নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আম জনতার একজন।

ইছামতির তী্রে

I have a dream.

ইছামতির তী্রে › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ূন আহমেদ এবং এই তুচ্ছ আমি

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

হুমায়ুন আহমেদ যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তখনো আমি উনার বই তেমন একটা পড়তাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন কিছু ‘গভীর জ্ঞানী’ বন্ধুর সংস্পর্শে আসার সৌভাগ্য হয়েছিল যারা নাকি হুমায়ুন আহমেদের লেখায় তেমন একটা ‘গভীরতা খুঁজে পেতেন না। ওদের প্ররোচনায় আমিও তেমনই ভাবতে লাগলাম। একদিন এক বন্ধু জিজ্ঞেস করল, ‘কেন হুমায়ুন আহমেদের লেখা পড়িস না’? আমি বললাম, ‘উনার বই চানাচুরের মত। মচমচে, সুস্বাদু, এবং মজার। তবে পরে বদহজম হয়’। উত্তর শুনে বন্ধুটি বড়ই পুলকিত হল। বলাই বাহুল্য, সে ‘গভীরতা’ অন্বেষণ করার দলে।



যাইহোক, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তা বাড়তেই লাগল। উনার যেকোন নতুন বই বাজারে আসার সাথে সাথে হটকেকের মত বিক্রি হয়ে যায়। যেখানে বই মেলায় অন্যান্য বিখ্যাত, ভারী লেখকদের বই বিক্রিই হয় না সেখানে উনার একেকটি নতুন বই মেলা চলাকালীন সময়েই কয়েকবার রিপ্রিন্ট হয়। মানুষ লাইন ধরে তার বই কেনে। তাঁকে দেখার জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পরে। এসব দেখে আমি অতিশয় বিস্মিত হলাম। মনে মনে বললাম, ‘গভীরতার ক্ষ্যাতা পুরি’। যে মানুষটির লেখা মানুষকে চুম্বকের মত টানে; যে মানুষটি আসার ফলে পশ্চিম বঙ্গের বাঘা বাঘা সব লেখকের ভাতে ছাই পড়েছে তার বই যেমনই হোক আমাকে পড়তেই হবে।

…অতঃপর শুরু হলো হুমায়ুন আহমেদের বই পড়া। এবং প্রথম লাইন থেকেই আমি তাঁর লেখার প্রেমে পড়ে গেলাম। আমি খুবই অবাক হয়ে আবিস্কার করলাম, হুমায়ুন আহমেদের লেখা প্রায় প্রতিটা গল্পের নায়কের সাথেই আমার কোথায় যেন গভীর মিল আছে। আসলে আমরা যারা খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তাদের সবারই এমন মনে হওয়া স্বাভাবিক। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলিয়েছেন।

ভাগ্যিস হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। তা না হলে আমি হয়ত মিস করতাম এমন একজন লেখককে যিনিঃ

• বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক;
• একাধারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার;
• আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ;
• বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠতম ও জনপ্রিয় নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক;
• বাংলা কথাসাহিত্যে সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক;
• হিমু এবং মিসির আলি ও শুভ্র’র মত অমর সব চরিত্রের স্রস্টা।

মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ নয় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ২০১২ সালের এই দিনে [১৯ জুলাই] স্থানীয় সময় ১১:২০ মিনিটে নিউ ইয়র্কের বেলেভ্যু হসপিটালে এই নন্দিত লেখক মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে নুহাশ পল্লীতে দাফন করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে সারা বাংলাদেশে সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে অভূতপূর্ব আহাজারির সৃষ্টি হয়। তাঁর মৃত্যুর ফলে বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।

বৃষ্টি আর বরষার এমনো দিনে চলে যাওয়া হুমায়ূন আর ফিরবেন না, তবু হুমায়ূন আছেন তাঁর অমর সব কীর্তিগাঁথায়; লেখায়-গানে, নাটকে-সিনেমায়।

বর্ণিল ক্যারিয়ারে বাংলা একাডেমী, একুশে ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অনেক পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হওয়া এই প্রথিতযশা অমর মানুষটির ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী।

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
ফটো ক্রেডিটঃ খোদ সামু। তথ্যগুলো বিভিন্ন অনলাইন সোর্স থেকে নেয়া।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮

প্রথমকথা বলেছেন:



গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী।

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৫

এ.আর.বাহাদুর (বাহার) বলেছেন: ভাল লাগল জনপ্রিয় লেখককে নিয়ে লেখা।

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৩

রুরু বলেছেন: উনার বই পড়া শুরু করলে কখন শেষ পৃষ্ঠাতে চলে যাই নিজেই টের পাই না। উনার লেখায় একটা আকর্শন ক্ষমতা রয়েছে।

২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৩২

ইছামতির তী্রে বলেছেন: আপনার সাথে পুরোপুরি একমত। পাঠককে ধরে রাখার অসাধারণ ক্ষমতা উনার ছিল। উনার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ এটা।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩৮

তারেক৭০৭ বলেছেন: অমর কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন সারকে মিস করি প্রতি নিয়ত ।

২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪

ইছামতির তী্রে বলেছেন: শুধু আপনি বা আমি নই, বরং বাংলা সাহিত্য উনাকে গভীরভাবে মিস করে।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:১৩

দাঁড়িকমা প্রকাশনী বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ স্যার পাঠক সৃষ্টিতে অনেক ভূমিকা রেখেছেন।

২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৮

ইছামতির তী্রে বলেছেন: একমত। একটা সময় বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ পশ্চিম বঙ্গের লেখকদের বই পড়ত; এখনো পড়ে। তবে হুমায়ুন আহমেদ এসে সেই ধারা অনেকটাই ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। বিশেষ করে যুবাদের কাছে তিনি ভীষণ জনপ্রিয়। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একটা বিরাট অংশ হুমায়ুন আহমেদ ছাড়া কিচ্ছু বুঝে না।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৪৫

মিখু বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তখনো আমি উনার বই তেমন একটা পড়তাম না।


আমিও তখন তার বই বা তাকে চিনতামই না,
যখন শুনলাম বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদ(কথা সাহিত্যিক) আর নেই,
সমস্ত টিভি চ্যালেলে প্রচার করতে থাকল.।তখনি আমি তুহিন মামা কে প্রশ্ন করলাম সে কেমন লেখক ছিল.?

তকন তার মুখে তার অনেক শুনাম শুনলাম এবং কিছু নাটকও দেখালাম।
আর আমার তখনকার symphony FT-04 মোবাল দিয়ে গুগল সার্চ দিয়ে তার বিষয়ে জানতে থাকলাম।

তার পর থেকেই তার ভক্ত হয়ে গেলাম,
এখনো যদি তার দেখি তবে চোখ বুলিয়ে নেই।

২৪ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২৫

ইছামতির তী্রে বলেছেন: বলেন কি? উনাকে চিনতেনই না! খুবই অবাক করা ব্যাপার। হয়ত অন্যান্য লেখকের লেখা আপনার বেশী ভাল লাগত। উনার সবচেয়ে বড়গুণ ছিল, তিনি পাঠকের মনের কথা ধরতে পারতেন।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৩৭

মিখু বলেছেন: হয়ত অন্যান্য লেখকের লেখা আপনার বেশী ভাল লাগত।





আসলে আপনার ধারনা ভুল,আমি তার গ্রতি মুগ্ধ হয়েই,
লেখা লেখি পড়া সুরু করেছি,
সেই প্রথম সেই আমার প্রিয়,

সে সুধু পাঠকের না, প্রতিটি সাধারন মানুষেরই মনের খবর বুঝতে পারত।

২৫ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

ইছামতির তী্রে বলেছেন: যাইহোক, তিনি আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষের বিশেষত তরুণদের ভালবাসা পেয়েছিলেন।

আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.