নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্মদিনের ম্যানু

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

অরুন্ধতী রায়এর একটা গল্প দিয়ে শুরু করছি :-
জমজ দুই ভাইয়ের জন্ম দিনের আগের রাতে তোদের বাবা সন্তানদের বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা করলেন। পরদিন সকালে এক ছেলে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দেখে তার দরজার সামনে নতুন একটা বাই সাইকেল আর একটা রিষ্ট ওয়াচ ! উপহার দেখে ছেলের আনন্দ ধরে না। কিছুক্ষণ পর বাবা এসে ছেলের অনুভূতি জানতে চান। ছেলে আনন্দিত কণ্ঠে বলে," থ্যাংকস বাবা, মেনি মেনি থ্যাংকস," তারপরই ছেলে মন খারাপ করে ফেলে, "কিন্তু বাবা, সাইকেলটার রং যেন কেমন মরা মরা ! আর বড় ডায়ালের ঘড়ি দিলে না কেন ? এখন কি কেউ ছোট ডায়ালের ঘড়ি পরে ? " বাবা মুঁচকি হেসে অন্য ছেলের ঘরের দিকে যান, কিন্ত ঘরের কাছে গিয়ে দেখে এ ছেলে কোদাল দিয়ে ঘরের সামনে বিরাট এক গর্ত খুঁড়ছে। বাবা গর্তর পাসে বসে অবাক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,"তুমি কী করছ ? "
ছেলে মাথা তুলে হেসে বলে,"বাবা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার দরজার সামনে এক প্যাকেট ঘোড়ার বিষ্ঠা ! বিষ্ঠা যখন আছে, তাহলে নিশ্চয় ঘোড়াও আছে । আমি সেই ঘোড়াটা খুঁজছি বাবা ! "
প্রাচীন গ্রিকদের চাঁদের দেবীর, আর্তেমিসের জন্মদিন উপলক্ষে চাঁদের মতন কেক তৈরি করা হতো, তারপর কেকের গায়ে অনেকগুলো জ্বলন্ত মোমবাতি বসিয়ে দিতো। যেন কেকটা চাঁদের মতো জ্বলজ্বল করে, যাতে ওপর থেকে আর্তেমিস কেকটাকে দেখতে পায়। এরপর সবাই মিলে প্রার্থনা করে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে দিত। আর ভাবত যে, সেই মোমবাতির ধোঁয়া তাদের প্রার্থনা নিয়ে দেবতার কাছে চলে যাচ্ছে।
আর রাজা-বাদশাহদের জন্মদিন খুব জাঁকজমক করে পালন করার কারণ, তখন ভাবা হতো যে বড় বড় মানুষদের পেছনে সব সময় দুষ্ট আত্মা বা অশুভ শক্তি ঘুরঘুর করে। জন্মদিনের দিন সেই সব দুষ্ট আত্মা যার জন্মদিন, তার সঙ্গে দেখা করতে আসে, তারপর বছর জুড়ে তাদের পেছনে লেগে থাকে, তাই শয়তান তাড়াতেই জন্মদিনে হইহুল্লোড় করা অবশ্যই ভালো। যত হইচই করা যাবে দুষ্ট আত্মা ভয় পেয়ে তত দূরে ভেগে যাবে।
প্রাচীন রোমানরা সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষদের জন্মদিন পালনের অনুমতি দিলেও মূলত শিল্প বিপ্লবের পর থেকে যখন জন্মদিনের কেক সাধারণ মানুষের নাগালে চলে আসে, তখন থেকেই সমাজে ব্যাপক ভাবে জন্মদিন পালন শুরু হয় । আর দ্বাদশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত মহিলারা জন্মদিন পালন করার অনুমতি ছিল না।
অনেক মুসলিম মনিষীর মতে আল্লাহ তার সব মানুষের আত্নাকে সৃষ্টি করেছেন এক সাথে, একই সময়ে। এবং সেই সময়টা আমরা কেউ জানি না। অতএব আমরা যে দিনটাকে জন্মদিন বলি সেটা আসলে জন্ম দিন নয় পৃথিবীতে আগমন দিবস। কথায় যুক্তি আছে, কারো মৃত্যু হলে আমরা কি বলে ? মারা গেছেন বা ইহলোকে ত্যাগ করেছেন। কোন স্থান ত্যাগ করা বা স্থান থেকে চলে যাওয়ার বিপরীত হলো আগমন করা । "হ্যাপি এরাইভাল ডে টু ইউ” না গেয়ে গাইতে হবে,"হ্যাপি.. এরাইভাল…ডে..টু..ইউ…."।
তবে ইসলামে জন্মদিন পালনকে সরাসরি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এবার আমাদের এলাকার কথা বলি, গত বছর আমাদের এলাকার থ্রিতে পড়া এক বাচ্চার জন্ম দিনের পার্টির মেনুতে ছিল ৩০টার মত আইটেম। যে কটা মনে করা গেছে :-
পেস্টিকেক, সফট ড্রিংক্স ।
বিরানি, পোলাউ, সাদা ভাত ।
মুরগির রোষ্ট, গরুর রেজালা, খাসির রেজালা, ডিম ভুনা।
সরিষা ইলিশ, রুই মাছ ভাজা, চিংড়ি মাছ ভুনা, শিং মাছের ঝোল, গুড়া মাছের চড়চড়ি ।
টাকি মাছের ভর্তা, শুটকি ভর্তা, কাল জিরা ভর্তা ।
বেগুন ভাজা, পেয়াজু ভাজা ।
ডাল ।
আর ছিল একটা বিশেষ আইটেম, - বট মানে, গরুর ভূরি ভাজা !
এই বট-ই প্রত্যেকে সবথেকে আনন্দ নিয়ে খেয়েছে, গাপুসগুপুস করে চোখের পানি নাকের পানি মিশিয়ে খেয়েছে !!
...................................................
: বিষয় কী ! আজকে জন্মদিন নিয়ে পড়লি ক্যান ?
: না, হুদাই ।
: বুঝছি, বট খাইতে মন চাইতাছে । চল তোরে বটের রোল খাওয়া আনি, চল । কি হইল ! দৌঁড় পাড়ছ ক্যান ? কি আশ্চর্য ! বটের রোল মজাতো ! অই ... ?

বাই-দ্যা-ওয়ে আজ যাদের জন্মদিন, সবাইকে শুভেচ্ছা ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন:
আমিও জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা l

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.