নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চাওয়া নকল মানুষ। নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ধার্মিক। নিজ কাজে নির্ভরশীল শ্রমিক। দেশকে ভালবাসা এক দেশপ্রেমিক।মানুষে মানুষে সচেতনতা বাড়ুক, দেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধশালী। মানবতা আশ্রয় নিক হৃদয়ে।

রিফ্রাক্শন

আমি ঠিক আমার মতো। আমার ভাবনার মত। ভাবনাগুলোর যুক্তির মত। আমি যেগুলো তে বিশ্বাস করি সেই বিশ্বাস এর মত। আমি আমার রচিত সংবিধানের মত। আমি প্রেমিকা পাগল প্রেমিকের মত। কাজ পাগল শ্রমিকের মত। দায়িত্ব নিতে চাওয়া নেতার মত। অবশেষও আমি মানুষ আপনাদের মতই, আপনাদের মধ্যেই একজন।

রিফ্রাক্শন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীল ত্যাগ

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৮

যেদিন আমার খুব করে মহাকাশের অসীম নীলে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে সেদিন আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে থাকে। আমি আমার কষ্টগুলোকে যে নীলে লুকিয়ে অভ্যস্ত সেই নীল আর পাই না। মনে হয় এই নীল রঙ আমার সাথে মজা নেয়। ঠিক যেমন আপনার মন খারাপ থাকলে দেখবেন আরেকজন মজা নিতে চাইবে তেমন

আপাতত আমার মন খারাপের কারণ এখন যে বাসাতে আছি তা ছেড়ে দিতে হবে। তাই সকল স্মৃতিকে লুকাতে চাইছি। যদিও আজ আকাশ নীল না কিন্তু প্রতিদিনই এই আকাশের নীল আমার সাথে বেইমানী করে নাহ। এই বাসাতে আসার পর কত মন খারাপের ভোর, বিকেল, সন্ধ্যা, রাত এই বারান্দায় কাটিয়েছি তার হিশেব নেই।

আমার দুঃখ গুলো নীলে হারালেও গতকাল থেকে বোধ হয় জামিল ভাইয়ের এটাই মন খারাপের বিষয় হবে।

জামিল ভাই আমার রুমমেট। ছোট একটা চাকরী করে, বয়স ৩০ পার হলেও একটু বয়স্ক লাগে। মুখটা গোল। মাথার ওপরে চুল গুলো অযত্নে পরে থাকে, মুখে পাতলা দাড়ি। দেখতে বেশ লম্বা।

যে বাসাতে থাকি তাতে ২ টা রুম, সাথে বাথরুম, রান্নাঘর সবই আছে। অন্য রুমে রনি একাই থাকে। সে আমার সমবয়সী। অনেক টাকা পয়সা ওয়ালা। সকাল ১১ টাই বের হয় রাতে ১২ টা কিংবা ১ টার দিকে বাসায় ফিরে, মাঝে যতগুলো ক্লাস করে না তার দিগুন প্রেমিকা নিয়ে ডেটিং করে। মাসে একদিন বাসায় বন্ধু বান্ধবী নিয়ে আনন্দ ফুর্তি করে।

একটা কাজের বুয়া আছে। প্রতিদিন দু বেলা রান্না করে। আমার দুবেলাই মিল চলে, জামিল ভাই একবেলা খান, দুপুরে। রাতে তিনি ভাতের মাড় খেয়ে থাকেন। আমি এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, ‘ছোটবেলা থেকে অভ্যাস’। অনেক দিন অনেক ভাবে চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি রাতে ঐ মাড় ছাড়া কিছুই খেতে চান নি। অন্যদিকে রনির দুপুরে ভাত নষ্ট হয়।

আমাদের কাজের বুয়া প্রতিমাসে বদলানো লাগতো। ঠিক যেদিন রনি বন্ধু বান্ধবী নিয়ে বাসায় পার্টি করত তার পরের দিন। কেনোনা পরেরদিন সকালে ঐ খালা কে লাল নীল পানির বতল, উচ্ছিষ্ট খাবার এমন কি বীর্য ভর্তি ব্যবহৃত কনডমও পরিস্কার করা লাগতো।

অনেকবার আমি নিজেও অসহ্য হয়ে এখান থেকে চলে যেতে চেয়েছি, কিন্তু এই শহরে এত স্বল্প ভাড়ায় বাসা পাওয়া কঠিন। তারপর ভাবি না থেকেই যাই, মাসে একদিন এ আর এমন কি। টাকার কাছে মধ্যবিত্তদের ত্যাগ জন্ম থেকেই।

তাই এই দিনে আমি আর জামিল ভাই পাশে এক অভারব্রীজ এর ওপর বসে থাকি। শেষ রাতে রুমে ফিরি।



সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো। বৃষ্টি এলেই যেন অলি-গলিতে পানি জমবেই। হয়ত শহরের মানুষ বিরক্ত হতে হতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু আমার কি ভাগ্য আজকেই বাসা খুঁজতে বের হয়েছি। ক্লান্ত হয়ে এক বাসার নিচে এসে দাড়ালাম। নিচের ট্যাপ থেকে পানি নিয়ে খেলাম, বৃষ্টি হলেও ভ্যাপসা গরম আছে। পানি খেয়েই সাইনবোর্ড এর দিকে তাকালাম। পেছন থেকে একজন ডেকে বলল, ভাই বিজ্ঞাপন পড়ার আগে পানির ট্যাপ বন্ধ করেন।

আমি ইতস্তত হয়ে তাকালাম, দেখি ট্যাপ বন্ধ করতে ভুলে গেছি। ভাইয়ের কথা শুনে দ্রুত বন্ধ করলাম।

-বাসা ভাড়া লাগবে?
-জি
-হ্যাঁ, এই বিজ্ঞাপন আমি দিয়েছি।
- হবে?
-হবে কিনা আপনি ঠিক করবেন।
-আচ্ছা।
- আপনি হবেন আমার রুমমেট। বাসাতে দুটো রুম থাকলেও আমাদের প্রবেশাধিকার মাত্র আমাদের রুম আর সাথে বাথ্রুমে এবং রান্নাঘর। রুমের সাথে বারান্দা আছে। এই বাসার সমস্ত ভাড়ার আপনাকে দিতে হবে ১৫ ভাগ। বাসা একদম ঝকঝকে। রাজি?


আমি মোট ভাড়া টা শুনে হিশেব করে রাজি হয়ে গেলাম। কেননা এর আগে যে পেয়েছি তা অনেক খরচের ব্যপার।

-আমি জামিল। আপনি?

মনে মনে ভাবলাম এতখন পরে নাম বলছে…।। বাসা না নিলে তো নামটাও জানতে পারতাম না। কিছু লোক অপ্রয়োজনে নিজের নামও বলতে চাই না। তারপর উত্তর দিলাম, ‘’আমি মুরাদ।‘’

জামিল ভাইঃ তাহলে কবে উঠছেন?
আমিঃ কালকেই।

পরের দিন যখন উঠে নিজের সংসার গুছিয়ে নিচ্ছু সাথে সাথে জামিল ভাই আমাকে অনেক নিয়ম বারতালেন। নিয়ম গুলো ছিলো, অযথা লাইট, পাখা চালিয়ে বিদ্যুৎ অপচয় করা যাবে না, বাথরুম থেকে বের হওয়ার আগে ট্যাপ থেকে পানি পড়ছে না নিশ্চিত হতে হবে এরকম আরো কিছু।
এসব শুনে জামিল ভাইকে সচেতন মানুষ মনে হলো। পরে একদিন রনির সাথে আলাপ হয়। জানতে পারলাম আমার সমবয়সী। এভাবেই আমার দিন শুরু হলো।



প্রথম কয়েকদিন খুব একটা কথা হত না। আমাদের খুব ভাব হলো ঐদিন যেদিন আমি বাসায় আসার পর রনি প্রথম পার্টি ডাকে, যদিও প্রথমে জানতাম না ব্যপারটা। সেদিন সন্ধ্যায় আমাকে জামিল ভাই ফোন দিয়ে বললেন একটা ওভারব্রিজের কাছে যেতে। আমি গেলাম। তারপর বিস্তারিত জানতে পারলাম।

কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ থাকার পর আমি বললাম,“ আপনার বাসা কোথায়?’’
জামিল ভাইঃ কক্সবাজার।

শুনে উল্লাসিত হয়ে বললাম, ‘’তাহলে তো একদিন বেড়াতে যাচ্ছি।‘’

এমন অনেক কথায় কথায় জিজ্ঞেশ করলাম, ‘’ ভাই কখন প্রেম করেছেন? অতীতে নাকি বর্তমানে চলছে?

জামিল ভাইঃ কি যে বল?

আমিঃ বলেন না ভাই?

জামিল ভাইঃ আসলে আমি কখনো কারো প্রেমিক হতে চাই নি, শুধু মনে মনে একজন কে লালন করেছি।

যে আমার নীল মহাকশের সঙ্গী হবে
যে আমার বসন্তের উদাস বিকেল কোকিল কণ্ঠে গান শোনাবে
বর্ষায় ঝুম বৃষ্টি হলে নাচবে
যাকে নিয়ে আমি রেল লাইন ধরে হাঁটব, সে পড়বে নীল শাড়ি, নীল টিপ, লিপ্সটিক, আমি সাদাকালো পাঞ্জাবী। এইত…

আমিঃ রোমান্টিক আছেন। তাহলে প্রিয় রঙ নীল?
জামিল ভাইঃ প্রিয় রঙ বলে কিছু নেই, তবু প্রিয়। তোর কি খবর?
আমিঃ দেখছি…।।
জামিল ভাইঃ দেখ… বেশি দেখিস না…।

আমিঃ আচ্ছা ভাই, আপনার সবচেয়ে অপছন্দের বিষয় কোনটা?
জামিল ভাইঃ আত্মহত্যা, আমি চাই না আমার পরিবারের কেউ আত্ম্যহত্যা করুক।

আমিঃ বেদনাদায়ক। বাসায় কে কে আছে আপনার?
জামিল ভাইঃ বাবা, মা, ছোট বোন। বোনের বিয়ে দিয়েছি, বাবা দিন মজুর ছিলেন, মা গৃহিণী।


এভাবেই সেদিনের রাত টা শেষ করে দিলাম।


একদিন বিকেলে আমি, রনি আর জামিল বসে ছিলাম, বিভিন্ন কথা হচ্ছিলো। ইয়ার্কিও হচ্ছিল। আমি
আমি অসচেতন মনে বলে উঠলাম, ‘’ রনি প্রতিদিন নতুন নতুন মেয়ে দেখে ক্রাশ খেয়ে বেঁচে থাকে আর
জামিল ভাই ভাতের মাড় খেয়ে বেঁচে থাকেন।‘’
বলার পর আমি বুঝতে পারলাম, আমি কত খারাপ কথা
বলেছি। জামিল ভাই উঠে চলে গেলেন। হঠাত করেই পরিবেশ টা খারাপ হয়ে গেলো। আমি সেদিন আর
জামিল ভাইকে মুখ দেখাতে সাহস করি নি। সে রাতে রুমে না যেয়ে বারান্দাতেই ঘুমিয়েছিলাম। সকালে
উঠে দেখি আমার গায়ে কাঁথা আর মশরী টাঙ্গানো। আমি অবাক হলাম জামিল ভাইয়ের কথা ভেবে,
মানুষটার সাথে কতবড় অন্যায় করে ফেলেছি। তাকে কি সরি বলব কিনা দ্বিধাতে ভুক্তে ছিলাম।
উঠে রুমে গিয়ে দেখি জামিল ভাই রুমে নেই। সারাদিন অপেক্ষা করলাম। ফিরল নাহ। আমি সন্ধ্যা
গড়ালেই ফোন দিলাম। ফোন ধোরে জামিল ভাই আমাকে আবার ঐ ওভারব্রিজের কাছে যেতে বলল।
আমি খুব দ্রুত চলে গেলাম। দেখি জামিল ভাই বসে আছেন। রাস্তা দিয় আলো জ্বালিয়ে যন্ত্র গুলো ছুটে
চলেছে বিরামহীন।

অনেক ক্ষণ চুপ থাকার পর আমি বললাম, ‘ভাই কিছু হয়েছে?’
জামিল ভাইঃ না। মন খারাপ।

আমিঃ জানি ভাই। গতকাল আমার কথায় আপনি কষ্ট পেয়েছেন।

জামিল ভাইঃ আমার বাড়ি সমুদ্রের কাছে। একবছর ঝড়ে সব লন্ড ভন্ড হয়ে গেলে তা মেরামত করতে
করতে আবার ঝড় আসে। বাবা ট্রলার চালাত, এখন প্যারালাইজড। আমি তেমন ভালো ছাত্রও নাহ।
মোটামুটি পড়ালেখা করে এই চাকরী টা পেয়েছি। শুধুমাত্র আমার টাকায় সংসার চলে আবার বেশি অংশ
দেয়া লাগে বোনের স্বামীকে। বিয়ের সময় যৌতুকের টাকা পরিশোধ হয় নি। প্রতিমাসে তাই দিতে হয়।
একদিন দুইদিন দেরী হলেও যেন অত্যাচার শুরু হয়ে যায় বোনের ওপর। হয়ত এর ভিতরেই ভাত হয়ে
যেত কিন্তু যদি আবার ভালোমন্দ খেতে ইচ্ছা হয়?


আমি চুপ হয়ে শুনছি। আমি আবার বেশি কষ্ট সহ্য করতে পারি না।

জামিল ভাইঃ কি মন খারাপ হয়ে গেলো?
আমিঃ হ্যাঁ।

জামিল ভাইঃ আসলে, এত কষ্টের পরেও টিকে আছি, আমার বিশ্বাস এর কারনে। যদি বস্তু মেলায়! একদিন
হয়ত আমার আর্থিক অবস্থা ভালো হবে, সেদিন আমার বোনকে আর কষ্ট সহ্য করতে হবে না।

আমিঃ আপনি জেনেশুনে বিয়ে কেন দিলেন?

জামিল ভাইঃআমি দিতে চাইনি। কিন্তু বাবার অসুখ হওয়ার পর তিনি ভাবতেন কখন মারা যাবেন, মেয়ের
বিয়ে নিয়ে চিন্তা করতেন, একদিন একটা সন্মদ্ধ এলে আমাকে খুব করে বলল। আমি না করতে না পেরে
দিয়ে দিলাম। এখনো চাই, ওখান থেকে বোনকে মুক্ত করে নিয়ে আসি, কিন্তু পারি না। তারপরে আমার
বোন আবার বাঙালি নারীর আসল রুপ, স্বামীকে প্রভুভক্তি করা মেয়ে।


আমি আর সহ্য করতে না পেরে উঠে চলে আসলাম। কেননা, তখন আমার মনে করুনা জাগছিল। যেটা
ভালো জিনিস নয়।



একদিন বিকেলে ঘুমিয়ে ছিলাম। বিবর্ণ চেহারা নিয়ে জামিল ভাই হাজির হয়ে ডেকে বললেন, ‘’ মুরাদ,
জরুরী কিছু টাকা ধার হবে?’’

আমিঃ হবে

জামিল ভাইঃ বোনকে টাকা পাঠাবো, ৫ দিন দেরী হয়ে গেলো, বেতন পাইলাম তাও আজ পকেট মার হয়ে
গেছে।

আমি টাকা দিতেই চলে গেলেন বাইরে। অসহায় মানুষের সাথে কেবল অসহায়কর বেপার বেশি ঘটে।

কিছুক্ষণ পরে জামিল ভাই ফিরে এসে আমাকে টাকা দিতে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠেলন। আর
বললেন, আমি আমার বোনকে হারিয়ে ফেললাম। এই টাকা আমি কার কাছে পাঠাবো? আমি কি
সান্ত্বনা দিব বুঝতে পারছিলাম না। বিষয় টা বুঝতে দেরী হলো না। কিন্তু বিশ্বাস হচ্ছিলো নাহ। এতো সহজে
মানুষ চলে যায়!

সেই রাতেই রওনা দিলাম। ভেবেছিলাম কক্সবাজার যাব বেড়াতে, আনন্দ করতে কিন্তু যাচ্ছি কষ্টের বোঝা
নিয়ে।

সময় কিভাবে কোথায় কেমন ভাবে নিয়ে যাবে তা কেবল সময় কে যিনি কন্ট্রোল করেন তিনিই
জানেন। আমরা সবাই সৃষ্টিকর্তার লীলা খেলার খেলানা মাত্র।

পৌঁছাতে ফযরে আজান হয়ে গেলো। অনেক লোকের সমাগম। বাইরে একটা পুলিশের গাড়ি। মাইকে
আজান শেষে ঘোষণা হল, নামাজ শেষেই দাফন।

যদিও আমি মরা বাড়ি যাই না কিন্তু বোনকে দেখতে ইচ্ছা হল তাই ভিতরে গেলাম। উঠানের মাঝে খাটিয়া
শোয়ানো। মাথার কাছে একজন বসে কাফন সরিয়ে মুখ টা দেখালো। জামিল ভাই একবার দেখেই বাইরে
চলে গেলেন। আমি দেখলাম মুখটা নীল হয়ে গেছে। তারপর আমিও চলে আসলাম।

দাফন শেষেও অনেক লোক ছিলো যারা সন্ধ্যার দিকে চলে গেলো। তখন জামিল ভাই আমাকে ডেকে
বললেন,’’ চলো, যাই। তোমার সমুদ্র বেড়ানোর ইচ্ছা ছিলো।‘’

আমি আর জামিল ভাই সমুদ্রের সামনে এসে, স্রোতে পা ভিজিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছি। সামনে শুধুই
অন্ধকার। আমার একা থাকার সাহস নেই এমন সময়।

কিছুক্ষণ পর ভাই বলা শুরু করলেন, ‘’ ছোট বেলা
থেকেই খুব ডানপিটে ছিলাম। এখানেই থাকতাম সারাদিন। ঐযে হোটেল টা দেখছো, ওখানে কাজ করতাম
বাসায় না বলে, যদিও পরে জানত। একদিন বাবা এসে বলল, ‘তোমার বোন হয়েছে’ আমি দৌড়ে চলে
গেলাম। তখন আমার খুব কোলে নিতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু কেউ কোলে নিতে দেই নি। বোনের নাম
রাখলাম নীলা। সেই দিন গুলো ওর সাথে খেলা করে কাটিয়ে দিতে দিতেই একদিন বড় হয়ে গেলো, বউ
সেজে অন্যের বাড়ি চলে গেলো। আর আজ…………………তো আমাকে ছেড়েই চলে গেলো তাও আমি
যেটা অপছন্দ করতাম সেইভাবে। যাওয়ার আগে নীল রঙ দেখিয়ে আমাকে অপরাধী বানিয়ে গেলো।‘’


এখন আমার কি বলা উচিত আমি জানতাম না। অন্য দিকে কথা নেয়ার জন্য বললাম, ‘’আমি রাতেই রওনা
দিব। আপনি কয়েকদিন থেকে আসেন।‘’

জামিল ভাইঃ আরে নাহ। চলো সারাদিন তো কিছু খাও নি। আগে খাবে। কাল সকালে দুজনেই রওনা দিব।
সকাল বেলা বাস ধরে ফিরতে ফিরতে বিকেল হয়ে গেলো। সাথে সাথে রনি এসে বলল কাল থেকে বাসা
ছাড়তে। ওর নাকি কোন বন্ধু আসবে।



আমাদের তেমন জিনিসপাতি ছিলো না। সবকিছু গোছানো শেষ। কাল বাসা ছাড়তে হবে। আজ বাসায়
শেষ দিন।
এরই ভেতরে কত অভিজ্ঞতা হয়ে গেলো। এমন অনেক দুই রুমের মাঝেই হয়ত অনেক গল্প থেকে যায়,
কখন সেগুলো অভিজ্ঞতা হয়। অভিজ্ঞতা নিয়েই জীবন চলে। হয়ত জীবন একটা অভিজ্ঞতার ভান্ডার।

আমরা চলে গেলেও এই দুই রুম থেকে যাবে, হয়ত নতুন কোন গল্প আশ্রয় নেবে। জামিল ভাইয়ের
চরিত্র আরেকজন, এভাবে চরিত্র বদলাবে কিন্তু বাস্তবতার গল্পে রুমের দেয়াল সাক্ষী হয়ে থাকবে।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.