নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বাস তর্কাতীত

পিয়েটা

বিশ্বাস তর্কাতীত

পিয়েটা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হ্যামবার্গার বাচ্চাদের জন্য ভালবাসা!

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৪

অভ্রর নতুন স্কুল জুনিয়র ল্যাবরেটরি. আজকে ক্লাস ছিল না, ভাবলাম ওকে স্কুল থেকে নিয়ে আসি। অভ্রকে এই স্কুলে ভর্তি করাতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। ঢাকায় চার পাঁচটা স্কুল দেখার পর কোনটাই তার পছন্দ হয় না! আমারই তো দম বন্ধ লাগে!এইটুক একটা বিল্ডিং আর বাইরে একটা স্কুলের সাইনবোর্ড ঝুলানো! এই স্কুলের সামনে বিশাল একটা স্পাইডারম্যান ঝুলানো আছে। অভ্র স্পাইডারম্যান ভক্ত..সে আসলে জুনিয়র ল্যাবরেটরি নামের স্কুলে ভর্তি হয় নাই,সে সবাইকে বলে সে স্পাইডারম্যান ওয়ালা স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এই স্কুলে কোন মাঠ নাই! বাচ্চাকাচ্চারা একটা বারান্দা টাইপ গ্রাউন্ডে রাবারের বল ছোড়াছুড়ি করে। আজকেও থ্রি ফোরের পুচকি পুচকি কয়েকটা বাচ্চা নরম রাবারের বল ক্যাচ ক্যাচ খেলছিল। হঠাৎ একটা বল ছুটে এসে গেটের পাশে অভিভাবকদের দাড়ানোর জায়গাটায় এসে পড়ে। নরম বল, গায়ে লাগলেও তেমন একটা ক্ষতি নাই। কিন্তু সেই অভিভাবক বেশ বিরক্ত হয়ে দারোয়ানকে বললেন বলটা নিয়ে নিতে। দারোয়ান ও হন্তদন্ত হয়ে পিচ্চিগুলোর পিছনে ছুটল বলটা নিতে। সেই অভিভাবক বেশ বিরক্তি নিয়ে বললেন আজকালকার বাচ্চারা ডিসিপ্লিন মানেনা। স্কুলে কি বল নিয়ে আসার জায়গা? বাচ্চার বাবা মা ই বা কেমন বাচ্চাকে বল আনতে দেয়? বাকি অভিভাবকেরাও মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন। ঠিকই তো! স্কুল ডিসিপ্লিন শেখাবে। স্কুলের রুলস টু বি ফলোড লিস্টে পরিস্কার লেখা আছে স্কুলে খেলার সরঞ্জাম আনা যাবেনা! আমি আর কিছু বললাম না। আমি ছয়টা স্কুলে পড়সি। সেভেন থেকে টেন পর্যন্ত সরকারি স্কুলে পড়ে আসছি। আমার স্কুলে ব্যাগের ভেতর ড্যান ব্রাউন থেকে ব্যাডমিন্টন ব্যাট সবই নেয়া যেত! ক্লাস হচ্ছেনা তাও শুধুমাত্র ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য স্কুলে গেছি এরকম ঘটনাও আছে। স্কুল উড়ে বেড়ানোর জায়গা ছিল। এই স্কুলে একটা পুতুল স্পাইডারম্যান আছে কিন্তু এইখানকার বাচ্চাদের মাঠে বসে সত্যিকারের উড়ন্ত প্রাণী দেখার সুযোগ নাই! অভ্রর সাথে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হয়! ও বলে ও স্পাইডারম্যান ওয়ালা স্কুলে পড়ে আর আমি বলি আমি পাখি আর হনুমান ওয়ালা স্কুলে পড়ি! রাজউকে ভর্তি হওয়ার পর আবিষ্কার করলাম এইখানকার সবুজ ঘাসওয়ালা মাঠটায় কাউকে খেলতে দেয়া হয়না। শুধু যে খেলা নিষিদ্ধ তাই নয়,মাঠে বসাও নিষিদ্ধ! তবে খুশির খবর হচ্ছে নতুন প্রিন্সিপাল স্যার এসেই মাঠ খুলে দিয়েছেন!বাচ্চাকাচ্চারা এখন নাকি খেলতে খেলতে মাথা ফাটিয়ে ফেলে! সালেহীন স্যার জিন্দাবাদ!

আমার আসলে ডিসিপ্লিন বস্তুটা বিশেষ পছন্দ না! আমি পাখি দেখতে দেখতে বড় হইসি আর আমার ছোট ভাই খেলনা একটা পুতুল দেখতে দেখতে বড় হবে। আমি অবশ্য এই স্কুলে ভর্তির সময় ওকে কথা দিয়েছিলাম আগামী বছর অবশ্যই একটা বড় মাঠওয়ালা স্কুলে ভর্তি করে দিব। দেখা যাক! আচ্ছা ওরা কিভাবে শিখবে খেলতে গিয়ে হাত কেটে গেলে কি করতে হয়? কিভাবে শিখবে দোতলার বারান্দায় দাড়িয়ে স্পাইডারম্যানের মাথায় বাড়ি দেয়া ছাড়াও অনেক বড় বড় ব্যাপার পৃথিবীতে আছে? হ্যামবার্গার টাইপ বাচ্চাগুলার জন্য খারাপ লাগে!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: হ্যামবার্গার বাচ্চা! সত্যিই। :(

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আচ্ছা ওরা কিভাবে শিখবে খেলতে গিয়ে হাত কেটে গেলে কি করতে হয়? কিভাবে শিখবে দোতলার বারান্দায় দাড়িয়ে স্পাইডারম্যানের মাথায় বাড়ি দেয়া ছাড়াও অনেক বড় বড় ব্যাপার পৃথিবীতে আছে? হ্যামবার্গার টাইপ বাচ্চাগুলার জন্য খারাপ লাগে!

একটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে পোস্ট করেছেন। আজকাল অভিভাবকগণও বেশ যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছেন। তবে আমি মনে করি টিচার/স্কুল আরো বেশি যান্ত্রিক হয়ে পড়ছে। আমি অনেক স্কুলের কাছ থেকেই সফটওয়্যার তৈরির জন্য ফোন পাই।
একটা ফার্মের জেনারেশন তৈরি হচ্ছে আসলেই। প্রকৃতির সাথে, ন্যাচারাল মানুষ হয়ে ওঠা হয়তো আর সম্ভব হবে না। :(

৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৪

আরাফআহনাফ বলেছেন: "একটা বিল্ডিং আর বাইরে একটা স্কুলের সাইনবোর্ড ঝুলানো"
আমাদের শিক্ষা ব্যব্স্থার মতই দৈন্যতা।

ভালো বিষয় নিয়ে পোষ্ট।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.