![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয়নবীর প্রেমহীন আত্মামৃত, সর্ব মিথ্যার অন্ধকারে নিমজ্জিত ।
ষোল শতকে ইতালীর নিকোলো মেকিয়াভেলি প্রথম ভৌগলিক-ভাষা-বর্ণ-লিঙ্গ তথা বস্ত ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের রাষ্ট্র গঠনের মন্ত্র গঠন করে ।
পরবর্তীতে ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটে ১৭৮৯ সালে ফরাসী বিপ্লবের পর । ফরাসী বিপ্লবের পরই ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ অপরাজনীতির হাতিয়ার এবং মতবাদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে । ক্রমে তা আমেরিকা, ইউরোপ এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ।
নেপোলিয়ান বোনাপোর্ট সাম্প্রাজ্যবাদের হাতিয়ার হিসেবে ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে ইস্যু করে অষ্টিয়া, জার্মান ও স্পেনের ক্ষমতা দখল করলে, এর তীব্র প্রতিক্রীয়া স্বরূপ ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের চেতনার জাগরণ শুরু হয় । এতে ইন্ধন জোগায় রোমান্টিক আন্দোলন । ম্যাটাসনি ও ফিকটের রচনা ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভাবধারাকে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করে ।
জনৈক ইতালীর দেশপ্রেমিক ম্যাটাসনিক প্রচার করে, একই ঐতিহ্য ও বিধি ব্যবস্থা দ্বারা ইতালীয়ানরা ঐক্যবদ্ধ জাতি । ফিকট প্রচার করে জার্মানিরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি ।অষ্টাদশ শতকের ফ্রান্স-ব্রিটেনের যুদ্ধ, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ইউরোপের দেশগুলোর জোটবদ্ধ আক্রমণ হত্যা লুন্ঠন ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের সৃষ্ট করুন ও নিকৃষ্ট সভ্যতার মুখোমুখি করেছে ।
সে কারণে ধর্ম বিরোধী বারট্রান্ড রাসেল বলেন: এতে কোন সন্দেহ নেই যে, ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ হলো আমাদের সময়ের সবচেয়ে অশুভ শক্তি, মাতলামি, মাদক সেবন, বাণিজ্যে অসাধুতা কিংবা অন্য যেকোন অকল্যাণের চেয়ে ক্ষতিকর ।
কে.এইচ.হায়েস বলেন: ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ জাতীয়তা এবং এই দুইটি আধুনিক অনাসক্ত বিষয়ের এক আবেগপূর্ণ সমন্বয় ও অতি রঞ্জিত বরণ ।
লর্ত ব্রাইস বলেন: ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ হচ্ছে ভাষা-সাহিত্য-ধ্যান-ধারণা ও ঐতিহ্যের দ্বারা ঐক্যবদ্ধ একটি জনসমষ্টিকে নিজেদের পৃথক মনে করে ।
আল্লামা ইকবাল (রহঃ) রাষ্ট্র দর্শনের প্রাথমিক পর্যায়ে, নিকোলো ম্যাকিয়াভেলির মতবাদে উদ্বুদ্ধ ছিলেন । তাই তিনি ‘তারানা-ই-হিন্দী’ কবিতায় ভূখণ্ড বা ভৌগলিক তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের জয়গান গেয়েছেন। লিখেছেন: ‘সারে জাহাঁ হে আচ্ছা/হিন্দুস্তাঁ হামারা’, বলেছেন, ‘ভারতের ফুল বাগানে আমি এক বুলবুল ।
১৯০৪ সাল পর্যন্ত আল্লামা ইকবাল (রহঃ) ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় সীমারেখা-ভাষা-গোত্র ভিত্তিক তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রপঞ্চ বা প্রসঙ্গ নিয়ে যে চিন্তা-দর্শন আল্লামা ইকবাল (রহঃ) উপস্থাপন করেছেন, জীবনের অবশিষ্ট সময়ে তিনি তা প্রত্যাখান করেছেন । এ জন্য আল্লামা ইকবাল (রহঃ) এর ইউরোপ জীবন (১৯০৫-১৯০৮) তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখে বলে দাবি করা হয় । দাবি করা হয় লন্ডন, ক্যামব্রিজ, মিউনিখ এবং ইউরোপের বিভিন্ন শহরে অবস্থানকালে আল্লামা ইকবাল (রহঃ) পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক মতবাদ ভেতর থেকে দেখার ও পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন । এই পর্যবেক্ষণ ও সুযোগ আল্লামা ইকবাল (রহঃ) নিকোলো মেকিয়াভেলির ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয়-ভাষা-বর্ণ-লিঙ্গ-গোত্র তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্যা ও অনুশীলন এবং এর ভয়াবহ পরিনাম বিষয়ে সচেতন করেছে । ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয়-ভাষা-বর্ণ-লিঙ্গ-গোত্র তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ মানবতার জন্য অভিশাপ হয়ে দেখা দেয় । এসব বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ মানুষের জন্য অমানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে । বিপরীতে ঈমানী জাতীয়তাবোধ মানবতার জন্য আর্শীবাদ এবং মানুষ "মানুষ" হিসেবে স্বীকৃতি পায় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৯) সূত্রে প্রচলিত ভৌগলিগ বা রাষ্ট্রীয়-ভাষা-বর্ণ-লিঙ্গ-গোত্র তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের মর্মান্তিক মাশুল আল্লামা ইকবাল (রহঃ) দেখেছেন । দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) সৃষ্ট মানবিক বিপর্যের আশঙ্কা করেছিলেন আল্লামা ইকবাল (রহঃ) । "সাম্রাজ্যবাদের দানব" এ বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি ।
আল্লামা ইকবাল (রহঃ) নির্দিষ্টভাবেই উচ্চারণ করলেন, ‘জাতীয়তা' ভৌগলিক সীমারেখা বা দেশ ও ভাষার ভিত্তিতে হয় না,’ ভূখণ্ডভিত্তিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ বিষয়ে আল্লামা ইকবাল (রহঃ) লিখলেন: ‘হে অঞ্চল-পূজারী,/ এরা হিন্দী আর ওরা খোরাসানী,/এরা আফগানী আর ওরা তুরানী-/বাদ দাও এসব, ছড়িয়ে পড়ো সারাবিশ্বে/সাগর তরঙ্গময়।’ লিখলেন: ‘এক জাতি যে আরেক জাতির দুশমন-তার মূলতো এই,/ দেশ দখল নেশাও আসে এই স্বদেশের প্রেম থেকেই।/রাষ্ট্র থেকে ধর্ম যে আজ পৃথক তারও এই কারণ/এতেই করে সরলরা ভাই দুর্বলদের আক্রমণ।
ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয়-ভাষা-বর্ণ-লিঙ্গ তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ একবিংশ শতাব্দীতে এসেও সেই বিষক্রীয়ার ফলে মানবসত্ত্বা ও মানবসভ্যতা ধ্বংসের মুখে । উদাহরণ: ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের সম্মিলিত স্বৈর পরাশক্তির গহ্বরে নিমজ্জিত ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, কাশ্মীর এবং পরিশেষে মায়ানমার সেই একই আগ্রাসনের স্বীকার । এতে মানবমন্ডলী ও মানবসভ্যতা অসহায় স্বৈর অপকাঠামোয় বন্দী । মানবমন্ডলী চাইলেও স্বাধীনতা অধিকার মর্যাদা নিরাপত্তা ফিরে পাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত মানবতার রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থা কায়েম না হয় ।
ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত কার্যকরী শাখা ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ । মানবত্মা ও মানবজীবন বিনাশী বস্তুবাদী স্বৈর অপশক্তির গহ্বর থেকে উদ্ধার ও মুক্তির কালজয়ী সময়-উপযোগী দিশা ও দর্শন প্রবর্তন করেন মহামান্য ইমাম হায়াত । বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের দিশায় ।
মানুষ ও মানবতার মুক্তি সাধনায় এবং স্বৈর ফ্যাসিবাদের গহ্বর থেকে পরিত্রাণের উপায় দান করেন । যাহা রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বয়িকভাবে খেলাফতে ইনসানিয়াত । এই খেলাফতে ইনসানিয়াতই, স্বৈর ফ্যাসিবাদের আগ্রাসনে খন্ড-বিখন্ড মানবমন্ডলী ও মানবসভ্যতা বিনাশী ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় তথা বস্তু ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের অবসান অনিবার্য । কারণ খেলাফতে ইনসানিয়াত বিশ্বাস করে প্রাকৃতিক দুনিয়া প্রাকৃতিকভাবেই থাকা অনস্বীকার্য । প্রাকৃতিক দুনিয়াকে পেশীবাদি ভৌগলিক বা রাষ্ট্রীয় স্বৈর অপশক্তির উন্মেশ হওয়াতে অখন্ড মানবতা মুক্ত বিশ্বের দুনিয়া আর থাকে নাই ।
যার ফলে মানব ও মানবতার হাহাকার আর্তনাদ বিপর্যয় খুন-খারাপী দারিদ্রতা বৈষম্য বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি দীর্ঘায়িত হচ্ছে । এইধারা চলমান থাকলে বিশ্বসভ্যতা ধ্বংস অনিবার্য । অনিবার্য ধ্বংসের গহ্বর থেকে উদ্ধার ও মুক্তির অবিকল্প পথ বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব ।
বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব পার্টি এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য স্বৈর ফ্যাসিবাদের গহ্বর থেকে অখন্ড মানবতার মুক্ত বিশ্বের নতুন দুনিয়া গড়া । কারণ দুনিয়া সকলের, সকল মানুষের প্রাকৃতিক দুনিয়া । দেশ ও দুনিয়া একক কোন ধর্মের, মতবাদের, শ্রেণীর, বর্ণের নয় । দেশ ও দুনিয়া সার্বজনীন অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন সমমর্যাদাপূর্ণ কল্যাণকর রাষ্ট্র ও বিশ্ব ব্যবস্থা বিনির্মাণ করা ।
(লেখাটি অসমাপ্ত, অসংশোধিত, অসম্পাদিত)
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪
রাসেল সরকার বলেছেন: আত্মা যখন আধাঁরে নিমজ্জিত হয়ে যায়, তখন সত্য-মিথ্যা উপলব্দির ক্ষমতাও হারিয়ে যায় ।
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১২
পলাশ রহমান বলেছেন: ভালো লাগলো। ধব্যবাদ।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৬
রাসেল সরকার বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক মোবারকবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:৪৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
অকাজের দোকান