নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত ২/৩ দিনে ফেসবুক খুললে একটা ছবি চোখে পড়বেই।
কুমিল্লায় ধর্ষিত মেয়েটার ছবি।ছবির সঙ্গে নানা রকমের প্রতিবাদি খবর, বক্তব্য! আমার ছোট ভাই দেখলাম বিরাট এক কবিতা পোস্ট করেছে, সে কবিতায় মেয়েটার অসহায় বাবা-মা’র কাছে ক্ষমা-টমা চাওয়ার প্যাঁচপ্যাঁচানি। ফেসবুকের আরেক ফ্রেন্ড রীতিমত প্রধানমন্ত্রীর ’নারীত্ব’ নিয়ে টান দিয়েছেন। মূল বক্তব্য হলো, একজন নারী হিসাবে তারও উচিত আরেক নারীর অপদস্তের বিচার করা! তার মানে নানা রকমের প্রতিবাদ হচ্ছে। এসবই ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমের উপকারিতা!
এর সঙ্গে আরো যা চোখে পড়েছে তার একটা তালিকা দিতে চাই।
ধর্ষিতা মেয়েটার নানা রকমের, নানা সময়ের ছবি। ধারণা করা যায়, এসব ছবি হয়তো তার ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকে সংগৃহীত। খবরটাকে আরো রসালো (!) করার জন্য অন্য কোন ঘটনার, অন্য কোন নারীর বুক উপরের অংশ খোলা, বিকৃত ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে! অথচ কারা ধর্ষণ করেছে, তারপর কারা তাকে হত্যা করেছে তাদের নাম-ধাম- হদিস অজানা! প্রশ্ন হলো, মেয়েটার নানা এ্যা্ঙ্গেলের ছবি, তার নাম, সঙ্গে আরো বিকৃত ছবি জুড়ে না দিলে কী প্রতিবাদটা ঠিক করা যায়না?
ভারতের দিল্লীর বাসে ধর্ষণের ঘটনার বহু দিনের পরেও কিন্তু মেয়েটির নাম প্রকাশ করা হয়নি। ‘নির্ভয়া’ নামে একটা ছদ্ম নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এর কারণও আছে। এটা ঠিক যে, এরকম ঘটনার পর ঘটনার শিকার যিনি হন, তার সঙ্গে সঙ্গে গোটা পরিবারটাই অসহায় হয়ে পড়ে। আমি এখন ভাবছি কুমিল্লায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটার পরিবারের কথা! কী অসহায় দিনই না তারা কাটাচ্ছেন!!!
দ্বিতীয় বিষয়টা হলো, মেয়েটার পোষাক-আশাক! তিনি স্কার্ফ পরতেন। সেখানেও আমাদের আক্ষেপ! এরকম একটা স্কার্ফ পরা ভদ্র মেয়েকে ওরা পারলো ধর্ষণ করতে? ঘটনাটা দেখে এমন মনে হচ্ছে যে, স্কার্ফ না পরা মেয়েদেরকে ধর্ষণ করলে কোন আপত্তি নেই!
আরো খবর, মেয়েটি নাট্যকর্মী ছিলেন, টিউশনি করতেন! মনে হলো, ভাগ্যিস তিনি মাথায় স্কার্ফটা পরতেন, তা না হলে আমরা বলতাম, ও আচ্ছা! নাটকের মেয়ে তো? ঠিকই হয়েছে! নিশ্চয়ই টো টো করে ঘুরে বেড়াতো? উচিত শাস্তি পেয়েছে!
ভারত-বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে নারী নির্যাতনের একটা বড় কারণ হিসাবে আমরা নারীর পোষাককে নিদ্বিধায় দায়ী করি! কুমিল্লার মেয়েটি ধর্ষিতা হয়ে প্রমাণ করে গেলেন, পোষাক নয়, এ অঞ্চলে সব নারীকে পুরুষ ভোগের বস্তু হিসাবেই দেখে! বাকিটা শুধু সুযোগের অপেক্ষা! আর হিন্দু কিংবা অন্য ধর্মের হলেতো কোন কথাই নেই। গনিমতের মাল! সেসব ক্ষেত্রে আমরা কোন কথাই বলবোনা।
তান্ত্রিকদের ভন্ডামি নিয়ে একটা গল্প দেখছিলাম। শেষটা এরকম যে, একটা ছোট্ট দীর্ষশ্বাস! কবে এসব অন্ধ বিশ্বাস থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে? কুমিল্লার ধর্ষিত মেয়েটার ক্ষেত্রেও তাই! একটা বড়সড় দীর্ঘনিশ্বাস! নারী-পুরুষ প্রভেদ নয়! মানুষ হবো কবে?
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:২০
বিজন রয় বলেছেন: নারীরাও মানুষ বরং পরুষরা অমানুষ।