নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটি সেকুলার ভাইরাস ও পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের গল্প । (একজন স্বাস্থ্যকর্মীর লেখা)
●♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡●
কৈফিয়ৎ : জাতি তথা সারা পৃথিবীর এই দুর্দিনে একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে যা দেখছি , বুঝছি তাই শেয়ার করছি, বলা ভালো পর্যালোচনা করছি । সুতরাং এই অনুভবী সত্য-বয়ানকে দয়া করে কেউ সমালোচনা ভাববেন না ! এই সংকটকালে জীবনের ঝুঁকিকে তাচ্ছিল্য করে আমিও একজন লড়াকু যোদ্ধা হিসেবে মানুষের পাশেই আছি , থাকবো । তাই এই লেখাটিতে বিন্দুমাত্র কোনো অভিসন্ধি বা কোনো রাজনৈতিক প্রপঞ্চ খুঁজতে যাবেন না -- রাজনীতিতে আমার কোনো উৎসাহ নেই, এখন তো প্রশ্নই ওঠে না ।
ভূমিকা: করোনা নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় অনেক তথ্য উপাত্ত সামনে এসেছে । তাই আমি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অনুভবেই থাকছি ।
এই সেদিনও, মানে রাজধানীর দাঙ্গা পরিস্থিতি নিপুনভাবে নির্মিত হওয়া অবধি , ভারতবর্ষের রাজনৈতিক তথা সামাজিক পরিমন্ডলে সেকুলার কথাটা নিছক গালাগাল ছিল। আর যেসব (নর্দমার) মুখগহ্বর থেকে এ আধুনিক স্বৈর গালাগাল উৎসারিত হচ্ছিল তার মধ্যে অশিক্ষিত ও শিক্ষিত রাজনীতিবিদ থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এমনকি ভূতপূর্ব আগুন খেকো দু'এক পিস বিপ্লবীও ছিলো । বলা ই বাহুল্য তারা সেকুলার কথার প্রকৃত মানে উদ্ধারে অক্ষম ! ফলে তার মাশুল গুনতে হয়েছে এতগুলো তাজা প্রাণের ! নিঃস্ব হয়েছে কত মা বাবা ভাই বোন , অনাথ হয়েছে কত শিশু ! এমনকি উল্লাসমুখর ধর্মীয় পিশাচ পরিবৃত হয়ে জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে অপাপবিদ্ধ Autistic যুবক !
প্রবাদে বলে 'ধর্মের কল বাতাসে নড়ে '। অতঃপর, ধর্ম সংস্থাপনার্থে কিনা জানিনা, এলো করোনা ভাইরাস-- একদম আদ্যপ্রান্ত সেকুলার ! সারা পৃথিবীর মন্দির-মসজিদ-গির্জ্জা-সিনাগগ সহ যাবতীয় কল্পিত মানবমুক্তির অলৌকিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো 'সবার উপরে মানুষ সত্য' ! ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই সেকুলার ভাইরাস ,অন্তত সাময়িক ভাবে হলেও প্রতিষ্ঠানসমূহকে উপলব্ধি করাতে পেরেছে যে, ধর্মের যদি আদৌ কোনো কাজ থাকে তা মানুষের মুক্তির কথা বলা -- বিভেদের কথা নয় , দাঙ্গারও নয় ; রাজনীতির তো নয়ই ! এই সুযোগে ধর্মীয় পোপ-পুরহিত- মসিহা- মাহাদীদের নিরব-নির্বাসনের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই ।
কেন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই সাধারন মানুষেরই লড়াই:
১। করোনা যদি ভারতবর্ষের ১% মানুষকেও (আদতে তো ওটা দশ গুন ! ) সংক্রমিত করে , তাহলে অন্তত এক কোটি মানুষকে রাস্তায় মরতে হবে ! হয়তো কেউ জলও দিতে আসবে না !
২। উপরোক্ত কারণটা একটু খুলে বলি । এমনিতেই দেশে ডাক্তার-রুগী অনুপাত মোটামুটি ১: ১৭৫০ এর মতো । নার্স বা অন্যান্য স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীর অনুপাত ও ভয়ানক ! আর করোনার জন্য যে ব্যবস্থা আপাতত বরাদ্দ আছে তা মুর্ছা যাবার মতো ! প্রতি ৮৬০০০ জন মানুষের জন্য ১ টি ISOLATION BED এবং ৩৬০০০ মানুষ প্রতি ১টি QUARANTINE BED ! ( Indian Express থেকে নেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারি তথ্য ) ।
এবার পশ্চিম বঙ্গের কল্পিত অদুর ভবিষ্যত বলি । বাস্তব হ'লো-- খুব কম করে সংক্রমণের মাত্রা যদি ১০% ও ধরি , তাহলে শতকরা ৯৯ জন রুগিকে রাস্তায় থাকতে হবে ! আর বাংলা আপাতত আপাত 'ভালো' অবস্থায় থাকার একটি বিশেষ কারণ -- কলকাতা থেকে বস্তুত নামমাত্র আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল করে। তাই দেরিতে শুরু হয়েছে এই তান্ডব । তা বলে নির্লিপ্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই ! বিভবে বৈভবে যে কোনো সময়ে করোনা ছারখার করে দিতে পারে !
৩। নানাকারনেই এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের পর্যাপ্ত protective gear সুলভ হয়ে ওঠেনি । যদিও স্বাস্থ্যকর্মীরা এসব না ভেবে যেভাবে দিন-রাত নির্ভীক লড়াই লড়ছেন তা বিস্ময়কর ! উপরন্তু তারা ভালো করেই জানেন সাধারণ মানুষের চেয়ে করোনায় স্বাস্থ্য কর্মীদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি !
৪। আমি ভারতবাসী বলে যারপরনাই গর্বিত বোধ করি । কিন্তু আবার এটাও ভাবি যে, দেশটা তো Canada ও নয় ! যেখানে দেশের সর্বোচ্চ কর্ণধার অত্যন্ত মানবিকতার সাথে সকল দেশবাসীকে অনুরোধ করে বলবেন, " আপনারা শুধু একটাই কাজ করুন --ঘরে থাকুন । খাবার দাবার সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস আপনার বাড়ীতে পৌঁছে যাবে । দরকারে শুধু একটা ফোন ।"
তুল্যমূল্য বিচারে এসময়ে যাবো না । আজ বাজারের গিয়ে দেখলাম -- মিডিয়ার ভাষ্য আর ground reality বিপ্রতীপ ! প্রয়োজনীয় জিনিসের অপ্রতুল যোগান, চড়া দাম এবং কালোবাজারি তো আছেই । সাড়ে তিনটের সময় দেখলাম মদের দোকানগুলিতে চার- পাঁচ শো লোকের লাইন এবং ঘুঁষোঘঁষি -- যেন celebration চলছে !
Walter Benjamin পুঁজিতন্ত্রকে ধর্মের সঙ্গে তুলনা করে বলেছিলেন, " Capitalism is a purely cultic religion, perhaps the most extreme that ever existed...... Capitalism is the celebration of the cult without dream or mercy [sans reve et sans merci ]. .....There is no day that is not a feast day, in the terrible sense that all its sacred pomp is unfolded before us; each day commands the utter fealty of each worshipper."
৫। ভারতবর্ষের যা অর্থনৈতিক দুরবস্থা তাতে করোনা যদি এখনই রুখে দেওয়া না যায়, তাহলে মহামারীর সাথে দুর্ভিক্ষ অবশ্যম্ভাবী ! তাতে প্রথমে মরবে daily labour , তারপর নিম্নবিত্ত, তারপর মধ্যবিত্ত । গৃহযুদ্ধ ও অবশ্যম্ভাবী !
৬। কেন বললাম একথা ? কারণ, ভারতবাসীর সর্বোচ্চ সুপারম্যানের ভেলকি দেখে করোনা কর্মসূচিকে চসার-মিল্টনদের মতো Dramatic Posey নাকি Poetic drama বলবো বুঝতে পারছি না ! সারা পৃথিবী যেখানে হিমশিম খাচ্ছে , প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল, সেখানে নিছক হাততালি আর ঘন্টাধ্বনির পুরস্কার-প্রবঞ্চনা রবীন্দ্রনাথের "মাল্যদান"এর সেই দরিদ্র কবির প্রাপ্তিকেও হার মানিয়েছে ! এদেশে ঢাল তলোয়ারহীন ডাক্তাররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিরকালই কাজ করে, তোল্লাই খেয়ে নয় ! বরং তোল্লাই দিতে গিয়ে রোগকে আরো বেশি ছড়ানোর ব্যবস্থা হ'লো ! এমনকি উল্লসিত জনতা শ্লোগান দিল , " আসছে বছর আবার হবে।" অবশ্য খারাপ কিছু বলেনি জনতা জনার্দন ! এরকম যদি অর্থনৈতিক শূন্যবাদ ও চটুল রাজনৈতিক প্রলেপে করোনা মোকাবিলা জারি থাকে তবে এই শীতেই নিশ্চিত প্রবল মহামারি দেখা দেবে আবার ! আমার এপার্টমেন্টের মাড়োয়ারিরা তো থালা-বাটি-ঢোল বাজাতে বাজাতে "জয় শ্রীরাম" বলে তারস্বরে চিল্লাচ্ছিলো ! সিপাই কা ঘোড়া !
তবুও ভারতবাসী জাতি ধর্ম এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক রং নির্বিশেষে যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সামিল হয়েছে তা নিঃসন্দেহে কুর্ণিশ করার মতো !
কিন্তু তলেতলে সমানতালে কী চলে ? লেড়ি কুকুর যেমন গু খাওয়া ছাড়তে পারে না , আমাদের দেশের রাজনীতিবিদগনও বোধকরি ইতিহাসের মহাসংঙ্কটকালেও তেমনি রাজনৈতিক সংকীর্ণ-স্বার্থ ছাড়তে পারে না ! যেমন, শুনতে পাচ্ছি মধ্যপ্রদেশের আস্থাভোটের খেলা এরমধ্যেও জারি থেকেছে ! কেরালা সরকার করোনা আক্রান্তদের বিদ্যুতের বিল এবং লোনের কিস্তি আপাতত মুকুব করেছেন বলে সুপ্রিম কোর্টের হুমকির ভয় দেখানো হচ্ছে ! NRC র কাজকর্মেও নাকি ভাটা পড়েনি একটুও ! অথচ ভারতবর্ষের সামনে এতবড় Threat-- তা নিয়ে কাউকে কার্যকর কোনো ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না ! Lock down মানুষ , বিশেষত গরীবমানুষ খাবার-ওষুধ-জল-বিদ্যুত কীভাবে পাবে তার কোনো সদর্থক কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না ! তারমানে আমরা যাদেরকে সঁপেছি প্রাণ তারা ক্ষমতার অংকে ব্যস্ত ! আর মৃত্যুমুখী বিপন্ন মানুষ এখনও তাদের কাছে নিছক ভোটের বোড়ে ছাড়া কিচ্ছুটি নয় !
৭। এদিকে মহামারীর মহাছোবলকে উপেক্ষা করে IT cell (পড়ুন university ) একই রকম নির্লজ্জতায় সক্রিয় !
* জড়িবুটি , গোচোনা না হয় বাদই দিলাম ! করোনা ভাইরাস ৭-৮ ঘন্টা বাঁচে বলে প্রচার ক'রে একদিনের 'জনতা কারফু' করেই দায়িত্ব শেষ ! কে বললো করোনা ৭-৮ ঘন্টা বাঁচে? উত্তর: IT university .
* থালা, ঘন্টার কম্পন সৃষ্ট কী সব সুপারসনিক না আলট্রাসনিক তরঙ্গ নাকি করোনা ভাইরাসকে ধ্বংস করে দিয়েছে ! এ পর্যবেক্ষণ নাকি আবার আমেরিকার NASA র বিজ্ঞানীদের ! কী নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর বকাটে জ্ঞানোৎপাদন ! আরেক মহাযোগী তো সব নিয়ম নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে করোনা ছড়ানোর মহামেলার আয়োজন করেছিলেন । আবার ভবিষ্যত বানীও করেছেন -"ভগওয়ান শ্রীরামজী আ কে সব করোনা ঠিক কর দেঙ্গে ।" এ নির্লজ্জ বেয়াদপির মাত্রা মাপার যন্ত্র আমার কাছে নেই !
* আকাশ থেকে করোনার ওষুধ হেলিকপ্টারে ছড়ানো হবে । আর এই মহান খবর তেরোজন বন্ধুদের WhatsApp করলে ২০ GB নেট ফ্রি । বোঝা যাচ্ছে তো কাদের কীর্তি ?
* চীন নিশ্চয়ই প্রথমদিকে যা করেছে তা ক্ষমার যোগ্য নয় । কিন্তু সামলে নিয়ে সে তো প্রচন্ড লড়াই লড়েছে তার দেশবাসীর জন্য ! সে অন্য দেশের পাশেও ভীষণভাবে দাঁড়িয়েছে ! তাই World Health Organization এবং The Guardian চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেছে । অথচ চাউর হয়ে গেলো -- " চীন ল্যাবে ভাইরাস কালচার করে বিশ্বে ছেড়েছে !" এ জ্ঞান মিডিয়ায় কে ছেড়েছে ? বুঝতে বাকি আছে ?? কেন কেরালা আর চীন টার্গেট বোঝা যাচ্ছে কী ??? ছিঃ ! কারা আমাদের অভিভাবক!!
৭। এই রোগের সাথে লড়ার জন্য যা test kit এবং অন্যান্য resource আছে তা এতটাই কম যে মহামারি চালু হলে , আপনি আমি তা পাবো না ! সমাজের প্রতাপশালী ব্যক্তিরাই তা কুক্ষিগত করবে , এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরাও পাবে কিনা সন্দেহ ! ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের মহান ব্যক্তিরা সে স্বার্থপর মরণভয়ের লক্ষণ দেখিয়েছেন বৈকি ! ক্ষমতার সর্বোচ্চ খোয়াড়ে একজন COVID -19 পজিটিভ রুগি বিচরন করায় , সে সার্কেলের বহু কর্তাব্যক্তি (প্রথম test এ negative হওয়া সত্বেও) দু'বার করে TEST করার দাবি করেন !! সব উন্মাদ !
৮। কিছু সত্য থাকে যা সময় নিরপেক্ষ । তাই এরকম বিপন্নতার সময়েও বলতে দ্বিধা নেই -- করোনার এই করাল মূর্তি একরকম 'Poetic Justice ' , যাকে বলে কাব্যিক বিচার বা আদর্শ বিচার বললে বোধহয় অত্যুক্তি হবে না !
সেই ধর্মের কল ! পৃথিবীতে প্রায় ২০ লক্ষ প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে উন্নত, বুদ্ধিমান,সভ্য , আধুনিক,কল্পনার প্রতিভায় সমুজ্জ্বল....ইত্যাদি নানাবিধ গুণের অধিকারী প্রাণীর নাম নাকি মানুষ ! যে উন্নত প্রাণী ডোডো পাখি খেয়েই নিচিহ্ন করে দিয়েছে, বিলুপ্ত করে দিয়েছে মারসুপিয়াল লায়ন , উমব্যাটের মতো প্রাণীদের ! বিশালকায় নীল তিমিকে সমুদ্রের গভীরে হার্পুন বিদ্ধ করেছে সুগন্ধি বানানোর জন্য ! যাবতীয় বাঘ, পোলার বিয়ার , গন্ডার, ধনেশ পাখি, নানা প্রজাতির সাপকে মেরেছে যৌন উন্মাদনা চরিতার্থ করার জন্য ! শুইয়েছে পাহাড়, সবুজকে ঢেকেছে সভ্যতার কার্বনে, নদীকে করেছে স্তব্ধ, অগ্নিদগ্ধ করেছে আমাজানের জঙ্গল , কাঁদিয়েছে হিমবাহকে ! আর আজ সেই অস্মিত-সভ্যতার সামনে ইতিহাসের নৃশংস ক্ষতচিহ্নের আদিম ও আমিষ খাদের মানচিত্র তুলে ধরেছে একটি ১২৫ ন্যানোমিটারের অভিমান ! সাধে কী আর কবির লেখনীতে 'বিচারের বানী নিরবে নিভৃতে কাঁদে !"
৯। এখন যা পরিস্থিতি তাতে lockdown টাইপের ব্যবস্থা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই-- একথা অনস্বীকার্য । কিন্তু তা করতে গেলে emergency life line সচল রাখার ব্যাবস্থা আগে করতে হবে । বিশেষত মফস্বলের বা দূরবর্তী গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে -- তা না হলে সমূহ বিপদ !
১০। পরিসংখ্যান বলে ভারতের (এখন বেশিরভাগই বিদেশে )১৩৮ জন মানুষ (?) এই দেশের সিংহভাগ ধনদৌলত কুক্ষিগত করে রেখেছে, অথচ এই আপতকালে তারা সব চুপ ! কেউ বলছে না , " সব গরীব মানুষের ঘরে একটা sanitizer বা handwash পৌঁছে দি , বা নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস পৌঁছে দি ।" উল্টে এদের কেউ কেউ ঘাপটি মেরে বসে আছে সরকার ৪০০-৫০০ টাকার আমেরিকার FDA ( Food and Drug Administration ) দ্বারা স্বীকৃত সংস্থার বদলে গুজরাত বা অন্য কোনো রাজ্যের সংস্থাকে ৪০০০-৫০০০ টাকায় সেই একই test kit বানানোর বরাত দেবে ! কী নৃশংস এই বুর্জোয়া শ্রেণী ! প্রথমে Agro-industry সেজে ৪% হারে কৃষি লোন নিয়ে পালিয়ে গেছে ; অগনিত কৃষকদের আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে ! তারপর bad debt এর আছিলায় Yes bank এর লুটপাটের দায় SBI এর মাধ্যমে আমাদের ঘাড়ে ছাপিয়েছে । এখন এই সংঙ্কট কালে আবার অবৈধ এবং অমানবিক মুনাফার লোল জীভে লালা ঝরাচ্ছে ! ধিক্ ! শত ধিক্ !!
১১। সেদিন পাঁচটার সময় যারা তালি ও থালি বাজিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছিল , আজ তারাই ID hospital এ মুমূর্ষু রুগিদের পরিষেবা দেবার 'অপরাধে ' একজন নার্সের ফ্লাটে তালা মেরেছে বাড়িওয়ালা-- খোদ কলকাতার ঘটনা ! মুর্শিবাদেও একই ঘটনা ! একই ঘটনা আরো ঘটে চলেছে । সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই ঐক্য ভয়ের আর নোংরা রাজনৈতিক স্বার্থের ! যারা বাঁচাতে পারতেন তারা সবাই এখন " চাঁচা আপন বাঁচা" ! আর যত মহান দায় ডাক্তার আর স্বাস্থ্যকর্মীর !
চোখের সামনে দুনিয়াজোড়া ক্ষয়িষ্ণু এই পাজির পা ঝাঁড়া পুঁজির দুনিয়াতেই অবলীলায় টিকে রয়েছে ভিয়েতনাম, মাথা উঁচু করে আছে কিউবা । এইসব দেশ কীভাবে নিজেদের দেশ থেকে করোনা তাড়িয়েছে শুধু তাইই শিক্ষণীয় নয়, অন্য আক্রান্ত দেশকে কীভাবে সাহায্য করছে তাও শিক্ষণীয় ! আমি এই ফেব্রুয়ারি মাসেই নিজের চোখে দেখে এসেছি । শুধু সদিচ্ছা ! দেশ গড়ার কাজে সবাই হাত লাগানো ! দেশকে বুর্জোয়া রাষ্ট্র নয় নিজের দেশ হিসেবে গড়ে তোলা-- যার ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে জারিত হয়ে একজন মানুষ তার নিজস্বতা খুঁজে পায়, অনুভবে পায় জীবনের Ontology ! প্রতিবেশীকে , প্রতিটি দেশবাসীকে আপন ভাবে অমোঘ আদিম আকর্ষণে ! এমনকি যে আমেরিকা এত অত্যাচার করেছে ২১ বছর ধরে, বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও বেশি Vietnameese মেরেছে তাদেরকেও ক্ষমা ক'রে লজ্জা দিয়েছে ! এ দের মানুষ সবসময় অন্যের জন্য এগিয়ে আসে ! অন্যের মরণ-বাঁচনের কথা না ভেবে বাজারে গিয়ে আগেই অযথা নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জিনিস মজুত করে না !
ওরা ওইটুকু দেশ হয়ে পারে , আমরা বৃহত্তম গনতন্ত্র হয়ে পারিনা । আমরা একই দেশে হিন্দু -মুসলমান ,বেঙ্গলি- নন-বেঙ্গলি, সাউথ ইন্ডিয়ান -নর্থ ইন্ডিয়ান, চাড্ডি-গুজু-মেড়ো , বর্নহিন্দু-দলিত ...ইত্যাকার বিভাজনে দেশভক্তি খুঁজে ফিরি ! আর সেই অবসরে লুন্ঠিত হয়ে যায় আমার দেশ , ধর্ষিত হতে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সনাতনী জননী আমার !
ওরা পেরেছে , আমরা পারিনি, পারছি না ! কারণ হয়তো একটাই । ওরা লড়ে স্বধীনতা ছিনিয়েছে ; পরাজয়ে বাধ্য করেছে আমেরিকার মত gigantic military power কে , কুত্তার মতো দৌড় করিয়েছে ফ্রান্সের মত আধুনিক ইয়োরোপীয় শক্তিকে ! কীসের জোরে ওই কয়েক হাজার চাষি এত বড় বড় রক্তখেকো দানবকে নাঙ্গা করে দৌড় করাতে পেরেছে ? দার্শনিক নীটশের জবানীতে বললে বলতে হয় "will to power ."
এই সেকুলার COVID -19 ক্রান্তিকালে হয়তো এই বার্তাই বয়ে নিয়ে এসেছে ! ১৯৪৭ সালের মধ্যরাতে সেই দরবারী কানাড়া রাগের ঝালা টুকু হয়তো শুনিয়ে বলতে এসেছে , "তোমাদের শত শহীদের রক্তে রাঙা সেই বিপ্লব বেহাত হয়ে গিয়েছিল কিনা একবার দ্যাখো ! বাংলা-পাঞ্জাবের বুকের উপর দিয়ে বৃটিশ লম্পটেরা যে স্টিম রোলার চালিয়েছিল, তার স্টিয়ারিং কাদের হাতে ছিলো ? পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম দেশব্যাপী শ্রমিক-কৃষক- সাধারণ মানুষের রক্তক্ষয়ী বৈপ্লবিক আগ্নেয়গিরির অগ্নিউৎপাত কী ক'রে "Peaceful transfer of power " এ পর্যবসিত হয় ?" আন্তোনিও গ্রামসিকে বৃটিশরা নিয়ে এসেছিল এ দেশে । গ্রামসি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেছিলেন - " Silent Revolution !"--- ওনি আসলে "বেহাত বিপ্লব"ই বোঝাতে চেয়েছিলেন !
এতদিন দরবারী কানাড়ার এই ধ্বংসকে আমরা "কী অপরূপ এই ধ্বংস " বলে লালন করেছি ! আজ এই সন্ধিক্ষণে সেই হিসেবের শূন্য মিলিয়ে নেবার মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হয়েছে । সবকিছুই আমাদের উপর !
কেন কঠোরভাবে গৃহবন্দি থাকা প্রয়োজন :
১। করোনা অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং অতি দ্রুত ছড়ায় । একজন আক্রান্ত মানুষ যদি চায়ের দোকানে শুধু এককাপ চা খেয়ে, একটা হাঁচি দিয়ে পেপার প'ড়ে , দাড়ি কেটে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাড়ী ফেরেন , তাহলেই পাঁচ দিনেই একলক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে !
২। রোগের লক্ষণ প্রকটিত হয়নি এমন মানুষও রোগ ছড়াতে পারে ।
৩। এ রোগের আসলেই কোনো ওষুধ নেই । যেহেতু এই রোগ নেজেই সেরে যায় তাই ওষুধের কার্যকারিতা নিশ্চিত ভাবে যাচাই করা বেশ শক্ত । তবু অনেক option আছে -- কোনোটাই নিশ্চিত রুপে পরীক্ষিত সত্য নয় । বলা যায় না , তাও কিছু ওষুধকে promote করা হ'তে পারে -- হয়তো কোনো 'বন্ধু' ওষুধ কোম্পানিকে পাইয়ে দেয়ার জন্য ! কোনো প্রতিষেধকও নেই , এত তাড়াতাড়ি সম্ভবও নয় ; তারজন্য সাধারনত এক দেড় বছর অপেক্ষা করতে হয় । আসল চিকিৎসা হ'লো supportive -- যার উপর কে মরবে, কে বাঁচবে তাও নির্ভর করছে । আর supportive treatment এ ventilator সহ যা যা যন্ত্রপাতি লাগে তাতে সারা রাজ্যে ৫০০ জন রুগিরও চিকিৎসা করা যাবে না ! এর রোগের সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হলো Multi organ failure -- তাহলে হলে তো কথাই নেই ! dialysis , Critical Care Unit সহ অনেককিছুর প্রয়োজন । সেক্ষেত্রে খুব অল্প সংখ্যক রুগীকেই পরিষেবা দেয়া যাবে । সুতরাং রোগ যাতে মহামারির আকার ধারণ না করে সেটা দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই ! তাই বড় হাসপাতালগুলিকে এখনই COVID-19 HOSPITAL এ পরিনত করতে হবে । না হলে ইতালির চেয়ে ও বড় মাশুল গুনতে হতে পারে !
গভীর রাতে এ লেখা যখন লিখছি , আভাস পেলাম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে নাকি CORONA HOSPITAL এ রূপান্তরিত করা হচ্ছে । সত্যিই যদি হয়, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই , জানাই অজস্র ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা ।
৪। রোগের প্রকৃত তথ্য পাওয়া নাও যেতে পারে । সুতরাং সারা ভারতে ১০ জন মারা গেছে , আর ইতালিতে ৫৫০০ -- এই ধরনের তথ্যে আপ্লুত থাকলে তার ফল হবে মারাত্মক ! একটু আলোকপাত করি । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে (1920) আবির্ভূত স্প্যানিশ ফ্লু-র মহামারির ভয়াবহতার মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক কারণে তথ্য চেপে যাওয়া । ১৮২০ সালের কলেরা বরিশালে শুরু হয়ে সারা বিশ্ব ছেয়ে ফেলারও একটি কারন ইউরোপীয় অস্মিতা ও ঢিলেমি । ফ্রান্সের সদর্প ঘোষণা ছিলো, " ওসব তৃতীয় বিশ্বের নেটিভদের রোগ আমাদের মতো উন্নত দেশকে কিছুই করতে পারবে না !" ভগবান কানেই শুনলেন ! এক সপ্তাহের মধ্যে রাজপরিবারের ছ'জন আক্রান্ত!!
এসব না হয় বাদই দিলাম । কারণ ধরে নিলাম বাংলার রাজনীতি তেমন নোংরা নয় । তবুও সে সম্ভাবনা বিসর্জন দেয়া যাবেনা !
* প্রথমত, এ রোগের বৈশিষ্ট্যর মধ্যেই একটা ধোঁকাবাজি আছে ।
* দ্বিতীয়ত, এই দুর্ভাগা দেশের নাগরিক এই বিপদের সময়ও পাল্টায় না ! যারা বিদেশ থেকে এ রোগ আমদানি করেছেন তাদের Contact traceing/tracking করতে গিয়ে দেখা গেলো কিছু লোক ইচ্ছাকৃত ভুল ফোন নাম্বার অথবা/এবং ভুল ঠিকানা দিয়েছেন । যারা ফোন নাম্বার ঠিক দিয়েছেন তাদের অনেকেই, যখন স্বাস্থ্যকর্মীরা ফোন করছেন , তখন হয় ফোন ধরছেন না, নয় তো কেটে দিচ্ছেন ! আরো বৈচিত্রময় এই দেশ ! বিদেশ ফেরতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো পুরো পরিবার পালিয়েছে ! আপনি আমি যতই তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করি , ওনারা ততই নিজেরা সহ সবাইকে মারার চেষ্টা করে । কী অপূর্ব বিদেশ ফেরত সংস্কৃতি ! অবশ্য এখানে একটা foot note না দিলে হয়তো পক্ষপাত হতে পারে । সেটা হ'লো : এই quarantine অথবা isolation -- এই শব্দগুলো হয়তো খুব স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করার দরকার ছিলো । কারণ নিরীহ NRC এর সাপেক্ষে ১৯ লক্ষ মানুষের যে দুর্ভোগ দেশবাসী দেখেছে , হয়তো তার রেশ টেনেই সবাই ভাবছে QUARANTINE বা ISOLATION এর নামে আবার একটা CONCENTRATION CAMP এ ঢোকাবে । যদিও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে বলেছেন , তাও কেন মানুষের এমন বুদ্ধিভ্রম !
* তৃতীয়ত, যাতায়াতের পথে রোজ দেখছি পাড়ার চায়ের দোকানে , গলির মোড়ে মানুষ খুব casual আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছে ! কচি যুবকেরা বাইক নিয়ে অবলীলায় আছে ! স্কুল ছুটির বাচ্চারা campus এর মধ্যে জটলা করে খেলে যাচ্ছে নির্লিপ্ত ! আছে মর্নিং ওয়াকের আড্ডাও !
* আরেক কারণ তথ্যলুপ্তির শংঙ্কা । বৃটিশরা যতদিন শাসন করেছে তাতে ১৮৩২ সালের আইনানুযায়ী রাজদ্রোহিতার সাজা ছিলো সর্বোচ্চ দু'বছরের জেল -- Bailable ধারায় । তিলক, গান্ধী সহ অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীকেই এই ধারাতে ধরপাকড় ও বিচার হয়েছে, এবং সমালোচনাও হয়েছে । আজও সারা পৃথিবীতে Sedition বা রাজদ্রোহিতার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে এই ধারাই চালু । সরকারের সমালোচনা গনতান্ত্রিক দেশে নাগরিকের অধিকার বলেই স্বীকৃত (অবশ্যই কোনো মন্তব্যে দাঙ্গা ইত্যাদির প্ররোচনামূলক হওয়া চলবে না )। কিন্তু আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েই প্রথম কাজ করলো নিজের নাগরিকের মুখ বন্ধ করার জন্য ওই আইনকে "জামিন অযোগ্য যাবজ্জীবন কারাদন্ড"র কালা কানুনে পরিনত করলো । হায় রে আমাদের সাধের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা ! সুতরাং বুঝতেই পারছেন, এহেন স্বাধীনতায় হৃদয় খুঁড়ে কে আর বেদনা জাগাতে যাবে !
৫। এই রোগ ছড়াবার মূল মাধ্যম হাত । আর হাত কিভাবে আর কত অনায়াসে জীবানুলিপ্ত (contaminated) হতে পারে তা জ্ঞানী লোকও খুব গভীর ভাবে চিন্তা না করলে বুঝতে পারবেন না !
৬। যে রোগের নিশ্চিত চিকিৎসা নেই , supportive care সহজলভ্য নয়, সহজলভ্য নয় isolation এর স্থান, অথচ আলোর বেগে ছড়ায় -- সেখানে রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় এর সংক্রমণের শৃঙ্খল ছিন্ন করা । আর কোনোই উপায় নেই !
কী করবেন আর কী করবেন না :
১। যুক্তিতে থাকুন । তাহলে আতঙ্ক পালাবে । আপনি যদি কোনো রুগির সংস্পর্শে না আসেন , তাহলে রোগ হবার প্রশ্নই ওঠে না । আর তার গ্যারান্টি হলো আপনি কতো কঠোর ভাবে নিজেকে এবং পরিবারকে গৃহবন্দি রাখতে পারছেন ।
২। পরিবারের একজনই শুধু প্রয়োজনে বাইরে যাবেন । লম্বা হাতা জামা পরে । ঘরে ফিরে ঐ জামাকাপড় বাথরুমে (সম্ভব হলে গরম জলে ) ধুয়ে নিজে সাবান দিয়ে চান করুন । মোবাইল ও তার খাপ ( খাপ বাড়িতে রেখে গেলে ভালো ) স্পিরিট /spect cleanser দিয়ে মুছে নিন । ঘড়ি , বেল্ট,আংটি না পরাই উচিত হবে ।
৩। ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন । বারে বারে ধোবেন । হাত ধোবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি না জানা থাকলে video দেখে নিন । অসুবিধা হলে আছি ।
৪। চোখ, মুখ এবং নাক সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে কখোনো,স্পর্শ করবেন না ।
৫। দরজার ছিটকিনি, ড্রয়ারের knob -- এধরনের জিনিস বাম হাত দিয়ে ধরার অভ্যেস করুন । দেখা গেছে বা হাত সাধারণত মুখে চোখে দেয়া হয়না । (বাহাতিদের ক্ষেত্রে অবশ্য উল্টো নিয়ম ) ।
৫। সরকারি নির্দেশ ও নিয়ম মেনে চলুন । আশেপাশের মানুষ যাতে মানেন ,সেদিকে নজর রাখুন --- তা নাহলে Lock down ব্যর্থ হবে !
৬। আপনি বা অন্য কেউ শর্দি ,কাশি , জ্বর বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে অবশ্যই অবশ্যই মাস্ক পরবেন ।
ভ্রম নিরসন (Myth buster ) :
* কোনো টোটকা (home remedy )র উপর একদম ভরসা করবেন না -- তাহলে সর্বনাশ ! রশুন ইত্যাদি খাদ্য আপনি খেতেই পারেন । কিন্তু খবরদার ! ভুলেও ভাববেন না আপনি সুরক্ষিত!
* গরম পানীয়, gurgle -- এসব সম্বন্ধেও একই রায় ।
* গ্যালন গ্যালন মদ্যপান আপনাকে কোনোই সুরক্ষা দেবে না ।
উপসংহার:
বুঝতেই পারছেন , নিজেদের লড়াই নিজেদেরই লড়ে নিতে হবে । এই সেকুলার ভাইরাস আমাদের সভ্যতার মানদণ্ড ও মানব সমাজের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে , আমাদের বহু শতাব্দীর সুষুপ্তির ঘোরকে পরিনত করেছে দুঃস্বপ্নের গোলকধাঁধায় !
করোনা উত্থাপন করেছে অনেক জরুরি প্রশ্ন। প্রশ্নবিদ্ধ করেছে রেনেসাঁ-আলোকায়নের আধুনিকতার জৌলুশ আর তার পেটের ভিতরের নৃশংতাকে ! কাঁটাতারের সীমানাকে করেছে উপহাস । মেকি, কৃত্রিম ও নয়া উপনিবেশিক রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে ছুঁড়ে দিয়েছে সহাস্য চ্যালেঞ্জ । দেশে দেশে GDP র খেলো স্টাটিস্টিকস আর সীমানায় সেনা মোতায়েনের খেলাকে করেছে বেআব্রু । আমাদের চেতনায় হেনেছে আঘাত ।
গলা খুস্ খুস্ করছে এক ঝাঁক প্রশ্নের খোঁচায়-- কোনটা আমার দেশ , কী আমাদের অধিকার ? কী আমরা চাই -- নির্বোধ লোভ আর নির্বেদ ঐশ্বর্য্য , নাকি নির্মেদ জীবন আর অনর্থিক অর্থনীতির নাগপাশ থেকে সীমাহীন মুক্তি ?? জল, স্হল, বায়ু এবং মানবিকতার ও মানবিয়তার দূষণের ছাদ ফুটো করে করোনা দেখিয়েছে মানুষের আকাশ কেমন নীল ছিলো , নক্ষত্রপুঞ্জ আর চাঁদকে নিয়ে কেনো এত কবিতা লেখা হয়েছে !
ইতিহাসের পীঠে চেপে করোনা ভাইরাস পথ দেখাচ্ছে-- ভয়ের ঐক্য নয় , চাই ভালোবাসার জয় ; শুধু এবারের জয় নয় চাই চিরদিনের জয়-- পৃথিবীতে ভালোবাসা অমর হোক, মনুষত্ব হোক অক্ষয় !!
(অ নে ক দিন পর লিখলাম । আবেগের স্রোতে লেখাটি বড়ই হয়ে গেল ! )
২| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: প্রকৃতিকে তার আপন গতিতে চলতে দিতে হবে। প্রকৃতির প্রতিশোধেই করোনার আবির্ভাব এটা ধরে নিতে হবে। করোনার ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবেই নাকি সৃষ্টি হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: নবাবজাদী সাজগোজ করে প্রতিদিন যে পুথি পড়ে ,তাই আমরা সত্য জানছি না। দেশে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা বেশী । সবই পালন করছি।