নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক রাজকন্যা এবং এক গ্রাম্য বালকের অনবদ্য প্রেম কাহিনী! (১ম পর্ব)।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

দৃশ্যপটঃ ১
টিফিন পিরিয়ড চলছে। স্কুলের মাঠে শিশুদের খেলাধুলা, ছুটাছুটি আর কলকাকলিতে মুখরিত গোটা পরিবেশ। এদিকে ক্লাস থ্রি-র ক্লাসের সবচেয়ে পেছনের বেঞ্চে মুখটা প্রচন্ড গোমড়া করে বসে আছে একটা ছেলে। ঢং ঢং করে টিফিন শেষের ঘন্টা বাজল। মুহুর্তের মধ্যে মাঠ খালি। খেলায়রত ছাত্র-ছাত্রীগণ পরিমরি করে যে যার ক্লাসে ঢুকল। গোমড়ামুখো ছেলেটি অবশ্য ছাত্রজীবনের সবচেয়ে আনন্দময় সময়ের একটা ‘টিফিন পিরিয়ড’ মজা করে কাটাতে পারে না বেশ কিছুদিন হলো। কারণ টিফিনের পরেই ইংরেজী ক্লাস। ইংরেজী পড়ান জনাব মোঃ ফজলুল হক। খুবই বদরাগী শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীগণ তাঁকে বড়ই ভালবাসে(?)। স্যারের বিশেষ গুণ হলো ‘বাড়ির পড়া’ (homework) করে না আসলে ব্যাপক ধোলাই দেন। ছেলেটির গোমড়া মুখের কারণ হলো অন্যান্য দিনের মত আজও সে বাড়ির পড়া বা হাতের লেখা করে আসেনি। কিছুক্ষণ পরেই স্যার তাঁর চিরাচরিত গুরুগম্ভীর ভঙ্গিমায় ক্লাসে প্রবেশ করলেন। হাতে শোভা পাচ্ছে তাঁর সব সময়ের পছন্দ জোড়াবেত। বেতগুলো কোরবানীর গরুর শিংয়ের মতো চকচক করছে। এটা দেখেই তার শিরদাড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। বুকের ধুকপুকানি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগল। তার সাথে অনেকেরই দীর্ঘশ্বাসে ছোট্র ক্লাশ রুমটা ভারি হয়ে উঠল।

স্যার প্রয়োজনীয় কাজ সেরে সবার উদ্দেশ্যে হাঁক দিলেন, “তোমরা সবাই হাতের ল্যাখা জমা দেও”। এটা শুনেই ছেলেটির পিলে চমকে গেল। আসন্ন বিপদের হাত থেকে নিস্তার পাবার আশায় ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ জপ করতে লাগল সে। ইংরেজী ক্লাসের এই এক হ্যাপা। ‘বাড়ির পড়া’ই হয় না ওন্যদিকে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো হাতের লেখা। অসহ্য। যা হোক, স্যারের কথায় রুমে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো। ফিসফিসানি শুরু হয়ে গেল গোটা রুমে। যারা এনেছে তারা বিজয়ীর ভঙ্গিতে এদিকে-সেদিক তাকিয়ে যারা আনেনি তাদের করুণ চাহনিগুলোকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে লাগল এবং আশু ধোলাই কার্যক্রম প্রাণভরে উপভোগ করবার প্রত্যাশায় সাগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগল। ছেলেদের মধ্যে থেকে গোমড়ামুখো বালকটির আজন্ম শত্রু(!) ক্লাস ক্যাপ্টেন সবার খাতা গোছাতে লাগল। তার কাছে এসে সে দাঁত কেলিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তোর খাতা দে’। ও জানে সে আনেনি। তবু স্যারকে জানিয়ে দেবার জন্য একই কথা, অনেকটা জোরের সাথে সে আবার বলল। ছেলেটিকে চুপ থাকতে দেখে ‘আজো লেখিস নাই’ বলে পরের জনের কাছে গেল। এদিকে স্যার এদিকেই দিকেই তাকিয়ে আছেন। তখন ছেলেটির মনে হতে লাগল স্বয়ং আল্লাহ এসেও তাকে আজ বাচাঁতে পারবে না। (নাউযুবিল্লাহ)। ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বাদ দিয়ে বেতের বারি ‘হাতে’, ‘পিঠে’ না ‘পাছায়’ খাবে এই সিদ্ধান্ত নেয়াতে মনোযোগ দিল সে। ও একটা কথা, মাইরের জায়গা পছন্দ করার স্বাধীনতা তাদের ছিল!!

স্যার একে একে সবার হাতের লেখা দেখলেন। সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে ক্লাসের দিকে আগুনঝরা দৃষ্টি হানলেন। ক্লাসের কয়েকজন সমানে কাঁপতে লাগল। যে কয়েকজন হাতের লেখা দেয়নি তাদের উদ্দেশ্যে তিনি হুঙ্কার দিলেন, “যারা হাতের ল্যাখা দেও নাই তারা দাঁড়াও”। সাকূল্যে যে কয়েকজন ছিল দাঁড়িয়ে গেল। স্যার তাদেরকে চোখের দৃষ্টিতেই ভস্মিভূত করে দিলেন যেন! এরপরেই যেটা বললেন তার জন্য এরা প্রস্তুত হয়েই ছিল। তিনি তাঁর প্রিয় বেতজোড়া তলোয়ারের মত এদিক-সেদিক নাড়াতে নাড়াতে বললেন, “তোরা একজন এক এক করে আমার কাছে আয়”। কিছুই করার নেই এগিয়ে যাওয়া ছাড়া। সবাই একে একে এগিয়ে গেল। যথারীতি মাইরের ঝড় উঠে গেল পুরো ক্লাস রুম জুড়ে। বেতের সপাং সপাং আওয়াজ হতে লাগল সারা রুম জুড়ে, সাথে কচি কচি ছাত্রদের করুণ আহাজারি। ছেলেটি মনে মনে ভাবতে লাগল, ‘ইনি কি স্যার না পুলিশ!’ এদিকে বন্ধুদের বেদম মার খাওয়া দেখে তার দম গলায় এসে কোন রকমে লটকে রইল। সে করুণ চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে থাকল। সে চোখে পানি চিক চিক করছে। এই কঠিন সময়ে তার মনে কত কথারই যে উদয় হচ্ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না। যেমন, মনের কোণে উঁকি দিচ্ছিল, এক্ষুণি যদি স্যারের বাড়ি থেকে খবর আসে তাঁর ছেলে খুব অসুস্থ, বা স্যার নিজেই হার্টফেল করে ফেলেছেন বা অথবা স্যার তার দিকে তাকিয়ে মোলায়েম কন্ঠে বলবেন, “যা, তোকে আজ মারলাম না”। ওদিকে মাইরের সংগীত কিন্তু বন্ধ হয়নি। তার সকল চিন্তায় ছেদ পড়ল যখন শুনল স্যার তাকে ডাকছেন। হায় আল্লাহ! তুমি এত নিষ্ঠুর! এই কচি কচি ছেলেদের মার খাওয়া দেখছ? এসব চিন্তা করতে করতে একরাশ লজ্জা, ভয় নিয়ে এগিয়ে গিয়ে স্যারের সামনে সে হাত পেতে দিল। স্যার একগাল হেসে বললেন, “তুইও হাতেই খাবি?” সে ঘাড় নেড়ে সম্মতি দিতেই শুরু হয়ে গেল মাইর। ওরে মাইর! বন্ধুরা বিশ্বাস করবেন কি না জানি না। স্যার গুনে গুনে সাতাশ ইয়েস ভুল পড়েননি সা-তা-শ টা বেতের বারি তাকে দিলেন আর সাথে বোনাস হিসেবে নানা পদের খিস্তি খেউর। মাইরের চোটে ছেলেটির ছোট্র হাত একেবারে লাল হয়ে গেল। স্যারের দিকে তাকিয়ে তার মনে হলো উনার চোখটা যেন ভেজা ভেজা লাগছে। উনি কি কাঁদছেন? নাকি তার চোখ ঝাপসা বলে তেমন মনে হলো। ছেলেটি অনেক কস্টে শব্দ করে কান্না চেপে নিজের বসার জায়গায় যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই তার চোখ গেল দরজার দিকে। দরজার দিকে চোখ পড়তেই সে দেখল তার বড় ভাই, যে একই স্কুলে তার দুই ক্লাস উপরে পড়ে, তাকে দেখছে। বিশ্বাস করুন, ছেলেটির এই করুণ পরিণতি দেখে ভাইয়ের চোখে কোন মায়া দেখা গেল না। মনে হলো তার চোখদুটো যেন ভাটার মতো জ্বলছে। কেননা তার সাথে জনা কয়েক বন্ধুও ছিল। ছোট ভাইয়ের এমন বেহাল দশা দেখে তাকে টিটকারি মারার লোকের যে অভাব হবে না-এটা তার ভাল করেই জানা ছিল। তার জিগড়ে বড়ই চোট লাগল। ছেলেটি প্রমাদ গুনল। মনে হলো পিঠটাও বুঝি আজ ফাঁকা যাবে না। এবার তার হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে হলো। আড়চোখে সে আরো খেয়াল করল তথাকথিত ভাল ছাত্র-ছাত্রীরা তার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে। মনে মনে তীব্র ক্ষোভের সাথে ‘তোরা ধ্বংস হ’ বলে গালি দিয়ে চুপ করে নিজের সীটে মাথা নিচু করে বসে পড়ল। এই অসহায় অবস্থার মধ্যেও তার এই ভেবে একটু শান্তি লাগছিল, ‘যাক আজকের মত শেষ’। ক্লাসের বাদবাকি সময় আর তেমন কোন বিপদ ছাড়াই পার হলো। পড়া পারেনি বলে অন্যান্য স্যার ধমকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেন।

এভাবেই ধুমধারাক্কা একশননির্ভর সিনেমার মত চলছিল ছেলেটির প্রাথমিক শিক্ষাজীবন। অনেকেই ভাবতে পারেন, বড়ভাই থাকতে তার এই মার মার কাটকাট অবস্থা কেন। আসলে তারা চেস্টা যে করেনি তা নয়। ছেলেটি কিছুতেই উন্নতি করতে পারছিল না। প্রতিদিন সকালে কস্ট করে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া এবং যথারীতি মাইর। শুধু তাই নয় মাঝে মধ্যে বাড়িতেও ধোলাই কার্যক্রম চলত। সে আর পারছিল না। জীবনটা দুঃখে ভরে উঠেছিল...। এভাবে যে কতদিন চলবে?

প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই বিরক্ত হয়ে পড়েছেন একজন কম্পলিট অপদার্থ ছাত্রের বাল্যকালের অনুল্লেখযোগ্য কাহিনী শুনে। কোথায় আপনার প্রেম কাহিনী শুনবেন বলে আমার ব্লগ বাড়ি এসেছেন। তা না করে আমি কোন এক ছেলের বস্তাপচা গীত শুরু করেছি।


ধীরে বন্ধুগণ, ধীরে। কাহিনীর শুরুটা মন্দ হয়নি, কি বলেন? কেমন যেন action এর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আর তাছাড়া এর মধ্যে দিয়েই গল্পের নায়ক এর আগমন ঘটে গেল। জ্বি ভাইজান ও ভগিনিগন, বলতে লইজ্জা লাগছে, এই অধমই সে ছেলে মানে হিরুর ভূমিকায় আছেন। হেহেহে।

দৃশ্যপটঃ ২
আমার জীবনটা বড়ই নিরাসক্ত, নিরানন্দময় ভাবে চলছিল। লেখাপড়া বা স্কুলের কথা মনে হলেই মনটা বিদ্রোহ করে উঠত। বন্ধু-বান্ধবদের হাসি-ঠাট্রা, বিদ্রুপ এবং বাড়িতে নিয়মিত গালাগালির ফলে জীবনটা বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল। একটা ব্যাপার না বললেই নয়, আমার পক্ষে কোন অবস্থাতেই ক্লাস ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল না; বড় ভাই ও মায়ের চাপে। আব্বার রোষ দেখার সুযোগ ছিল না। কারণ তিনি তার চাকুরি স্থলেই থাকেন। আল্লাহর রহমতই বলতে হবে। যাইহোক, সামনের দিনগুলোর কথা ভাবতেই মনটা বিষিয়ে উঠত। এই চরম সময়ে আল্লাহ আমার দিকে মুখ তুলে চাইলেন বলে মনে হল।

একদিন আমরা অন্য এক স্যারের ক্লাসে বসে আছি। হঠাৎ দেখলাম হেডস্যারসহ নাম না জানা অপরিচিত অনেকেই আমাদের রুমে এলেন। তাদের সাথে পরীর মত ফুটফুটে একটা মেয়ে। স্যার আমাদের সবার সাথে মেয়েটির পরিচয় করিয়ে দিলেন। জানলাম মেয়েটির নাম কলি (সঙ্গত কারণেই এটা ওর ছদ্দনাম)। বাবা আমাদের উপজেলার UNO (তখন উপজেলা পদ্ধতি ছিল)। এখানে একটা তথ্য যোগ করি। উপজেলা পরিষদের অবস্থান আমাদের গ্রামের লাগোয়া। আমাদের গ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে এর অবস্থান। এই জন্য উপজেলার সকল অফিসারদের বেশীরভাগ ছেলেমেয়েই আমাদের স্কুলেই পড়ত। আমাদের প্রাইমারী স্কুলজীবনে দুইজন বন্ধু পেয়েছিলাম যারা UNO সাহেবের সন্তান। যাইহোক, মূল বক্তব্য হলো কলি আজ থেকে আমাদের ক্লাসমেট। খুবই আনন্দের খবর এটা। কিন্তু আমার মনে হলো জ্বালা বোধহয় আরও বেড়ে গেল। এত সুন্দর একটা মেয়ের সামনে ‘মাইর’ খেতে হবে এটা ভাবতেই মনে হলো ‘স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যাই’। কিন্তু ‘পালাবি কোথায়’?

কলি ছিল খুবই বুদ্ধিমতি ও চটপটে স্বভাবের মেয়ে। অনেক আধুনিক ও ভাল পরিবেশে বেড়ে উঠেছিল ও। তাই অতিদ্রুত সে ক্লাসের মধ্যমণি হয়ে উঠল। সকল ভাল ছাত্রছাত্রী তার বন্ধু হয়ে গেল। অনেকেই ওকে কাছে পাবার জন্য বা ওর কাছের বন্ধু হবার জন্য রীতিমত প্রতিযোগীতা শুরু করে দিল। হিংসা-বিদ্বেষ শুরু করল কেউ কেউ। ও যা বলত তাই হত। সে যদি বলত, ‘আজকে আমরা টিফিন পিরিয়ডে অমুক জায়গায় যাব’ তাহলে সবাই হইহই করে সায় দিত। কারো কারো জন্য স্কুল আরও আনন্দময় হয়ে উঠল। সকল স্যারও তাকে খুব সমীহ করতেন। UNO সাহেবের মেয়ে বলে কথা! সবাই জানেন UNO মানে ওই উপজেলার প্রধানমন্ত্রীর মত। (এখন অবশ্য অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, তবে ক্ষমতা বা সম্মান এখনো আছে)। আমি অবশ্য কোন দলেই ছিলাম না। বরং যত দূরত্ব রাখা যায় ততই আমার জন্য মংগলজনক। আমি চাইছিলাম অন্তত কলির সামনে যেন পিটুনি না খাই। তাহলে মান-সম্মান (?) বলে কিছু থাকবে না! কিন্তু আমি চাইলেই কি আর হবে। স্যারেরা যা চান তাই হবে এবং তাই হতে লাগল। যথারীতি ইংরেজী ক্লাসে মাইর অব্যহত থাকল। অন্যান্য স্যারের ধমক-ধামকও সমান গতিতে চলতে লাগল। স্যার যখন আমাকে মারত তখন কলি বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকত। ওর হয়ত বিশ্বাসই হত না ‘একটা ছেলে বাড়ির পড়া না করে, হাতের লেখা না লিখে কিভাবে স্কুলে আসে’। আমার কাছে অবশ্য ততদিনে ব্যাপারটা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গেছে। স্যার ডাকলে মাথা নিচু করে যাই, বেতের বারি খেয়ে আবারও মাথা নিচু করে সীটে বসে পড়ি। আমার এমন লজ্জাজনক সময় আরও করুণ হয়নি এই কারণে যে, কলি কোনদিন আমাকে বলেনি, ‘তুমি এত মার খাও কেন’? কেননা সে আমার সাথে তেমন কোন কথাই বলত না, মেলামেশা ত দূর কি বাত। কি বলেন আপনারা, এটা কি ওর মহানুভবতা নয়?

এভাবে একদিন মাইর খেয়ে নিজের সীটে চুপ করে বসে আছি। মুখটা যথারীতি নিচু। কি মনে করে জানি না একটু আড়চোখে কলির দিকে তাকালাম। আসলে কোন কৌতুহলবশতঃ নয়। বলা যায় হঠাৎ করে তাকানো আর কি। দেখতে পেলাম সে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। দুজনের চোখাচোখি হয়ে গেল। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। ভাবলাম আমার দেখার ভুল। পরক্ষণেই আবার তাকালাম। নাহ! ভুল দেখছি না। সে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমিও কিছুটা আড়স্টতা নিয়ে ওর দিকে তাকালাম। আমি মনে মনে ভাবলাম এবার বুঝি আরো লজ্জায় পড়তে হবে। কিন্তু আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, কোন ঠাট্রা-মস্করা, বা অবজ্ঞাভরা দৃষ্টি নয়। ও কেমন যেন একটা মায়ামাখা, দরদমাখা চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। এই প্রথম ক্লাসের সবচেয়ে দামী ছাত্রীটি মায়াকাড়া দৃষ্টিতে আমাকে দেখছে! আমার ছোট্র বুকটা কেমন যেন মোচর দিয়ে উঠল। যে চোখ সবসময় রক্তচক্ষু বা তামাশাপূর্ণ দৃষ্টি দেখতে অভ্যস্ত সেই চোখের পক্ষে এমন কিছু সহ্য করা সম্ভব ছিল না। আমিও আর তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। চোখ ফিরিয়ে নিলাম। এই প্রথম কোন মার ছাড়াই চোখটা ভিজে উঠল। মনের গহীন কোণ থেকে একটা প্রবল আকুতি বেজে উঠল, ‘আহারে! আমি যদি খুব ভাল ছাত্র হতাম তাহলে ওর বন্ধু হতে পারতাম!

বন্ধুগণ, রাজকন্যার সন্ধান পেয়েছেন তো?

আগামী পর্বে সমাপ্য। আশা করি সাথেই থাকবেন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১০

দর্শনপ্রিয়কার্তিকেয় বলেছেন: ভালোই লাগল ..। এখন বাকিটুকুর আশায়

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

বাকীটুকু কালকে হবে ইনশাআল্লাহ। আশা করি সাথেই থাকবেন।

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৪

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল।
++

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম
++ সাদরে গ্রহণ করা হল।
আশা করি সাথেই থাকবেন।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আহা বালকবেলার প্রেম! পরের পর্বের অপেক্ষায়।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

ইছামতির তী্রে বলেছেন: :) কঠিন প্রেম।

ইনশাআল্লাহ কালকেই আসবে। পড়বেন আশা করি।

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩২

উল্টা দূরবীন বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: ইনশাআল্লাহ আজকেই দিব। পড়বেন আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.