![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্ষিয়ান আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক এসেছিলেন পৃথিবীর একমাত্র ভাসমান শহর ইতালির ভেনিসে। সঙ্গে ছেলে এবং ছেলের বউও এসেছিলেন। ভেনিসের গ্রানক্যানেল ছোঁয়া একটি পাঁচতারা হোটেলে ছিলেন তিন দিন। ভেনিস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে তারা নিশ্চই জানেন, ভেনিসের সৌন্দর্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হলে বেশ একটু শক্তি-সমর্থওয়ালা হতে হয়। রফিক-উল-হকের বয়স এখন আশির কোটায়। মানসিক শক্তিতে তিনি এখনও অনেক যুবকের কান কাটলেও শরীর তা মানতে চায় না। ভাসমান ভেনিসের শত শত সেতু ভাঙ্গা তার পক্ষে শুধু কষ্টসাধ্যই নয়, অসম্ভবও বটে। তার পরেও তিনি হোটেলে বসে থাকেননি, সেপ্টেম্বরের হালকা শীতে গায়ে ওভারকোট চাপিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছেন লাঠিতে ভর করে। এক সন্ধ্যায় তিনি আমাকে এবং আমার দুই বন্ধুকে ডিনারের আমন্ত্রণ জানালেন। আমরা হোটেল ওয়েস্টিনের রেস্টুরেন্টে বসলাম। ভেনিসের বিখ্যাত সামুদ্রিক মাছের বিভিন্ন পদের সঙ্গে অলিভ তেলে ভেজানো রুটি আর পাস্তা খেতে খেতে অনেক গল্প হয় তার সঙ্গে। তিনি জানালেন, প্রায় ৪০ বছর আগে একবার ভেনিসে এসেছিলেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিসহ অনেক কিছু নিয়ে কথা হয় আমাদের মধ্যে। হাসতে হাসতে বললাম, দেশের বর্তমান দুরবস্থার জন্য সকল দায় আপনার। ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনি যদি দুই নেত্রীকে জেল থেকে মুক্ত না করতেন তবে দেশের অবস্থা বর্তমানের মতো নাও হতে পারতো। তিনি কিছুই বললেন না, অনেকটা হাসলেন মাত্র। রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলতে বেশ সতর্ক মনে হলো ওনাকে।
তিনি ভেনিসের রেডিও বাঁজের বাংলা অনুষ্ঠানে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে বেশ খোলামেলা এবং তার স্বভাবসুলভ কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরছি।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভালো মন্দ দুইই আছে, তবে দেশ ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা যতোই ক্রিটিসাইজ করি, গত ১০ বছর আগের কথা ভাবেন আর আজকের কথা ভাবেন, দেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষেত্রে, পহেলা জানুয়ারিতে ৩ কোটি বই বিনা পয়শায় দেয়া কী সম্ভব আপনি বলেন! অথচ দেশের সমস্ত স্কুলে ঠিক পহেলা জানুয়ারির মধ্যেই বই পৌঁছে যায়। তার পরে পদ্মা সেতু হচ্ছে, কয়েকটা হাইওয়ে হয়েছে। সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। বিশেষ করে আমাদের কম্যুনিকেশন মিনিস্টার ওবায়দুল কাদের খুবই ভালো, খুবই রি্যজনেবল লোক। ভালো কাজ করলে ভালো কথা বলে, ভুল করলে মাফ চায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা হাসিনা, তিনিও খুব ভালো কাজ করছেন। আফটারঅল তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা এইটুকু ভুলে যাবেন না। বেগম জিয়া সরকারকে ক্রিটিসাইজ করছেন। পার্টি অপজিশন হলেই তো আমাদের অভ্যাস যা সরকার করবে সেটাকে অপোজ করা, আর অপজিশন যা করবে সরকার সেটাকে অপোজ করবে। এই মনোবৃত্তি আমাদের সরাতে হবে, আমাদের নিজেদের মধ্যে মানসিক পরিবর্তন আনতে হবে। একে অপরের সঙ্গে সম্মানের সঙ্গে কথা বলতে হবে। পিনচিং কথা বলে কোনো লাভ নেই। এটাই আমি সব সময় মনে করি- দুই পক্ষকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা বা প্রয়োজন আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ আমাদের কনস্টিটিউশন বলছে, থ্রি হানড্রেড এমপি শুডবি ডাইরেক্টলি ইলেকটেড বাই দা ভোটার্স। কিন্তু এরা তো ডাইরেক্ট ইলেকটেড না। ওয়ান ফিফ্টি ফোর তো ইলেকটেডই হয়নি, আনঅপজড হয়েছে। যে পার্লামেন্টে ওয়ান ফিফ্টি ফোর আনঅপজড হয়, সেটা পার্লামেন্ট কী করে হলো? সুতরাং আমি মনে করি এবং সিরিয়াসলি চিন্তা করি- দেয়ার শুডবি মিডটার্ম ইলেকশন। এবং এটা হবেই, হতে হবে। তা না হলে অনেক অসুবিধা হবে।
প্রফেসর ইউনূস সম্পর্কে রফিক-উল-হক বলেন, সম্মানি ব্যক্তিকে যদি সম্মান দেখান হয় তাতে নিজের সম্মান বাড়ে। সেদিন একটা মিটিং হলো ঢাকায়, সেখানে একজন আমেরিকার লেকচারার বললেন- আমেরিকার আছে স্টাচু অব লিবার্টি, প্যারিসের আছে আইফেল টাওয়ার আর বাংলাদেশের আছে প্রফেসর ইউনূস। চিন্তা করে দেখেন ইউনূস সম্পর্কে তারা কী ভাবে। আর আমরা সেই ইউনূসকে নিয়ে ছেলেখেলা করছি। ইউনুস আমাদের সম্মান এনেছে, দেশের সম্মান এনেছে- উই ফিল প্রাউড ইউনূস বাংলাদেশি।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা উচিত কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি এখন তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে পারে। তার বেল বোধহয় আমিই করে দিয়েছিলাম। দেশে এসে আবার বেল নিলেই হবে। এখন পলিটিক্সে তার মার সঙ্গে থাকা দরকার।
প্রবাসী আয় দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তাকে কিছুটা নার্ভাস মনে হলো। তিনি বলেন, এটা ঠিক না। আপনারা কী টাকা পাঠান যে অবকাঠামো হচ্ছে না! পদ্মা সেতুতে যে টাকা লাগবে আপনারা ১০ বছরে সেই টাকা রেমিট করতে পারবেন? মেইন ইস্যু তো হচ্ছে সেতু! পদ্মা সেতুতো ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাহায্য ছাড়াই শুরু করেছে। আপনাদের রেমিটেন্স যা আসে তাতে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন অনেক বেশি, ২২ বিলিয়ন না যেনো কতো ডলার হবে। রিজার্ভ বেশি থাকা তো ভালো না।
http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=9655
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৩৯
পলাশ রহমান বলেছেন: আসলেই তাই, উনি অন্য সব আইন ব্যবসায়ীদের মতো না।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
আমিনুর রহমান বলেছেন:
ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে আমার সবসময় চমৎকার একজন মানুষ মনে হয়েছে। আইন ব্যবসায় থাকা লোকগুলো থেকে একটু ব্যতিক্রমি মানুষ উনি।
দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে উনার ভাবনাগুলো দারুণ।
শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।