![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বড় অস্থির সময়। কেমন যেন সব কিছু থমথমে লাগছে। কি হবে, কি হবে শুধু সেই চিন্তা, সেই আওয়াজ চারিদিকে।
ঘরে দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে মা-বাবা। ছেলেটা বাইরে গেছে, না জানি কখন কি বিপদে পড়ে। দুশ্চিন্তায় মার হাত থেকে কাচের গ্লাস টা পড়তে পড়তেও থেকে যায়। আরো বেড়ে যায় সন্তানের অমঙ্গল আশঙ্কা। ভয়ে দূরুদুরু করে বুক। মা যেমন ভয় পায় সন্তান কে নিয়ে, সন্তানেরও ভয় হয়, বাড়ি ফিরে মা কে সুস্থ দেখবে কি না!
বড় অস্থির সময়। স্বামীকে অফিসে রওনা করিয়ে দিয়ে টুকটাক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইরা। নতুন সংসার ওদের। তিমনের সাথে বিয়ের তিন মাসও হয়নি । কত গল্প, কত কাজ, কত কেনাকাটা। ঘরের কাজ আর ফাকে ফাকে স্বপ্ন বোনা এ ভাবেই কেটে যাচ্ছে। তিমন অফিসে চলে গেলে আর ভালো লাগেনা কিছু, সময় কাটতে চায় না। আর ফিরতে ফিরতে তো সেই রাত ৯ টা। হরতাল বা রাজনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকলে অফিস তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যায়। তাই ইরার কাছে হরতাল বেশ প্রিয়! তবে খুব ভয় ভয় লাগে তিমনের বাড়ি থেকে অফিসে আর অফিস থেকে বাড়ি এই সময় টুকু। ইরার সারাদিনের ভালো লাগা কিছু মুহুর্তের একটা হচ্ছে অফিস থেকে বের হয়ে তিমন যখন ফোন করে বাড়ি ফেরার কথা জানায়। এরপর বাড়ি ফেরা পর্যন্ত প্রায় ১ ঘন্টা, বিয়ের আগের সেই অপেক্ষার মুহুর্তগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ভাত ঘুম, বেশ অনেকটা সময় কেটে যায়। তবে আজকে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে খুব অস্থির লাগছে ইরার। খুব বাজে একটা স্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙ্গেছে। ঘুম থেকে উঠেই ফোনে কথা হয়েছে ও’র সাথে। বলেছে আজ তাড়াতাড়িই ফিরবে, খুব বেশি হলে ৭টা বাজবে। তারপরও কেন জানি কিছু ভালো লাগছে না।
একটা চিরুনী নিয়ে চুল আচড়াতে বসেছে ইরা। হালকা সাজগোজ করবে। আর একটু পরেই ও চলে আসবে। হঠাৎ টেলিফোনের ক্রিং ক্রিং শব্দ কেমন যেন অশুভ ভাবে কানে এসে লাগে। ইরার হাত থেকে ছিটকে যায় চিরুনী। মায়ের ঘর থেকে গ্লাস ভাঙ্গার শব্দটাও আসে একই সাথে। ঢং ঢং শব্দে পুরানো আমলের ঘড়িটা ৭ টা বাজার সংকেত দিতে সুর মেলায়। তারপর অস্থির ভাবে বাজতে থাকে আরো কিছুক্ষন। বড় অস্থির সময়, বড় অস্থির সময়।
©somewhere in net ltd.