নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রুসেডের অন্যতম মহানায়ক, মঙ্গোলদের ত্রাস এবং গুপ্তঘাতকদের অভিশাপ সুলতান বাইবার্স “দ্য প্যান্থার”।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

বাইবার্স (খ্রীঃ ১৪ অক্টোবর ১২৬০- ০১ জুলাই ১২৭৭) ছিলেন মিশরের মামলুক বাহরী সাম্রাজ্যের চতুর্থ সুলতান। তিনি ছিলেন মামলুকদের মধ্যে সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন। তিনিই ছিলেন মামলুক শক্তির সত্যিকারের প্রতিষ্ঠাতা। একই সাথে তাঁকে দূর্ধর্ষ মঙ্গোল বাহিনী, ক্রুসেডার, বার্বার, গুপ্তঘাতক (Assasin) সম্প্রদায় এবং অন্যান্য বাহিনীর সাথে বহু যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয় এবং তিনি প্রত্যেকটি যুদ্ধে জয়লাভ করে ইসলামী খিলাফতকে সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেন। এর মধ্যে ক্রুসেডারদের আক্রমণ প্রতিহত করে তিনি অত্যন্ত খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর বীরত্বের ফলেই ফ্র্যাংক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাঁর পরবর্তী দুইজন সুলতান সেইজন্য ক্রুসেড যোদ্ধাদিগকে পরাজিত করতে পেরেছিলেন। সুলতান হবার পূর্বেই বাইবার্স আইন-জালুতের প্রান্তরে মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অসামান্য রণদক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ইসলাম তথা বিশ্ব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

সুলতান বাইবার্স ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজেতা হয়েও স্রেফ প্রচারের অভাবে তিনি আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের নিকট অনেকটাই অপরিচিত। অকোতুভয় এবং আপোষহীন সেই যোদ্ধাকে কিঞ্চিত পরিচিত করাতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবনঃ
সুলতান বাইবার্স ভলগা এবং উরাল নদীর মধ্যবর্তী দশথ-ই-কিপচাক/কুমেনিয়া (আজকের কাজাখস্থান) কুমেনিয়ায় ১২২৩ সালের ১৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। এই তুর্কোমানের বাল্যকাল অতটা সুখকর ছিল না। তাঁকে ক্রীতদাস হিসেবে খুব অল্প বয়সে ৮০০ দিরহামের বিনিময়ে দামাস্কাসে বিক্রি করে দেয়া হয়। কিন্তু তাঁর নীল চোখদুটির একটিতে খুত থাকার জন্য তাঁকে আবার ফিরিয়ে দেয়া হয়। আয়ুবিদ সুলতান আল-সালিহের অধীনে আসার পর প্রথমে তাঁর স্থান হয় সুলতানের দেহরক্ষীদের একটি বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা ‘আইতাকিন বান্দুকদার’ নামক এক সেনানায়কের নিকট-হামাহ্‌তে। সেখান থেকেই নিজের বাহুবল ও যোগ্যতায় ক্ষমতার চূড়ায় ওঠেন তিনি। দীর্ঘকায়, কৃষ্ণবর্ণ, নীল চোখের এই নেতা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও কমচঞ্চল। গমগমে কন্ঠস্বরে ছিল কর্তৃত্বের সুর। এক কথায় জননেতার সব গুণই তার মধ্যে ছিল।

সিংহাসনে আরোহণঃ
সুলতান হবার পূর্বেই বাইবার্স আইন-জালুতের প্রান্তরে মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অসামান্য রণদক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ইসলাম তথা বিশ্ব ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। বাইবার্স এর আশা ছিল বীরত্বের পুরস্কার হিসেবে সুলতান কুতুয তাঁকে আলেপ্পোর শাসনভার দেবেন। কিন্তু সুলতান তাঁর সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেননি। পরে এক ষরযন্ত্রের মাধ্যমে সুলতান কুতু্য নিহত হলে ১৪ অক্টোবর ১২৬০ খ্রীস্টাব্দে সুলতান কুতুযের স্থলাভিষিক্ত হন সুলতান বাইবার্স।

নাম ও পদবীঃ
সুলতান বাইবার্স ক্ষমতায় আরোহণ করেই আল-মালিক-উজ-জাহির (বিজয়ী), রুকন উদ-দীন (ধর্মের স্তম্ভ) এবং আবু আল-ফুতুহ (বিজয়ীদের পিতা) নাম ও পদবী গ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নামটি ছিলঃ আল-মালিক আল-জাহির রুকন আল-দীন বাইবার্স আল-বান্দুকদারী আবু আল-ফুতুহ। প্রকৃতপক্ষে বান্দুক অর্থ ‪‎আড়ধনু‬। তিনি বান্দুকদার” উপাধিটি পেয়েছিলেন তাঁর তীরন্দাজ মনিব ‘আইতাকিন বান্দুকদার’ এর কাছ থেকে যার মানে আড়ধনুকদারীর মালিকানাধীন (বান্দুকদারী)।

রণাংগনে সুলতান বাইবার্সঃ
সুলতান বাইবার্স ছিলেন একজন অকোতুভয় যোদ্ধা। তাঁর অসাধারন রণনৈপূণ্যে মামলুক সালতানাত দূর্ধর্ষ বার্বার, মঙ্গোল, ক্রুসেডার এবং গুপ্তঘাতকদে হাত থেকে নিরাপদ হয় পরবর্তী আড়াই শত বছর পর্যন্ত।

যোদ্ধা হিসেবে প্রথম জয়ের স্বাদ পান আয়ন জালুতের রণক্ষেত্রে। মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে। এটা সে সময়ের ঘটনা যখন গোটা সভ্য জগতই মঙ্গোলদের হামলায় কেঁপে উঠেছিল। ঐতিহাসিক গীবন তার “Decline and fall of Roman Empire” নামক বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন-“সুইডেনের অধিবাসীরা রাশিয়ানদের মারফত মঙ্গোল ঝাঞ্চার খবর শুনে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত মঙ্গোলদের ভয়ে তারা তাদের চিরাচরিত অভ্যাস পরিত্যাগ করে ইংল্যান্ডের সমুদ্রকূলে মৎস্য শিকার বন্ধ করে দিয়েছিল।”

কোন কিছুই যেন মঙ্গোলদের অগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করতে পারছিল না। Cambridge History of Medieval Age নামক বইয়ের লেখকগণ লেখেন, “মঙ্গোলদের আক্রমণ প্রতিরোধ করা ছিল মনুষ্য-শক্তিবহির্ভূত। মরু প্রান্তরের সমস্ত বাধা-বিপত্তি তাদের কাছে হার মানে। পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, সমুদ্র ও আবহাওয়াগত প্রতিবন্ধকতা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী কিছুই তাদের যাত্রা পথে বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি। যে কোন দুর্গই তাদের আক্রমণের মুখে টিকতে পারত না। নিপীড়িত ও মজলুম কোন আদম-সন্তানের ফরিয়াদই তাদের হৃদয়ে দাগ কাটত না।

হঠাৎ করেই যেন তখন ক্ষমতার রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হন সাহসী ও বীর সুলতান কুতুয ও তাঁর সেনাপতি বাইবার্স। ১২৬০ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর (৬৫৮ হিঃ, ২৫ রমজান) গাযার কাছে আইন জালুতে উভয় বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি হয়। তীব্র ও প্রচন্ড রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাইবার্সের নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনী মোঙ্গলদের পরাজিত ও বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়। এভাবে “তাতারীদের পরাজয় অসম্ভব”- এই প্রবাদ বাক্য মিথ্যায় পর্যবসিত হয়।

এ যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। এ সম্পর্কে মিসরীয় ঐতিহাসিক মুহম্মদ আবদুল্লাহ ইনান বলেন, ‘‘আইন জালুতের যুদ্ধ কেবল মিসর ও ইসলামের ইতিহাসে নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। এ যুদ্ধে ধ্বংসাত্মক মোঙ্গল শক্তি প্রাচ্য ও প্রতিচ্যকে সমভাবে বিপদগ্রস্ত করেছিল। যদি মোঙ্গলগণ মিসর জয় করতে সমর্থ হতো, তাহলে তারা উত্তর আফ্রিকা, স্পেন এবং সম্ভবত ইউরোপের অভ্যন্তরেও প্রবেশ করে যুগপৎ প্রাচ্য ও প্রতিচ্যের ইসলামি ও খৃস্টীয় সভ্যতা ধ্বংস করে দিতো। আইন জালুতের যুদ্ধে মিসর একই সঙ্গে ইসলাম ও বিশ্বসভ্যতাকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল।’’

জার্মান প্রফেসর মেয়ার বলেছেন, “তা ছিল ইতিহাসের অন্যতম এক নিষ্পত্তিমূলক সন্ধিক্ষণ; মঙ্গোলদের অপরাজয়েতার উপাখ্যান ভেঙ্গে গেল বরাবরের জন্য, থেমে গেল উত্তর- আফ্রিকা পানে তাদের পশ্চিমমুখী সম্প্রসারণ প্রয়াস, নিশ্চিত হল ইসলামের চলমান অস্তিত্ব এবং সিরিয়া ও প্যালেস্টাইনে প্রতিষ্ঠিত হল মামলুকরা”।

আইন জালুতের যুদ্ধের পর বাইবার্স ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তাঁর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সালাহ-আল-দীনের মত স্মরণীয় হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। যার ফলে ১২৬৩ হতে ১২৭১ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি প্রতি বছর ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। তাসের ঘরের মত লাতিন অধিকৃত শহরগুলি ভেঙ্গে পড়ে। ফ্র্যাংকদের দখলে রাখা সিরিয়ার উপরই সবচেয়ে জোড়ালো আঘাত হানেন তিনি। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাতিনদের প্রতিরোধ ছিল দুর্বল। এতটাই দুর্বল যে, এই পর্বে উল্লেখ করার মত কোন যুদ্ধই হয়নি।

এরপর একে একে তিনি কারাক, সিজারিয়া, সাফা, জাফফা দখল করেন। এশিয়ায় খৃস্টানদের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘাঁটি এন্টিয়ক তিনি অধিকার করেন। এন্টিয়োকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের ছোটখাটো লাতিন রাজ্যগুলিও ভেঙ্গে পড়ে। ১২৭১ সালের ২৪ মাচ আত্মসমর্পণ করে হসপিটালারদের মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ দূর্গ হিসন-আল-আকরাদ। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অসংখ্য আক্রমণই মূলত তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। তাঁর এই আক্রমণই ফ্রাংকদের দুগ ক্রমশই দুর্বল করে দেয়। শেষ পর্যন্ত বাইবার্সেরই বংশধর কালাউন এবং আল-আশারাফের হাতে সম্পূর্ণ পরাস্ত হয় ফ্র্যাংকরা। বংশধরদের এই জয়ের ভিত সুলতান বাইবার্সেরই তৈরী।

সুলতান সালাহউদ্দীন এর সময় যে গুপ্তঘাতক সম্প্রদায় ইসলামী খিলাফতের ভেতর চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে নিয়োজিত হয়, সুলতান বাইবার্স তাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেন। এই গুপ্তঘাতক দল এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তারা সিরিয়ার মারকাব ও হামাহ এর মধ্যবর্তী আনসারিয়া পার্বত্যাঞ্চলে ৯ টি সুরক্ষিত দূর্গ তৈরী করে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান ঘোষণা করে। ১২৭০-১২৭৩ সালের মধ্যে বাইবার্স ৯টি দূর্গই দখল করে উক্ত অঞ্চলসমূহকে খিলাফতভূক্ত করে নেন। এই আক্রমণে গুপ্তঘাতকদের ক্ষমতা চিরতরে খর্ব করেন তিনি। এইভাবে যবনিকা পড়ে ত্রাস ও ষরযন্ত্রে ভরা দীর্ঘ এক শাসনকালের।

সুলতান বাইবার্স কেমন ছিলেনঃ
সুলতান বাইবার্সকে নিছক সামরিক শাসক বললে তাঁর প্রতি সুবিচার করা হবে না। সামরিক ক্ষেত্র ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনহিতকর নানা প্রকল্পে তাঁর অবদান ছিল অসীম। সেনাবাহিনীকে সুসংহত করার সঙ্গে সঙ্গে নৌবাহিনীর পুনর্গঠন ও সিরিয়ার দুর্গগুলিকে সুরক্ষিত করেছিলেন তিনি। খাল কাটা, বন্দরের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো যেমন তাঁর অবদান তেমনই ডাক যোগাযোগকে ত্বরান্তিত করার কৃতিত্বও তাঁরই। এই দ্রুত ডাকযোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে কায়রোর সঙ্গে দামাস্কাসের যোগাযোগ মাত্র চারদিন লাগত। প্রতিটি ডাকঘরেই ঘোড়া সার দিয়ে দাড় করানো থাকত। তাই দুই রাজধানীতেই সুলতানের যাতায়াত ছিল অবাধ। প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই দুই রাজধানীতে পোলো খেলতে পারতেন তিনি। সাধারণ ডাক ব্যবস্থা ছাড়াও পায়রার মুখে চিঠি পাঠানোর কাজকেও আরো নিখুত ও দ্রুত করার ব্যবস্থা করেন মামলুকরা। জনহিতকর নানা কাজ করেছিলেন সুলতান বাইবার্স।

সাম্রাজ্যের মধ্যে সুন্দর সুন্দর মসজিদ তাঁর স্থাপত্য শিল্পের প্রতি অনুরাগের পরিচয় বহন করে। মসজিদের কলি ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় ও জনহিতকর নানা প্রতিষ্ঠানও তৈরী করেছিলেন। তাঁর আমলের স্থাপত্যের মধ্যে তাঁর নামাংকিত মসজিদ এবং বিদ্যালয় (Al-Madrassa al-Zahiriyy) আজও বিদ্যমান। দামাস্কাসে তাঁর সমাধিক্ষেত্রেই আজকের জাহিরিয়া পাঠাগার তৈরী হয়েছে।

মিশরের সুলতান হিসেবে তিনিই প্রথম চারটি রক্ষণশীল ধমীয় রীতির প্রতিনিধি হিসাবে চারজন কাযীকে নিযুক্ত করেন। পবিত্র কোরআন ও হাদীস অনুসারে বিচার কার্য পরিচালনা করা হতো। সুসংহত ও স্থায়ীভাবে মিশরীয় মাহমিলের আয়োজন করার কৃতিত্বও তাঁরই প্রাপ্য। ধর্মীয় ক্ষেত্রে তিনি যেমন রক্ষণশীল ছিলেন, তেমনই অভাব ছিল না তাঁর উদ্দীপনারও।

তিনি তাঁর রাজ্যে মদ, জুয়া প্রভৃতি অনৈসলামিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করেন। বাইবার্স একজন ধর্মপ্রাণ সুন্নী মুসলমান ছিলেন। ধার্মিক মুসলমান হলেও তিনি পরধর্মসহিষ্ণু ছিলেন। তিনি একটি আদর্শ মুসলিম রাস্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ডঃ ফাতিমা সাদিক বলেন, ‘‘তাঁর উদ্দেশ্য ছিল একটি আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করা এবং তাঁর সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী মুসলিম শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা।’’

মৈত্রী স্থাপনেঃ
বাইবার্সের শাসনকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মঙ্গোল এবং বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় শাসকের সঙ্গে তার মৈত্রী। সুলতান হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে তিনি যাযাবরদের একটি গোষ্ঠির প্রধান অথবা ভলগা উপত্যাকায় কিপচাকের মঙ্গোলদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করেন। কনস্ট্যানটিনোপলের শাসক মাইকেল প্যালিওলোগাসের সঙ্গেও তাঁর সমঝোতা হয়। লাতিন খ্রিস্টানদের কট্টর বিরোধী প্যালিওলোগাস তার শহরে ক্রুসেডারদের হাতে বিধ্বস্ত প্রাচীন মসজিদের পুননির্মাণের নির্দেশ দেন। তারই অনুরোধে এই কাজ তদারকের জন্য সুলতান বাইবার্স একজন মালিকী মতবাদের নেতাকে কনস্ট্যান্টিনোপল পাঠান। নবম লুইয়ের ভ্রাতা ও সিসিলির রাজা আনজাউ-এর চালসের সনহে বাইবার্সের বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। বাণিজ্যিক চুক্তি হয় আরাগনের জেমস এবং সেভিলের আলফন্সোর সঙ্গেও।

মঙ্গোলদের ইসলামের পথে নিয়ে আসার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা প্রধান। তিনি মঙ্গোলদের সাথে গোল্ডেন হোর্ড-এ (ততকালীন মঙ্গোল-তাতার সাম্রাজ্য) মৈত্রীচুক্তিতে আবদ্ধ হন এবং তাদের মিশর পরিভ্রমণের ব্যবস্থা নেন। মিশরের সাথে যোগাযোগের ফলে বিপুল সংখ্যক মঙ্গোল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

কায়রোতে আব্বাসীয় খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা সুলতান বাইবার্সের রাজত্বকালের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১২৫৮ খৃস্টাব্দে হালাকু খান কর্তৃক আববাসীয় বংশের শেষ খলিফা আল-মুসতাসিম নিহত হলে মুসলিম জাহান খলিফাশূন্য পয়ে পড়ে। মামলুক সুলতান বাইবার্স এই খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে মুসলিম বিশ্বের বিরাট উপকার করেন। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টিতে খেলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব-ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টিতে খেলাফতের পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। যদিও এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও নিহিত ছিল।

সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞানে অবদানঃ
সাম্রাজ্যে নানা প্রকার জনহিতকর কাজের পাশাপাশি তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের একজন অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক আবু-আল-হাসান আলী ইবনে-আল-নাফিস এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক যিনি ফুসফুসে রক্ত চলাচল সম্পর্কে স্পস্ট ধারণার কথা জানিয়েছেন। অথচ এই আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া হয় স্পেনের সারভেটাসকে যার তত্ত্ব রচিত আলী-ইবনে নাফিসের ২৫০ ছর পরে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম জীবনী রচয়িতাদের অন্যতম ইবনে-খাল্লিকান (খ্রিঃ ১২১১-৮২) তাঁর সময়েই রচনা করেন ‘ওফাইয়াত-উল-আ- ইয়ান ওয়া আনবা-উজ-জামান’ শিরোনামের একটি জীবনীমূলক অভিধান গ্রন্থ যাকে নিকলসন সর্বোৎকৃষ্ট জীবনীগ্রন্ত বলেছেন।

তাঁর জীবনী ‘সিরাত আল-জাহির বাইবার্স’ (Life of al-Zahir Baibars) হল একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় আরবীয় সাহিত্য যেখানে রচিত আছে তাঁর যুদ্ধ জয় অর্জনের কথা। কাজাখস্থান, মিশর সিরিয়াতে তিনি বীরের মর্যাদা পান।

সাহিত্যেকর্মে সুলতান বাইবার্সঃ
• Robert E. Howard রচিত "The Sowers of the Thunder” এর মূলনায়ক বাইবার্স;
• রাশিয়া-কাজাখ লেখক Moris Simashko (Moris Davidovich Shamas) রচিত উপন্যাস "Yemshan" তে তিনিই প্রধান চরিত্র;
• Robyn Young' এর রচনা Brethren and Crusade এর অন্যতম প্রধান চরিত্র বাইবার্স।
• Jefferson Cooper's (Gardner Fox) এর উপন্যাস “The Swordsman” এর প্রধান চরিত্র তিনি
• Harold Lamb এর মতে আরব্য রজনীর ‘Haroun of Baghdad’ আসলে Baibars of Cairo। কারণ পি কে হিট্টির মতে, মামলুক সুলতানদের আমলেই ‘আরব্য রজনী, চুড়ান্ত রুপ ধারণ করে।
• লেবানিজ-আমেরিকান লেখক Rabih Alameddine এর “Hakawati” বইয়ের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র বাইবার্স।
• লেখক Peter Berling এর The Children of the Grail বইয়ের অন্যতম চরিত্র বাইবার্স
• কাজাখ ন্যাশনাল সিনেমা স্টুডিও “কাজাখ ফিল্ম” ১৯৮৯ সালে Sultan Beybars নামে একটা সিনেমা বানায়।
• ঐতিহাসিক Muazam Javed Bukhari সুলতানের রিয়েল বায়োগ্রাফি রচনা করেন যার নাম “Qahira ka Qaher” (A Warrior of Egypt)।

ইতিহাসের বুকে সুলতান বাইবার্সঃ
সুলতান বাইবার্স ছিলেন ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন। তাঁর গোটা শাসনামলের (১৭ বছর) একটি মুহুর্তও যুদ্ধহীন ছিল না। ভেতরে বাইরে তাঁকে অসংখ্য ধরনের, মাত্রার যুদ্ধে তাঁকে অবতীর্ণ হতে হয়। মুসলিম উম্মার নিরাপত্তা, ইজ্জত রক্ষার্থে তিনি ছিলেন উৎসর্গীত। তিনি যালিমকে, মিথ্যাকে মাথানত করতে বাধ্য করেছিলেন। সত্য আর ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি ছিলেন মোঙ্গলদের কাছে ত্রাস, গুপ্তঘাতকের কাছে জলজ্যান্ত অভিশাপ আর ক্রুসেডারদের কাছে শেষ আঘাত।

ধর্মযুদ্ধে ইসলামকে গৌরবজ্জ্বল আসনে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অন্যতম শ্রেষ্ঠ। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সুলতান বাইবার্স এর এই সাফল্য তাঁকে “তাঁর যুগের আলেকজান্ডার এবং বিশ্বাসের ভিত” এর মত উপাধি এনে দেয়। সেই জন্যই জনপ্রিয় বাদশা হারুন-আল-রশীদের একজন যোগ্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে গণ্য করা হয় তাঁকে। কিংবদন্তিতে সালাহ-আল-দীনকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে কেন্দ্র করে রচিত গল্পগাথা আরব মুলুকে আরব্য রজনীর থেকেও জনপ্রিয়। তাঁর দুঃসাহসিকতা, ক্ষীপ্রতা, চতুরতা আর বীরত্ব দেখে পশ্চিমা জগত থমকে গিয়েছিল তাই তারা বাইবার্সের নাম দিয়েছিল “দ্য প্যান্থার”। এই বীর যোদ্ধার সাফল্যের কথা আজও সাফাদের বিভিন্ন প্রাচীরে খোদাই করা আছে।

সুলতান বাইবার্স এর ইন্তিকাল
১২৭৭ সালের ১ জুলাই এই মহান সুলতান দামাস্কাসে তিনি ইন্তেকাল করেন। কিন্তু মুসলিম উম্মার স্মৃতিতে তিনি অমর।

সবাইকে ধন্যবাদ।

রেফারেন্সঃ
১. খন্দকার মাশহুদ-উল-হাছান অনূদিত বিখ্যাত ঐতিহাসিক P. K Hitti লিখিত ‘The History of Arabs’ গ্রন্থ
২. ‘আরব জাতির ইতিহাস’: লেখক- মুহম্মদ রেজা-ই-করিম
২. Click This Link
৩. http://blog.bdnews24.com/agontok/25682
৪. Click This Link
৫. https://en.wikipedia.org/wiki/Baibars

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯

সুদিন বলেছেন: তিনি ছিলেন মোঙ্গলদের কাছে ত্রাস, গুপ্তঘাতকের কাছে জলজ্যান্ত অভিশাপ আর ক্রুসেডারদের কাছে শেষ আঘাত

একজন মুসলিম বীরের অজানা কাহিনী জেনে ভালো লাগলো- ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার পরিশ্রম স্বার্থক হোক।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমরা সবাই কমবেশী খলিফা হারুন-অর-রশিদ, সুলতান সালাহ-আল-দীন সম্মন্ধে জানি। অথচ উনাদের সমকক্ষ হয়েও সুলতান বাইবার্স আমাদের কাছে অচেনা। এটা আমাকে ভাবিয়ে তোলে। তাই আমি যেদিন সুলতান বাইবার্স সমন্ধে পড়লাম সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম উনাকে নিয়ে লেখা দিব। আলহামদুলিল্লাহ, আমি দিতে পেরেছি। অনন্যসাধারণ এক চরিত্র!

আপনি পড়েছেন জেনে ভাল লাগল। সমস্যা হলো এইরকম সিরিয়াস পোস্টে লোক সমাগম কম হয়। আশা করব ধীরে ধীরে অনেকেই এটি পড়বেন।

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮

অন্তু নীল বলেছেন: ভালো লিখেছেন। ইতিহাস জানতে পারলাম।

তবে, ..."একে একে তিনি কারাক, সিজারিয়া, সাফা, জাফফা দখল করেন। এশিয়ায় খৃস্টানদের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘাঁটি এন্টিয়ক তিনি অধিকার করেন। এন্টিয়োকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের ছোটখাটো লাতিন রাজ্যগুলিও ভেঙ্গে পড়ে।"...............
........এরকম (দখলবাজ) মানষিকতার একজনকে মহান বলা কতটুকু যুক্তিযুক্ত, সেটা বুঝলাম না।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এটা বুঝতে হলে আপনাকে ক্রুসেডের পুরো ইতিহাস জানতে হবে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: একজন অজানা মুসলিম বীর কে নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এই রকম অসাধারণ একজন বীরের কথা আমরা অনেকেই জানি না। আমার লেখার উদ্দশ্যই ছিল এটা।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনালোকিত ইতিহাসকে আলোকিত করায় ধন্যবাদ্

আমাদের এই সব বীরগাথা আমাদের অনুপ্রেরণা হতে পারত। কত শত মুভি টিভি সিরিযাল হতে পারত!

কিন্তু এক নিজেদের মূর্খতা
দুই ইসলামী চেতনার বিকাশের প্রতিবন্ধক শক্তির ফতোয়া
দুই মিলে টিভি দেখা নিয়ে আজও বাহাস করতে হয়, সিনেমাও নামই নেয়া যায় না!!!

ইতিহাস বই আকারে পড়বে- ওখানেওতো সোয়াবের ব্যাপার স্যাপার ঢুকিয়ে রেখেছে!

তাই এত এত এত বেশী অনগ্রসরতা!!!

এত শ্রমসাধ্য কষ্টকর ঐতিহাসিক পোষ্টের জন্য আবারো ধন্যবাদ।++++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৯

ইছামতির তী্রে বলেছেন: সুলতান বাইবার্স এর মত মানুষও আমাদের মাঝে অনালোকিত-এটা আমার মনে খুব লেগেছিল। আমাদের দেশের ইতিহাসবিদ বা পন্ডিতগণ আছেন শুধু চাকরি-বাকরি নিয়ে। এসব জানানোর গরজ তাদের নেই।

আমাদের ব্লগেও প্রায় একই ব্যাপার। দেখেন, এখানে লোকের আনাগোনা বড্ড কম। এসবে আমাদের আগ্রহ কম। এজন্যই জগতের অনেক ব্যাপারই আমাদের অজানা।

কস্ট করে পড়েছেন-এজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমি চাই আরো উনেকেই সুলতান বাইবার্সকে জানুক।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩

জুন বলেছেন: এই কাহিনীটি আগেও পড়েছি তারপর ও আপনার ঝরঝরে বর্ননায় আবার দেখে নিলুম তেমুচিনকে।
কি সাহসী না ছিল লোকটা

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমার মনে হচ্ছে ছোট্ট একটু গরমিল হচ্ছে। তেমুচিন বা Genghis Khan আর সুলতান বাইবার্স ভিন্ন ব্যক্তি। Genghis Khan যিনি Great Khan নামে সমধিক পরিচিত তিনি মঙ্গোল সাম্রাজ্যর প্রতিষ্ঠাতা। আর আমাদের আলোচ্য সুলতান বাইবার্স মিশরের মামলুক বাহরী সাম্রাজ্যের চতুর্থ সুলতান। দু'জনই দুই আমলের, ভিন্ন এলাকার দুনিয়া বিখ্যাত শাসক।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪১

আবু শাকিল বলেছেন: সুলতান বাইবার্স অকোতুভয় এবং আপোষহীন যোদ্ধাকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানা হল।
অনেক ধন্যবাদ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এত বড় পোস্ট কস্ট করে পড়েছেন জেনে ভাল লাগছে।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪

ফজল উশ শিহাব বলেছেন: আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন-অবহেলিত একটি রত্নকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: সত্যি এমন একজন মহান বিজেতাকে আমরা চিনি না!

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২

রন৬৬৬ বলেছেন: I highly appreciate the writer to submit a memorable history of Islam. At that time, Islam was on right track. Look at the 56 Muslim countries around the world. They are fighting among themselves. They are not UNITED under O.I.C. platform. Division exists and power struggle remains. I found similar information on Wikipedia regarding Sultan Baibars. Here is the link: https://en.wikipedia.org/wiki/Baibars

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪

ইছামতির তী্রে বলেছেন: You are absolutely right. Muslims are not in the right track now days. But I firmly believe that, one day Islam will come into the right track and will conquer the world. You know well that, the Islam is the fastest growing religion in the whole world especially in the western world.

We know that, once the Muslims created one of the most glorious civilizations in history. We still enjoy the potential to create another. We cannot be accomplished without the realization of the following:

We Muslims should rely on two important factors: one, wisdom and reason, and the other, cohesion and solidarity.

I have mentioned your shared link in my ’Reference: No-5’.

Thank you very much for your nice comment.

৯| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১

জুন বলেছেন: আমি দুখিত ইছামতীর তীরে। তৈমুরের অভিশাপ নিয়ে লেখা একটা পোষ্টের মন্তব্য ভুলে এখানে চলে এসেছে।
তবে ইতিহাসের ছাত্রী হয়েও বাইবার্স সমন্ধে কছু জানা ছিল না। আপনার পোষ্ট থেকে জানা হলো। আসলে তুর্কমেনের ইতিহাস বোধহয় সাধারন ইতিহাসে খুব কমই লেখা হয়েছে।
অনেক ভালোলাগলো জেনে।
+

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়েছে। জেনারেল ইতিহাসে হয়ত উনাকে নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে ইসলামের ইতিহাসে উনার নাম জ্বলজ্বল করছে। হ্যা, আমাদের দেশে অটোমান সাম্রাজ্য বা মামলুক এমনকি ঊমাইয়া সালতানাত নিয়েও কম আলোচনা হয়। আমরা সবাই আব্বাসীয় খলিফাগণের খবরাখবর কিছুটা রাখি।

আমি কিন্তু ইতিহাসের ছাত্র না। তবে ইতিহাস বিশেষত ইসলামের ইতিহাসের একজন একনিষ্ঠ পাঠক।

আবারও আপনাকে স্বাগত।

১০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৩

জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর করে লেখার জন্য।

তবে আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি একটু তাড়াতাড়ি লেখাটা শেষ করে ফেলেছেন।

আরো বিস্তারিত লেখা যেত।

যেমন, ইন্তিকাল, রণকৌশল, বংশদর ইত্যাদি।

আশা করব আরো লিখবেন।

ধন্যবাদ।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: এই লেখাটাও কিছুটা বড়ই হয়েছে। হ্যা, সুলতান বাইবার্সকে নিয়ে এত ছোট লেখা দেয়া অতিশয় কঠিন কাজ। আরো বিস্তারিত আসতে পারত। তবে আমার ব্লগ জীবনের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, সম্মানিত ব্লগারগণ বড় লেখা সব সময় এড়িয়ে চলতে চান। আমার মূল উদ্দেশ্য এতে ব্যহত হত। আমি চেয়েছিলাম সুলতান বাইবার্সকে সবার মাঝে জাস্ট পরিচয় করিয়ে দিতে। এখন অবধি ৫০৮ জন পড়েছেন। আমি আশা করছি কমপক্ষে ১৫০০-২০০০ মানুষ এটি পড়বে।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম, এমন একটি পোস্টের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আমার পরিশ্রম স্বার্থক। আমার উদ্দেশ্যই ছিল সুলতান বাইবার্সকে চেনানো। তবে আমি চাই আরো অনেক মানুষ এটি পড়ুক।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৯

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
কত কিছু যে জানার আছে !!

কেমন আছেন প্রিয় ভ্রাতা ।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আরে ভাই, কেমন আছে? বহুদিন পর আপনার দেখা পেলাম।

হ্যা, বেশীরভাগ জিনিষই এখনো অজানা রয়ে গেছে।

আপনি পড়েছেন জেনে ভাল লাগছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.