্থ্য কম অথবা নেই - তিনি কেন একজন সুপার স্পেশালিস্টের কাছে যাবেন ? প্রথমত সরকারি হাসপাতাল রয়েছে, দ্বিতীয়ত অনেক জুনিয়র ডাক্তার রয়েছেন। তারা চাইলেই কম খরচে সেবা পেতে পারে।

অনেকে আরও বলে মাত্র দু'মিনিট দেখে কেন ৫০০-১০০০/- টাকা ফিস নিল ? আরো কেন দেখল না ?
জনাবঃ তিনি আপনার রোগনির্ণয় দু'মিনিটে নয়, দু সেকেন্ডে করে দিতে পারেন। কিন্তু একজন সাধারোন মানুষকে দিন এ কাজ করতে - সে সারাদিন হাতড়েও কিছু পাবে না। এই অসম্ভব কাজকে যদি কেউ দু'মিনিটে নামিয়ে আনতে পারে, কেন সে তার ন্যায্য মজুরি পাবে না ?

একজন ভালো উকিলের কাছে কন্সালটেশন ফি ঘন্টায় ২৫,০০০-১,০০,০০০/- বা, তারও বেশি। সেখানে আমাদের ফিস নিয়েই কেন কথা উঠবে ? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রফেসরের ফিস প্রায় ৮,০০০-১০,০০০/- ডলার। সেখানে আমাদের দেশের প্রফেসরকে ৮০০ টাকা দিতেই আন্দোলন শুরু হয় আরকি ......

আমরা সরকারি হাসপাতালে রাত দিন খেটে মরি, ঈদ-পূজা-পার্বণ সবসময়ই ডাক্তার কর্মরত থাকে। তবুও আমাদের শুনতে হয় আমরা কর্তব্যে অবহেলা করি।
দেশে বর্তমানে প্রায় ২৫০০ জনের জন্য একজন ডাক্তার, সরকারি হাসপাতালে সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। বিছানা তো পরে, মেঝেতেও শোয়ার জায়গা থাকে না। সেখানে অক্লান্ত সেবা দিয়ে যেতেই হয়।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৪৯

দুর্বার ২২ বলেছেন: আসলে কিছু বলার নাই, আমাদের অনুভূতি উনারা বুঝবেন না

৮| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩

বাঁশ আর বাঁশ বলেছেন: যাই হোক, ডাক্তারেরা কসাই (কারণ জনগণ তো গরু-ছাগল)।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১১

দুর্বার ২২ বলেছেন: হাহাহাহা! কিছু মানুষ তো গরু ছাগলের মতই আচরণ করে. তাদের জন্য কসাই না হয়ে পারা যায় না

৯| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: সব পেশাতেই পরিশ্রম করতে হয় টাকা খরচ করতে হয়। আপনি নিজে ডাক্তর তাই আপনারটা বেশী মনে হবে। মনে রাখবেন আপনি ছাত্রজীবনে যা খরচ করেন তার চাইতে কয়েকগুন বেশী খরচ করে আপনার পিছনে সরকার। জাতি হিসেবে মানুষ হিসেবে আমরা বিশ্বে সবচাইতে নীচু মানের। আমরা লোভী, অলস, অদক্ষ, অকর্মন্য, পরশ্রীকাতর, দুর্ণীতিবাজ, সংকীর্ণমনা ....। সুতরাং সমালোচনা করে লাভ নেই। চরিত্র ভাল হবেনা কোনদিন।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৪

দুর্বার ২২ বলেছেন: কার চরিত্রের কথা বললেন সেটা বোধগম্য নয়. তবে যে ভাল সে সব পেশাতেই ভাল.

১০| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমার ছোটভাই সমতুল্য একজন এক দায়াগনেস্তিক সেন্টারে কর্মরত , কথা প্রসঙ্গে কি একটা খটোমটো টেস্টের কথা বলে সে জানালো , গত ৬ মাসে আমরা ১০০র উপরে এই টেস্ট করিয়েছি । রোগ সনাক্ত হয়েছে ২ জনের ।
এটা কে কি ডাক্তার েরঅনুমান শক্তির অভাব বলবো নাকি কমিশন বানিজ্যের ধান্দা ?

অবশ্য এদের মাঝে ভাল ডাক্তারও যে নাই এমন নয় ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৩

দুর্বার ২২ বলেছেন: এটা ডাক্তারের দোষ নয়, এটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সমস্যা

১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১০

প্রামানিক বলেছেন: কাহিনীর সাথে বাস্তবতার যথেষ্ট মিল আছে। ধন্যবাদ

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৪

দুর্বার ২২ বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ

১২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৫২

একটি পেন্সিল বলেছেন: এখানে আমি একটি কথাই বলতে চাই, একজন ডাক্তার তার পরিশ্রমকে যদি টাকার সাথে তুলনা করেন, তবে তার ভিজিট এক হাজার না দশ হাজার হওয়া উচিৎ। আর যদি মানবিক দিকের সাথে তুলনা করেন, তবে তার পেশাকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন। তবে কারোই টাকার জন্য অন্তত ডাক্তার হওয়া উচিৎ নয়। একজন ডাক্তারের পরিশ্রম টাকার মাধ্যমেও সার্থক হতে পারে, আবার রোগীর হাসির মাধ্যমে হতে পারে। পৃথিবীতে অনেক বড় বড় বিজ্ঞানী, ভাল মানুষ অনেক পরিশ্রম করে গেছেন ভাল কাজ করার জন্য, কেন করেছেন? কি পেয়েছেন, কি পাওয়ার আশায় পরিশ্রম করেছেন?

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৩

দুর্বার ২২ বলেছেন: বাস্তবতা বড়ই কঠিন ব্রাদার!!!

১৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১৪

একটি পেন্সিল বলেছেন: আমি "একজন ডাক্তারের ভিজিট কত হওয়া উচিৎ" শিরোনামে একটা পোস্ট দেব আগামিকাল। আশা করি পড়বেন।

১৪| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৫৭

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: আপনি একজন ডাক্তার। আপনার লেখা পড়েই বুঝা গেল।

হ্যাঁ, গল্পের আড়ালেই শিক্ষানবীশ ডাক্তার থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার পর্যন্ত কষ্টগুলোর বিবরণ দিয়ে গেলেন।

আসলে যে কোন সেক্টরেই প্রতিষ্ঠিত হওয়াটা কষ্টের। পরিশ্রম লাগেই।

আর, ডাক্তারদের কথা বললে - হ্যাঁ, তাদের ছাত্র অবস্থায়ও পরিশ্রম করতে হয়, আবার, পেশাগত জীবনেও প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।
আমার ডাক্তার বন্ধুদের থেকে শুনেছি - একবার মেডিক্যালের জগতে পা দেওয়া মানে - আরামের ঘুমের প্রতি মায়া ত্যাগ করা।

তবে, এই জায়গাটায়ও কলঙ্ক ধরে গেছে। এখনকার ডাক্তারদের মাঝে প্যাশনের থেকে কমিশন, ব্যবসার দিকে আগ্রহ বেড়ে গেছে।

লিটন ভাইতো মন্তব্যে একটা দিক উল্লেখ করলোই। আপনি মন্তব্যে জানালেন ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সমস্যা।

যাই হোক বলি, বছরের শুরুতে আমার বাবা অসুস্থ ছিল। ডাক্তার দেখানোর অনেকগুলো টেস্ট করতে দিল। সাথে কোথা থেকে করাতে হবে সেটাও বলে দিল। তো, গেলাম ডাক্তারের কথামত ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে। প্রতিটি টেস্টেরই আকাশ ছোয়া মূল্য। যেহেতু, ডাক্তারের রেফারেন্স তাই ১৫% কমিশন। করালাম টেস্ট।
তারপর, সেম টেস্টগুলোই অন্য একটায় করালাম। এটায় খরচ আগেরটা থেকে ৪০% কম লাগলো। ডাক্তারের রেফারেন্স ছাড়াই। এবং সেখানকার এক ভিজিটিং ডাক্তার এসে বলল - এতগুলো টেস্টের কোন দরকারও নেই। কয়েকটা টেস্ট বেশি দিয়ে ফেলেছে। যাই হোক, সেখান থেকেও টেস্ট করালাম।

টেস্টের ফলাফল দুই জায়গায় ভিন্ন। ডাক্তারের রেফারেন্স করা সেন্টার থেকে আব্বুর অনেক মেজর মাপের অসুখ ধরা পড়লো। আর, অন্যটা থেকে অসুখ ধরা পড়লো, তবে তা এতটা মেজর না।

ডাক্তারকে ফলাফল দেখানোর পর - সে তার রেফারেন্স করা জায়গার রিপোর্ট দেখে এক গাদা ঔষুধ লিখে দিল। মনে খটকা লাগলেও - ডাক্তারের নির্দেশমতই চললাম। এবং আমার বাপ প্রায় মরার দশায়।
পরে হাসপাতালে ভর্তি করে জানা গেল, আগের ঐ স্বল্পমূল্যে করা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের রিপোর্টই ঠিক ছিল। অত্টা অসুস্থ ছিল না। বরং, ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা অতিরিক্ত মেডিসিনই প্রায় মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছিল।

যাই হোক, কপাল ভাল যে - পরে ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয় নাই।

এখন, আপনি বলুন - এটাও কি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সমস্যা? নাকি ডাক্তারের বিজনেস? এক টেস্ট করানোয় সে কমিশন পাচ্ছে, দুই কোম্পানীর ঔষুধ প্রেসক্রাইব করায় কমিশন পাচ্ছে। তো, এই ক্ষেত্রে কি আপনার মনে হয় না - ডাক্তার হতে সে যা পরিশ্রম করেছিল - তার থেকে অনেক পরিমাণ বেশি উসুল করে নিয়েছে? রোগীকে প্রায় মেরেই তো ফেলেছিল।

আর, ফি-এর কথা বললে - ময়মনসিংহে এক ডাক্তার আছে যার এখনকার ভিজিট ২২০ টাকা। এর মাঝে ২০০ তার, ২০ তার সহযোগীর, যে সিরিয়াল কাটে। ২২০ টাকা করেছে সবে দেড় বছর হল। এর আগ পর্যন্ত, ১২০ টাকা ছিল ফি।
এই ডাক্তারের পরিশ্রম দেখলে আপনি ডাক্তার হয়েও অবাক হয়ে যাবেন। দুপুর থেকে বসে ভোর পর্যন্ত রোগীই দেখে। খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন উনার সম্পর্কে।

তাহলে, এই ক্ষেত্রে, উনার পরিশ্রমের সাথে ফি কতটুকু খাপ খাচ্ছে - আপনিই চিন্তা করুন।

আর, আমি যতদূর জানি - ডাক্তারি, শিক্ষকতা - এইসব পেশায় টাকার থেকে সেবাটাই মূখ্য। নোবেল প্রফেশন এগুলো।
কিন্তু, কিছু কুলাঙ্গার থেকে শুরু করে এখন তো অনেক বড় সমাজই হয়ে গেছে যারা, শুধু টাকার লোভেই এই প্রফেশনগুলো বেছে নেয়।

আপনার প্রতি ডাক্তারের প্রতি কোন ক্ষোভ থেকে কমেন্টটা করিনি, কিন্তু এখনকার পারিপার্শ্বিক অবস্থা চিন্তা করলে - ডাক্তাররা যতই পরিশ্রম করুক - তাদের প্রতি আর ততটা সম্মান আসে না।
সব ভাল লোকদের মাঝে কিছু খারাপই যথেষ্ট - পুরো গোষ্ঠিকে কলঙ্কিত করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.