নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

হু ওয়ান্টস টু বি আ বিলিয়নেয়ার?

০৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭

শেষমেশ অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মা-কে ঢাকা আসতে রাজী করানো গেল। তিনি বেশ অসুস্থ। দীর্ঘদিন থেকেই তিনি চিকিত্সকের তত্তাবধানে আছেন। তবু রি-চেক আপের জন্য তাঁর ঢাকা আসা ভীষণ জরুরী হয়ে পরেছিল। কিন্তু তাঁর এক কথা। ‘বাঘের খাঁচায় আর যাব না’। আমিও নাছোরবান্দার মত লেগে ছিলাম। অবশেষে আর একটা দুঃসংবাদ সবাইকে ঢাকা আসা বাধ্যতামূলক করে দিল। তাহলো, প্রচন্ড গরমে আব্বা আব্বা বেশ অসুস্থ হয়ে পরলেন। এর আগে আব্বা ঢাকা আসার জন্য রাজী থাকলেও মায়ের জন্য হচ্ছিল না। আব্বার হঠাৎ অসুস্থতা সব বাঁধা দূর করে দিল। এমতাবস্থায় আম্মার আর ‘না’ বলার অবকাশ রইলো না।

গত ৩০-০৪-২০১৪ তারিখে উনারা সবাই রওয়ানা হয়ে গেলেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। আমি অফিস থেকে ছুটি নিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আব্বা-মায়ের সাথে আলাপ হলো। জানলাম উনারা সকাল ৯টার দিকে রওনা হবে। আনুমানিক বেলা ২-৩টার মধ্যেই ঢাকা পৌঁছে যাবার কথা। সে অনু্যায়ী ঐদিন সকাল সকাল নাস্তা সেরে প্রস্তুতি নিতে থাকলাম। উনারা যে রুমে থাকবেন সে রুম ভালভাবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা, বিছানাপত্র গোছগাছ, বালিশ-কাঁথা রোদে শুকানো, বাথরুম ভাল করে ওয়াশ করা ইত্যাদি কাজে লেগে গেলাম। বুয়াদের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়া সমীচীন নয়। তাছাড়া আব্বা-মায়ের সেবা করার সুযোগ হাতছাড়া করার কোন মানেই হয়না। যাক, সব কিছু ঠিকঠাকই মনে হলো। এ সময়ে হঠাৎ চোখে পড়ল রুমের ফ্যানে হালকা ধুলা জমেছে। অনেকদিন হলো এই রুম খালিই পড়ে থাকে। অনাবাদে আগাছা জন্মে। তাড়াতাড়ি ফ্যান পরিস্কারে লেগে গেলাম। পরিচ্ছন্নতা অভিযান শেষ হলে বাদবাকী ছোটখাটো কাজ সেরে আব্বা-মায়ের প্রতীক্ষায় অধীর হয়ে সারা ঘরময় পায়চারি করতে লাগলাম। ভেতরে ভেতরে চরম আনন্দময় এক অনুভূতি কাজ করছিল। বাব-মাকে সামান্য সেবা করার সুযোগ পাব-এটা মনে হতেই অন্যরকম এক ভাললাগায় মনটা ভরে উঠছিল। আবার ব্যাপক টেনশনো হতে লাগলো। কারণ এত গরমে তাদের আসা ভীষণ কস্টকর হয়ে না যায়!

এ সময় মনে হলো, এভাবে টেনশন না করে বরং টিভি দেখে সময় কাটানো যেতে পারে। যেই ভাবা সেই কাজ। টিভি অন করে চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে হঠাৎ দেখলাম কি একটা চ্যানেলে ‘Slumdog Millionaire’ সিনেমাটি হচ্ছে। আমার ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। কারণ খেয়াল করলাম সিনেমাটি বড়জোড় কয়েক মিনিট আগে শুরু হয়েছে। এটা আগেও দেখেছি। তবে অবাক করা ব্যাপার হলেও সত্য, পুরো সিনেমা কখনোই দেখা হয়ে ওঠেনি। তাই অত্যন্ত আগ্রহসহকারে সিনেমা দেখতে বসে গেলাম। সময় কাটবে বিনোদনও হবে। এক ঢিলে দুই পাখি মারা আর কি।

যাইহোক, নিজে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষ। তাই খুব আগ্রহভরে কোটিপতি হওয়ার কাহিনী দেখতে থাকলাম। জামাল মালিক (ডেভ প্যাটেল) যখন লাস্ট প্রশ্নটার সঠিক জবাব দিয়ে মিলিয়নেয়ার হয়ে গেল তখন মনে হচ্ছিল ওই টাকা বুঝি আমারই। হাহাহা। সিনেমা শেষ হলেও মনের মধ্যে এর রেশ অনেকক্ষণ থেকে গেল। মনের মধ্যে একটা দুরাশা জাগলো, ‘আহারে! আমি যদি Millionaire হতাম!

আচ্ছা কিভাবে Millionaire হওয়া যায়? অনেক অনেক পরিশ্রম করে? অন্যেরটা মেরে দিয়ে? নাকি ঘুষ, দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত হয়ে? হয়ত এর সবগুলোর মিলিত ফল আপনাকে করে তুলতে পারে মাল্টি Millionaire বা এরচেয়েও বেশী কিছু। এসব অবান্তর চিন্তা করতে করতে আচমকা Millionaire নয় একেবারে মাল্টি বিলিয়নেয়ার হওয়ার এক চমত্কার আইডিয়া মাথায় এলো। কি সেই আইডিয়া? সেটাই বলার জন্য এই আয়োজন। তার আগে চলুন দেখি আমার আব্বা-মা কতদুর।

সিনেমা দেখার ফাঁকে ফাঁকে বার কয়েক আব্বা-মায়ের খবর নিয়েছি। উনারা আল্লাহর রহমতে বেশ ভালভাবেই আসছেন। তবে প্রচন্ড গরম তাদের বেশ ভোগাচ্ছে জেনে মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল। এর মধ্যে বেলা ২টা পার হয়ে গেল। আবার খবর নিলাম। যা খবর পেলাম তাতে ধরে নিলাম আর আর মাত্র পনের মিনিটের মধ্যে উনারা আমার বাসায় পৌঁছে যাবেন ইনশাআল্লাহ। মনের মধ্যে আবার সেই অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি ফিরে এলো। আমি অধীর হয়ে আমার কা’বা দর্শনের অপেক্ষায় প্রতিটা ক্ষণ কাটাতে লাগলাম।

... অবশেষে, বাসার নিচে গাড়ির শব্দ। দৌড়ে নিচে চলে গেলাম। আব্বা-মাকে দেখে বুকটা হুহু করে উঠলো। কি ছিলেন আর কি হয়েছেন। মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে কত চেঞ্জ হয়ে গেছেন তারা। বিশেষ করে আব্বার অবস্থা তো বেশ খারাপ। অনেক যত্নে তাদের উপরে উঠালাম। রুমের নিয়ে শুইয়ে দিলাম। ...খাওয়া-দাওয়া সেরে তারা আরাম করতে লাগলেন।

ওকে, এবার চলুন আইডিয়াতে ফিরে যাই। আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে আমি একটা বিশেষ সুখবর শেয়ার করতে চাই। তাহলো, চাইলেই কিন্তু আপনি হতে পারেন মাল্টি বিলিয়নেয়ার। কিভাবে? স্রেফ পিতা-মাতার হাত ধরে। অনেকেই হয়ত ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করতে পারেন, মাল্টি বিলিয়নেয়ার হওয়ার সাথে বাবা-মায়ের সম্পর্ক কি? আছে, সম্পর্ক আছে। বিস্তারিত ব্যাখ্যার আগে চলুন কিছু নিয়ম কানুন জেনে নেই।

এই খেলায় অংশগ্রহণ করতে হলে আপনার মাত্র একটি জিনিষ লাগবে। তাহলো, বাবা-মায়ের জন্য অপরিসীম, বুক ভরা ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। আশা ও বিশ্বাস করি এটা সকলের মধ্যেই আছে।


লেখার উপরের অংশটুকু লিখেছিলাম আজ থেকে এক বছর আগে। আর এইটুকু লিখছি আজ। উপরের অংশে আমি কি কি লিখেছিলাম তা আজ নানা কারণে পুরোপুরি মনে নেই। গত এক বছর লেখাটি অমনিই পড়ে ছিল। প্রচন্ড ভয়ে আমি দ্বিতীয়বার পড়ার সাহস পাইনি। আজ বহু কস্টে আবার লিখতে বসেছি।

খুব বেশী কথা বাকী নেই। মা-বাবা ঢাকায় আসার সপ্তম দিনের মাথায় ৮ মে সকাল ৬: ৫০ মিনিটে সকল বন্ধন ছিন্ন করে আমার জন্মদাত্রী, প্রাণপ্রিয় মা আমার বুকের মধ্যে আমাদের গোটা পরিবারকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজীউন। আল্লাহ আমার প্রাণপ্রিয় মা কে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন। আমিন।

সুপ্রিয় ব্লগারগণ, বিলিয়নিয়ার হবার কৌশল নিয়ে বলতে চেয়েছিলাম। আপনাদের সবার হাতেই হয়ত এই সুযোগ আছে। সবাই বাবা-মাকে জান-প্রাণ-মাল দিয়ে ভালবাসুন। বাবা-মা-ই আমাদের জন্য বেহেশত-দোযখ। উনাদের পদতলেই আমাদের বেহেশত। আমাদের নবীজী সাঃ আমাদের জানিয়েছেন যে, বাবা-মা কে পেয়েও যে বেহেশতে হাসিল করতে পারল না সে হতভাগা।

আর কিছু বলতে পারছি না। আমার প্রাণপ্রিয় মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন। দুনিয়ার সকল মা কে আল্লাহ বেহেশত দান করুন। আমিন।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৯

সোনালি সময় বলেছেন: আল্লাহ্‌ আপনার মা কে জান্নাত দান করুন। আমীন

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

২| ০৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: আসলেই, বাবা-মার উপস্থিতি শত কোটি টাকার চেয়েও মূল্যবান। প্রার্থনা রইলো।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

৩| ০৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:০২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: হাসান মাহবুব বলেছেন: আসলেই, বাবা-মার উপস্থিতি শত কোটি টাকার চেয়েও মূল্যবান। প্রার্থনা রইলো।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

৪| ০৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন ভাই.। আমার বাবা নেই, সেই ২০০২ সাল থেকে। মা এখনো আছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমার মা আমাদের ৬ ভাই বোনের কাছে পৃথিবীর সেরা সুখি মা-দের একজন হিসেবে আছেন।
দোয়া কইরেন ভাই।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩০

ইছামতির তী্রে বলেছেন: মহান আল্লাহ আপনার বাবা কে বেহেশত নসীব করুন। আমিন

আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
ভাল থাকবেন।

৫| ০৭ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫

এস আলভী বলেছেন: অনেক প্রতিক্ষার পর ফ্রন্টপেইজ একসেস দেওয়ায় ব্লগ কর্তৃপক্ষকে গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আপনার লেখায় আমি আজ প্রথম মন্তব্য করার সুযোগ পেয়ে গর্ব বোধ করছি।
নতুন ব্লগার হিসাবে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।

হ্যাপি ব্লগিং।

৬| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:১২

কেএসরথি বলেছেন: :(

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।

৭| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:৩০

ওয়্যারউলফ বলেছেন: আপনার মা জান্নাতবাসীনি হউন।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

৮| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০১

নতুন বলেছেন: যারা বাবা/মা কে সন্মান করেনা... তাদের অবহেলা করে তারা মানুষই না...

আপনার মা জান্নাতবাসীনি হউন।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৯

ইছামতির তী্রে বলেছেন: একমত।

আমিন।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

৯| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০১

তিথীডোর বলেছেন: চোখে পানি চলে এলো আপনার লেখা পড়ে....কথা গুলো অসম্ভব সত্য!..আল্লাহ আপনার আম্মাকে বেহেশ্‌ত নসীব করুক!

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪০

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

১০| ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৩:২৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: আল্লাহ্‌ আপনার মাকে জান্নাত দান করুন।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪০

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

১১| ০৮ ই মে, ২০১৫ ভোর ৫:৫৭

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আমাদের সমাজটাও বেশ আধুনিক হয়ে গেছে। প্রায়ই শুনি ছেলেরা না কি বাবা মাকে খাবার দিতেও চায়না। ধনীরা ব্যপারটা অন্যভাবে এড়িয়ে যায়। অথচ একজন মানুষের খাবার খরচ আর কতই বা!!!

লেখকের জন্য শুভকামনা। ভাল থাকবেন যেখানেই থাকুন।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার কথা সত্য। সমাজের মানুষগুলো ধীরে ধীরে নস্ট হয়ে যাচ্ছে।

আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।

১২| ০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:১২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আল্লাহ আপনার আম্মাকে বেহেশত নসীব করুন।

১০ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমিন।

মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি গিয়েছিলাম। এজন্য উত্তর দিতে একটু দেরী হলো।

ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.