নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় বদর-ওহোদ-কারবালা ।

রাসেল সরকার

প্রিয়নবীর প্রেমহীন আত্মামৃত, সর্ব মিথ্যার অন্ধকারে নিমজ্জিত ।

রাসেল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৌদি স্বৈরতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের পতন আসন্ন না হলেও অনিবার্য

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:০৮

রবীন্দ্রনাথের 'তাসের দেশ' যাঁরা পড়েছেন বা মঞ্চে দেখেছেন, তাঁদের কাছে বর্তমানে সৌদি পরিবারে যা ঘটছে, তাকে তাসের দেশে কালবৈশাখীর প্রকাশ বললে তাঁরা নিশ্চয়ই বিস্মিত হবেন না। এই ঝড়ের সূচনা হয়েছিল বহু আগে। ইরানের শাহের বা পাহলভি ডাইনেস্টির পতনের পর লন্ডনের সানডে টাইমস পত্রিকা একটি বিরাট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তার শিরোনাম ছিল 'হাউস অব সৌদ' বা সৌদি রাজতন্ত্র আর কত দিন টিকবে? পত্রিকাটির মতে, ইরান ও সৌদি রাজতন্ত্রের মধ্যে বিরাট পার্থক্য ছিল। ইরানে ছিল চরিত্রে স্বৈরাচারী অথচ আধুনিক মনার্কি। অন্যদিকে সৌদি রাজতন্ত্রে বিরাজ করছে স্বৈরাচারী ও অত্যন্ত মধ্যযুগীয় মনার্কি।
সানডে টাইমস প্রকাশ করেছিল এই হাউস অব সৌদেও ভেতরে-বাইরে থেকে ঘুণ ধরেছে। দুর্নীতি, অত্যধিক হারেমপ্রীতি, ধর্মের নামে সব ধরনের সামাজিক প্রগতির পথ রুদ্ধ করে রাখা, মধ্যযুগীয় ভোগবিলাস, ইসলামের নামে কট্টর ওয়াহাবি মতবাদের চর্চা, মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম স্বার্থবিরোধী ও পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের তল্পিবাহকের ভূমিকা গ্রহণ, শিয়া-সুন্নি বিরোধ ঘটানো এবং আহমদিয়াদের অমুসলমান ঘোষণা করে বিশ্বে ইসলামী উম্মাহকে বহুধাবিভক্ত করে ফেলা; পবিত্র হজের সময় বিভিন্ন মুসলিম দেশের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ব্যবহার, সৌদি রাজতন্ত্র রক্ষার জন্য ইসলামের নামে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী মৌলবাদকে অস্ত্র ও অর্থের জোগান দেওয়া ইত্যাদি বহু কারণে হাউস অব সৌদ এখন বাইরে যতই শক্ত ভাব দেখাক, তার ভিতে ঘুণ ধরে গেছে। এই হাউসের পতন এখন সময়ের অপেক্ষা।
সময়ের গতি ও পরিবর্তন যে রুখে রাখা যায় না, সৌদি পরিবারেও রাখা যায়নি, বরং কঠোর পর্দায় ঢাকা বাদশাহি পরিবারেও পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল মাত্র কয়েক দশক আগেই। সৌদি রাজপরিবারের এক প্রিন্সেস বা রাজকুমারী একজন সাধারণ সৌদি নাগরিকের প্রেমে পড়েছিলেন। এটাকে শরিয়াহবিরোধী পাপ ও মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার মতো অপরাধ ঘোষণা করা হয়। প্রিন্সেস ও তাঁর প্রেমিককে প্রকাশ্যে শরীরের অর্ধাংশ মাটিতে পুঁতে পাথর নিক্ষেপ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এক ব্রিটিশ ফটো জার্নালিস্টের হাতে কিভাবে এই হত্যাকাণ্ডের ছবি পৌঁছেছিল তা জানা যায়নি। তিনি সেই ছবিকে ভিত্তি করে একটি ফিল্ম তৈরি করেন, যার নাম 'ডেথ অব এ প্রিন্সেস'। ছবিটির খবর সানডে টাইমসসহ কয়েকটি ব্রিটিশ পত্রিকা ফলাও করে প্রচার করে। ফলে ব্রিটেনের ওপর সৌদি বাদশাহরা অত্যন্ত রাগান্বিত হন। ব্রিটেনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেন। ব্রিটেনের তৈল-স্বার্থ বিপন্ন হয়ে পড়ে। তখন টোরি সরকার ক্ষমতায়। মার্গারেট থ্যাচার ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সৌদি সরকারকে জানান, ব্রিটেনে সংবাদপত্র স্বাধীন। তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এ জন্য থ্যাচার সরকার দুঃখিত। এরপর স্বয়ং মার্গারেট থ্যাচার সৌদি বাদশাহদের ক্রোধ নিবারণের জন্য রিয়াদ সফর করেন। ধীরে ধীরে বিষয়টির নিষ্পত্তি ঘটে।
কিন্তু 'ডেথ অব এ প্রিন্সেস' ছবিটি বহির্বিশ্বে প্রচারিত হওয়ার পর লৌহ পর্দায় ঢাকা সৌদি পরিবারের অভ্যন্তরীণ অবস্থা আর ঢেকে রাখা যায়নি। ইরানে শিয়ামতবাদের উত্থানের সময় সৌদি পরিবারের এই ভূমিকা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই আন্দোলন দমনের জন্য আমেরিকায় শিয়া-সুন্নি বিরোধ সৃষ্টির কাজে হাউস অব সৌদ সাহায্য জোগায়। হজের সময় ইরানিরা পবিত্র কাবা শরিফে মার্কিনবিরোধী স্লোগান দিলে সৌদি পুলিশ তাঁদের ওপর গুলি চালায় এবং প্রায় ৪০০-র মতো ইরানি নিহত হন।
আমেরিকার প্রথম ইরাকবিরোধী যুদ্ধে সৌদিরা পবিত্র মক্কা শরিফের অদূরে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি স্থাপন করতে দেয় এবং নিজেরাও সাদ্দামবিরোধী যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। একটি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে সৌদি রাজতন্ত্রের এই অংশগ্রহণ মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি পরিবারের ভাবমূর্তি বিশেষভাবে ক্ষুণ্ন করে। ইরানে হামলার জন্য ইসরায়েলকে সৌদিরা সহযোগিতা দান ও সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে উৎখাতের জন্য অস্ত্র ও অর্থ জোগান দেওয়া হাউস অব সৌদের চেহারা এখন একেবারেই নগ্নভাবে খুলে দিয়েছে। এখন এই হাউসের প্রতি সহানুভূতিশীল বহু ব্রিটিশ ও মার্কিন পর্যবেক্ষকের ধারণা (তাঁদের ভাষায়) 'If the collars of the House of Saud is not imminent, but it is inevitable' (সৌদি রাজতন্ত্রের পতন আসন্ন না হলেও অনিবার্য) ।

এর কারণ সম্পর্কে এই পর্যবেক্ষকরা যা বলেন, তা হলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন আয়রন কার্টনে নিজেকে ঢেকে রেখেও বাঁচতে পারেনি, তেমনি সৌদি বাদশাহরা মধ্যযুগীয় ধর্মান্ধতার অচলায়তনে দেশটাকে বেঁধে রাখতে চেয়েও সময়ের পরিবর্তনে তা পারেননি। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদও তাদের অচলায়তন রক্ষায় সাহায্য জুগিয়ে তা পারেনি। তাদের সংস্পর্শে এসে আল আরবে তৈলস্বার্থের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে যে আধুনিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক প্রগতি ও নবপ্রযুক্তির উন্মেষ ঘটেছে, তা সাধারণ সৌদিদের মধ্যে যেমন একটি শিক্ষিত ও সচেতন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বিকাশ ঘটিয়েছে; তেমনি একটি শিক্ষিত ও আধুনিকমনা নারীসমাজও গড়ে তুলেছে। তারা এখন অবরোধ থেকে মুক্তি চায়।
এই শিক্ষিত নারীরাই মধ্যযুগীয় ধর্মীয় কুসংস্কার ও আচার-আচরণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। এত দিন সৌদি নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, এমনকি একা রাস্তায় (কোনো পুরুষ সঙ্গী না নিয়ে) গাড়ি ড্রাইভ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিল। কয়েকজন শিক্ষিত নারী আইন ভঙ্গ করে সেই শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন, তথাপি আইন মানতে চাননি। এই খবর সারা বিশ্বে ছড়ালে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই প্রতিবাদের মুখে সৌদি বাদশাহরা এখন ক্রমশ পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন। এখন নিয়ন্ত্রিত সংসদে নারীদের সদস্য হওয়া, বিভিন্ন পেশার উচ্চপদে নারীদের চাকরি করার ব্যাপারে আগের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শিথিল হচ্ছে।
সৌদি বাদশাহরা প্রায় প্রত্যেকেই ডজন ডজন সন্তান জন্ম দেওয়ার ফলে এই পরিবার বিশাল আকারের ও এই পরিবারের লোকেরা অসামরিক ও সামরিক সব শীর্ষ পদ দখল করে রাখায় এই রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভ্যুত্থান ঘটা সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করতেন। কিন্তু শিক্ষা ও আধুনিকতার প্রসারের ফলে এই পরিবারের মধ্যেও পরিবর্তনের ঝড়ো হাওয়ায় কাঁপন লেগেছে। বাদশাহ আবদুল্লাহর চার শিক্ষিত মেয়ে যে বাপের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে স্বাধীন ও অবরোধমুক্ত জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন- এ খবরটি যখন লন্ডনের সানডে টাইমসের কৃপায় বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ায় আবার চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। তখন বাদশাহ আবদুল্লাহর বয়স ছিল ৯০ । তিনি বহুবিবাহ করেছেন। সন্তানের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৮ জন। তিনি বিশ্বের সেরা ধনী ছিলেন। গত ২০১৪- ৯ মার্চের সানডে টাইমস পত্রিকা ফলাও করে খবর ছেপেছিল, বাদশাহ তাঁর চার মেয়েকে (সবাই প্রাপ্তবয়স্ক) ২০০১ সাল থেকে ১৩ বছর ধরে বিভিন্ন ভিলায় বন্দি করে রেখেছেন। কঠোর পাহারার মধ্যে থেকেও তাঁরা সানডে টাইমসের কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে তাঁদের অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন এবং তাঁদের উদ্ধার করার জন্য জাতিসংঘ থেকে শুরু করে মানবাধিকার কমিশনের সাহায্য চেয়েছিলেন।
এই চার কন্যার (তখনকার সময় বয়স ছিল অর্থাৎ ২০১৪) একজন প্রিন্সেস শহর, বয়স ৪২। দ্বিতীয়জন প্রিন্সেস জওয়াহের, বয়স ৩৮। তৃতীয় প্রিন্সেস হালা, বয়স ৩৯ ও চতুর্থ প্রিন্সেস মাহা, বয়স ৪১ স্বতন্ত্র ভিলায় আটক আছেন। দিনের পর দিন প্রায় বন্দিদশায় থাকায় তাঁরা গুরুতর অসুস্থ। তাঁদের মা আলা নউদ আলকায়েজের বয়স যখন ১৫ বছর, তখন বাদশাহ আবদুল্লাহ তাঁকে বিয়ে করেন। পরে তাঁকে তালাক দেন। তিনি এখন লন্ডনে বসবাস করেন। এই সাবেক বাদশাহপত্নী জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনারের কাছে চিঠি লিখে তাঁর কন্যাদের মানবেতর জীবনযাপন ও মৃত্যু-আশঙ্কা থেকে রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছিলেন।
প্রিন্সেস শহর লিখেছিলেন, তাঁদের রাজপরিবারের এত বিত্ত-বৈভব, কিন্তু সাধারণ সৌদি নাগরিকদের মধ্যে ভয়াবহ দারিদ্র্য প্রকট দেখে তিনি তাঁর বাবা বাদশাহ আবদুল্লাহর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। তাতে বাদশাহ তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। এই রাজকন্যারা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং আধুনিক জীবনযাপন করতে চান। তাঁরা প্রাসাদে সমবয়সীদের নিয়ে পার্টি করতেন, ফ্রেঞ্চ আলপসে স্কি করতে যেতেন। এটাই ছিল তাঁদের অপরাধ। ফলে তাঁদের প্রাসাদসংলগ্ন বিভিন্ন ভিলায় কঠোর পাহারায় বন্দিজীবন যাপন করতে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৩ বছর ধরে চলেছিল এই বন্দিজীবন।
সৌদি এক রাজকন্যাকে নিয়ে তৈরি 'ডেথ অব এ প্রিন্সেস' ছবিটি যেমন একসময় সারা বিশ্বে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল, তেমনি চার বন্দিনী সৌদি প্রিন্সেসের কাহিনী সারা বিশ্বে অনুরূপ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করতে চলেছে। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, রাজকুমারী হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা যেভাবে কখনো জেলে, কখনো মানসিক হাসপাতালে থেকে নানা ধরনের নির্যাতন সহ্য করেছেন, তাতে বুঝতে পারেন সাধারণ সৌদি নাগরিকদের ওপর কী ধরনের নির্যাতন চলে। প্রিন্সেস হালা বলেছিলেন, রাজনৈতিক বন্দিদের সম্পূর্ণ অবৈধভাবে হাসপাতালের মানসিক রোগীদের ওয়ার্ডে ঢুকিয়ে অপরাধীদের মতো নির্যাতন করা হয়। ১৯৯৮ সালে তাঁকে রিয়াদে মহিলাদের কারাগারে আটক রাখা হয়। তাঁর অপরাধ ছিল তিনি গাড়ি ড্রাইভ করে মরু এলাকায় গিয়েছিলেন।
বর্তমানে ক্ষমতার দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েছেন দুই সৌদি যুবরাজ । হয়তো তাদের বিদ্রোহের মুখে অচিরেই অবসান হবে দীর্ঘকালের সৌদি স্বৈরতান্ত্রিক রাজতন্ত্র ।
সময় যতই অতিবাহিত হচ্ছে, দ্বন্দ সংঘাত এবং তাদের ঘৃণ্যরুপ ততই বিশ্ব মিডিয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি করছে । সৌদি নেতৃত্বাধীন ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন, জঙ্গি হামলা বৃদ্ধি ও গত বছরের হজ্ব ট্রাজেডিসহ নানা বিপর্যয়ে বর্তমান রাজতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ।
"৮০ বছর বয়সী বর্তমান বাদশা সালমানের শারীরিক অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয় । যে কোনো সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে রাজপরিবারে ।
বার্তা সংস্থা এএফপি খবর প্রকাশ করেঃ-
বাদশা সালমানের ভাগ্নে মোহাম্মদ বিন নায়েফ (৫৬) ও বাদশা পুত্র মোহা্ম্মদ বিন সালমানের (৩০) মধ্যে এ ক্ষমতার দ্বন্দ তীব্র হয়েছে । বিন নায়েফ বর্তমানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন । অন্যদিকে বিন সালমান চালাচ্ছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ।
দুই যুবরাজের মধ্যে দ্বন্দ শুরুহয় প্রায় ১ বছর আগে । যুবরাজ মকবিন বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদকে সরিয়ে দেয়া নিয়ে । সাবেক বাদশা আব্দুল্লাহ তাকে দেশের প্রথম ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ।
সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ছিলেন তিনি । তাকে সরিয়ে দেয়ার ফলে মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতা পাকাপোক্তা হয় ।
সৌদি রাজতন্ত্র বিশেষজ্ঞ প্যারিসের সায়েন্স পো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিফেন ল্যাকরোইক্স বলেন, এ ঘটনাকে ষ্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে দেখে অনেকেই । মোহাম্মদ বিন সালমানের এত দ্রুত ক্ষমতার উচ্চাসনে আরোহন করায় অস্বস্তিতে পড়ে বিরোধীরা ।
গত সেপ্টেম্বরে মোহাম্মদ বিন নায়েফের ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী ও কেবিনেট সদস্য সাদ আল জাবিরিকে অপসারণ করেন বাদশাহ সালমান । এ ঘটনার পর ক্ষমতার দ্বন্দ আরও ষ্পষ্ট হয়ে ওঠে । সৌদী রাজতন্ত্রে দুটো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় এই বিরোধী দু'জনকে দিয়ে চালানোয় দেশিয় ও আন্তর্জতিকভাবে নীতির সমন্বয়হীনতা ঘটেছে ।
ওয়াশিংটনের কারনিগ এনডাউনমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস সংগঠনের মধ্যপ্রাচ্য গবেষক ফ্রেডরিক ওহেরি বলেন, ইয়েমেন আগ্রাসন ছিল সৌদি রাজতন্ত্রের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ । গত বছরে হজ্বে মিনা ট্রাজেডির ঘটনায় অন্তত ২ হাজার ২০০ হাজীর নিহতের পর ক্ষমতার লড়াই দেখানোর সুযোগ বেড়েছে । পুলিশের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তুলে মোহাম্মদ বিন নায়েফের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে তাকে সরাতে চায় সালমানের পক্ষশক্তি ।
অন্যদিকে ইয়েমেনের যুদ্ধের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করে মোহা্ম্মদ বিন সালমানকে সরাতে চায় বিন নায়েফেপন্থীরা । ক্ষমতার এ দ্বন্দ চক্রে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি চান অনেকেই ।
এছাড়াও সৌদি রাজতন্ত্রের অনেকেই অনেক সময় নারী ও মাদক কেলেংকারীতে জড়ানোর কারনও, তাদের বিলুপ্তির অন্যতম ।


বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন (World sunni movement) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সার্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থার দিকদর্শন বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব এর প্রবর্তক - "ইমাম হায়াত" বলেনঃ-
সর্ব মিথ্যার চরম উৎস নাস্তিকতা থেকে বস্তুবাদ উদ্ভূত এবং বস্তুবাদ থেকে বস্তুভিত্তিক জীবন জাতীয়তা বস্তুভিত্তিক সমাজ রাষ্ট্র ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক অনাচার উদ্ভূত। বস্তুবাদের একটা শাখা গোত্রবাদ। তাওহীদ রেসালাত ভিত্তিক জীবনচেতনার বিপরীত জীবনচেতনা গোত্রবাদ। আইয়ামে জাহেলিয়াতের একটা জঘন্য বিষাক্ত অনাচার গোত্রবাদ। ১৯৩২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর ঈমানের প্রকাশস্থল পবিত্র আরবভূমিতে ঈমানের বিপরীতে কলেমার বিপরীতে সৌদি গোত্রবাদী সরকার কায়েম করা হয়। বদর ওহোদ কারবালার শিক্ষার বিপরীতে সমগ্র আরবভূমিকে এরা গোত্রবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করে সৌদী আরব নাম দেয় অবৈধভাবে। গোত্রবাদী রাজতন্ত্র কায়েম করে এরা কলেমার চেতনা নস্যাৎ করে মানুষের মৌলিক অধিকার বাক স্বাধীনতা নাগরিক ক্ষমতা ভোটাধিকার সব হরণ করে ফেরাউনের মত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ইসলামের মহামূল্যবান নিদর্শন মহান সাহাবায়ে কেরামের পবিত্র মাজার শরীফ সমূহ ভেঙ্গে ফেলে। মুক্তির দ্বীন ইসলামকে সব দিক থেকে বিকৃত করে ঈমানের বিপরীতে ওহাবীবাদ নামক এক বর্বর কুফরী শয়তানী মতবাদ চালু করে বাধ্যতামূলকভাবে। মুক্ত চিন্তা ও সত্যের প্রকাশ নিষিদ্ধ করে জীবনের বিকাশ এরা রুদ্ধ করে দেয়। ঈমান ধ্বংস করার জন্য রেসালাত কেন্দ্রিক জীবনচেতনার বিপরীতে গোত্রবাদী অনাচার কায়েম রাখার জন্য এরা ইসলামের আধ্যাত্মিক মানবিক রাজনৈতিক সব দিক অস্বীকার করে এবং রেসালাতের সিফাত অস্বীকারের মাধ্যমে কৌশলে রেসালাত অস্বীকার করে মানুষকে তাওহীদ থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থের বিনিময়ে এরা বিশ্বব্যাপী আলেমের বেশধারী এজেন্ট তৈরি করে ঘৃন্য ওহাবীবাদকেই ইসলাম হিসেবে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টার মাধ্যমে প্রকৃত ইসলামকে উৎখাত ও বিলুপ্ত করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ।

মহামান্য "ইমাম হায়াত" আরো বলেন,
১৯৩২ থেকে ২৩শে সেপ্টেম্বর বাতেল অপশক্তি পবিত্র কেবলা ভূমি জবর দখল করে জাতীয় দিবস বিজয় হিসেবে পালন করে। আর মুসলিম নামধারী এবং অমুসলিম সব রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ তাদের অভিনন্দন জানায়। সত্য ও মানবতার বিরূদ্ধে মিথ্যা ও জুলুম, স্বৈরাচার, অধিকার হরণের প্রতি এ অভিনন্দন কত মর্মান্তিক পরিহাস। কিন্তু মুমিন জনতার জন্য এ দিন চরম বেদনার। কেবলা ভূমি বাতেল কবলিত থাকা দ্বীনের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট এবং মুমিনের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা। জীবনের অন্য সমস্যা এ তুলনায় ক্ষুদ্র ও অপ্রধান। কেবলাভূমিকে বাতেলের কবল থেকে উদ্ধার দ্বীনের কেন্দ্রকে উদ্ধার, দ্বীনকে উদ্ধার। প্রাণকেন্দ্র বাতেল কবলিত থাকা মুমিনের নিকট এক অন্তহীন ক্ষোভ ও বেদনা। প্রতি নিশ্বাস প্রশ্বাসে এক অবর্ণনীয় কষ্ট যা অন্যান্য সুখ প্রাপ্তি আনন্দকেও ম্লান করে রাখে। আজ এই দুঃখ বেদনা ক্ষোভ প্রতাখ্যান, বিদ্রোহ এবং সত্য ও মানবতার গণ অভ্যূথানের দিকে এগিয়ে নিতে হবে বিশ্বব্যাপী সত্যের অভিযাত্রায় মিথ্যার উৎখাতের প্রাণপণ লক্ষ্যে জাতীয় মুক্তির সংগঠন বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের মাধ্যমে ।
মহামান্য "ইমাম হায়াত" এর আহ্বানে বাংলাদেশ, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের, সত্য-মানবতায় বিশ্বাসী নানা শ্রেণী পেশার মানুষ ব্যাপক পরিসরে সাড়া দিচ্ছে । এই জাগরণ অব্যাহত থাকলে, সৌদি গোত্রবাদী স্বৈর রাজতন্ত্রের অবসান সময়ের অপেক্ষমাত্র।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.