|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
বেশ কিছু দিন আগে  কলেজ পাড়ার মোড়ের মাথায় আমি একটা পুরাতন বই পত্র পত্রিকা বেচাকেনার দোকান দিয়েছি।সত্যি কথা বলতে কি  লেখাপড়া বেশি না জানলেও আমি ভীষণ বই পড়ুয়া।যেখানে যা পাই গোগ্রাসে গিলি, এর সবই অবশ্য আউট বই।টেক্সট বইতে আমার তেমন কোন আগ্রহ নেই। 
নতুন বই কেনার সাধ্য নেই তাই রথ দেখা ও কলা বেচা দুটোই হবে এই আশায় দোকান দেয়া আর কি। তাছাড়া বাড়ি থেকে কিছু করার তাগাদাও ছিল। প্রথম প্রথম খরিদদার তেমন একটা হচ্ছিল না। কিছু গাইড বই কিনতে কালে ভদ্রে কেউ কেউ আসতো। দাম দর শেষে মূল্য যা দিতো বই প্রতি লাভ খুব একটা থাকতো না। যা হোক বইয়ের প্রতি ভালোবাসার কারণে নানা প্রতিকুলতার মাঝে দোকান টিকিয়ে রাখলাম। মন্দের  ভালো দোকান  মালিককে  মাসিক ভাড়া দিয়ে অল্প কিছু টাকা বাঁচতো প্রতি মাসে। মুফতে আমার কিছু বই পড়া হতো। 
এর কিছুদিন বাদে এক সুহৃদের উৎসাহে ফেসবুকে বই বেচা কেনার গ্রুপ খুলে ফেললাম । অন্য দিকে  বেশ কয়েকটি বড় বই বেচা বিক্রি  গ্রুপে বই বেচার পোস্ট দিলাম।  তাতে ভালো সাড়া দেখে  স্বাভাবিকভাবে আমার উৎসাহ দ্বিগুণ হয়ে গেল।বেচা বিক্রি বাড়তে আমি বেশ খোশমেজাজে ব্যবসা চালিয়ে যেতে লাগলাম। 
ইদানিং কিছু আমারই মত বই পড়ুয়া লোকজন আমার দোকানে ভীড় করে নিয়মিত।বয়স যা ই হোক না কেন,  সমমনা বলে কথা বলে আরাম পাওয়া যায় তাদের সাথে।  সবচেয়ে বড় কথা বই পত্র পত্রিকা সংক্রান্ত  অনেক খোঁজ খবরও মেলে,  এটাও আরেকটা ভালো দিক ব্যবসার জন্য ।সম্প্রতি  আমার মত এক বই পড়ুয়া প্রৌঢ় মানুষের সাথে আমার পরিচয় হলো।পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে আমার দোকানে এসে অনেকটা সময় কাটাতে লাগলেন । স্বাভাবিক ভাবে সামাজিক ,অর্থনৈতিক, রাজনীতি এমনকি পারিবারিক আলাপ আলোচনাও চলতে লাগলো সুযোগ মত । তবে ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে তিনি কেমন যেন বিব্রত হতেন,এটা বুঝতে পারতাম।নিজের কথা খুব একটা কিছু বলতে চাইতেন না।
কথায় কথায় যে টুকু জানা হলো, তিনি একজন সাধারণ চাকুরে ছিলেন।এখন রিটায়ার্ড । স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে বছর দুয়েক। নিঃসন্তান  জীবনে একাকীত্ব কাটানের প্রধান সঙ্গী এখন বই আর আমার সঙ্গে বই সংক্রান্ত আলোচনা তার ভালো লাগে ত্ই তিনি অবসর সময়   কাটাতে আমার কাছে আসেন। 
  উনার মিষ্টি ব্যবহারের কারণে  তাঁর প্রতি আমার এক ধরনের আত্নিক টান তৈরি হলো খুব স্বাভাবিকভাবে। একাকী থাকেন,কি খান না খান এই ভাবনায় বাসায় কিছু ভালো মন্দ হলে বিশেষ করে শুকনো খাবার আমি তাঁর জন্য বয়ে আনতাম প্রায়। তিনি প্রথম প্রথম খেতে না চাইলেও পরের দিকে আগ্রহ নিয়ে খেতেন। শেষে এমন হলো কোন কারনে তিনি একদিন না এলে আমার কেমন যেন খালি খালি লাগতে লাগলো, মন বসতো না কাজে। 
তবে একটা ব্যপার একটু খারাপ লাগতো তাঁর কাছে বাসার ঠিকানা বা মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি কেমন যেন বিব্রত বোধ করতো। একদিন জানালেন তিনি মোবাইল ব্যবহার করেন না। ব্যক্তিগত আলাপেও তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। 
এর মধ্যে একদিন হল কি তিনি হঠাৎ পর পর কয়েক দিন অনুপস্থিত। আমি ও নতুন বিবাহের কারণে এ ব্যপারটা বাধ্য হয়ে একপ্রকার আন্তরিক  ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও নজর দিতে পারি নি। 
কয়েকদিন পরে, পাশের দোকানী বন্ধু মুনির আমি দোকান খুলতেই প্রায় ছুটে এসে জানালো, 
- দোস্ত তোমার লগে একখান কথা।
- কি কথা? 
- তোমার এইহানে আইতো ওই যে সাদা পাঞ্জাবিওয়ালা বুইড়া। 
-জামান সাহেব?
- হ।
- তো কি হইছে? 
- হের খবর কি জানো?
- হ কয়দিন এদিকে আহে নাইক্কা। 
- হেই তো মইরা গেছে। 
- কি! কি কস তুই ? 
- মইরা না, ভুল হইলো, হেরে মাইরা ফালাইছে। 
আমি তো শুনে আকাশ থেকে পড়লাম 
- কেডায় এমুন কাম করলো? কার বাড়া ভাতে ছাই দিছিলো হেতে? আহারে!  
- আরে আসল কাহিনী তো অন্য খানে।
- কি কাহিনী?  খুইল্ল্যা ক তাড়াতাড়ি।
-হের পোলা মাইয়ারা তাঁরে মাইরা ফালাইছে।
- কি? কি কস? আমি বিশ্বাস যাই না। হেতে তো নিঃসন্তান আছিলো। পোলা মাইয়া আইলো কই তন?
- মিছা কথা,হেতে মিছা কথা কইছে।  আমি খোঁজ খবর নিছি। হের দুই পোলা আর দুই মাইয়া। বনিবনা আছিল না তারে কেউ দেখতো না।
- ক্যাঁ?  দেখতো না ক্যাঁ?
- অত কিছু কইবার পারমু না। তয় তাজমহল রোডে হের বাড়ি আছে। হেই সব লইয়া নাকি গ্যাঞ্জাম। পোলা মাইয়ারা সম্পত্তি বেচবার চাইছিল হের বউ মরনের পর থাইকা।  হেতে দেয় নাই।  হেরে কইছিল না- কি বৃদ্ধশ্রমে দিবো।  বুইড়া ফাইট দিছে বহুত, লেকিন শেষ ঠেকাইতে পারে নাইক্কা। 
অনেক কশ্ট পেলাম কিন্তু কিছু করার নেই। সমাজটা কেমন যেন দিন দিন পঁচনের শেষ সীমায় পৌছে যাচ্ছে। দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে বললাম
- লোকটা ভালো আছিল রে মুনির।   অনেক জ্ঞানী আছিল।পোলা মাইয়া উপরে ত্যাক্ত হইয়া মনে লয় কইতো নিঃসন্তান।  হায়রে খোদা। সম্পত্তি কারও কারও লাইগ্যা এমন শত্রু হইয়া দাড়ায়। কি জমানায় আইলাম রে দোস্ত!   
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
 ১৯ টি
    	১৯ টি    	 +৭/-০
    	+৭/-০  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ২:১২
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ২:১২
ইসিয়াক বলেছেন: সত্যি  মর্মান্তিক! আমাদের পতনশীল সমাজ আরও কত নিচে নামবে কে জানে? 
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
২|  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ১:৩৬
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: মনে হচ্ছে বাস্তব কাহিনী। তবে কিছুটা আপনার কারসাজি।  
সব কিছু মিলিয়ে গল্পটা বেশ দুর্বল।
  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ২:১৫
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  দুপুর ২:১৫
ইসিয়াক বলেছেন: কি করবো এভাবে লিখতে মন চাইলো। তবে ইচ্ছে আছে  সামনে একটা বইয়ের দোকান দেবো। সারাদিন বই পড়বো আর ব্লগিং করবো।ও হ্যাঁ গান থাকবে সাথে।  
ধন্যবাদ।
৩|  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  বিকাল ৩:৩৪
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  বিকাল ৩:৩৪
মুক্তা নীল বলেছেন: 
বাস্তব পটভূমি তুলে ধরেছেন ইসিয়াক ভাই । প্রায়ই দৈনিক
খবরের কাগজেও এধরনের নিউজ আসে ।
শুভেচ্ছা রইলো ।
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৫
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৫
ইসিয়াক বলেছেন: 
আসলে আমরা সামগ্রিক মূল্যবোধ ,নীতি নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের যুগে বাস করছি, এর  থেকে হয়তো মুক্তি নেই অথবা আছে। 
তবু আশা নিয়ে বাঁচে মানুষ, একদিন ভালো কিছু হবে। মানুষ আরো মানবিক হবে। পৃথিবী থেকে লোভ হিংসা পাপ দুর হবে।
পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা রইলো আপু। 
শুভকামনা জানবেন। 
সু প্রভাত।
৪|  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  সন্ধ্যা  ৭:৪৭
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  সন্ধ্যা  ৭:৪৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দারুণ লাগলো আপনার এই গল্পের কাহিনী বিন্যাসটি। ++
পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৯
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৯
ইসিয়াক বলেছেন: 
যাক অভয় পেয়ে নিশ্চিন্ত হলাম। আমি একটু দ্ধিধাগ্রস্থ ছিলাম। 
পাশে থাকার জন্য , চমৎকার মন্তব্য আর লাইক কমেন্টের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো। 
আপনার পোস্ট না পেলে আপনার সাথে আর কথা নেই। আপনার কমেন্টের উত্তর ও দেবো না। ভীষণ রাগ হচ্ছে কিন্তু। পোস্ট দিন তাড়াতাড়ি । 
ভালো থাকুন।
৫|  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ৯:৪১
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ৯:৪১
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: উত্তম পুরুষের গল্পগুলোই বেশি ভালো লাগে। মনে হয় লেখকের সাথে সত্যি সত্যি ঘটেছে। অবশ্য গল্পে উল্লেখিত ঘটনা এদেশে নতুন কিছু নয়। সমাজে অহরহ ঘটছে।
লেখায় +
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২২
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২২
ইসিয়াক বলেছেন: 
চমৎকার মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন। 
শুভ কামনা রইলো প্রিয় ব্লগার। 
ভালো থাকুন সবসময়।
৬|  ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ১১:২৫
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ১১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: কি করবো এভাবে লিখতে মন চাইলো। তবে ইচ্ছে আছে সামনে একটা বইয়ের দোকান দেবো। সারাদিন বই পড়বো আর ব্লগিং করবো।ও হ্যাঁ গান থাকবে সাথে।
ধন্যবাদ। 
এগুলো আপনার আবেগের কথা। বাস্তব বড় কঠিন বন্ধু। আবেগ দিয়ে কবিতা লেখা যায়। জীবন চলে না।
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২৩
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২৩
ইসিয়াক বলেছেন: 
হা হা হা এতদিনে বুঝলেন?
৭|  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ১:৫৬
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  রাত ১:৫৬
প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল।
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২৭
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:২৭
ইসিয়াক বলেছেন: 
 অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইলো । 
ভালো থাকুন সবসময়। 
৮|  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৭
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৭
নীল আকাশ বলেছেন: গল্পের থীম খুব ভাল ছিল। অশুদ্ধ কথ্য ভাষা শেষের দিকে কি প্রয়োজনীয় ছিল? 
৯|  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৭
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৭
নীল আকাশ বলেছেন: কলুষ মানে কী জানেন?
  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:৩০
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:৩০
ইসিয়াক বলেছেন: 
কলুষ মানে কী জানেন?
কলুষ /বিশেষ্য পদ/ পাপ, অধর্ম, আবিলতা; মল, মালিন্য; দোষ।
১০|  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৮
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ৯:২৮
নীল আকাশ বলেছেন: কলুষ নামে আমার একটা উপন্যাস লেখা লেখা হয়েছে।
১১|  ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:৫২
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১০:৫২
নীল আকাশ বলেছেন: কলুষ অর্থ পাপ। এটাই পরিশুদ্ধ অর্থ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১১:২০
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১  সকাল ১১:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: মর্মান্তিক!