নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ফেসবুকই তো নীল তিমি! এই নীল তোমার অাত্মা খেয়ে ফেলে\'

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৫

গত বছর ম্যানিলায় গেছিলাম একটা ওয়ার্কশপে! ওয়ার্কশপের ফ্যসিলিটেটর জিজ্ঞেস করলো, ‘কার প্রিয় খেলা কোনটা এবং কেন’? আমি বললাম, ‘বৃষ্টির দিনের ফুটবল’!

সে আমার দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকাইয়া থাকলো, তার মানে বৃষ্টির দিনের ফুটবল জিনিসটার মানে কী?

আমি তারে মোটামুটি ভাঙ্গা ইংরেজিতে রসকষ মিশাইয়া যেটা বললাম, তার অর্থ হলো, ‘বর্ষাকাল আসলে আমাদের দেশের একদল পোলাপাইন প্রায় পাগল হয়ে যায়। এরা সকাল নাই, বিকেল নাই, একটা ফুটবল নিয়ে কাদামাখা, হাুঁটুসমান পানিতে নেমে পড়ে। এরপর শুরু হয় সেই বলের পিছনে দৌড়ঝাপ! কিছুক্ষণ পর বুঝা যায় না, কে আসলে কোন দলে। দেখা যায়, সবাই বলের পেছনে দৌড়াচ্ছে! কাদায় মাখামাখি হয়ে এমন অবস্থা হয় যে, কিছুক্ষণ পর আর কারো চেহারা দেখা যায় না। বৃষ্টি যত বাড়ে, খেলা তত জমে উঠে!’

একটু প্রত্যন্ত গ্রামের দিকে গেলে আরো চমৎকার দৃশ্য দেখা যায়! সেখানে যেহেতু ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ফুটবল কেনার টাকা নাই, এরা কারো গাছ থেকে একটা জাম্বুরা চুরি করে সেই জাম্বুরার পেছনে দৌড়ঝাপ শুরু করে। যারা জাম্বুরা চুরি করতে পারে না, বা পাওয়া যায় না, তারা নিজেদের গায়ের জামা-কাপড় অথবা পুরনো কাপড়কে পুটলি বানিয়ে ওইটাই লাইত্থা লাইত্থি করতে থাকে... ’

ফ্যাসিলিটেটর আমার কথা শুনে এমনভাবে কিছুক্ষণ তাকাইয়া থাকলো যে, মনে হয় আমি তারে বিরাট গুল মারতেছি।

শুধু কি ফুটবল? ক্রিকেট, হাডুডু, কানামাছি, দাড়িয়াবান্ধা, বৌ-জামাই - কত কীই না খেলেছি আমরা! দাড়িয়াবান্ধা খেলায় নিজের গা বাঁচিয়ে একের পর এক কোর্ট পার হওয়ার যে কসরত - সেটা যারা খেলেনি তারা কি করে বুঝবে?

একটু বড় হওয়ার পর তাস খেলা শুরু করলাম! সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার মাঝখানে তিন দিনের ব্রেক থাকতো। আমরা প্রথম দুই দিন ‘আন্তরুম তাস খেলা প্রতিযোগিতা’র আয়োজন করতাম! দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টাও সেই খেলা চলেছে কখনো কখনো! বিকেল ৫টার দিকে খেলতে বসে পরের দিন সকালে খেলা শেষ করে নাস্তা করেছি, এমন ঘটনাও আছে। তাস খেলায় চুরি করাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছিলাম আমরা...


আমার এক সহপাঠি খুব ভাল বাস্কেটবল খেলতো! ও যখন বল ড্রিবলিং করতে করতে সামনের দিকে দৌড় দিতো, ও গালের দু পাশ বেয়ে যখন প্রবলভাবে ঘাম পড়তো, আর সেটা দেখে মেয়েরা যেভাবে সিটি বাজাতো...অাহা...

অাজকাল আর এসব খেলা খেলতে কাউকে দেখি না। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে ফুটবল খেলার দৃশ্য দেখি নি মনে হয় এক যুগ হয়ে গেল...আমাদের সময়ের প্রতিটা খেলায় স্পর্শের স্পন্দন ছিল, ছিল অদ্ভুত রকমের সব অনুভূতি....

তবে দেশে নানা ধরনের খেলার নাকি চল হইছে! সে সব খেলা নাকি ইন্টারনেটে খেলতে হয়...সোশ্যাল মিডিয়া হলো যার প্রধান উৎস, যে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের হৃৎপিন্ডটা খেয়ে দিচ্ছে, সঙ্গে আমাদেরও!

আহারে শৈশব! আহারে খেলাধুলা...
আচ্ছা, আপনারা কে কি খেলেছেন ছোটবেলায়? কার প্রিয় খেলা কোনটা?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফার্মের মুরগী খেয়ে নতুন জেনারেশন মুর্গীর মতো বড় হচ্ছে

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১২

মানিজার বলেছেন: দাঁড়িয়াবান্দা আমার পিয়া খেলা ।

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯

মলাসইলমুইনা বলেছেন: একদিন এরকম মুসল ধারায় বৃষ্টির দিনে মাঠ কাদায় মাখামাখি | আমরা খেলে চলেছি | কোথায় মেসি, কোথায় নেইমার !! এই এতো কাদা মাঠে ওরা খেলতেই পারবে না | আমাদের এক বারের নীচে গোলকিপার তৌহিদকে আর কেউ চিনতে পারছে না ! সারা গায়ে কাদা লেগে দেখাচ্চে মূর্তির মতো | বল বারের দিকে গেলেই দেখা যাচ্ছে মূর্তিটা নড়াচড়া করছে ! রাস্তা দিয়ে মানুষ যেতে যেতে থমকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ! আহা আমাদের সব পেয়েছির দিনগুলো ! চলুন কোনো একদিন ঝুম ঝুম বৃষিটর দিনে আকাশের দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে নেমে পড়ি ফুটবল খেলতে ? ওহ সেই মাঠটা কি ঢাকা শহরে আর অবশিষ্ট আছে ? নাকি এখন সেখানে শুধু বহুতল বিল্ডিঙের সারি ? ধন্যবাদ লেখাটার জন্য |

৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪৫

এম আর তালুকদার বলেছেন: আপনাকে অভিশাপ দেব কিনা ভাবতেছি, একেবারে ছেলেবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে কাঁদা মাখিয়ে দিলেন। অসাধারন লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.