![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .
২০১১ সালে মাশরুম উন্নয়ন ও সমপ্রসারণ কেন্দ্র, সাভারের জন্য ২৯ পর্বের ডকুমেন্ট্রি করেছিলাম। অনুষ্থানটি কয়েকটি চ্যানেলে প্রচার হয়েছিল। ডকুমেন্ট্রিটা লেখতে গিয়ে মাশরুম সম্পর্কে কিছু বিষ্ময়কর তথ্য জেনেছি, তাই সবার সাথে শেয়ার করছি।
প্রায় ৩০০০ বছর ধরে মাশরুমকে সুস্বাধু খাদ্য হিসাবে মানুষ গ্রহণ করে আসছে। প্রাচীন ফারাও সম্রাটরা মাশরুমকে দেবতার খাবার হিসাবে মনে করত। গ্রীকরা মনে করত, মাশরুম লড়াই জয়লাভের প্রয়োজনীয় শৌর্যবীর্য যোগাতে পারে। চাইনিজরা অমরত্বের জন্য মাশরুম খেতো। আর আমাদের পবিত্র হাদিস শরীফে মাশরুমকে বেহেসতী খাবার মান্নার সাথে তুলনা করা হয়েছে। সহীহ বুখারী শরীফের হিসাবে আমাদের নবী করিম (সঃ) বলেছেন, “আল কামাতু মিনাল ওয়া মাহা সাফা আল আইন” অর্থাৎ মাশরুম এক শ্রেণীর মান্না এবং এর রস চোখের জন্য ঔষুধ বিশেষ।”
*মাশরুমে প্রচুর পরিমানে সালফার সরবরাহকারী এমাইনো এসিড আছে, এটি চুল পড়া ও চুল পাকা প্রতিরোধ করে।
*মাশরুমের ইলুডিন এম এবং ইলুডিন এস নামক উপাদান আমাশয়ের উপকারী।
*মাশরুমের এনজাইম হজমে সহায়ক, রুচি বর্ধক এবং পেটের পীড়া নিরাময়ক।
*মাশরুমের গ্লাইকোজেন উপাদান আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে, যৌবন ধরে রাখে।
*মাশরুমের ফলিক এসিড ও লৌহ রক্ত শূণ্যতা দূর করতে সহায়ক।
*মাশরুমে চর্বি ও শর্করা কম থাকায় এবং আঁশ বেশি থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার।
*মাশরুমে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি আছে, যা দাঁত ও হাড় গঠনে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে বাড়ন্ত শিশুদের।
*মাশরুমে নিউক্লিক এসিড এবং এন্টি-এলার্জেন নামক দুটা উপাদান আছে ? যা কিডনী রোগ প্রতিরোধ করে, সাথে নানান রকম এলার্জিও প্রতিরোধ করে।
*মাশরুমে বি-ডি গ্লুকেন, ল্যাম্পট্রোল, টারপিনওয়েড ও বেনজোপাইরিন নামক কিছু উপাদান আছে, যা ক্যান্সর ও টিউমার প্রতিরোধ করে।
*মাশরুম জন্ডিস রোগের প্রতিষেধক।
*মাশরুম আমাদের ইমুন সিস্টেম উন্নত করে, লিভার কার্যক্রম সঠিক রাখে এবং ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করে।
*মাশরুম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ইনসুলিন নিঃসরন তরান্বিত করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
*ফুসফুসের ইনফেকশন নির্মূল করে এবং শরীরের অবসন্নতা দূর করে।
এবার কয়েকটি সহজ রেসেপি জানাই
চিংড়ি মশিরুম
উপকরণ পরিমাণ : মাশরুম ২০০ গ্রাম, চিংড়ি মাছ ১০০ গ্রাম, পেয়াজ কুচি ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ৪ টা , তেল পরিমাণ মত , লবন পরিমাণমত ।
প্রণালী : ১/ প্রথমে চিংড়ি মাছ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। তারপর মাশরুম ধুয়ে ছিঁড়ে পাত্রে রেখে দিন। ২/ অন্য একটি পাত্রে গরম তেলে পেয়াজ কুচি ছেড়ে নেড়ে লাল করে তাতে চিংড়ি মাছগুলো ছেড়ে দিন। ৩/ চিংড়ি মাছ সিদ্ধ হয়ে গেলে মাশরুম দিয়ে পরিমাণ মত লবন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। ৪/ পানি কমে গেলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুক মজাদার পুষ্টিকর চিংড়ি মাশরুম।
মাশরুম রোল
উপকরণ পরিমাণ : তাজা অথবা শুকনা মাশরুম কুচি ২০০ গ্রাম, পাতলা রুটি ১০ টি, গাজর কুচি ১ কাপ , বরবটি কুচি ১ কাপ, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস পরিমাণ মত, তেল পরিমাণ মত, লবন পরিমাণম।
প্রণালী : ১/ প্রথমে মাশরুম সহ অন্যান্য সব সবজি গরম পানিতে ৫ থেকে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে নিন। ২/ এবার অন্যপাত্রে সিদ্ধ করা এসব সবজি সামন্য তেলে সয়াসস ও লবন দিয়ে ভেজে নিন। ৩/ এবার পূর্বে তৈরি করা রুটির মধ্যে ভাজা সবজি দিয়ে রোল বানিয়ে ডুবা তেলে ভেজে নামিয়ে ফেলুন। ৪/ তারপর টমেটো সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
মাশরুম ফ্রাই
উপকরণ পরিমাণ : তাজা মাশরুম ২০০ গ্রাম, বেসন আধা কাপ, টাউলের গুঁড়া বা সুজি ১/৪ কাপ, মরিচের গুঁড়া ১ চা চামচ , আদা বাটা ১/৪ টেবিল চামচ, লবন ১/৪ চা চামচ,
তেল ১ কাপ।
প্রণালী: ১/ প্রথমে বেসন, চাউলের গুঁড়া, লবন মরিচের গুঁড়া ও আদা বাটা মিশিয়ে পানি দিয়ে পাতলা মিশ্রণ বানাবেন। ২/ তারপর তাজা মাশরুম ধুয়ে বা তুলে দিয়ে পরিষ্কার করের সেই মিশ্রণে চুবিয়ে ডুবা তেলে মচমচ করে ভাজুন। ৩/ মাশরুমের উভয় পিঠ লালচে বাদামী রং হলে তুলে ফেলুন। ৪/ তারপর এই মাশরুম ফ্রাই সস বা চাটনি সহকারে পরিবেশন করুন।
মাশরুম ফিসকারী
উপকরণ পরিমাণ : মাশরুম ২০০ গ্রাম
বড় মাছ ৭-৮ পিস
পেয়াজ কুচি ২ কাপ
আদা বাটা ১ চা চামচ
জিরা বাটা ১ চা চামচ
রসুন বাটা ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়া ২ চা চামচ
মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ
কাঁচা মরিচ ৪ টা
তেল পরিমাণ মত
লবন পরিমাণমত
প্রণালী
১/ প্রথমে মাছ ধুয়ে হালকা রবন ও হলুদ দিয়ে মেখে রাখতে হবে। এবং মাশরুম ধুয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে রাখতে হবে।
২/ কড়াইতে গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি নেড়ে লাল বর্ণ করতে হবে, তখন মাশরুমগুলো ছেড়ে দিতে হবে। সাথে অন্যান্য মশলা দিয়ে কষাতে হবে।
৩/ তারপর কষানো মশলাতে মাছ ছেড়ে পরিমান মত লবন ও আস্ত কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। মাছ ভাঙে না এমন ভাবে হালকা করে নাড়তে হবে।
৪/ তারপর পানি কমে গেলে ভুণা অবস্থায় নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার মাশরুম ফিস কারী।
মাশরুম পাকোড়া
উপকরণ পরিমাণ
মাশরুম ২০০ গ্রাম
আলু ২-৩ টি
গাজর কুচি ১ কাপ
বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ
বেসন ২৫০ গ্রাম
কাঁচা মরিচ ৪টা
পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ
আদা বাটা ১ চা চামচ
জিরা বাটা ১ চা চামচ
টোস্ট বিস্কুট গুঁড়া ১ কাপ
তেল পরিমাণ মত
লবন পরিমাণমত
প্রণালী
১/ প্রথমে আলু সিদ্ধ করে ভর্তা করে নিতে হবে।
২/ মাশরুম বাঁধাকপি, গাজর কেটে লবন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে অল্প পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
৩/ তারপরা আলু ভর্তার সাথে সিদ্ধ সবজি মিশিয়ে পাকোড়া বানাতে হবে।
৪/ অন্য একটি পাত্রে অল্প লবন দিয়ে বেসনের মিশ্রণ বানাতে হবে।
৫/ তারপর তৈরিকৃত পাকোড়া বেসন মিশ্রনে ডুবিয়ে বিস্কিচের গুঁড়া মিশিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে।
৬/ সব শেষে পরিবেশন করুন গরম গরম মজাদার পাকোড়া।
মাশরুম ডালের বড়া
উপকরণ পরিমাণ
মাশরুম ২০০ গ্রাম
খেসারির ডাল এক কাপ
পেঁয়াজ কুচি ৩/৪ কাপ
আদা বাটা ১/৪ চা চামচ
হলুদ বাটা ১/৪ চা চামচ
কাঁচা মরিচ কুঁচি ২ টি
লবন স্বাদ অনুযায়ী
তেল ভাজার জন্য পরিমাণ মত
প্রণালী
১/ প্রথমে মাশরুম ধুয়ে কুচি করে কেটে নিতে হবে।
২/ ৪/৫ ঘন্টা ভিজানো ডাল পানি ঝড়িয়ে এমনভাবে বাটতে হবে যাতে মিহি না হয়। বাটার সময় পানি দেয়া যাবে না।
৩/ মাশরুমের কুচির সাথে পেঁয়াজ, আদা, লবন, হলুদ, মরিচ কুচি ও ডাল বাটা ভালোভাবে মাখাতে হবে। তারপর চ্যাপ্টা চ্যাপ্টা করে বড়া বানাতে হবে
৪/ তারপর কড়াইয়ে গরম তেলে চ্যাপ্টা করে বানানো কাঁচা বড়া মাঝারি আঁচে মচমচ করে ভাজতে হবে।
৫/ তারপর কড়াই থেকে তুলে তেল ঝড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মাশরুম ডালের বড়া।
মাশরুম বোরহানি
উপকরণ পরিমাণ
মাশরুম পাউডার ১৫ গ্রাম
টক দই ১ কেজি
মিষ্টি দই ২৫০ গ্রাম
পানি সামান্য
ধনিয়া পাতা বাটা ১-১/২ চা চামচ
পুদিনা পাতা বাটা ১-১/২ চা চামচ
কাঁচা মরিচ বাটা ৬/৭টা
সাদা সরিষা বাটা ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া ১-১/২ চা চামচ
সাদা গুল মরিচ গুঁড়া স্বাদ মত
চিনি পরিমাণ মত
বিট লবন পরিমান মত
লবন স্বাদ মত
প্রণালী
১/ প্রথমে টক দই, মিষ্টি দই ও পানি একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে।
২/ তারপর মাশরুমের পাউডার ও অন্যান্য সকল উপকরণ এক সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে।
৩/ এবার মসলার পেস্ট দই এর মিশ্রণের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে।
ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার মাশরুম বোরহানি।
৪/ তারপর ঠান্ডা বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করলে শাহী খাবার হজম ও রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি মেলা ভার।
মাশরুম ভর্তা
উপকরণ পরিমাণ
তাজা মাশরুম ২৫০ গ্রাম
ধনে পাতা পরিমাণ মত
পেয়াজ কুচি হাফ কাপ
কাঁচা মরিচ ৪-৫ টি
রসুন ১ চেবিল টাম
কালোজিরা ১ চা চামচ
আদা কুচি ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া পরিমাণ মত
লবন হাফ চা চামচ
তেল পরিমাণ মত
প্রণালী
১/ প্রথমে তাজা মাশরুম পানিতে ধুয়ে কুচি কুচি করে নিতে হবে।
২/ তারপর চুলার পাত্রে সামান্য তেল দিয়ে তাতে ধনে পাতা, কালোজিরা, রসুন, পেঁয়াজ, আদাকুচি, জিরা হালকা ভেজে নিতে হবে।
৩/ তারপর মাশরুম কুচি পাত্রে ছেড়ে নাড়তে হবে।
৪/ অতিরিক্ত পানি শুকিয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে।
৫/ তারপর ভাজা মাশরুমের সাথে লবন, কাচা মরিচ দিয়ে বেটে নিতে হবে। তৈরি হয়ে গেলো মজাদার মাশরুম ভর্তা।
মাশরুম ভুনা খিচুড়ি
উপকারণ পরিমাণ
মাশরুম ৪০০ গ্রাম
গরুও মাংস ১ কেজি
তেল হাফ কাপ
পেয়াজ ৪-৫াট
মুগডাল ভাজা ২ কাপ
পোলাওয়ের চাল ২ কাপ
ঘি বা তেল হাফ কাপ
আদা মিহি কুচি ২ চা চামচ
তেজ পাতা ১টি
লবঙ্গ ২ টি
দারচিনি ৩ টুকরা
লবন স্বাদ অনুযায়ী
গরম পানি ৫ কাপ
প্রণালী
১/ প্রথমে মাশরুম ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিন।
২/ তারপর চাল, ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
৩/ পাত্রে ঘি দিয়ে আদা. তেজপাতা ও মাশরুম ভেজে নিন।
৪/ তারপর তাতে চাল, ডাল, লবঙ্গ, দারচিনি দিয়ে আরো ২ মিনিট ভাজুন।
৫/ ভাজা হলে ৫ কাপ পানি ও লবন দিয়ে নাড়তে থাকুন। ফুটে উঠলে ঢেকে দিন।
৬/ তারপর মৃদু আঁচে ২০-২২ মিনিট ফুটান, ব্যাস হয়ে গেল মাশরুম ভুনা খিচুড়ি।
৭/ এবার বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার মাশরুম ভুনা খিচুড়ি।
মাশরুম সাসলিক
উপকারণ পরিমাণ
তাজা শীতাকে মাশরুম ৩০০ গ্রাম
হাড় ছাড়া মুরগীর মাংস ৬০০ গ্রাম
ক্যাপসিয়াম ৩০০ গ্রাম
গাজর ১০০ গ্রাম
বড় পেয়াজ ৩০০ গ্রাম
আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
মরিচের গুঁড়া ১ চা চামচ
সয়াসস ২ টেবিল চামচ
সিরকা ১ টেবিল চামচ
টমেটো সস ১/২ কাপ
তেল হাফ কাপ
সাসলিকের কাঠি ৬টি
লবন স্বাদ মত
প্রণালী
১/ মাশরুম, মুরগীর মাংস, ক্যাপসিয়াম, গাজর ও পেয়াজ চার কোণা ও টুকরো টুকরো করে কেটে নিন।
২/ মাশরুম, মুরগীর মাংস, ক্যাপসিয়াম, গাজর ও পেয়াজ াঅধঅ ঋধাধ, মরিচের গুঁড়া, সয়সস, মিরকা ও লবন দিয়ে মেখে আধা ঘন্টা মেরিনেট করে রাখতে হবে।
৩/ তারপর সাসলিক কাঠিতে মাশরুম, মুরগীর মাংস, ক্যাপসিয়াম, গাজর ও পেয়াজ পর পর গেথে সাজিয়ে নিন।
৪/ ফ্রাই প্যানে অল্প তেলে গরম করে সাসলিকগুলো ভাজতে হবে, সাসলিকের উপরে মাঝে মাঝে টমেটের সসের প্রলেপ দিতে হবে।
৫/ হালকা ভাজা হলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
©somewhere in net ltd.