নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুপ্তহত্যাঃ বিভীষিকাময় এক অধ্যায়ের কথা

১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬

১০৯০ খ্রিস্টাব্দে চরম হঠকারী শিয়া নিজারী ইমাম হাসান-আল সাব্বাহ'র অনুসারীরা ইসলামের ইতিহাসে গুপ্তহত্যার সূচনাকারী হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। তার এই অনুসারীদের বলা হত Hashishin। Hashishin থেকেই গুপ্তহত্যাকারীর ইংরেজী প্রতিশব্দ Assasin এসেছে। এদের প্রধান দুর্গ ছিল আজকের ইরানের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে, কাজভিনের নিকটে। দুর্গটির নাম ছিল আলামুত বা ঈগলের বাসা।

লোয়ারের যুগ হলেও তাদের প্রধান অস্ত্র ছিল ছোরা আর ড্যাগার। এই নিয়েই গোটা মুসলিম দুনিয়ায় চরম আতংক সৃষ্টি করেন এই ভাংখোরের দল। গুপ্তহত্যাকে তারা এক শিল্পের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছিল। মূল অপারেশনে যেত ফিদাই নামের তিনজনের এক মারাত্বক, ভয়ংকর দল। বলাই বাহুল্য, তারা খুব কম সময়ই ব্যর্থ হত।

হাশীশীনদের প্রথম শিকারে পরিণত হন ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষানুরাগী, বিখ্যাত নিজামীয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, সেলজুক সাম্রাজ্যের মহান উজির নিজামুল মুলক। এদের আক্রমণের হাত থেকে সুলতান সালাদিন, রিচার্ড দ্যা লায়নহার্টও রেহাই পাননি। দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য আর দুর্দমনীয় এক শক্তিতে পরিণত হয় তারা। তাদের শায়েস্তা করার জন্য বহু অভিযান পরিচালনা করেও তেমন লাভ হয়নি।

তবে হাশীশীনদের শেষটা ছিল বেশ বিস্ময়কর। ১২৫৬ সালের দিকে মোঙ্গল এক সেনাপতিকে খুন করার প্রতিশোধ নিতে মোঙ্গলরা হাশীশীনদের দুর্গগুলোতে অভিযান চালায় এবং তাদের সমূলে উৎপাটিত করে। পোকা-মাকড়ের মতো খুঁজে খুঁজে এদেরকে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে ১২৭২ খ্রিস্টাব্দে মামলুক সুলতান বাইবার্সের শেষ আঘাতে গুপ্তহত্যাকারীরা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে এখানে-সেখানে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু ভারতেও আসে যারা মাওলা বা খোজা নামে পরিচিত ছিল। ফলে প্রায় দুইশ বছরের বিভীষিকাময় এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে।

হাশীশীনদের নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হলেও তাদের গুপ্তহত্যা নামের এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হয়নি। বিংশ-একবিংশ শতাব্দীতে গুপ্তহত্যা নামের এই বিচারবহির্ভূত অন্যায়কে ন্যায়ের রূপ দেয়ার চেষ্টা চলেছে এবং চলছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ভয়ানক সমস্যার নাম এই গুপ্তহত্যা। প্রায় প্রতিদিন কেউ না কেউ গুপ্তহত্যার স্বীকার হচ্ছেন। চরম আতঙ্ক গ্রাস করেছে দেশের সাধারণ মানুষকে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, দানবে পরিণত হবার আগেই এই গুপ্তহত্যাকারীদের থামান।

সবাইকে ধন্যবাদ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭

বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: ভালো পোস্ট। জানতাম না। মোঙ্গলদের একটা বিশেষ ব্যাপার সম্ভবত ছিলো তাদের দৃঢ়চেতা, জেদী এবং জীবনের পরোয়া ছাড়াই লক্ষ্যে অবিচল থাকবার স্বভাব। ওদের বশ্যতা স্বীকার করে নিলে ওরা বশ্যতা স্বীকারকারীদের সাথে ভালো আচরণ করছে। বিদ্রোহী, বিশ্বাসঘাতকদের সাথে ছিল চরম নৃসংখ। চেঙ্গিস খানের মৈত্রীর দুতকে হত্যা এবং এই অপমানের প্রতিশোঢ নিতে মোঙ্গলরা বাগদাদের কি করে ইতিহাস সাক্ষী।

আর আজকালকার গুপ্তহত্যা, এটা এখন আর আর্ট নাই। এইটা অন্ধ বিশ্বাস আর গোড়ামীর ফসল। ডাল ভাত হয়ে গেছে ভাই।

পোস্টে ভালোলাগা রইলো। :)

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৩

ইছামতির তী্রে বলেছেন: মোঙ্গলদের ব্যাপারে আপনার মতামতের সাথে পুরোপুরি একমত।

এখন গুপ্তহত্যা মানে এলোপাথারি কুপিয়ে পগার পার কিংবা দূর থেকে গুলি করে লাপাত্তা। এবং খুব সহজসাধ্যও। বিচার না হলে ত ওদের আরো পোয়াবারো।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১০ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:২৯

বিজন রয় বলেছেন: বাংলাদেশে যে হত্যা হচ্ছে সেটাকে আপনারা গুপ্তহত্যা বলেন কেন? এটা তো আসলে মুক্ত বা ওপেন হত্যা।
দিন দুপুরে অনেকের সামনে।

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭

ইছামতির তী্রে বলেছেন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং একে গুপ্তহত্যা বলেছেন। আমি উনার কথার সুত্র ধরেই এটি ব্যবহার করেছি।
সবার সামনে হত্যা করা হচ্ছে তবু কেউ ধরা পড়ছে না। খুবই আজব ঘটনা।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গুপ্তহত্যার কাহিনি সেই চার্চের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সসমারোহে চলেছে, অনেক সময় অন্য নামে। মুসলিম বিশ্বে এটা রূপ নিয়েছিল নতুন কিছুর।

ভাল পোস্ট।

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:০১

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার সাথে একমত। তবে হাসান সাব্বাহ এটাকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করে সবার মনে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন। হাশীশীনদের ভয়ে ওইসময়কার বড় বড় ব্যক্তিগণ তটস্থ থাকত।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১১ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:০২

কল্লোল পথিক বলেছেন:





কবি বিজন রয়ের সাথে সহমত।

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:০২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: কবি বিজন রয়কে যা বলেছি আপনার জন্যও আমার একই কথা।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.