নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঠিক আমার মতো। আমার ভাবনার মত। ভাবনাগুলোর যুক্তির মত। আমি যেগুলো তে বিশ্বাস করি সেই বিশ্বাস এর মত। আমি আমার রচিত সংবিধানের মত। আমি প্রেমিকা পাগল প্রেমিকের মত। কাজ পাগল শ্রমিকের মত। দায়িত্ব নিতে চাওয়া নেতার মত। অবশেষও আমি মানুষ আপনাদের মতই, আপনাদের মধ্যেই একজন।
সকালের সূর্য আলো ছাড়ানোর আগেই বাসায় ফিরলাম। তবে আলো দেখার ভাব নেই। আমার সাথে সাথে আকাশের মনটাও খারাপ। আচ্ছা নীতুরও কি আজ মন খারাপ? মনে পরে নীতুর যখন মন খারাপ হত, আমি যখন ওর মনটা ভালো করে দিতাম তখন ও আমাকে আকাশ বলে ডাকতো। আমি প্রথমবার কারন জিজ্ঞেস করলে নীতু বলেছিলো, 'আমার মন খারাপের সময় তুমি আকাশ হয়ে যাও তোমার উদারতা দিয়ে।' আহা! আজকে সেই উদারতা কোথায়? হয়ত এখন মন খারাপ হলে অন্য কাউকে 'আকাশ' বলে ডাকে।
ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, আবহাওয়া পরিবর্তন হবে, শীত আসবে, বৃষ্টি যেন প্রকৃতির প্রয়োজনেই হবে। মনে মনে ভাবলাম সারারাত ঘুম হয়নি। এই পরিবেশে একটু ঘুমিয়ে নেওয়া যাবে। যদিও ছোটবেলার সেই টিনের ঘরের বৃষ্টি মিস করি। কোনমতে শুয়ে পড়লাম।
হঠাত মনে পড়লো আমাদের প্রেমের প্রথম দিকে এক শ্রাবণ সন্ধ্যার কথা। সেদিনও আকাশে খুব মেঘ। বৃষ্টি শুরু হলো। প্রতিদিনের মত নীতুর ফেরার অপেক্ষায় চৌধুরী বাড়ির সামনের রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে ছিলাম কিন্তু বৃষ্টি জন্য চৌধুরী বাড়ির গেটের ছাউনির নিচে আসলাম। নীতু ফেরার অপেক্ষা করছি। চারিদিকে বেশ অন্ধকার। হঠাত কোথা থেকে নীতু আসলো। বেশ ভিজে গেছে। এসেই মাথা মোছা শুরু করলো।
আমি: বর্ষার সময় সাথে ছাতা নিয়ে বের হওয়া উচিত!
নীতু: হ্যা। তাহলে আর এখন সময় কাটাতে পারতাম নাহ।
আমি: বাসাতে কিছু বলবে নাহ?
নীতু: গাধা! বৃষ্টির দিনে স্কুলে না গেলে যেমন সেটাকে রেইনি ডে বলা হয়, আজও তাই।
আমি: তাহলে সারারাতই থাকছো!
নীতু: শখ! বৃষ্টি ছাড়া পর্যন্ত থাকবো।
হঠাত করে নীতুকে খুব সুন্দর লাগলো। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম, ও তাকালো। কোন এক কামনায় এগিয়ে গেলাম ওর দিকে। এত ঠান্ডা পরিবেশে এক শিহরন। স্পর্শ হতেই দৌড়ে পালালো। আমিও ওর পিছু নিলাম। ওর বাসা খুব বেশি দূরে ছিলো না। ওর পিছু পিছু নিতে নিতে ও ততক্ষণ বাসায় ঢুকছে। ঢোকার আগে বলে গেলো, 'আগামী কয়েকদিন দেখা করতে পারবো না, কথাও না।'
তখন মনে মনে বললাম, দাগ থেকে যদি দারুণ কিছু হয় তাহলে দাগই ভালো।
আচ্ছা আমার মত কি নীতুর সেসব কথা মনে পড়ে নাহ? অথচ তখন আমরা কত আপন ছিলাম, দুজন -দুজনকে ছাড়া বাচবো না এমন অবস্থা। কিন্তু দিব্যি বেচে আছি। তবে এসব স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেলে স্মৃতিকাতর হয়ে মনে হয় এভাবে দূরে থাকা অসম্ভব। কিন্তু সম্ভব।
আচ্ছা নীতু কি আসলেই বিবাহিত? তাহলে শেষে ও কথা কেন বললো? জানিনা। তবে এটুকু জানি আমার মন চাইছে আমাদের মাঝে সেদিনের মত আবার শ্রাবণের সন্ধ্যা আসুক, হয়ত সময় গড়াবে, স্থান বদলাবে, বদলাবে না সেই নীতু আর আমি।
তখনও প্রশ্নের সম্মুখীন, আসলেই কি নীতুর কাছে ফেরার সময় কিছু অবশেষ আছে? থাকলেই আমার আবার ওর ঠিকানায় যাওয়া উচিত? ফিরে পেলে কি ভালোবাসতে পারবো?
ওটাই তো ভয়! ভালবাসাটাই তো ঠিকমত বাসতে পারলাম না!
*******--******----*****
আগের অংশ পড়তে চাইলে আমার ব্লগে ঢুকুন।
(আমার কি ফিরে যাওয়া উচিত, কি বলেন আপনারা?)