নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে চাওয়া নকল মানুষ। নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ধার্মিক। নিজ কাজে নির্ভরশীল শ্রমিক। দেশকে ভালবাসা এক দেশপ্রেমিক।মানুষে মানুষে সচেতনতা বাড়ুক, দেশ হোক উন্নত, সমৃদ্ধশালী। মানবতা আশ্রয় নিক হৃদয়ে।

রিফ্রাক্শন

আমি ঠিক আমার মতো। আমার ভাবনার মত। ভাবনাগুলোর যুক্তির মত। আমি যেগুলো তে বিশ্বাস করি সেই বিশ্বাস এর মত। আমি আমার রচিত সংবিধানের মত। আমি প্রেমিকা পাগল প্রেমিকের মত। কাজ পাগল শ্রমিকের মত। দায়িত্ব নিতে চাওয়া নেতার মত। অবশেষও আমি মানুষ আপনাদের মতই, আপনাদের মধ্যেই একজন।

রিফ্রাক্শন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মীরা

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯

রাত প্রায় শোয়া চারটে। মাত্র মিনিট দশেক আগে ঘুমিয়েছি, চ্যাম্পিয়ন লিগের বায়ার্ন-বার্সা লড়াই দেখে। এক, বার্সা হেরে গেছে তারপর আবার বিকেল বেলা মাস খানেক পরে ক্রিকেট খেলে গা চরম ব্যাথা হয়েছে।

মোবাইল টা বেজে উঠল। ফোন দিয়েছে মীরা। অয়নের গার্লফ্রেন্ড। কিন্তু এত রাতে আমাকে কেন ফোন দিয়েছে!? ফোন ধরলাম....

-হ্যালো...
-ভাইয়া, আমি মীরা। আপনাকে বিরক্ত করলাম। একটা সমস্যায় পড়েছি।

আমি ভাবলাম কি আর সমস্যা হবে? হয়ত দুজন ঝগড়া বাধিয়েছে। তবে এতদিন ঝামেলা বাধালে তো শিশু ঠিক করে দিত। কিন্তু আজ আমি কেন?

-জ্বি, বল।
কোন কথা নেই। আমি প্রায় ৫/৬ বার রিপিট করলাম।

মীরা খুব আস্তে ও ভয় এবং মৃদু লজ্জার সাথে বলল, "ভাইয়া, আমি প্রেগন্যান্ট।"

-তুমি কি শেষ রাতে জোকস বলছো?
-না ভাইয়া, আসলে কিভাবে কি হয়ে গেল বুঝিনাই। হঠাত করে আজ যখন কনসিভ করলাম, ওকে জানালাম, ও এমন ভাবে রিএক্ট করল যেন ও কচি খোকা।তারপর শিশু ভাইকে জানাতে চাইলাম কিন্তু ফোন বন্ধ।

অঝরে কাঁদতে লাগলো। মেয়েদের কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা। তখন আমি বললাম,

"দেখো, আর কেঁদো না। এখন ঘুমাও। আমি দেখি। চিন্তা করো নাহ।"
বলে ফোন রেখে দিলাম।

ভেবেছিলাম খুব শান্তির একটা ঘুম হবে। সকালে খুব দেরি করে উঠব তখন আর সকাল থাকবে না। আর হলো নাহ।

আমি,অয়ন আর শিশু সেই হাইস্কুলের বারান্দা থেকে ভার্সিটির হল পর্যন্ত একসাথে।

অয়ন আর শিশির ক্লিয়ারেন্স পেয়ে গেছে। আমি বের হতে পারব না। আমি নিজে কিছু ছোট গল্প কিংবা চুলোহীন উপন্যাস লেখে পত্রিকাতে ছাপিয়ে কিছু টাকা পাই। আর সাথে স্টুডেন্টস পলিটিক্স করি। পাশ করা হয়নি। হলের ঘরে আজ আমি একা। সামনে শর্ট সেমিস্টার।

২.
মীরার কথা শুনে রুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই বাইরে এসে ছাদে গেলাম। মধ্যরাতে অনেকে থাকলেও এখন কেউ নেই। আমি পশ্চিম দিকটায় বসলাম। কেমন শ্বাসকষ্ট অনুভব করলাম।মনে হলো বিড়ি ধরিয়ে নাক মুখ দিয়ে বাতাস বের করি। সিগারেট ধরিয়ে টানছি আর ভাবছি.....মনে অসংখ্য প্রশ্ন।

মীরা আমাকে কেন বলবে?
বললই বা, আমার এমন হবে কেন?
অয়ন কেন এমন বলছে?
মীরা কি করবে? ইত্যাদি।কোন উত্তর নেই আপাতত।

সেন্ট্রাল মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেষে আসছে। একটু পরেই মজদি চাচা নিচে দোকান খুলবে। চাচাকে আমার ভালো লাগে। কিন্তু চাচাকে সড়াতে কত আন্দোলন করলাম, কেননা চাচা বিড়ি বিক্রি করত না।যাক সে কথা। রুমে এসে ঘুমালাম।

ঘুম থেকে উঠলাম দরজায় টোকা শুনে। তখন দুপুর আড়াই টা। খুলে দেখি অয়ন ব্যাগ নিয়ে হাজির। আমি কোনমতে দরজা খুলে আবার ঘুমিয়ে গেলাম। যেন কিছুই জানিনা। সম্ভবত একটা অভিমান কাজ করছিল, একসাথে এতদিন আছি আর কিছুই জানলাম নাহ! তাহলে হয়ত সেই অধিকার টা পাওয়ার মত না। আবার ভাবলাম, না ঠিকই আছে। ও কি ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে সেক্স করে এসে গল্প বলবে? এসব আজগুবি চিন্তা বাদ দিয়ে ভান করে ঘুমাতে ঘুমাতে আসলেই ঘুমালাম।

৩.
ঘুম থেকে যখন উঠলাম তখন রাত দশটার বেশি। পেটের মধ্যে চু চু করছে ক্ষুধায়। সারাদিন খাওয়া হই নি। উঠে ফ্রেশ হয়ে দেখলাম অয়ন মুখ ভার করে বসে আছে। অসীম চিন্তা ওর মনে তা প্রকাশ পাচ্ছে। ডাইনিং এর ছেলেটা একটা মিল দিয়ে গেছে। অয়ন কে জোর করে তুলে মিল দুজনে ভাগ করে খেলাম। খাওয়া শেষে বললাম, 'চল পুকুর পারে যায়' 'যে গরম'।

ভার্সিটির পুকুর পারে আসলাম। দুজনই চুপ হয়ে আছি। কিভাবে কথা শুরু করব বুঝছি না। হঠাত অচেনা লাগছে...

-গতকাল রাতে মীরা ফোন দিয়ে সব বলল। তুই ওকে কি বলেছিস?
-আমি কি বলব? হঠাত এমন একটা নিউজ শুনে মাথা ঠিক ছিল না।

মনে মনে বললাম, 'তখন এই রাগ কই ছিল? দোষ কি মেয়েটার একার। দুজনেরর সমান দোষ। ছেলে মেয়ে যখন প্রেম করবে তাখন কাছে আসতে মন চাইবে, চুমু খেতে ইচ্ছা করবে আবার শুতেও মন চাবে। আমি এগুলোর ভেতরে দোষ দেখি না। কিন্তু দেহের চাহিদা মিটল আর তুমি ফুটলা এমন তো হবে না। হয়ত দোষ এখন মেয়ের হবে, কাপড় খুলে বিশ্বাস করে তোমাকে সর্বস্ব দিল, আর পরে তুমি রাগ দেখাইলা। তখন এই রাগ কই ছিল? "

-এখন কি চিন্তা করলি?
-বুঝছি না। নষ্ট করে দিব।

-কি!
-তাছাড়া আর উপায় কি?

-বাড়িতে জানা।
-তুই কি পাগল। এখনও একটা চাকরী হয়নি। মাত্র বের হলাম।

-হয়ে যাবে।
-তোর এত চিন্তা কেন তোর? তাহলে তুই দায়িত্ব নে।

বলে উঠে গেল। আমি একাই পুকুর পারে বসে থাকলাম। বিড়ি ধরালাম। মনে প্রশ্ন জাগছে....সময় বাড়ছে প্রশ্ন বাড়ছে!

আসলেই তো আমার কি?
আমি কেন নাক গলাচ্ছি?
মানবভ্রুন কি এতোই সস্তা?
সেক্সটাই কি সব? ফলাফল টা সময় সাপেক্ষ? এসব কি কেবলই ভোগ?

আসলেই ভোগের সেক্সে এবোর্সন হয়, মানবভ্রুন পায় ছুড়ির আঘাত। ত্যাগের সেক্সে মানবভ্রুন পায় হরলিক্স এর শরবত।

৪.
আসলেই আমার কিছু যায় আসেনা, কিন্তু বছর ৬ এক আগে যখম অয়ন এসে বলল, "মুরাদ একটা মেয়েকে পছন্দ হয়েছে।"

-বাড়ি কোথায়?
-জানিনা।
-চিন্তা নেই। সবই হবে।

দুই তিনদিন পর গোয়েন্দা তথ্য থেকে নাম ও বাড়ি চিনলাম। তখন ইম্প্রেস করার চিন্তা। এ কর,ও কর। অনেক কিছুই করলাম। মেয়ের নম্বর জোগাড় করলাম। ১ বছর কেটে গেছে।

ক্লোজ আপ কাছে আসার সাহসী গল্প নিয়ে টাহশানের একটা নাটক হয়েছে। তো আমরা কেউ নাটক দেখি নাই। মীরা অয়নকে টেক্সট করেছে, যদি টাহশানের নাটকের মত করে প্রোপজ ও টেক কেয়ার করতে পারে তাহলে রাজি আছে।

অয়নের কাছ থেকে এই কথা শুনে, নেট থেকে নাটক নামালাম। নাটক দেখে মনে হলো টাকা দিয়ে বাল নামালাম। তবুও অয়নকে বললাম,"আগে প্রেম টা হোক, পরে যা হয় হবে। তুই ভালোবাসে তোর প্রেম দিয়ে ওর মন থেকে তাহশান প্রেম বাদ দিস।"

ভালো মত শিখে, দোকান থেকে ৫টাকা দরে একটি গোলাপ কিনে অয়ন গেল। আমরা লুকিয়ে দেখি।

মীরার সামনে গেল। এবার মুখের দিকে না তাকিয়ে আকাশের দিক তাকিয়ে, ফুলটা হাত দিয়ে বাড়িয়ে দিয়ে, একটানে বলা শুরু করল,

'টাহশানের মত অতনিচে নেমে লুতুপুতু করতে পারব না। আমি স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্র ভাবে ভালোবাসব। ভালোবাসা দিয়ে মুড়িয়ে রাখবো।"

মীরা কিছু না বলে,চলে গেল। আমরা তো অয়নের কথা শুনে অবাক।

মামা, কি দিলা!
কি দিলাহ?
পুরাই মাখন!
প্রেম যে পুরাই ক্ষির!

৫.
মীরা অয়নকে মেনে নিয়েছে। প্রকৃতির নিয়মে ওদের চলতে থাকে। ভালোবাসা আছে, ঝগড়া আছে, অভিমান আছে, রাগ আছে। অভিমান টা মীরার, রাগটা অয়নের। খুব বড় ঝামেলা হলে শিশু মধ্যস্থা করে। আমি শুনি। অভিঙ্গতা নেয়।

দেখতে দেখতে আজ এ পর্যায়ে। মীরা এখন ভার্সিটিতে আছে। সেকেন্ড ইয়ার।

চিন্তার জগত থেকে ফিরলাম শিশুর ফোন পেয়ে.....

-বল
-চাকরী পেয়েছি....
-কন্গ্রাটস....
-শোন, অয়নের ব্যাপার টা শুনলাম। ও নাকি রাতে ঢাকা আসছে, তুই দেখ।
-কই, আমাকে তো কিছু বললো নাহ, দেখি।

শিশু ভালো কোডিং পারত। কয়েকটা এপস বানিয়েছে। পড়া অবস্থায় কন্ডিশন এ চাকরী পেয়েছিল কিন্তু কন্ডিশন নিয়ে ও চাকরী করে নি। আমি জানতাম ও চাকরী বাধবে না। কিন্তু অয়ন এর রেজাল্ট ওত ভালো নাহ। চাকরী দেরিতে পাবে। আমি নাহোক পলিটিক্স করে পড়িনি কিন্তু ও কি করলো?

শিশুর কথায়, রুমে আসলাম। দেখি একটা কাগজে লেখা চিঠি....

"আমি মীরাকে ভালোবাসি। আর আমি চাই সন্তান টা পৃথিবীতে আসুক। কিন্তু আমি কিছু করতে পারছি না। তোকে আর মীরাকে রাগ দেখালাম। আমি ঢাকা যাচ্চি, চাকরী পাই কিনা দেখি।"

নাহ ছেলেটা আসলে চিন্তা করছে, আমার চিন্তাটা অযথা।

ঘড়িতে দেখলাম ট্রেন ছাড়তে ১৫ মিনিট বাকি। কোনমতে ব্যাগ নিয়ে দৌড় দিলাম। সিট নেই। অয়নের সিট আছে। ওর পাশে দাড়িয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ওকে হাসালাম। কিছুক্ষন যেন সব ভুলে গেলাম।

ঢাকায় শিশু নতুন ফ্লাট নিছে। ওর কাছে উঠলাম। সেদিন সারা রাত গল্প করলাম আর শেষে একটা সিদ্ধান্তে আসলাম।

"শোন, তোরা বিয়ে কর। আর একটা শিশুর বাসায় সাবলেট নিয়ে থাক। চাকরী একটা জোগাড় হয়ে যাবে। একটা টিউশনি কর, শিশু না একটু ছাড় দিল।"

-তুই আমার বাপকে চিনিস না?
-চিনি!
-তাইলে, বিয়ে করলে ত্যাজ্য করবে।
-আমের চেয়ে আটি মিষ্টি কথাটা জানিস.....

অয়নের বাপ রগচটা লোক। দপ করে লেগে যায় যেমন কোন স্থানে পেট্রোল থাকলে একটু ঘষাতেই জ্বলে ওঠে, তেমনও অয়নের বাপের মনে পুরোটা পেট্রোল ঢালা।

আমি আশা দিলাম যে, আমি সব ব্যবস্থা করছি। তুই চাকরী খোজ আর মীরাকে সান্ত্বনা দে।

৬।
আমি পলিটিক্স করার সুবাদে অনেক নেতার সাথে সেল্ফি তুলেছিলাম। তাই পলিটিক্স কাজে লাগাতে চাইলাম। তাই এক নেতা যার বড় পদ আছে দলে, শহরে একটা বড় ব্যাংক আছে, গেলাম তার কাছে। অনেক কথা বলে শেষ পর্যন্ত লাখ দুই টাকা দিয়ে একটা চাকরী ঠিক করে চলে এলাম অয়নের বাপের কাছে।

-অঙ্কেল, আসসালামু আলাইকুম।
সালামের উত্তর নিলেন মাথা ঝাকিয়ে, খোজ খবর নিলেন, কেমন একটু বিষন্ন লাগলো। বললেন, 'কিছু বলবে?'
-জ্বি, অয়নের একটা চাকরী ঠিক হয়েছে, লাখ দুই টাকা লাগবে!
একটু খুশি হয়ে উনি বিস্তারিত জানলেন। মত দিলেন।
শেষ পর্যন্ত চাকরী টা হলো।

পরের দিন মীরার বাড়িতে গেলাম।মীরার মায়ের সাথে দেখা করতে। আন্টি আমাকে চেনেনা। পরিচয় দিলাম।বললাম,

-আন্টি, মীরার বিয়ের জন্য এসেছি।
-কি?
-অয়নকে তো চেনেন?
-হা। কিন্তু তুমি কে অয়নের? ওর বাপ-মা নেয়?
-আছে. কিন্তু?
-কি? না। অয়নের সাথে আমি মেয়ে বিয়ে দেব নাহ। আমার বোনের ছেলে আছে। আম্রিকা থাকে।.............

অনেক বোঝালাম কিন্তু কাজ হলো না শেষে আসল কথাটি বললাম। আন্টি অবাক হলেন। কাঁদলেন। শেষ পর্যন্ত নারাজ থেকেও রাজি হওয়া ছড়া উপায় নেই।

আমি বললাম, "গোপনে ওরা বিয়ে করছিল বলে চাপায় দেওয়া যাবে।কাল অয়ন আর ওর বিয়ে ঢাকাতে দেব। অয়ন একটা চাকরী পেয়েছে।সংসার চলে যাবে। আঙ্কেল কে বলার দরকার নেয়।"

বিয়েটা দিয়ে দিলাম। মীরা আর অয়ন দুজনেই খুশি।

বিয়ে টাই কি ভালোবাসার সফলতা নাকি? নাকি প্রেমের সফলতা বিয়ে? নাকি সেক্স টাই সবকিছু?

জানিনা উত্তর গুলো। তবে আমি এইটুকু বিশ্বাস করি 'ভালোবাসা আশা দেখায়,
মানুষ কে বাঁচায়।
প্রেম ভালোবাসার প্রান,
সেক্স প্রেমের দান।'

যার সাথে ভালোবাসা আছে কিন্তু প্রেম নেই, তার সাথে সেক্স নেয়।

আসলে ভালোবাসা টাই কালপ্রিট।

৭।
শুক্রবার। জুম্মা শেষ করে যখন হোটেল মুখি তখন শিশুর মা ফোন দিলেন। সালাম দিয়ে ফরমাল কয়েকটা কথা বলার পর আন্টি বলা শুরু করলেন, "বাবা, শিশুর জন্য একটা মেয়ে ঠিক করেছি, বড় ভালো মেয়ে, চেহারা, জাত সব ভালো। কিন্তু শিশু নাকি বলেছে তোমার পছন্দ না হলে বিয়ে করবে না। তো তুমি একটু বলে দেখ। মেয়েটাকে তোমার সাথে দেখা করতে বলেছি। তোমাদের ভার্সিটিতেই। নাম নাবিলা।"

নাম শুনেই থ। এ কোন নাবিলা? একি সেই নাবিলা যে ১ম বর্ষে আমার ক্রাশ ছিল? যার জন্য আমার জিবনে এত গুলো সাবজেক্টস এ ফেল নিয়ে ঝুলে থাকতে হয়?

মনে আছে, দুপুরে পরীক্ষা ছিল। ওর রোল ১ আমার ২। ইলেক্ট্রনিক্স পরীক্ষা। গোসল করে ও পরীক্ষা দিতে এসেছিল। ওর চুল দেখে মুগ্ধ হয়ে লেখা বাদ দিয়ে ওর চুলের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

মনে মনে ভাবলাম, এই নাবিলা যদি হয় তাহলে সরাসরি বলে দেব শিশুকে বিয়ে না করতে। কারন এদের কেবল পড়ালেখার মেধা আর রুপের সৌন্দর্য আছে, ভালোবাসা নেই। আর যদি বিয়ে করে শিশু তাহলে তো আমি ওর বাড়িতে যেতে পারব না। কারন কুনজর হতে পারে।

সব পুরুষের দুইটা নজর আছে, নজর আর কুনজর। সুনজর বলে যা আছে ঐটা অভিনয়।

যেতে যেতে ভাবলাম, দুর থেকে দেখবে যদি অন্য নাবিলা হয় তাহলে কবি সাজবো, ছন্দে ছন্দে শিশুর প্রশংসা করব। আর যদি আমার নাবিলা হয় তাহলে দার্শনিক সাজবো। কড়া কড়া কথা বলবো।

কাছে গিয়ে দেখি আমার নাবিলা। আমার বলা ভুল হবে,প্রেম তো হয়নি,কেবল মোহ ছিল।

কাছে গেলাম....
-কেমন আছো?
-ভালো। তুমি?
-ভালো থাকা আমার পেশা।
আরো অনেক ফরমাল কথার পর আসল কথা বলল, "আসলে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে শিশু'র সাথে। কিন্তু তুমি হতে দিবে না জানি। কেননা, তুমি আমাকে পছন্দ করতা আমি জানি।........."

আরও অনেক কথা। মেয়েটার প্রথম ক্রাশ বলে ফেলতে পারলাম না কথা। বললাম, 'ঠিক আছে বিয়ে হবে'।

৮.
প্রথম শর্ট শেষ। মীরা-অয়নের মেয়ে হয়েছে। শিশু-নাবিলা বিয়ে হয়েছে। পত্রিকার সম্পাদক আমার বেতন বৃদ্ধি করেছে। দিনকাল কেটে যাচ্ছে কোন মতে।

হঠাত একদিন মনে হলো.....
মীরা-অয়ন সুখে আছে......কিন্তু
মীরা বা অয়ন এর বয়স যদি কম হতো তাহলে এবোর্সন ছাড়া কি উপায় ছিল?
চাকরী টা না পেলে?
মীরার মা না মানলে? শুনেছি যেদিন মীরার মেয়ে হয়েছে, সেদিন নাকি দুপক্ষে মিলন মেলা হয়েছে।

আবার শিশুকে যদি বিয়ে করতে না দিতাম? বিয়ে না হলে কি আমার সাথে বিয়ে হতো? জানিনা।

অয়ন ও মীরা আলাদা থাকে। মীরা আমাকে দেখলে লজ্জা পায় বলে ওদের বাড়িতে যাওয়া হয় না।
আর কুনজর পড়বে বলে নাবিলা'র বাসায় যাওয়া হয় না।

পৃথিবীর ভালোবাসা গুলো ভালো থাকুক। আমারও ইচ্ছা হয় একটা সংসার হবে, ফুটফুটে একটা বাচ্চা থাকবে....সুখ-শান্তি থাকবে।

অনেকদিন মা'র সাথে কথা বলা হয় না মন খুলে। আজ বলব। বলব, 'মা বিয়ে করতে চাই, তোমাকে নাতি-নাতনীর মুখ দেখাতে চাই.....ইত্যাদি।"

ভালো থাকুক পৃথিবীর ভালোবাসা গুলো।
প্রেমের বাতাস বয়ে নিয়ে আসুক বৃষ্টি ফোটগুলো।
জিবনে সুখ বয়ে আসুক।
কবিতা ফিরে পাক কবির প্রেম।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:১৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ ! কি সুন্দর মন ভালো করা লেখা ।
সবার জীবনে এমন একজন ম্যাজিকম্যান আসুক ; গল্পের ম্যাজিক ম্যানের জীবনে ও ।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪১

রিফ্রাক্শন বলেছেন: ধন্যবাদ, মনিরা সুলতানা। কিছু কিছু সময় জীবনে ম্যাজিক ম্যানের দরকার।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪১

রিফ্রাক্শন বলেছেন: ধন্যবাদ, মনিরা সুলতানা। কিছু কিছু সময় জীবনে ম্যাজিক ম্যানের দরকার।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:২৩

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ রাত্রী,
এত রাতে আপনার এই গল্প পড়ে তো আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম!
দারুন লিখেছেন! লেখার ফ্লো ভালো!
বাস্তববাদী গল্প! দুর্দান্ত প্লট!
আপনার এই লেখা আমার আগে চোখে পড়ল না কেন?
হুম, আপনার বাকী লেখা গুলিও পড়তে হবে....
ধন্যবাদ এবং আপনার জন্য শুভ কামনা রইল!

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৯

রিফ্রাক্শন বলেছেন: ধন্যবাদ। লেখার চেষ্টা করি। নিজের কল্পনাকে তুলে ধরি এই আর কি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.