নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ‘রংধনু বিষয়ক’ পোস্ট।

০১ লা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৩

‘বল ত, রংধনুর রঙ কয়টি’? আমরা সমস্বরে চিৎকার করে বলতাম, ‘সাতটি’। স্যার তখন জিজ্ঞেস করতেন, ‘সাত রঙয়ের নাম বলতে পারবে কে কে’? আমরা ক্লাশের বেশীরভাগই সব কয়টির নাম বলতে পারতাম না। কেমন যেন গুলিয়ে যেত। স্যার তখন নামগুলো মনে রাখার একটা টেকনিক শিখিয়ে দিতেন। আর সেটা হলো, বে নী আ হ স ক লা। সবগুলো নামের আদ্যাক্ষর। আমার ধারণা আপনাদের সবারই স্কুল জীবনের অভিজ্ঞতা প্রায় একই রকম। বৃষ্টির পরে আকাশে ভেসে উঠত রংধনু। আর তা দেখে গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই খুশিতে নেচে উঠত।

সম্প্রতি গোটা বিশ্ব রংধনু বা রামধনু বা ইন্দ্রধনুর সাত রংয়ে আবিস্ট। আমরাও এর বাইরে নয়। তবে এটা আমাদের ছোটবেলায় পড়া সেই ‘দৃশ্যমান ধনুরাকৃতি আলোর রেখা যা বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলকণায় সূর্যালোকের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণের ফলে ঘটিত রংধনু’ নয়। সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে সূর্যের বিপরীত দিকে রংধনু দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঝড় তোলা এই রংধনু শুধুমাত্র আমেরিকার হোমোদের মনের আকাশে উঠেছে। সাতটি রঙের মাঝে তারা ব্যাপক মিল খুঁজে পেয়েছে। যাইহোক, প্রায় ৩০০০ বছর আগে নিস্পতি হয়ে যাওয়া এই বিষয় নিয়ে বেশী কিছু বলার নেই। আমেরিকা কোন ইসলামিক কান্ট্রি নয়। ওদের দেশে কি আইন পাশ হলো না হলো এতে সত্যিই আমাদের কিছু যায় আসে না। আমি বরং ভিন্ন এক আইডিয়া নিয়ে আপনাদের দরবারে হাজির হয়েছি।

নানা কারণে বেশ কিছুদিন ব্লগে লেখালেখি হচ্ছে না। যদিও প্রায় প্রতিদিনই সামুতে ঢু মারি, সুন্দর সুন্দর লেখাগুলো পড়ি। কিন্তু লেখা দেয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি রংধনু নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হওয়াতে একটা আইডিয়া মাথায় এলো। সেটা হলো, সাম্প্রতিক সময়ে আমার ফেসবুক পেজে লেখা ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা সাতটি স্ট্যাটাস আপনাদের সাথে শেয়ার করা। মূলত এটাই হলো আমার ‘রংধনু বিষয়ক’ পোস্টের মূল কাহিনী। ত, চলুন শুরু করা যাক।

১. ভাবতেছি আগামী রমজান মাসে ধইন্যা পাতা, বেগুন আর কাঁচা মরিচের সিজনাল ব্যবসা করব।

২. ছোটবেলায় দেখতাম গ্রামের মহিলারা দীর্ঘদিন যাবত পুটলী করে রাখা ময়লা কাপড়গুলো ক্ষার দিয়ে ধুত। ক্ষার দিয়ে ধোয়ার প্রক্রিয়াটা একটু বোঝাতে হবে। এর জন্য দরকার বড়সড় একটি পাতিল, ক্ষার সোডা এবং পানি। প্রথমে চুলায় পানি চড়িয়ে তাতে পরিমাণমত ক্ষার সোডা মিশিয়ে টগবগ করে ফুটানো হত। ঐ ফুটানো পানিতে কাপড়গুলো খুচিয়ে খুচিয়ে চুবিয়ে অনেকক্ষণ রাখা হত। পরে কাপড়গুলো পুকুরঘাটে নিয়ে শান বাধানো ঘাটে অথবা পিঁড়িতে করে পিটিয়ে পিটিয়ে [ছবির মত] ধৌত করা হত। কাপড় পিটানোর সেই ‘টাস টাস’ শব্দ যেন এখনো শুনতে পাচ্ছি।

ভারতের ময়লা তাড়াতে এমন ধোলাই ছাড়া উপায় কি??? আজ হবে কি ‘বাংলাওয়াশ’?


৩. একটা সময় ছিল যখন ফুটবল/ক্রিকেট উভয় খেলাতেই আমরা ‘লাইভ’ থাকতাম রেডিও ধারাভাষ্যের মাধমে। ‘সরাসরি সম্প্রচার’ এর জন্য সবেধন নীলমণি বিটিভিই ছিল একমাত্র ভরসা। আকাশ-সংস্কৃতি কেবল আসি আসি করছে। যাইহোক, রেডিওতে ধারাভাষ্য শুনেও খেলার আসল মজা পেতে আমাদের খুব একটা অসুবিধা হত না। কারণ তখনকার দিনে ধারাভাষ্যকারগণ ছিলেন এককথায় অসাধারণ। সর্বজন শ্রদ্ধেয় সর্বজনাব আব্দুল হামিদ, মিন্টু, খোদা বক্স মৃধা, আলফাজ আহম্মেদ সর্বভাই সহ আরো অনেকে। আর সময়ের সাহসী, জীবন্ত কিংবদন্তী, স্মনামখ্যাত, স্বণামধণ্য, প্রখ্যাত, বিখ্যাত চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফত ভাই ত ছিলই!! এরা ছিলেন একেক জন কথার যাদুকর। একটা সাধারণ খেলা তাদের অসাধারণ শব্দচয়নে, চমৎকার বাক্যবিন্যাসে, মধুর কন্ঠস্বরে, পরিমিত রসবোধে, নানা তথ্য-উপাত্তে তা যেন হয়ে উঠত জীবন্ত। তাই আমরা মাঠে না থেকেও এর স্বাদ উপভোগ করতাম পুরোপুরিভাবে। এ সকল মহারথীদের বেশীরভাগই আজ আমাদের মাঝে নেই। গভীর শ্রদ্ধাভরে আমরা তাদের স্মরণ করছি।

হায়! বাংলাদেশ দলের এমন অভুতপূর্ব পারফরমেন্স রসিয়ে রসিয়ে বলার মত লোক আমাদের নেই! অবশ্য হিন্দী ভাষায় ভারতের পরাজয় শুনতে কি যে মজা লেগেছে!!!

৪. "আমি সহজ কথায় যা বুঝি, তা হচ্ছে মূসা আ: এলেন এবং সরকারকাঠামো প্রতিষ্ঠা করলেন। অপর দিকে ঈসা আ: এসে মানুষকে আধ্যাত্মিক জীবনের সন্ধান দিয়েছেন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়াই। খ্রিষ্টানরা পরবর্তীকালে এটা যোগ করেছে। নবী মুহম্মদ সা: এলেন। তিনি এমন একজন, যাঁর ‘পার্থিব’ ও ‘আধ্যাত্মিক’ দু’টি দিকই আছে। তিনি উভয়কে একত্র করেছেন। স্রষ্টা বিশ্বকে ভালোবাসেন এবং এর পরিচর্যা করেন। অতএব আপনাদেরকেও অবশ্যই এ কাজ করতে হবে। একই বিধাতা নবীদেরকে পাঠিয়েছেন"।

মহান আল্লাহতায়ালের প্রেরিত প্রধানতম তিনজন নবী ও রাসুল (সবার উপর শান্তি বর্ষিত হোক] সম্মন্ধে অতি সংক্ষিপ্তভাবে এই অসাধারণ বিশ্লেষণ করেছেন প্রখ্যাত মার্কিন ধর্মতত্ত্ববিদ ও গবেষক প্রফেসর ওয়াল্টার ওয়াগনার। তিনি আরো বলেছেন ‘কুরআনে মহান স্রষ্টাই আমাদের উদ্দেশে কথা বলছেন’। তার পুরো সাক্ষাতকার পড়তে কমেন্টের লিঙ্কে যেতে পারেন।

link

৫. ‘বিকাশ বিকাশ বিকাশ’ কিংবা ‘উন্নয়ন উন্নয়ন আর উন্নয়ন’ দিয়ে ভরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দিতে দেয়া ভাষণ শুনলাম। কোন সন্দেহ নেই ভাষণটা সুন্দর (সিনেমাটিক) ছিল। অনেকে অবশ্য তার হিন্দিতে ভাষণ দেয়া নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা করছেন। কেন রে ভাই? হিন্দি যে আমাদের ‘সিনেমা/সিরিয়ালের ভাষা’ এটা কি তিনি জানেন না? বরং আমার মতে, ঐভাবে ষাড়ের মত করে হিন্দি ভাষণের বাংলা ডাবিংয়ের দরকারই ছিল না। বাংলাদেশের ছেলে-বুড়ো সবাই হিন্দি জানে। আর একটা ভাষা জানা খারাপ কিছু না।

যাইহোক, গোটা প্রোগ্রামের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বিশ্রী লেগেছে নরেন্দ্র মোদির কথা শেষ হবার আগেই গোটা হলরুম জুড়ে হাততালি/করতালির অতিশয় বাগারম্বরতা। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ এযাবত প্রাপ্ত সমস্ত তৈল যেন কালকের হলরুমে উপস্থিত সকলের চোখে-মুখে জড়ো হয়েছে।

এত তৈল তোরা কৈ পাস রে???

৬. রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে_ সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা। তবে, ওখানকার রাজসভার বাংলা সাহিত্যের লেখকরা ঐ রাজ্যকে রোসাং বা রোসাঙ্গ রাজ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। ‘মগের মুল্লুক’ কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়।

দুটি সম্প্রদায়ের পরিচয় আসল পরিচয় জানা গেল। মগরা, মগদের মত আচরণই করছে। এর প্রমাণ, জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী।

হে আল্লাহ, রোহিঙ্গাদের মগের মুল্লুক থেকে উদ্ধার করো। তাদের প্রতি রহম করো।
[তথ্য সুত্রঃ উইকিপিডিয়া]

৭. “যদি ‘আল্লাহ’ শব্দ লেখা কোন কাগজের টুকরো রাস্তার ওপর পড়ে থাকে, তাহলে একজন মুসলিম সযত্নে সেই টুকরোটা তুলে নিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে সেটি কোন দেয়ালের গর্তের মধ্যে রেখে দিচ্ছে আজও এ দশ্য মোটেও বিরল নয়”। এই পংক্তিগুলো নেয়া হয়েছে পি. কে. হিট্ট্রি’র সুবিখ্যাত গ্রন্ত ‘দ্যা হিস্ট্রি অব আরবস’ থেকে। আমি স্বয়ং বহুবার এটি করেছি।

সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয় বীর বাঙ্গালীর ‘চরম আরামে’ ব্যাঘাত ঘটানোর উদ্দেশ্যে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে একথা সবাই জানেন। বাংলার আরামপ্রিয় মানুষ মনের সুখে ঠ্যাং উচিয়ে একটু ‘ত্যাগ’ করবে তারও জো নেই। যাইহোক, আমি ভাবছি একদল ‘সারমেয়’ টাইপের মানুষের যত্রতত্র জলবিয়োগ ঠেকাতে শেষ অবধি আরবী ভাষাকে সম্মুখ সমরে এগিয়ে দেয়া কি ঠিক হচ্ছে? এ কথা সত্য যে, বেশীরভাগ মানুষের আরবী ভাষার প্রতি মানুষের প্রগাঢ় শ্রদ্ধাবোধ আছে। কিন্তু বেগ যখন চরমে পৌছাবে তখন মানুষ ‘জলত্যাগ’ করবেই। কেননা ‘স্বভাব যায় না মলে’। পাশাপাশি আমাদের সমাজে এমন লোকেরও অভাব নেই যারা বুক ফুলিয়ে বলবেন (বলেছেন অলরেডি), ‘এর চেয়ে মুতের গন্ধই ভাল’। তারা হয়ত ‘আরবীকে মুত দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছি’ বলে ফেবুতে স্ট্যাটাসই দিয়ে বসবে। কাজেই মন্ত্রণালয়কে সবিনয়ে বলব, এর পাশাপাশি এহেন ‘মুতনেওয়ালাদের’ রুখতে ঢাকা শহরে অধিক পরিমাণে পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা, আইনের যথাযথ প্রয়োগ, গণসচেতনতা বদ্ধি ইত্যাদিও করতে হবে। নাহলে একটা ভাষা বাঙ্গালীর স্বভাব বদলাতে পারবে বলে মনে হয়না।

রংধনু নিয়ে লেখা পড়তে এসে আমার বস্তাপচা লেখার মুখোমুখি হতে হলো। কি আর করা!
ও হ্যা, ভাল লাগলে ‘লাইক’ দিতে ভুইলেন না কিন্তু!

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:



লাইক দিলাম। স্ট্যাটাসগুলো সত্যিই চমৎকার।

০১ লা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:২৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.