নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেখুন তো, আপনার জানা প্রায় সবগুলো গালিই নারীকে হেয় করার জন্য কী-না?

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৭

বছর দুয়েক আগে একটা প্রশিক্ষণে গেছিলাম। জেন্ডার প্রশিক্ষণ! এক পর্যায়ে গ্রুপ ওয়ার্ক করতে দিল। যার স্টকে যত গালি আছে হাতে দেয়া কাগজে লিখবে। অনুমিতভাবেই আমার লিস্টটা বেশ লম্বাই ছিল। দেখা গেল, কাগজে লেখা প্রায় সব গালিই নারী কেন্দ্রিক। প্রায় প্রতিটা গালিই কোনো না কোনভাবে নারীকে হেয় করার জন্যে....

বলা হয়, নারীর প্রধান শত্রু পুরুষতন্ত্র, মৌলবাদ, পুঁজিবাদ আর নারীর অজ্ঞতা। পুরুষতন্ত্রের ধারক পুরুষ, মৌলবাদের গুরু পুরুষ, সারা দুনিয়ার পুঁজিবাদের আঁতুড়ঘর বিজ্ঞাপনের জন্মদাতাও পুরুষ। যেখানে নারী দারুন মোড়কে সুদৃশ্য পণ্য! পুরুষতন্ত্রের সর্বত্র জুড়ে রয়েছে নারীকে ছোট বা হেয় করার নিদারূণ প্রবণতা।

বিখ্যাতরাও নারীকে ছোট করে দেখেছেন। নারীকে নিয়ে কৌতুক করেছেন, নারীর মর্যাদাকে খাটো করে দেখেছেন। এমন সব কৌতুক, যেখানে কোনো না কোনভাবে নারী আছে, দেখা গেছে সেখানে নারীকে হেয় করার প্রবণতাই মূল উদ্দেশ্য! এসবের পেছনে কাজ করেছিল হয়তো সে সময়ের সমাজ বাস্তবতা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। কিন্তু এ ‘সময়েও’ যখন রাস্ট্রের কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর সেই কাজটিই করতে থাকে? তার দায় কার? যেখানে আবার নারী সর্বত্র অধিষ্ঠিত?

এ বছরের গোড়ার দিকে ঢাকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় এই প্রসঙ্গটা অনেক বড় করে এসেছিলো।

বিভিন্ন প্রার্থীদেরকে বরাদ্দ দেয়া প্রতীকগুলো খোঁজখবর করে দেখা গেল, নারীদের জন্য প্রস্তাবিত প্রতীকগুলোর মধ্যে রেয়েছে কেটলি, গ্লাস, পানপাতা, বৈয়াম, মোড়া, টিস্যু বক্স, মূলা, শিল পাটা, ঝুনঝুুনি, দোলনা, প্রেসার কুকার, ভ্যানিটি ব্যাগ, বাঁশি, ফ্রাই প্যানের মতো সামগ্রী। যার প্রায় সবই দৈনন্দিন গৃহকাজে ব্যবহুত সামগ্রী, অথবা রান্নার সাথে সম্পর্কিত। অন্যদিকে পুরুষ প্রার্থীদের বরাদ্দ দেয়া প্রতীকগুলো সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম! হাতি, ঘোড়া, চিতাবাঘ, ঘড়ি, ক্রিকেট ব্যাট, টেলিস্কোপ, ল্যাপটপ, ডিস এন্টেনা, জাহাজ, রেডিও, ইত্যাদি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেগুলোকে আপাত: শৌর্য, বীরের চিহ্ন হিসেবে আমরা জেনে এসেছি।

গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হলে নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল যে ‘ভবিষ্যতে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।’ অথচ একই কাজ নির্বাচন কমিশন আবারও করল। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে ২ হাজার ৬৬৮ জন নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রতীক হিসেবে তাদেরকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, চুড়ি, ভ্যানিটি ব্যাগ, পুতুল, চকলেট, কাঁচি, মৌমাছি, ফ্রক, আঙুর, গ্যাসের চুলা ও হারমোনিয়ামের মতো প্রতীক। বিবেচনা যে করেছে তা অবশ্য বুঝা গেল!

এর পরও কী আমরা বলবো, এই নির্বাচন কমিশন সনাতন ধ্যান-ধারণার আর নারী বিদ্বেষী নয়!

কেউ অবশ্য কিছু বলছেনা। কানে আসার মতো করেতো বলছেই না। কারণ অবশ্য জানা। নারীর উন্নয়ন বিষয়ক প্রকল্পের বেশ সংকট চলছে এখন!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.