![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের দেশে কেন ইমিগ্রেশন কার্ড পূরণ করতে হয়, এর উদ্দেশ্য কী, আমি জানি না। প্রশ্ন করেও কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাইনি। ওই কার্ডে যা যা লিখতে হয়, তা পাসপোর্ট এবং টিকেটেই লেখা থাকে, আবার কেন লিখতে হবে? আমি খেয়াল করে দেখেছি, ইমিগ্রেশন পুলিশরা ওই কার্ডের দিকে ফিরেও তাকায় না। আমি ইচ্ছা করে ভুল তথ্য লিখে দেখেছি, তারা দেখে না। টেবিলের ওপর রেখে দেয়। তাদের পায়ের কাছে শতশত ইমিগ্রেশন কার্ড (পূরণ করা) পড়ে থাকতে দেখা যায়। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের ইমিগ্রেশন আমি পার হয়েছি। কোথাও ওই ধরনের কার্ড পূরণের বালাই দেখিনি। শুধু ইংল্যান্ডে প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশন কার্ড পূরণ করতে দেখেছি, তা-ও শুধু বিদেশিদের জন্য। ইংলিশদের জন্য ওই কার্ড না। আমাদের দেশে কেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ওই কার্ড পূরণ করতে হবে, তা আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না। বিদেশিদের ক্ষেত্রে একটা যুক্তি থাকতে পারে, তারা কোথায় থাকে, ক’দিন থাকে তার একটা প্রাথমিক ধারণার জন্য ওই কার্ড পূরণ করতে হতে পারে। (যদিও বর্তমান প্রযুক্তির যুগে এটি খুবই হাস্যকর) কিন্তু বাংলাদেশিদের ইমিগ্রেশন কার্ড পূরণ করতে হবে কেন? সত্যিই কি ওই কার্ডের কোনো ব্যবহার আছে? তথ্য যা থাকার তাতো ইমিগ্রেশন বিভাগের কম্পিউটারে অথবা সার্ভারে থাকার কথা। ওই এক টুকরো কাগজের এমন কি ব্যবহার আছে? জানতে খুব ইচ্ছা করে, কিন্তু প্রিয় বাংলাদেশে ইচ্ছা করলেই সবকিছু জানা যায় না। অনেকের মতো আমারও ধারণা, প্রবাসীদের হয়রানি এবং নির্যাতন করার জন্যই এমন একটা অযথা ঝামেলার জন্ম দিয়ে রাখা হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকায় থাকা প্রবাসীদের কথা বাদ দিলাম, আরব বিশ্বে থাকা আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বিষয়টি আসলেই একটা বাড়তি ঝামেলা। এ ঝামেলা থেকে কি তাদের রেহাই দেয়া যায় না? সারা বছর গাধার খাটুনি খেটে দেশে টাকা পাঠানো মানুষগুলোর জন্য নিয়ম-কানুন একটু কি সহজ করা যায় না? কোনো মানবিকতা কি এখানে কাজ করে না? কিছুটা সম্মান, সমাদর কি এই কামলারা (আপনাদের ভাষায়) আশা করতে পারে না? কী লাভ সবকিছুতে অবান্তর জটিলতা সৃষ্টি করে? একজন মানুষ যখন নিজ দেশে প্রবেশ করে তার জন্যেতো এত সার্কাসের দরকার নেই। তার পাসপোর্ট দেখে ইমিগ্রেশন সিল লাগাতে কোনোভাবেই দেড় মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা না। বিশ্বজুড়ে আমরা এমনটাই দেখি। দু’একজন যারা সন্দেহভাজন, তাদের কথা আলাদা। তাই বলে একশ জনে একশ জনইতো সন্দেহভাজন হয় না। আমাদের এয়ারপোর্টে যারা কাজ করে, তাদের কি আরেকটু দক্ষ করে তোলা যায় না? কাজের প্রতি আন্তরিক করে তোলা যায় না?
আমাদের দেশে পাসপোর্ট দেয়া হয় পাঁচ বছর মেয়াদি। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এমন নিয়ম চালু আছে বলে আমার জানা নেই। আমাদের দেশে কেন দেয়া হয় ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট আমি জানি না। সংশ্লিষ্ট একজনকে প্রশ্ন করেছিলাম, দুনিয়ার তামাম দেশের পাসপোর্ট ইস্যু করা হয় ১০ বছর মেয়াদি, আমাদের দেশে কেন ৫ বছর মেয়াদি? তিনি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে দিলবাহারের মতো করে উত্তর দিয়েছিলেন, পাসপোর্টধারীদের সরকারি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ৫ বছর পরপর নবায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তার উত্তর শুনে আমি হাসব না কাঁদব, কিছুই বুঝতে পারিনি। এত হাস্যকর এবং নি¤œমানের চিন্তা মানুষ করে কী করে? দেশে-বিদেশে সব জায়গায়, পাসপোর্ট নবায়ন করা মানে বিনা দোষে দণ্ডি দেয়া। যুক্তিসংগত কোনো কারণ ছাড়াই ৫ বছর পরপর পাসপোর্টধারীদের জন্য একটা পানিশমেন্টের ব্যবস্থা করে রেখেছে আমাদের সরকার। দেশে তবু দালাল ধরে অনেক কাজ করে নেয়া যায়, প্রবাসীরা কী করবে? তাদের ভোগান্তি কে লাঘব করবে? প্রবাসীরা দূতাবাসে পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য কাজের জন্য গিয়ে কী মাত্রায় নির্যাতিত হয়, তা বহুবার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, এখনো হয়। কিন্তু আমাদের নীতিনির্ধারকদের শুভবুদ্ধির উদয় হয় না। ভেবেছিলাম এমআরপি করার সময় হয়তো তাদের জং পড়া বুদ্ধিতে কিছুটা নাড়াচাড়া পড়বে, পড়েনি। এমআরপিও ৫ বছর মেয়াদি করে রেখেছে আমাদের স্থুলবুদ্ধির সরকার। অথচ জাতীয় পরিচয়পত্রে মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখই নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়া কোনো ডকুমেন্ট গ্রহণযোগ্য হয়? বিশ্বমানের হয়? ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্টে ১০ বছরের মেয়াদ বেঁধে দেয়া হয় মূলত ছবি বদল করা জন্য। অথচ আমাদের দেশে সবকিছু উল্টা-পাল্টা। সব জায়গায় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা। একটা ডকুমেন্টে মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখই নেই, অন্যটা করে রেখেছে ৫ বছর মেয়াদি। খামখেয়ালিপনার একটা সীমা থাকা উচিত। যে সীমা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে চলেছে প্রিয় বাংলাদেশ।
এখানে ছোট একটা হিসাব দেখানো যেতে পারেÑ ইতালির ভেনিসে বসবাসকারী একজন প্রবাসী যদি পাসপোর্ট নবায়নের জন্য রোমে যায়, তবে যাতায়াতে তার খরচ হয় দেড় থেকে দুইশ ইউরো। সারাদিনের খাওয়া-দাওয়াসহ অন্যান্য প্রয়োজনে আরও একশ ইউরো। কমপক্ষে একদিন কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে হয়, এতে প্রায় একশ ইউরো বেতন কম পায়। নবায়নের জন্য বছরপ্রতি ১৫ ইউরো করে ফি দিতে হয়। সব মিলিয়ে একটা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য একজন প্রবাসীকে কম করে হলেও আড়াই থেকে তিনশ ইউরো দণ্ডি দিতে হয়। সারাদিন দূতাবাসে পড়ে থাকতে হয়, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট তো আছেই। গত ক’বছর যাবৎ ইতালির মিলানোয় কনসাল জেনারেলের কার্যালয় খোলা হয়েছে। এতে প্রবাসীদের যে বিশাল (!) উপকার হয়েছে তা হলো- যাতায়াত বাবদ ৫০/৬০ ইউরো খরচ বেঁচেছে। আর সরকারের উপকার হয়েছে- লাখ লাখ ইউরো খরচ এবং লুটপাটের নতুন একটা দোকান খোলা সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে শুধু পাঁচ বছরি একটা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য প্রবাসীদের আরও অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হয়। অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। পাড়ি দিতে হয় দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। অনেক সময় স্বামী, স্ত্রী, সন্তান সবার পাসপোর্ট একসঙ্গে নবায়নের দরকার হয়। তখন ওই প্রবাসীর কাছে একসঙ্গে এত টাকা না-ও থাকতে পারে। কর্মস্থল থেকে ছুটি নেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই চাকরি করার কারণে একসঙ্গে ছুটির বন্দোবস্ত না-ও হতে পারে। সন্তানের স্কুল থেকে ছুটি নিতে জটিলতা হতে পারে। স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের পাসপোর্ট নবায়নের সময় ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এতগুলো ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় শুধু পাঁচ বছরি নবায়নের জন্য। দেশ থেকে পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে দালালদের নির্যাতনও কম নয়। বহুবার সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, দালালদের একটা নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হোক। দালালদের দ্বারা মানুষ যে শুধু নির্যাতিত হয়, তা তো নয়, ওদের দ্বারা মানুষের উপকারও হয়। অনেকের জন্য জটিল কাজ ওরা সহজ করে দেয়। ওদের উচ্ছেদ না করে একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা যেতে পারে। প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে নির্দিষ্ট সংখ্যক দালালকে সরকার অনুমোদন দিতে পারে। এতে কিছু মানুষের বেকারত্ব ঘুচবে, ট্যাক্স আদায়ের খাত সৃষ্টি হবে, হয়রানি নির্যাতন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যাবে। জবাবদিহি সৃষ্টি করা যাবে। কিন্তু সরকার তা করে না। প্রবাসেও আমরা বহুবার দাবি জানিয়েছি, প্রতিটি বড় শহরে দুই-একজন করে দূতাবাস বা কনসাল জেনারেলের কার্যালয় থেকে অবৈতনিক প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হোক। এতে ওই শহরগুলোতে দুই-একজন করে প্রবাসীর কিছু বাড়তি ইনকামের ব্যবস্থা হবে, দূতাবাসে প্রবাসীদের ভিড় ও কাজের চাপ শিথিল হবে এবং প্রবাসীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। কিন্তু আমাদের সরকারি নীতিনির্ধারকরা তা করে না। কোনো কোনো শহরে কিছু বেকার প্রবাসী নিজ উদ্যোগে একাজ শুরু করেছিল। তারা পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্যান্য কাজের জন্য দূতাবাসের নির্ধারিত ফি’র বাইরে ১০/২০ ইউরো করে সার্ভিস চার্জ নিত। সপ্তাহে একদিন তারা দূতাবাসে গিয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো পাসপোর্টের কাজ করে নিয়ে আসত। এতে উভয়ই উপকৃত হতো। দূতাবাসেও মানুষের চাপ কমত। কিন্তু সম্প্রতি কিছু কিছু দূতাবাস এ সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে, যার পাসপোর্ট তাকেই আসতে হবে, অন্য কেউ এলে চলবে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দূতাবাস কর্মচারীরা এদের কাছে সার্ভিস চার্জ বাবদ নেয়া টাকার ভাগ দাবি করে, ভাগাভাগিতে বনিবনা না হওয়ায় তারা তা বন্ধ করে দেয়। কোনো কোনো দূতাবাস এবং কনসাল কার্যালয় প্রবাসী বেকারদের একাজ বন্ধ করে দিয়ে প্রায় অভিন্ন পদ্ধতিতে তা তুলে দিয়েছে বিদেশিদের হাতে। বিদেশিরা এখন অনেক বেশি সার্ভিস চার্জ নিয়ে একই কাজ করছে। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশিদের পকেটে। এই অপকর্মটি করেছে আমাদের নিজ দেশের দূতাবাস।
আমরা বহুবার বলেছি, বিভিন্ন দেশে যেসব প্রবাসী দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে বসবাস করছেন, যারা বিভিন্নভাবে প্রবাসে সফলতা দেখাতে পেরেছেন, শিক্ষা এবং প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন, তাদের মধ্যে থেকে বড় শহরভিত্তিক একজন করে অবৈতনিক কনসাল নিয়োগ দেয়া হোক। দুই-তিন বছর মেয়াদি ওই কনসালদের নিয়োগের সময় দুই দেশের ব্যবসায়িক উন্নয়ন এবং শ্রমিক খাত বৃদ্ধির টার্গেট দিয়ে দেয়া হবে। যারা টার্গেট পূরণ করতে পারবে, তাদের জন্য রাষ্ট্রিয় অ্যাওয়ার্ডের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু আমাদের সরকাররা তা করে না। তারা অবৈতনিক কনসাল নিয়োগ করে বিদেশিদের। যারা বাংলাদেশের পতাকা ব্যবহার করে নিজ দেশের সুযোগ সুবিধা ভোগ করা ছাড়া বাংলাদেশের জন্য মূলত কিছুই করে না। বরং বিভিন্ন কৌশলে তারাও প্রবাসীদের টাকা হাতিয়ে নেয়। একজন প্রবাসী যেভাবে দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য কাজ করবে, একজন বিদেশি কখনোই তা করবে না। এই বাস্তবতা বোঝার মতো ঘিলু হয়তো আমাদের সরকারদের মাথায় নেই। অথবা নিজেদের অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য তারা তা আমলে নেয় না। রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস আর একটা নিয়ম চালু করেছে। ইতালির ভেনেতো অঞ্চলে বসবাসকারী কোনো প্রবাসী যদি রোমের দূতাবাসে যায় পাসপোর্ট নবায়নসহ অন্য কোনো কাজের জন্য, তারা তা করে দেয় না। বলা হয়, মিলানোর কনসাল জেনারেলের কার্যালয়ে যান। কারণ আপনি যে অঞ্চলে বসবাস করেন ওই অঞ্চলের দায়িত্ব মিলানো কার্যালয়ের। খুব ভালো কথা, কিন্তু একজন প্রবাসী যদি রোমে অন্য কোনো প্রয়োজনে যায় বা অবসরে বেড়াতে যায় এবং ওই সময় তার দূতাবাস সংক্রান্ত কাজগুলিও সেরে নিতে চায়, সে কেন পারবে না? ভেনেতো অঞ্চলের মানুষ রোমে গেলে এমন কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়? সবাই তো যায় না, প্রতিদিন যায় না, যাওয়া সম্ভবও না। কেউ যদি এক কাজে দুই কাজ সেরে ফেলতে চায়, সে কেন ওই সুযোগ পাবে না নিজ দেশের দূতাবাস থেকে? কী অপরাধ তার? আমি তো এখানে রোমের দূতাবাস এবং মিলানোর কার্যালয়ের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা দেখি না।
চলবে....
http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=10087
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০২
পলাশ রহমান বলেছেন: ঢাকাবাসী কথা কিন্তু খারাপ বলেনি.....
২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫
রাতুলবিডি৪ বলেছেন: প্রিয় বাংলাদেশে ইচ্ছা করলেই সবকিছু জানা যায় না।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:২৭
পলাশ রহমান বলেছেন: সবকিছু না হয় বাদই দিলাম, যেটুকু জানা আমাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে সেটুকুও তো জানতে পারি না....
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৩৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: পৃথিবীতে সবচাইতে দুর্ণীতিবাজ অদক্ষ অকর্মন্য অলস ঘুষখোর অশিক্ষিত সরকারী কর্মচারী হল বা..লা ..শের।