নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেহরু ফাউন্ডেশনে প্রথম কয়েকটা দিন নিজেদের নতুন জীবনে ধাতস্থ হতেই কেটে গেল । নিজের ঘরে ফরাসি হিন্দি অভিধান হাতে নিয়ে বসে আমাকে নানান প্রশ্ন করত মাইক, সেইসঙ্গেই মার্ক টুলি-র লেখা একটা বই পড়ে চলত । বয়সের অনুপাতে যথেষ্ট পড়াশোনা ছিল মাইকের, নিজস্ব মতামত ছিল, আর ছিল তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণাত্মক মন । যে-কোনো বিষয় চট করে ধরে নিতে পারত । ফাউন্ডেশনে একটি ক্যান্টিন ছিল, সেখানে ২৫ টাকায় দুপুরের খাবার পাওয়া যেত । ক্যান্টিনের সামনে একটা ঘোরানো সিঁড়ি আর সংস্থার চত্বর, তার ওপারে একটা মনোরম বনভূমি । রোজ বিকেলে মাইক আর আমি ল্যাপটপ নিয়ে চত্বরে বসে খেতে খেতে কাজ করতাম । মাইক বলত, ‘তাহলে মৈথিলী, পরিকল্পনাটা কী ? কার সঙ্গে দেখা করব আমরা ? প্রতিবার একই উত্তর দিতাম, সময় হলেই জানতে পারবে?’
সন্ধের সময় মাইক আর আমি ক্যামেরা নিয়ে পুরনো শহরে ছবি তুলতে যেতাম । দু’জনেরই ফটোগ্রাফিতে আগ্রহ ছিল এবং দু’জনেরই এসএলআর ক্যামেরা ছিল । অবশ্য এর সঙ্গে আমাদের ফটোগ্রাফি ভালবাসার কোনো সম্পর্ক ছিল না । আসলে এটা ছিল এবং যদি কেউ আমাদের ওপর নজর রেখে থাকে তার কাছে নিজেদের কাজের প্রাপাণ্যতা প্রতিষ্ঠা করার একটা চেষ্টা । আমরা যদি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে যেতে চাই, তাহলে নিশ্চয়ই আমাদের কার্যকলাপ যাঁচাই করা হবে, বিশেষত যেখানে আমরা থাকছি সেই জায়গায় । আমেদাবাদে আমাদের একটা সামাজিক পরিমন্ডল দরকার ছিল, যা আমাদের বানানো পরিচিতির সাক্ষ্য দেবে ।
প্রখ্যাত শিল্পী এম.এফ.হুসেন প্রতিষ্ঠিত ‘আমদাবাদ নি গুফা’ নাম শিল্প-প্রদর্শশালাটি আমাদের প্রভুত সাহায্য করেছিল । প্রদর্শশালার পাশে একটা বিশাল পার্ক আর একটা ক্যাফে । যেখানে সারাক্ষণ তরুণদের, বিশেষত শিল্পী আর ফটোগ্রাফারদের ভিড় লেগেই আছে । কেউ গিটার বাজাচ্ছে, কেউ-বা নিজেদের কাজ সম্বন্ধে প্রচার করছে । এছাড়া হবু চিত্র পরিচালক, আলোকচিত্রী আর থিয়েটারের অভিনেতারাও থাকত । এখানে সন্ধে কাটানোর সময় মৈথিলী হিসেবে নিজের জীবনটাকে চুটিয়ে উপভোগ করতাম আমি, মাইক-ও খুব উপভোগ করত ।
ওল্ড গুজরাতের লাল দরওয়াজা জায়গাটা খুব পছন্দ করত মাইক । প্রতি বৃহস্পতিবার সেখানে একটা খোলা বাজার বসত । আর ছিল ঘুড়িনির্মাতা ও কুমোররা । দারুণ কিছু ছবি তুলে সন্ধের সময় ফিরে এসে নিজের একান্ত প্রিয় প্রশ্নটা করত মাইক, ‘আজ রাতে কোথায় যাব আমরা ?’ খেতে খুব ভালবাসত ও, আর তার জন্য গুজরাত হচ্ছে একেবারে আদর্শ জায়গা ।
এরই মধ্যে জনৈক অ্যাকটিভিস্ট বন্ধুর পাঠানো ই-মেল মারফত সাহায্য এসে পৌঁছল ।অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা খুবই দরকার ছিল আমার । তালিকায় প্রথম নাম ছিল জি.এল.সিংঘল-এর, যিনি তখন গুজরাতের এটিএস-এ ছিলেন, কার্যত তার প্রধানই ছিলেন । ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষে ইশরাত জাহানের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চলছিল । আমার অফিসার বন্ধুবান্ধব ও অন্য সাংবাদিকদরে থেকে জেনেছিলাম, তিনি নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছেন, মাত্র কয়েকজন বন্ধু আছে এবং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখতে চান না । শুনেছিলাম প্রায় সবাইকেই তিনি সন্দেহ করেন । তাহলে কীভাবে পৌঁছনো যাবে তাঁর কাছে ? (ক্রমশঃ)
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৩
গায়েন রইসউদ্দিন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় রাজীব নুর ভাই, আপনার দেওয়া একটু 'ভালো' আমার কাছে অনেক ভালো ! শুভেচ্ছা নিরন্তর !!
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।