নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর একটি পৃথিবী চাই

পিট পলাশ

নিতান্ত অলস একজন মানুষ

পিট পলাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রমণ ব্লগঃ একদিনে সিলেটের লালাখাল ও জাফলং

২০ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯



সিলেট বরাবরই আমার খুব প্রিয়। ফেব্রুয়ারীর শেষের দিকে আমরা চার বন্ধু মিলে সিলেট ঘুরে এলাম। যদিও আগে বেশ কয়েকবার সিলেট ঘুরেছি। শীত, বর্ষা, গ্রীষ্ম মোটামুটি সব ঋতুতেই সিলেট ঘুরেছি আগে। এবার বসন্তে সিলেট ঘুরে এলাম ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে।

ঢাকা থেকে সিলেট যেতে বরাবরই ইউনিক সার্ভিস আমার প্রথম পছন্দ। ২৭ ফেব্রুয়ারী ইউনিকের টিটপাড়া কাউন্টার থেকে রাত ১১:৩০ এ আমাদের যাত্রা শুরু হয়। নতুন বাস ছিল। সিলেট রুটে তাদের মোটামুটি সব বাসই এখন নতুন। ভোর ৫ টার কিছু আগে সিলেট পৌঁছাই। তখনো আলো ফোটেনি। সিলেট শহর ঘুমন্ত। ৬টা পর্যন্ত কদমতলী ইউনিক কাউন্টারে বসে রইলাম। এরপর সিলেট রেল স্টেশনে গেলাম চট্টগ্রাম থেকে আসা দুই বন্ধুকে রিসিভ করতে। তারা দুজন আগে সিলেট আসেনি। সকাল সাতটায় আমার সেই চাঁটগাইয়া দুই ফ্রেন্ড সিলেট পৌঁছায়। এরপর শাহজালাল (র) এর মাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম সিএনজিতে। ভাড়া পড়ল ১২০ টাকা। মাজার ঘুরে একটা হোটেল নিলাম। হোটেল ইরবাজ। একটা সিংগেল ও ডাবল বেডের রুম নিলাম চার জনের জন্য ১ হাজার টাকায়। হোটেলের কর্মচারীদের সার্ভিস ভালো ছিল। রুমও বেশ ভালো ছিল। হোটেলে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার উদ্দেশ্যে গেলাম আম্বরখানার ডিংগি রেস্টুরেন্ট এ। মাজার গেটের কাছে সবচেয়ে ভালো রেস্টুরেন্ট এটাই মনে হয়েছে আমার কাছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল জাফলং আর লালাখাল ঘুরব। কারণ বিসনাকান্দি আর রাতারগুলে এ সময়টায় পানি থাকে না। সকালে পেটপুরে খেলাম। খিচুরি, পরটা, নান, কলিজি, চা দিয়ে প্রাতঃরাশ সারলাম। কারণ লালাখাল বা জাফলং কোথাও খাওয়ার তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই।

খাওয়া দাওয়ার পরে সিএনজি ঠিক করলাম। ১৫০০ টাকায় শাহ পরাণ (র) এর মাজার, তামাবিল স্থল বন্দর, জাফলং ও লালাখাল ঘুরিয়ে দেখাবেন। সকাল ১০ টার দিকে আমরা যাত্রা শুরু করলাম। রাস্তায় প্রচুর ধুলোবালি ছিল। এছাড়া যেহেতু সিলেট-তামাবিল রোডে প্রচুর পাথরবাহী ট্রাক চলাচল করে তাই কিছু জায়গায় রাস্তা খারাপ। তবে রাস্তার দশা ভুলিয়ে দিতে প্রকৃতি দুহাত বাড়িয়ে আমাদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছিল। জাফলং যাওযার পথে ভারতীয় সীমানার ভেতর থাকা সুন্দর পাহাড়ের সারি, ঝরণাগুলো আফসোস বাড়াচ্ছিল আমাদের। প্রকৃতির অনেক রুপের মালিকানা তাদের। যেহেতু শুকনো মৌসুম তাই পানি চোখে পড়েনি মেঘালয়ের ঝরণাগুলোয়। দুই ঘন্টার কিছু বেশি লাগল জাফলং পৌঁছুতে। জাফলং এর রুপ দেখে এবার ভয়াবহ হতাশ হলাম। বালু উত্তোলন করে নদীটার সৌন্দর্য কিছুই ছিল না বলতে গেলে। আর জিরো পয়েন্ট এলাকায় গত বছর যেখানে গুটি কয়েক দোকান দেখেছিলাম এবার সেখানে গিয়ে মনে হল গুলিস্থান এর ফুটপাথে এসে পড়েছি। মোটামুটি বিশাল এক বাজার বসিয়েছে সেখানে। আর নদীর পাশে পাথরের খাঁজে খাঁজে এহেন কোন আবর্জনা বাদ ছিল না যেটা আমাদের চোখে পড়েনি।









তবে একেবারেই সৌন্দর্যহীন ছিল না। বর্ষায় আবার আগের মত অপরূপ হবে বলে আশা করি জাফলং। তবে আমাদের এভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ড চলতে থাকলে আর বেশিদিন এই রূপ থাকবে না। জাফলং এর কিছু ছবি-






জাফলং এর এই অবস্থা দেখে মন খুব খারাপ হয়ে গেল আমাদের। আধা ঘন্টাও সেখানে ছিলাম না আমরা। তামাবিল দেখার প্লানও বাতিল করলাম এই কারণে। লালাখালের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম এবার। লালাখাল আমাদের ট্যুরটা স্বার্থক করল। সারিঘাট বাজার থেকে একটু ভেতরে আরেকটা ঘাট আছে। সেখান থেকে নৌকা ভাড়া করলাম। ঘাটে গিয়ে দেখলাম খেয়া নৌকায় করে স্থানীয় লোকজন নদী পার হচ্ছে। এক লোককে জিজ্ঞেস করলাম, খেয়ায় করে ওপারে গেলে দেখার মত কিছু আছে কিনা। লোকটি জানাল ওপারে একটা বাজার আছে। লালাখাল টী স্টেট গেলে ইন্জিনের নৌকা ভাড়া করে যেতে হবে। ৮০০ টাকায় নৌকা ভাড়া করলাম আমরা। তবে লালাখাল থেকে ফেরার পথে যে ঘাটে যেতে চেয়েছিলাম খেয়া নৌকায় সে ঘাটেই আবার নৌকা ভেড়ালাম। ছোট্ট বাজার। কয়েকটা দোকান। তবে একটা পুরনো আমলের বাড়ি আছে সেখানে। একটা খেলার মাঠ। এবং দেখতে পেলাম ৫ টাকায় খেয়া নৌকায় নৌকায় নদী পার হয়ে হেঁটে পুরো লালাখাল টী স্টেট ঘুরা যেত। নৌকার মাঝিরা বলে তিনটি স্পটের কথা। জিরো পয়েন্ট আর দুইটা চা বাগান। চা বাগান আসলে এখানে একটাই। একটাকেই তারা দুটো বলে চালিয়ে দেয়। না জানা থাকায় ৪০ টাকার জায়গায় ৮০০ টাকা খরচ হলো আমাদের। অথচ ঘাটে এক লোককে জিজ্ঞেসও করেছিলাম আমরা। মনে হয দালাল টাইপ ছিল লোকটা। তাই সঠিক তথ্য দেয়নি। বাজার বলে যেটা চালিয়ে দিতে চেয়েছিল সেটা আসলে টী স্টেটের শেষ মাথায় কয়েকটা দোকানের সমষ্টি। যাকগে, তবে লালাখাল অনেক সুন্দর থাকে এ সময়টায়। বর্ষায় সিলেট সুন্দর হলেও লালাখালের পানি বাদামী সবুজ হয়ে যায়। এটা আসলে সারি নদী, লালাখাল নামেই বেশী পরিচিত। লালাখার টী স্টেট এবং নৌকা ভ্রমণটা সুন্দর ছিল। লালাখালের কিছু ছবি-





































লালাখাল ঘুরে মোটামুটি প্রশান্ত মনে সিলেট ফিরলাম সন্ধ্যার দিকে। রাত ১ টার বাস ধরলাম আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে। আর চট্টগ্রামবাসী বন্ধুরা রাত ৯ টার ট্রেনে চট্টগ্রামের পথ ধরল। এই ছিল আমাদের একদিনের সিলেট ভ্রমণ।

আমার নিজের মোট খরচঃ
ঢাকা-সিলেট-ঢাকা বাস ভাড়া= ৪৭০+৪৭০= ৯৪০ টাকা
সিলেট কদমতলী থেকে সিএনজি যোগে শাহজালাল (র) এর মাজার= ১২০/৪= ৩০ টাকা
হোটেল= ১০০০/৪=২৫০ টাকা
সকালের খাবার ১৮০ টাকা
জাফলং-লালাখাল সিএনজি ভাড়া= ১৫০০/৪= ৩৭৫ টাকা
লালাখালের নৌকা ভাড়া= ৮০০/৪= ২০০ টাকা
রাতের খাবার= ১২০ টাকা

মোটঃ ২০৯৫ টাকা

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯

আবু আফিয়া বলেছেন: বেশ ভাল লাগল, ধন্যবাদ

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩

পিট পলাশ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৭

শাহিন বিন রফিক বলেছেন: ভাল লাগল আপনার সিলেট ভ্রমণ বর্নণা।

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

পিট পলাশ বলেছেন: আপন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

সুমন কর বলেছেন: ছোট কিন্তু তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

পিট পলাশ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর ভ্রমণ পোস্ট।+
খরচের ব্যাপার উল্লেখ করায় ভালো হয়েছে। যারা যেতে ইচ্ছুক পোস্ট পাঠ করে উপকৃত হবেন।

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫

পিট পলাশ বলেছেন: আপন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা -মনে মনে
মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা- মনে মনে :)

ঘোরাঘুরি আহ! কি যে আনন্দ

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৬

পিট পলাশ বলেছেন: ঘোরাঘুরির মত আনন্দ আর এ জগতে দ্বিতীয়টি হয় না।

৬| ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এমন ছবি দেখলে ইচ্ছে করে ঘর ছেড়ে পালাতে.......তবে অবশ্যই আমাদের প্রকৃতির সাথে ভালো ব্যব হার করতে হবে।

২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৭

পিট পলাশ বলেছেন: ঠিক বলেছেন আপনি। প্রকৃতির সাথে ভালো ব্যবহার করলে প্রকৃতি ভালো থাকবে আর আমরাও ঘর ছেড়ে পালাব সামন্য সুযোগ পেলেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.