নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প

জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প

শাহ আশরাফ

মনেরে আজ কহ যে, ভালো মন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে।

শাহ আশরাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লা মাযহাবীদের মূল স্লোগানের বিশ্লেষণ

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫

মুসলমানদের কী হয়ে গেল? তাদের কিছু মানুষ এই বলে যে:



"আমি হানাফী নই, শাফেয়ী নই, হাম্বলী নই, মালেকী নই, আমি মুসলিম। মুহাম্মাদ (সা.) -এর যেই পরিচয় আমারও সেই পরিচয়। মুহাম্মাদ সা. একজন মুসলিম বৈ কিছুই ছিলেন না। তাই আমিও একজন মুসলিম। যারা এই পরিচয় ছাড়া অন্য পরিচয় ব্যবহার করে এবং বলে আমি হানাফী বা অন্যকিছু; সে পথভ্রষ্ট। জাহান্নামী ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত!"



হায়! হায়! হায়!

এই কথার উদ্দেশ্য যদি কেউ বুঝতো!

তারা এই স্লোগানের মাধ্যমে সব মুসলমানদের কাফের বানানোর হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভিতরে বিষ দিয়ে উপরে মধুর সিল মেরে বোতলজাত করছে। সাধারণ মানুষ তাদের রেফারেন্সভরা মধুমাখা লেকচার শুনে এতটাই মোহিত যে, টেরই পায় নি কেমনে কী হয়ে গেল?



উল্লিখিত স্লোগানটির বিশ্লেষণ:

এখানে তিনটি পয়েন্ট উল্লেখযোগ্য:-

১. মুহাম্মাদ সা. একজন মুসলিম ছিলেন। এছাড়া তিনি কিছুই ছিলেন না।

২. মুহাম্মাদ সা. -এর যেই পরিচয় ছিল আমারও সেই পরিচয়।

৩. যারা 'মুসলিম' ব্যতীত অন্য নাম ধারন করবে তারা পথভ্রষ্ট। ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত।



১. মুহাম্মাদ সা. শুধু একজন মুসলিম-ই ছিলেন না বরং সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম ছিলেন। এছাড়া তাঁর আরও পরিচয় ছিলো। যথা:

ক. তিনি আল্লাহর মনোনিত রাসুল ছিলেন।

খ. তিনি আল্লাহর মনোনিত নবী ছিলেন।

গ. তিনি রাহমাতুল লিল আলামীন ছিলেন।

ঘ. তিনি খাতিমুল আম্বিয়া বা শেষনবী ছিলেন।

এছাড়াও তাঁর আরও পরিচয় ছিলো এবং আছে। আপাতত এই চারটি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাই।

"রাসুলুল্লাহ সা. একজন মুসলিম ছাড়া কিছুই ছিলেন না" এই কথায় বিশ্বাসী হলে বলতে হবে,

ক. তিনি রাসুল ছিলেন না। নাউজুবিল্লাহ

খ. তিনি নবী ছিলেন না। নাউজুবিল্লাহ

গ. তিনি রাহমাতুল লিল আলামীন ছিলেন না। নাউজুবিল্লাহ

ঘ. তিনি শেষনবী ছিলেন না। নাউজুবিল্লাহ



প্রমাণ হয়, মুসলিম ব্যতীত তাঁর রিসালাতসহ সমস্ত পরিচয়ের অস্বীকার করা। অথচ ঈমানদার হতে হলে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের পরেই মুহাম্মাদকে সা. 'রাসুল' হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। যেহেতু তারা মেনে নিয়েছেন, মুহাম্মাদ সা. একজন মুসলিম বৈ কিছুই ছিলেন না সেহেতু তারা মুসলিম বা মুমিন হতে পারেন না।



২. মুহাম্মাদ সা. -এর যেই পরিচয় আমাদেরও সেই পরিচয়। এই কথাটা আরও মারাত্মক! কারণ, এতে শুধু তার রিসালাত অস্বীকার নয় —নিজেকে মিথ্যে রাসুল দাবি করাও আছে। কারণ, মুহাম্মাদ সা. -এর পরিচয় তিনি একজন রাসুল একজন নবী। যদি বলি, তাঁর পরিচয় আমার পরিচয় তাহলে বলা হলো,

তিনি রাসুল ছিলেন; আমিও রাসুল! নাউজুবিল্লাহ

তিনি নবী ছিলেন; আমিও নবী। নাউজুবিল্লাহ



প্রমাণ হয়, মুহাম্মাদ সা. শেষ নবী ছিলেন না বরং আজও সারাবিশ্বে অগনিত নবী-রাসুল বিরাজমান। নাউজুবিল্লাহ

মিথ্যা নবুওয়াতের দাবিদার মুসলিম হতে পারে না; মুরতাদ হয়ে যায়।



৩. যারা মুসলিম ব্যতীত অন্য নাম ধারন করে তারা পথভ্রষ্ট। ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত।

এই কথাটি জঘন্য মিথ্যাচার। এবং পরিনামে বলা যায়, এই স্লোগানের বক্তা ইসলামের সার্বিক বিষয়াদি অস্বীকার করছে।

সাহাবাদের একদল আফ্রিকায় পৌঁছলেন দাওয়াতের মিশনে। জঙ্গলে রাত্রিযাপনকালে পশুপাখির উদ্দেশ্যে ভাষনের একপর্যায়ে সেনাপতি বলেছেন, "আমরা সাহাবী!" তিনি নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেন নি। বলেছেন, আমরা সাহাবী। এছাড়াও রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, সাহাবীদেরকে গালি দিও না।



স্লোগানের তৃতীয় অংশ থেকে প্রমাণ হয়, যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম নিজেদেরকে সাহাবী বলে পরিচয় দিতেন তাই তারা ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত। নাউজুবিল্লাহ

এভাবে তাবেঈ, তাবয়ে তাবেঈসহ সকল সালাফীগণ যেহেতু নিজেদেরকে সালাফী বলতেন সেহেতু তাঁরাও ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত। নাউজুবিল্লাহ



যারা সাহাদেরকে সত্যের মাপকাঠি মানা দূরের কথা ৭২ দলে অন্তর্ভুক্ত করে তারা আর যাই হোক মুসলিম থাকতে পারে না।



এই স্লোগানে যা যা পেলাম:

প্রথম অংশ মানলে রিসালাত অস্বীকার করা হয়। নাউজুবিল্লাহ

দ্বিতীয় অংশ মানলে মিত্যা নবুওয়াতের দাবি করা হয়। নাউজুবিল্লাহ

তৃতীয় অংশ মানলে সাহাবাসহ সালাফীদেরকে জাহান্নামী বলা হয়। নাউজুবিল্লাহ



এই স্লোগানটি আমি অনেককেই বলতে শোনেছি। আসলে স্লোগান দেয়ার সময় হুশ ঠিক থাকে না। ভোটের সময় বাবাকেও ভাই বলে ডাকে অনেকে। আসল কথা হলো, এসবকিছুর মূলে আছে ইংরেজদের ষড়যন্ত্র। ইসলামকে ধ্বংস করার জন্যই ওরা বিভিন্নভাবে আমাদের সামনে আত্মপ্রকাশ করছে। ওদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়ার এখনই সময়।



তাই আসুন, আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে যাই। আমাদের ভুলের উপর অটল না থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করি। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি।



সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার পর যদি আপনার মনে প্রশ্ন জাগে —কমেন্ট করে জানাতে পারেন।



ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ..

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩১

পাগলাগরু বলেছেন: খামাখা ত্যানা প্যাচান কেন ভাই? চুটকি পুল্কায়?

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৪৯

জনদরদী বলেছেন: ভাই, আপনি কি করেন?

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: জীবনধারনের জন্য ধর্ম অপরিহার্য বিষয় নয়। অপরিহার্য বিষয় তাদের জন্য যারা ধর্ম বেঁচে খায়।
বর্তমান ইহুদি জাতির মধ্যে তাদের ধর্মের প্রতি খুব যে দরদ আছে তা কিন্তু নয়। কিন্তু একত্র হওয়ার জন্য এবং দুনিয়াব্যাপী অনাসৃষ্টি করে নিজেরা ভালো থাকার জন্য ধর্ম পরিচয় তাদের দরকার। তাদের পরিচয় তারা ইহুদি জাতি। এটা এক ধরনের ধর্ম বেঁচে খাওয়াই।
যে কোনো ধরনের জাতীয়তাবাদও সন্ত্রাসিমূলক ধারণা। যেভাবেই হোক নিজেরা ভালো থাকো। সাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্যে অর্ন্তনিহিত থাকে, ‘নিজের সম্প্রদায়ের লোকেরা ভাই ভাই, বাকীরা চুদির ভাই’।
বিশ্বের বড় বড় অশান্তির মূলে রয়েছে সাম্প্রদায়িক তথা জাতীয়তাবাদী চেতনা। ইতিহাস তাঁর সাক্ষী। ইহুদি নিয়ন্ত্রিত যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ধর্মকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে। তালেবান নামক গোষ্ঠীটি তাদেরই সৃষ্টি। মুসলিমদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে তারা তা মিডিয়ায় প্রচার করে। নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনকে বুঝিয়ে মুসলিম দেশগুলোর তেল সম্পদ দখল করার জন্য আক্রমণ বৈধ করাই তাদের লক্ষ্য। যুগ যুগ ধরে ধর্ম, জাতীয়তাবাদ তথা সাম্প্রদায়িক চেতনাকে বিক্রি করছে সাম্রাজ্যবাদীরা। উপনিবেশিক আমলেও আমরা ব্রিটিশদের দেখেছি ধর্মকে ব্যবহার করতে। আগে হিন্দু ব্রাহ্মণদের দেখেছি, ধর্মকে ব্যবহার করতে। সম্প্রদায় যতদিন থাকবে ততদিনই সাম্প্রদায়িক স্বার্থ থাকবে। আর সাম্প্রদায়িক তথা জাতীয়তবাদী চেতনাকে বিক্রি করে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকবে শক্তিশালী সম্প্রদায়গুলো। চলতে থাকবে নানাভাবে এবং নানা উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার।
মানুষের মানবিক পরিচয়ই আসল পরিচয়। আর কোনো পরিচয় ‘মানুষের’ দরকার নেই। কিন্তু মানুষ কখনোই ‘মানুষ’ হয়ে উঠে নি। তাঁর পরিচয় ধর্ম, বর্ণ, গোত্র তথা জাতীয়তাবাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ পৃথিবীর রুপ-রস, সম্পদ গণমানুষের জন্য নয়। যে সম্প্রদায়ের শক্তি আছে শুধু তাদের।

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬

কান্টি টুটুল বলেছেন:

সাহাবাদের একদল আফ্রিকায় পৌঁছলেন দাওয়াতের মিশনে। জঙ্গলে রাত্রিযাপনকালে পশুপাখির উদ্দেশ্যে ভাষনের একপর্যায়ে সেনাপতি বলেছেন, "আমরা সাহাবী!" তিনি নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেন নি

দুইটি সাধারণ প্রশ্ন:

আপনি কি বলতে চাচ্ছেন সাহাবা গণ মুসলিম ছিলেন না?

আপনি কি মনে করেন ঐ সাহাবা গণ হানাফী, শাফেয়ী,হাম্বলী,মালেকী এর কোন একটির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.