নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদকের বিরুদ্ধে অবিরাম প্রতিবাদ....

পলাশ রহমান

লিখার মতো কিছু নেই।

পলাশ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হ্যাঁ-না-এর জাঁতাকলে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষ

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:১৪

রাজনীতির মাঠ এখন রুটিভাজা তাওয়ার মতো গরম। জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, তাওয়া তত বেশি ক্ষ্যাপাটে হয়ে উঠছে। রাজনীতির লু’হাওয়ায় মানুষ পুড়ে অঙ্গার হচ্ছে। অতীত এবং বর্তমানের অভিজ্ঞতা বলে আরও পুড়বে, আরও অঙ্গার হবে। জামায়াত ও ছাত্রশিবির নৈরাজ্যের পথ বেছে নিয়েছে। প্রথম দিকে তাদের হামলার প্রধান শিকার ছিল পুলিশ। এখন রেহাই পাচ্ছে না সাধারণ মানুষও। জামায়াত-শিবিরের হামলাকে রাজনৈতিক বলা যাবে না। তাদের আন্দোলন বা হামলা ঘনিয়ে আসা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়। তারা চায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ হোক। মুক্ত হোক তাদের যুদ্ধাপরাধী নেতারা। তাদের আবদারের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। অনাকাক্সিক্ষতভাবে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য ইসলামি দল। তারা হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে নবী (দ) এর অবমাননার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। সরকার তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। শোনা যায় হেফাজতে ইসলামের একটি অংশকে জামায়াতে ইসলামি কোটি টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে। বিক্রি হওয়া অংশটি এখন জামায়াতের পক্ষে হেফাজতকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। এই বিষয় নিয়ে হেফাজতের ঐ অংশের সঙ্গে চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন ইসলামি আন্দোলনের বাদানুবাদও হয়েছে। দৃশ্যত এ কারণে ইসলামি আন্দোলন হেফাজতে ইসলাম থেকে সরে এসে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছে। হেফাজতের সঙ্গে তাদের যেটুকু সম্পর্ক আছে তা শুধু সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি মাওলানা শফির জন্য। ইসলামি আন্দোলন চায় না, কোনোভাবেই তাদের আন্দোলনের ফসল বিএনপি জামায়াতের ঘরে উঠুক। বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে সরকারকেও দেখা যায় ইসলামি আন্দোলনের ব্যাপারে তুলনামূলক নমনীয়। এসব কারণে অনেকেই মনে করেন সরকার ও ইসলামি আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে একটা গোপন আঁতাত আছে। এ বিষয়ে হেফাজতে ইমলামের সাম্প্রতিক এক সভায় ইসলামি আন্দোলনের নেতা মুফতি ফয়জুল করীম বলেছেন, ইসলামি আন্দোলন যদি দিনের বেলায় সরকারবিরোধী কথা বলে আর রাতের অন্ধকারে সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে তবে ইসলামি আন্দোলনের ওপর আল্লাহর গজব নাজিল হোক। অপরদিকে শাহবাগের দখল ছাড়েনি প্রজন্ম। তারা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে রুমি স্কোয়াড। বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোট ও অন্যান্য প্রায় সকল খুচরা দলের দাবি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা হরতালসহ শক্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির পথে হাঁটছে। তাদের ভাংচুর আর আগুন উৎসব দেখে মনে হয় দেশটা তাদের নয়, অন্য কারও। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য তারা রাজনীতি করে না, ধ্বংসের জন্য তাদের রাজনীতি। সব মিলিয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় কাটছে প্রতিটি সময়। এদিকে আওয়ামী লীগের এক কথা, ‘না’ কেয়ারটেকার সরকারে ফেরা যাবে না। তাতে আবার জেলের ঘানি টানতে হতে পারে। এত বড় আশঙ্কা নেয়া যাবে না কোনো মতে। আওয়ামী মহাজোটের অন্যরা অবশ্য খোলাখুলিভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একমত না। বরং তাদের অনেকেই মাঝেমধ্যে এমন কথা বলে বসেন যা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষেই যায়। এক সময় আওয়ামী লীগ চেয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বিএনপি বলেছে ‘না’। এখন বিএনপি বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আওয়ামী লীগ বলছে ‘না’। ‘হ্যাঁ’ ‘না’র জাঁতাকলে চিড়েচ্যাপ্টা হয়েছে এবং হচ্ছে দেশের মানুষ।





ইতালির মূলধারায় ডেমক্র্যাটিক পার্টির রাজনীতি করেন অভিবাসী কাওসার জামান। জন্ম সিলেটে। ইতালিতে এসেছেন ১৯৯০ সালে। বসবাস করেন ব্রেশিয়া শহরে। কাজ করেন গ্রুপ্পো বাংকা কারিজে নামের একটি ব্যাংকিং গ্রুপে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অচলাবন্থা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে কাওসার জামান বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতির নামে যা হচ্ছে তাকে রাজনীতি বলা যায় না। তার ভাষায়- এটা খুব কুৎসিত একটা অসুস্থ ধারা। তিনি বলেন, গত ২৩ বছরে বহুবার দেশে গিয়েছি বিনিয়োগ করার জন্য। প্রতিবারই ফিরে এসেছি। সব জায়গায় ঘুষ দুর্নীতি। কোনো কিছু করার আগেই তারা হিসাব করে নিজের পকেটে কত যাবে। সহজ বিষয়গুলোকে অকারণে জটিল করে রাখে। মনে হয় রাজনীতিকরাই চায় না দেশে বিনিয়োগ আসুক। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য করতে হলে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই করতে হবে। অনেকেই বলেন, গণতন্ত্রের সঙ্গে কেয়ারটেকার সরকার যায় না। আসলে তা নয়। কেয়ারটেকার সরকার যদি স্বচ্ছ নির্বাচন করতে সক্ষম হয় এবং এই পদ্ধতি যদি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় তবে গণতন্ত্রের সঙ্গে কোনো সংঘর্ষ থাকার কথা নয়। গণতন্ত্র কোনো অপরিবর্তিত বিষয় নয়। বাংলাদেশের জনগণ যদি কেয়ারটেকার সরকার চায়, তবে তা আইন করে বন্ধ করাই বরং গণতন্ত্রবিরোধী।

রিপন খান, বাংলা প্রেসক্লাব ইতালির সভাপতি। ‘প্রবাসী’ নামে একটা পত্রিকাও আছে তার। তিনি বলেন, আগে বুঝতে হবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে কতটুকু। যে দেশে সামান্য একটা লুঙ্গি বা শাড়ির বিনিময়ে ভোট কেনা যায়, সে দেশে গণতন্ত্র কতটা সচল বা কিভাবে সচল তা চিন্তার বিষয়। রাজনীতিকরা এ সুযোগটাই নেন। তারা কৌশলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখেন। সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সংহত করা আছে। দলীয় এমপি দল উত্থাপিত কোনো বিল বা আইনের বিরুদ্ধে রায় দিতে পারবে না, তার সদস্যপদ থাকবে না। দলীয় প্রধানকে দেয়া হয় সর্বময় ক্ষমতা। এগুলো গণতন্ত্রের ভাষা নয়। আওয়ামী লীগ বিএনপি সচেতনভাবে এই বিষয়গুলো এড়িয়ে যায়। জনগণকে গণতন্ত্র নামের মুলা দেখায়।

কেয়ারটেকার সরকার বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার চেয়েছিল বিএনপিকে এই দাবি থেকে দূরে সরাতে, তারা সফল হয়েছে। বিএনপি এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসেছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জোরালো দাবি তুলতে পারেনি। এর প্রয়োজনীয়তা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি। তাদের ব্যর্থতার সুযোগ সরকার ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। রাজনীতিতে এটাই তো স্বাভাবিক।

শেওলা রহমান, প্রবাসী গৃহিণী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, দেশের এই বেহাল দশার জন্য দায়ী জনগণ। তারা কেন দুই নেত্রীকে ত্যাগ করতে পারে না? কিসের এত মোহ দুই নেত্রীর প্রতি? তারা কি দিতে পেরেছেন দেশকে? এতগুলো বছর হয়ে গেল, তারা পরস্পরের প্রতি সামান্যতম আস্থা অর্জন করতে পারেননি। নির্বাচন এলেই টানাপড়েন শুরু হয়। কিভাবে নির্বাচন হবে, কোন পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। বিরোধী দল সংসদে না যাওয়াকে প্রথা বানিয়ে নিয়েছে। এরপরও জনগণ তাদের মোহ ত্যাগ করতে পারে না। এভাবে চলে না, চলতে পারে না। জনগণকে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বড় দুই দলের মনোপলি রাজনীতির অবসান ঘটাতে না পারলে কেয়ারটেকার সরকার দিয়ে কিছু হবে না। কেয়ারটেকার সরকার ফেয়ার নির্বাচন করে দিলেই কি, আর না দিলেই কি? ক্ষমতায় তো এরাই যাবে। আবারও লুটপাট, হত্যা, গুম, সন্ত্রাস, প্রতিহিংসা, জ্বালাও পোড়াও এইতো। সব কিছুর আগে দেশের জনগণের ভাবা উচিত রাজনীতি থেকে এদের কিভাবে বিদায় করা যায়, তারপর অন্যকিছু।





তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বাংলাদেশে আগেও বিশৃঙ্খলা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। এই বিশৃঙ্খলা আসলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নয়, বিশৃঙ্খলা ক্ষমতার জন্য। দুই দলই ক্ষমতার নিশ্চয়তা চায়। হাতিয়ার হিসেবে তারা ব্যবহার করছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অথচ তারা পরস্পরের প্রতি তিল পরিমাণ আস্থা বা বিশ্বাস অর্জন করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিজেদের গা বাঁচাতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে আদালতের রায়। আদালতও এমন একটি জনবিষয়ে ‘অবিবেচক’ রায় দিয়ে দিয়েছে। বিচারপতি একবারও ভাবলেন না, রাজনীতিকরা রায়ের অপব্যবহার করবে। দেশের রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু কোনো ফৌজদারি মামলা নয় যে বিচারক সাক্ষীপ্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করে দেবেন। সব কিছুর সমাধান আদালতের রায় দিয়ে হয় না। এখন যদি বিএনপি সত্যিই নির্বাচনে না যায়, দেশে গণতান্ত্রিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়, তার দায় নেবে কে? নেবেন ঐ বিচারপতি? তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি একটি জনরায়ের বিষয়, আদালতের রায়ের বিষয় নয়। বিচারপতি এ কথাটি বিবেচনায় নিয়ে- একটি গণভোটের পরামর্শ দিতে পারতেন। তাতে গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণের ইচ্ছা অনিচ্ছার প্রকাশ পেতো। নিরপেক্ষ মিডিয়া জরিপ তলব করতে পারত। জনগণের চাওয়া, না চাওয়া বোঝা যেত। অথবা বিষয়টি সংসদের উপরই ছেড়ে দিতে পারতেন। হোক সরকার দলের সদস্য সংসদে বেশি, তবু অন্তত জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকতেন। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি ছোড়ার সুযোগ থাকত না। উন্নত বিশ্ব হলে এমনটিই করা হতো। আমাদের দেশে সব কিছু উল্টা হয়। হয়ত আমাকেই আদালত অবমাননাকারী বলা হবে। কিন্তু না, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আদালতের ওপর শ্রদ্ধা রেখে আদালতের রায়ের গঠনমূলক সমালোচনা নাগরিক সমাজ করতে পারে। উন্নত বিশ্বে এমনটাই দেখি। জানি না আমাদের দেশে কি দেখব। অনেকেই বলেন, উন্নত দেশে কেয়ারটেকার সরকার নেই। নির্বাচন কমিশনই নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করে, আমাদের দেশে নয় কেন? প্রশ্ন করতে খুব ইচ্ছা করে, আমাদের দেশ কি উন্নত দেশের মতো? আমাদের রাজনীতিকরা কি উন্নত? যদি তারা উন্নত হতেন তবে তো তারা সহনশীল হতেন। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকত। আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারতেন। নিজেদের আইনের ঊর্ধেŸ ভাবতেন না। ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে সংসদ ছেড়ে সাধারণ মানুষের দোকানপাট, গাড়ি ভাঙতেন না। দেশের সম্পদে আগুন দিতেন না। কেয়ারটেকার সরকার থাকবে কি থাকবে না, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেশের গণমানুষের ওপর ছেড়ে দিতেন। আদালতের রায় বা সংসদে অতি আসনের জোরে এমন হঠকারী সিদ্ধান্তে অনড় থাকতেন না। অতি আসনে আওয়ামী লীগকে জনগণ নির্বাচিত করেছে আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে গণরায় হত্যা করার জন্য নয়। এই বাস্তবতা বোঝার চেষ্টা করুন এবং সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ফিরিয়ে আনুন। এর দুর্বলতাগুলো সচেতনভাবে সংশোধন করুন। দেখবেন বিশ্বের অনেক দেশের কাছে বাংলাদেশের কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি একটি মডেল হবে। গণতন্ত্রের একটি গ্রহণযোগ্য এবং গণপ্রিয় উইং হবে কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি। আপনারা থাকবেন তার সফল উদ্ভাবক।



http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=8003

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২৫

"চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য, উচ্চ সেথা শির" বলেছেন: শোনা যায় হেফাজতে ইসলামের একটি অংশকে জামায়াতে ইসলামি কোটি টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে।




আমরা তো কতকিছু শুনি তার সব যদি বিশ্বাস করি তাইলে আর মানুষ থাকতে হত না তাইলে পশু হয়ে যেতাম। এরকম কাহিনী কালু বিলাই এর প্রোপাগান্ডা বিভ্রান্তি মূলক, ভিত্তিহিন তথ্য ছাড়া কিছুই নয়

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:১৩

পলাশ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.