![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .
ছয় মাস ধরে একটা মেয়ের সাথে মিতালি করছি, পত্রমিতালি। মেয়েটার নাম গোধূলি। আমি আদর করে বলি-ধুলি। ধুলি আমার একলা ধুলি। সে আমাকে আদর করে বলে-সখা। চিঠির শেষে কবিতা লেখে, “ধরণীর যেথা যাও তুমি সখা / তব চরণ যাবে ধুলি চুমিয়া।”
বাহ ! বাহ ! আমি অভিভূত, কবিতা পড়ে অভিভূত। ততক্ষণাৎ তাকে ভালবেসে ফেলি, আজ তারই সাথে দেখা করতে যাচ্ছি, এটা আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ। তাই কিছুটা রোমাঞ্চিত। এই রোমাঞ্চের জন্য এতক্ষণ বুঝতে পারিনি, আমি জ্যামে আটকে আছি। এদিক ওদিক তাকাই গাড়ি আর গাড়ি। এটা আমার কাছে বরাবরই একটা রহস্য - যখন রিকশায় বসে থাকি, তখন মনে হয় এই গাড়িগুলিই জ্যাম বাঁধায়। বেশির ভাগ সময় গাড়িতে দু’জন মাত্র লোক থাকে, ড্রাইভার আর মালিক। এই দু’জন এত বড় গাড়ি দিয়ে রাস্তার কতটা দখল করে রাখে ? আশ্চর্য্য ! পকেটে দুইটা টাকা হলেই গাড়ি কিনে ফেলে, বুঝতে চায় না এই গাড়ি জন্যই জ্যাম লাগে। ইচ্ছে করে গাড়িগুলো সব বুড়িগঙ্গায় নিয়ে চুবাই।
আবার যখন গাড়িতে থাকি তখন মনে হয়, এই রিকশা ড্রাইভারগুলোই সব নষ্টের গোড়া, গ্রাম থেকে পকেটে দুইটা টাকা নিয়ে শহরে এসে রিকশার ড্রাইভার হয়ে যায়, রাস্তার আইন-কানুন কিছুই জানে না। রিকশাগুলোর নাট্-বল্টু খুলে যদি ভাঙানির দোকানে বিক্রি করতে পারতাম ? আত্মতৃপ্তি পেতাম, সমাজের জন্য কিছু করতে পারবার তৃপ্তি।
আবার যখন রাস্তার পাশে কোনো বহুতল ভবনের উপর থেকে নিচে তাকাই, দেখি এতটুকু সরু রাস্তা দিয়ে রিকশা, গাড়ি, হোন্ডা, সিএনজি পরষ্পরের সাথে ঠুকাঠুকি না খেয়ে নিজেদের ইচ্ছে মত বেপরোয়া ভাবে চলছে, তখন মনে হয় বিধাতার খাস রহমত ছাড়া এটা সম্ভব নয়, প্রতি মুহূর্তে প্রতিটা বাহনইতো দূর্ঘটনা করবার কথা। শুধু বিধাতার কৃপায় হয় না।
কতক্ষণ রিকশায় বসে আছি বলতে পারব না। জ্যাম ছাড়বার কোন লক্ষণ নেই। অগত্যা ভাড়া দিয়ে নেমে গাড়ি-রিকশার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে এগোই, হঠাৎ ট্রাফিক আইল্যান্ডে দেখি আমাদের পাড়ার আইনের ভাই ( ট্রাফিক পুলিশ)। আইনের ভাই গভীর মনোযোগ দিয়ে কিছু ভাবছে। সবাই বলে, এই আইনের ভাইয়ের দার্শনিক হওয়ার কথা ছিল, গ্রহ নক্ষত্রের ফেরে নাকি হতে পারেন নাই। তাতে কী, উনি কথাবার্তা সব দার্শনিক ভাব-গাম্ভীর্য সাথেই বলেন। সেদিন জিজ্ঞাসা করি,‘ভাই আপনারা শুধু শুধু গাড়ি আটকান কেন ?’
আইনের ভাই কিছুক্ষণ হতাশ চোখে (যেন আমি তাঁর কোনো গাধা মার্কা ছাত্র) আমাকে দেখে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন,‘আকাশে যত তারা, ট্রাফিক আইনে তত ধারা। চালকের উত্তেজিৎ বা চঞ্চল চাহনিই গাড়ি আটকের জন্য যথেষ্ট।’
আজ তার কাছে গিয়ে বলি,‘দেখেন কী ! জ্যাম ছাড়ান না কেন ?’
আইনের ভাই তার ভাব-গাম্ভীর্য নিয়ে বলে,‘দেখি না, ভাবতাছি জ্যামটা লাগল কোন পথে? ( অসমাপ্ত )
©somewhere in net ltd.