নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইবনে শামস

রায়হানা তনয় দা ফাইটার

আমি। কেউ না। তবে মাঝে মাঝে আমার দুষ্ট মনটা কানে কানে এসে বলে, তুমি মহাকালের উচ্ছল সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো এক কচুরিপনা । কালের ঊর্মিমালার সাথে সাথে নাচা ছাড়া তোমার আর কোন কাজই নেই.....

রায়হানা তনয় দা ফাইটার › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসমাপ্ত কবিতা

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

আধ ঘন্টা পেরিয়ে গেলো রাস্তায় নেমেছি। নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে। কারণ একমাত্র পাগলরাই উদ্দেশ্যহীন পথে-প্রান্তরে হাঁটে। যা এখন আমি করছি। পায়ের সেন্ডেল-জোড়া খুলে নর্দমার নালায় ছুড়েঁ ফেল্লাম। তারা স্বাধীন হয়ে বড় আহলাদে নালায় সাঁতার কাটছে। দৃশ্যটা দেখে মুখের কোনে একটুকরো হাসির রেখাপাত হলো। দু’দিনের টানা বিরাজমান কালো মেঘ ঠেঁলে প্রায় প্রথম আলোর দেখা মিল্লো। সূর্যের প্রখর তাপ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। অথচ বর্ষার এই দিনে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার কথাছিল। বিধাতা কী প্রকৃতির অমোঘ সব নিয়ম উলট-পালট করে দিচ্ছেন? নইলে এমন দিনে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টির বদলে সোনালী রোদ নেমে আমাদের শরীরে অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছে কোন যুক্তিতে? হৃদয়ের গহীনে আবারও ব্যাথা অনুভব করছি। কি যেন না পাওয়ার বেদনায় মন-কাননে যে অনল একটু নিভতে চায়ল তখনই কে যেন ফুঁ দিয়ে পুনঃরায় সে আগুন জ্বালানোর সাধনায় মেতে উঠছে। কানে হেডফোন দিলাম। উচ্চ বলিউমে তপুর গান প্লে করলাম। মেয়ে তুমি আমাকে বন্ধু ভাবো কী....... তার মাঝে চোখ বন্ধ করে নিজের অজান্তে লেখে ফেলা গান ধরলাম মুখে..... নিলে না তো তুমি?/নিলেনা আমায় তুলি.../মেলে দেখো আখি/নেই, নেই কোথাও আমি......

রাস্তার ধারে যাত্রী ছাউনিতে অজানা ভয়ে যবুতবু হয়ে বসে আছি। সামনে মানুষের ছোট খাটো একটা জটলা দেখলাম। হাজারো মানুষের ভীড় থেকে একটা মানুষ আমার দিকে এগিয়ে আসছে। তাঁর চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। তিনি সোজা এসে আমার উপর বসে পড়লেন। অথচ তার অনুভবই হলো না জঘন্য ব্যাপারটা ? আমি সরে দাঁড়ালাম। তিনি পাশের জনকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, আহ , কী নির্মম ভাবেই না বেচারার মৃত্যু হলো ! কোন্ জগন্য/ গুরুতর পাপ কম্য করেছিল কে জানে? খোদাতো আর সাধে এমনতর শাস্তি তার কপালে লিখেননি? তার কথাশুনে শবটা দেখতে ইচ্ছে করছে খুব। আবার ভয়ে শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছে। তবু মানুষের ভিড় ঠেলে অনায়াসে ভেতরে ঢুকছি। আজব তো ! আমি যে তাদের ঠেলে ভেতরে যাচ্ছি এটা কেউ বুঝতেই পারছে না। কারও ভ্রুক্ষেপ করার সময়ও নেই। আমি ভেতরে ঢুকতেই ভয়ে চিৎকার দিই। আমার চিৎকারে পৃথিবীর অন্তর ভয়ে কুকড়ে যাচ্ছে অথচ পরম ব্যস্ত এসব মানবের অনুভূতির পাপড়িতে সামান্য দোলাও লাগছে না। এক দৌড়ে ওখান থেকে সরে আসলাম। আস্তে আস্তে মানুষের ঝটলা ভাঙছে। ঘাড় থেকে আলাদা হয়ে আমার মাথাটা রাস্তার মাঝে পড়ে আছে। এখানে ওখানে রক্তের মেলা বসেছে। হেডফোনটা রক্তাক্ত। আকাঁবাকা মৃত সাপের মতো লাগছে। এতক্ষনে বুঝলাম। আমি পৃথিবী নামক খাচাঁ ভেঙ্গে সুবিশাল বিস্তৃত পরকালে পাড়ি জমিয়েছি। কেন এমন নির্মম মৃত্যু হলো আমার। কারণটা জানতে পারলে ভালো হতো। একটু স্মৃতিচারন করতে পারলে মন্দ হতো না। চোখ বুঝে ভাবতে চেষ্টা করলাম। ভাল লাগছে। পরকালেও পৃথিবীয়-স্মৃতির রোমান্থন করা যাচ্ছে.....

২৫-জুলাই,২০১১ । মোটে পৃথিবী উষ্ণ হতে শুরু করেছে। মনে আনন্দের বন্যা বইছে। জীবনে প্রথম কলেজে যাবো। কেমন কাটবে দিনটা ? এসব ভেবে আমি অধীর। কলেজের করিডোরে প্রথম পা ফেলতেই নিজেকে খুব আপ্লুত মনে হয়েছে। মনে হলো, যে দিন পাখি ডানা মেলে উড়তে শেখে। আজ আমি তার চেয়েও স্বাধীন, মুক্ত। ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। একটা রুমের বাইরে “একাদশ ১ম বর্ষ বিজ্ঞান ” লেখা দেখে ভেতরে প্রবেশ করলাম। ছাত্রদের উপচে পড়া ভীড়ের আশা করেছিলাম। কিন্তু ক্লাসরুমে শুধু একটা মেয়েকে মুখে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখে ‘থ’ বনে গেলাম। কোন শিক্ষকও নেই। নিশ্চুপে দৃষ্টি অবনমিত করে মেয়েটির অনেক দূরে গিয়ে বসলাম। খুব নার্ভাস ফিল করছি। নিজেকে হাবলা হাবলা মনে হচ্ছে।

অনেক্ষন পর দশ-বারোজনের মতো ছেলে-মেয়ে রুমে ঢুকেছে। ওরা সবাই দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে কিছুক্ষন হা করে তাকিয়েছিল। পরক্ষনে একজন আমার দিকে আঙ্গুল তুলে বলল- এই, ফাস্ট ইয়ার ? আমি ভদ্রতার সাথে মাথা নাড়ালাম। ওরা সবাই একসাথে হেসে উঠল। ছেলেটা বলল, এই বরাবর উপরে যাও। তখন মেয়েটা বলে উঠল, বাহিরে যে র্ফাস্ট ইয়ার লেখা আছে। আরেকটা ছেলে এগিয়ে এসে বলল, এই কলেজে যা লেখা দেখবে ধরে নিবে তার ঠিক উল্টো। উপরে গিয়ে দেখো। যেখানে তোমাদের ক্লাস হচ্ছে,ওখানে ২য় বর্ষ লেখা আছে। আমরা দু’জনই মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসলাম। দু’জন পাশাপাশি হাঁটছি কিন্তু কোন কথা হচ্ছে না। মেয়েটি নীরবতা ভাঙল। তুমি ক্লাস করবে ? আমার দিকে তাকিয়ে জানতে চায়ল। আমি কিছুক্ষন ওরদিকে অপলকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য হলাম। অপরুপ। চোখ সরানো অসম্ভব। মনে মনে আল-সুবহানাল্লাহ পড়লাম। কারণ আল্লাহ বলেছেন, সুন্দর কোন সৃষ্টি দেখলে সাথে সাথে আল্লাহর প্রসংশা করতে। তবে প্রথমদিকে এতো আহামরী সুন্দর মনে হয়নি কেন? ও ধাক্কা দিয়ে বলল, এই হাবলা, ক্লাস করবে ? আমি বললাম, অবশ্যই করব।

তুমি করবেনা ?

-না।

-কেন ?

-কলেজের প্রথম দিনেই দেখা হলো এক হাবলার সাথে। দিনটা কী আর ভালো যাবে ?

-তুমি কার কথা বলছ ?

-কেন ? তোমার কথা।

-তোমার কী মনে হয় আমি হাবলা ?

-নাম্বার ওয়ান।

আমি কথা না বাড়িয়েই উপরে উঠে গেলাম। মেয়েটি কোনদিকে গেল ইচ্ছে করে দেখিনি। ক্লাসে ঢুকার ঠিক আগমুহূর্তে পেছন থেকে ডাক পড়ল এই হাবলা একটু এদিকে....

ওর দিকে ফিরে তাকাতেই হেসে ফেললাম। মেয়েটি কানে ধরে আছে। অদ্ভুদ এবং অনিন্দ্য সুন্দর একটি মেয়ে। ক্লাস আর করা হলো না। ওর সাথে গল্প করার স্বাধ জাগল। দু’জনে পাশাপাশি হাঁটছি। এবার প্রথমে আমি কথা বললাম। তুমি কান ধরেছিলে কেন?

-তোমাকে এখানে আনার জন্যে। কান না ধরলে কী তুমি আসতে?

অনেক গল্প করলাম। কিন্তু একে অপরের সাথে পরিচিতই হইনি। আমি ওকে বললাম,কী অদ্ভুদ? আমরা অনেক্ষন কথা বলেছি। অথচ কেউ কাউকে চিনিইনা। নাম পর্যন্ত জানি না। ও আমাকে বলল। দু’টো মন যখন পরস্পরকে চিনে নেয়, তখন আর বাহ্যিক পরিচিতির চাদরটা না মুড়ালেও চলে। কথাটা শুনে আমি একটু হাসলাম। হাত বাড়িয়ে বললাম, আমি তন্ময়। ও হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, আমি বাহেরা। ওম !....

আমার লাশ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গেছে। পুলিশে ভরে গেছে চারিধার। বাসায় খবর দেয়া হয়েছে। কিছুক্ষন পর ভাইয়ারা কাঁদতে কাঁদতে আমার ভগ্নাংশের দিকে ছুটছে। কেউ মাথাটা আর কেউ ঝাঝরা শরীর জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। সবার কান্নার শব্দগুলো আমার আতœার গহীনে কেমন যেন একপ্রকার ব্যথার সৃষ্টি করছে। আমার খুব খারাপ লাগছে। কিছুক্ষন ঘুমাতে পারলে মনটা ভাল হয়ে যেতো। যাত্রী ছাউনীতে ঘুমিয়ে পড়লাম।

কতক্ষন ঘুমের রাজ্যে ছিলাম বুঝতে পারছিনা। আমার শবকে বাসায় নিয়ে আশা হয়েছে। শবের সাথে সাথে আমিও চলে এসেছি। বসে আছি আরাম কেদারায়। আত্মীয় স্বজন সবাই আমার চারপাশে কাঁদছে। যারা গতকালও আমাকে না পড়ে ঘুমানোর কারণে বকেছিল তারাও কাঁদছে। কী লাভ কেঁদে। আমি কী আর ফিরে যাব তাদের মাঝারে ? তা হওয়ার সম্ভাবনা শুন্যের কোটায়। আমার একটা মানুষকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। ও এখানে আসেনি। হয়তো আমার মৃত্যু সংবাদ তার কাছে পৌঁছেনি। শুনলে মুহূর্তের ব্যবধানে চলে আসবে। ওকে দেখার একটাই পথ খোলা আছে। পুরানো স্মৃতি হাতড়ানো। কবে তাকে ১ম দেখেছিলাম? কবে? কবে? .... এইতো মনে পড়ছে......

৮ আগস্ট ২০১১। অল্পসময়ের ব্যবধানে বাহেরার সাথে আমার মোটামুটি একটা সুগভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। দহরম-মহরম বললে বোধহয় ভূল হবে না। ক্লাসের অন্যান্য ছেলে-মেয়েরা ধরে নিয়েছে আমাদের মাঝে প্রেম চলছে। কেউ আমার কাছে এ ব্যপারে জানতে চাইলে বলি, হ্যাঁ অবশ্যই আমি ওকে ভালবাসি; তবে বন্ধু হিসেবে। বাহেরা আমার খুব ভাল বন্ধু। আমার কথাগুলো একজনও বিশ্বাস করতো না। আজ ক্লাস শেষে আমরা দু’জন গল্প করে করে যাচ্ছিলাম। অর্ধেকটা পথ এগুনোর পর ও আমাকে বলল, তুমি একটু আড়ালে থাকো। আমার মেঝ আপু আসছে। আমি আড়ালে অনেক্ষন দাঁড়িয়ে আছি। ওদের কথা শেষ হচ্ছে না। তাই উঁিক দিয়ে দেখলাম। কিছুক্ষন হা করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় ছিলনা। উনি বাহেরার ছেয়ে বেশী সুন্দর তা না। উনার প্রতি আমার হৃদয়ের আকর্ষনটাই ছিল প্রবল। আমার জীবনের এই দীর্ঘ পরিসরে কতো অপসরীকেই না দেখেছি। অথচ কারো প্রতি এরকম তো দূরের কথা সামান্য টানই অনুভব করিনি। মনে হলো উনার সাথে আমার জন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক। হাইড্রোজেন সালফেট আর পানির আকর্ষনের ব্যাপারে যে কথাটা অতি সত্য। সেই আকর্ষনটাই আমাদের ক্ষেত্রে পরম অবিনাশী সত্য হয়ে দেখা দিল। আমি আর স্থির থাকতে পারলাম না। আড়াল থেকে বেরিয়ে উনার মুখোমুখি দাঁড়ালাম। বাহেরা উপায়ান্তর না পেয়ে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলো। তখনই আমি গেয়ে উঠলাম.....

বলবনা আকাশের চাঁদ এনে দেবো,/ বলবনা তুমি রাজকন্যা/ শুধু জিজ্ঞেস করি..... আর বলা গেলনা। উনার রক্তচক্ষু দেখে ভয় লাগলো। কিন্তু পালিয়ে এলাম না। তখনই বিখ্যাত একটা প্রবাদ মনে পড়ল। পিয়ার কিয়াতো ডরনা কিয়া? আমি পরিস্থিতি হাতের নাগালে আনার চেষ্টা করছি। উনার দিকে তাকিয়ে বললাম। আমি বাহেরার বন্ধু। উনি চোখ বড় বড় করে বাহেরার দিকে তাকালেন। বাহেরা লজ্জায় মুখ নীচু করে ফেলল। আমি উনাকে বললাম, আপু কোন কিছু মনে করিয়েননা প্লিজ। আসলে আপনি এতো সুন্দর যে আমার ঐ গানটা মনে পড়ে গেছে। উনি মুচকি হেসে “ঘড় ঢ়ৎড়নষবস” বলে চলে গেল। আমার মনে হলো কেউ আমার প্রানটা ছিড়ে নিয়ে গেল। উনি যেতে না যেতেই বাহেরা আমার গালে ঠাস করে বসিয়ে দিয়ে বলল, তুই যে এতো হাবলা জানতাম না।” আমি কিছু না বলে গাড়িতে উঠে গেলাম। ও আমার পথে কিছুক্ষন তাকিয়েছিল। পরে আমাকে অনেকবার ফোনে যোগাযোগ করতে চেয়েছিল। আমি করিনি। করতে ইচ্ছে করেনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে বাহেরা আমার বাসায় চলে আসলো। ও আমার কাছে জানতে চায়ল, কি করলে তুই আমাকে ক্ষমা করবি। আমি বললাম, তুর আপুর সাথে একটু সম্পর্ক করে দে। বাহেরাও বন্ধুত্বের দোহায় দেওয়াতে রাজি হয়ে গেল। কিন্তু ছায়েরা.... আর ভালো লাগছেনা। কেমন জানি এক অবিনাশী বেদনার সুর আমার হৃদয়ে রক্তপাতে মেতে উঠেছে। তাই ইচ্ছে করে আমার বর্তমান জগতে ফিরে আসলাম। হঠাৎ খুব ঠান্ডা লাগছে। এসে দেখি আমাকে গোসল দেওয়া হচ্ছে। বাসায় কোরআনের খতম চলছে। মাকে দেখলাম বুক চাপটিয়ে কান্না করতে। বাবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আছে ঘরের এককোণে। সবার জন্য খারাপ লাগছে। ঘরের একটু ভেতরে যেতেই দেখলাম ছাহেরা এসেছে। ও খুব কান্না করছে। চোখ দু’টো ফোলে গেছে। ও আমার জন্য এতো কেঁেদছে। মৃত্যুর পর নতুন করে আরেকবার তার প্রেমে পড়লাম। মুখের উপর এসে পড়া এলোচুল নিজহাতে তুলে তার কানের উপর গুছে দিলাম। কানে কানে বললাম তোমাকে নিয়ে লেখা শেষ কবিতাটা কী পড়েছ ? আমি জানি তুমি পড়নি। কারণ তুমি আমাকে মেনে নিতে পারনি। আমি বয়সে তোমার ছোট বলে। আমি অনেকবার তোমাকে বুঝিয়েছি। ভালবাসা বয়সের গন্ডিতে নয়। জন্ম নেয় মনের গহীনে অসমাপ্ত এক কবিতা হয়ে। অনুভূতির পালকে চড়ে। তুমি বুঝতে চেষ্ট করনি কখনো। আমিও তাই চলে এলাম বহুদূরে। আমার এতোসব কথা উপেক্ষা করে ও আস্তে আস্তে একটা কাগজ খুলল। আমার দেওয়া শেষ কবিতা।“তোমার জন্য আমি ...”। ও আবৃত্তি করছে। শুনতে ভাল লাগছে।

এই শোন, হে তোমাকে বলছি।/ নাও, গোলাবটি তোমার জন্যে.../ এভাবে ডেব ডেব করে দেখছ কি?/ নিতে মন চাইছে না বুঝি?/

চাইবেও বা কেন? ?অপরিচত জনের উপহার।/ কিন্তু আমি যে অনেক কষ্টে /একটি ফুল কিনেছি; আজকের /দিনে তোমাকে দিব বলে.../ভাবছ, এ আবার কেমন পাগলামি?/যার সাথে আজই প্রথম দেখা, তাকে/দেওয়া জন্যে গোলাব কিভাবে .../প্রথম তো দেখছি না আমি তোমায়?/রোজ দেখি, দূর আকাশে চাঁদের রূপে.../নতুবা, ঘুমের রাজ্যে স্বপ্নের রানী /হয়ে দেখা দাও আমায় তুমি.../বহু কাল ধরে খুঁজছি তোমায় আমি।/প্রচন্ড ভালবাসি আমি তোমায়। ভাবছ; এ /আবার কোন বখাটের পাল্লায়.../ভাবতে পারো তুমি তোমার যা খুশি; তবে /মনে রেখো, তোমার জন্য আমি হতে /পারি ভ্যালেন্টাইনের মতো; /নতুবা তার ছেয়েও ঢের মহান.../হতে পারি আমি তোমার জন্য; মজনুর চেয়েও /বিশাল বড় রকমের পাগল, নিতান্ত উন্মাদ.../আর কতক্ষন এভাবে গোলাপ হাতে /স্ট্যাচু অব লিবার্টি হয়ে থাকব...?/জানো, আমি আজ রক্ত বেচে /তোমার জন্যে এ রক্তিম গোলাপ /খরিদা করেছি.../তুমি যদি নাও, তাহলে / তোমার স্মৃতি রক্ষার নিমিত্তে আমি /তৈরী করব তাজমহলের চেয়েও /বিস্ময়কর কিছু একটা.../একটা সত্য কথা বলি? বলছি?/ তুমি খুব একটা সুন্দর নও। তবে /লিওনার্দ্যাে তোমাকে দেখলে পৃথিবী /মোনালিসা নামের কাউকে আর চিনত না! /ভাবছ এ কোন ধরনের পাগলের প্রলাপ?/সত্যিইতো, তখন সে তো তোমার / জাদুময়তার আকর্ষণে জ্ঞান হারাতো.../আমি পৃথিবীময় খুঁজে বেড়াতাম তোমাকে। /অথচ তোমায় পাওয়া হতো না। /আর দেবদাসের চেয়ে জগন্য ব্যাথায়.../ আমি কি কিছু ভুল বললাম?/ নিলেনা তো তুমি? তাহলে তুমি বলে/দাও পৃথিবীকে, নতুন এক / প্রেমিকের বিসর্জন দেখতে.../তাকে তৈরী হতে বলো,/আরেক পেয়ালা বিষাদের /শরাব পান করার জন্যে... /

মনে মনে হাসলাম। এতো দেরী করলে কেন ছায়েরা ? এখন তো হাজারো আরাধনা করলেও আমাকে ফিরে পাবে না। তুমি যে বড্ড বেশী দেরী করে ফেল্লে। আমাকে প্রবলভাবে কে জেন টানছে। হয়তো আমাকে সমাধিস্ত করা হচ্ছে। শুনেছি শরীরের সাথে আত্মা কবরে চলে যায়। আমারও চলে যাওয়ার ডাক পড়েছে। শেষবারের মতো ওর কানে কানে বলতে ইচ্ছে করছে “আমি তোমায় ....

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: চমৎকার।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৫১

রায়হানা তনয় দা ফাইটার বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.