নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"সার্থক জনম অামার জন্মেছি এ দেশে\"

ঋদ্ধি

সার্থক জনম অামার জন্মেছি এ দেশে; সার্থক জনম মাগো তোমায় ভালোবেসে।

ঋদ্ধি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহামনীষীগনের আত্মাজ্ঞান ও ঈশ্বরধারণা

২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০০


দর্শনশাস্ত্রের জনক সক্রেটিস ছিলেন এক দৃঢ়চেতা আপসহীন জ্ঞানসাধক। তিনি খ্রীস্টপূর্ব ৪৬৯ অব্দে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সক্রেটিস প্রতিটি ঘটনার পিছনে কারন, জীবনের সত্যতা ও সমাজের অন্যায় অনুসন্ধানে ব্রতী হন। তিনি শাসকদের সব ধরণের অন্যায় ও অত্যাচারের প্রকাশ্য সমালোচনা করতেন। তিনি মানুষকে সত্য ও জ্ঞানের কথা শোনাতেন। তিনি সত্যের পক্ষে ও অন্যায়ের বিপক্ষে এমন নতুন তত্ত্ব ও জ্ঞানের বানী প্রচার করতেন যা গ্রীকবাসীরা কখনো শোনে নি। এথেন্সবাসীরা যখন সক্রেটিসকে সর্বাপেক্ষ জ্ঞানী হিসেবে জানতো তখন নিরহঙ্কার এই মহামানব বলেছিলেন- "গ্রীসের লোকেরা যে কিছু জানে না, তা তারা জানে না। আর আমি যে কিছু জানি না, তা আমি জানি।" সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন আত্মা ও দেহের সমন্বয়েই মানুষ। আত্মা দেহহীন একটি সত্তা। মানুষের জীবদ্দশায় আত্মা দেহের মধ্যে অবস্থান করে। আত্মা হলো দেহের মধ্যে অবস্থানকারী এক সূক্ষ শক্তি। তিনি আত্মাকেই জীবনের মূল সত্তা হিসেবে জানতেন। মৃত্যুর সাথে সাথে আত্মা দেহ পরিত্যাগ করে অশরীরী অবস্থায় বাস করে। আত্মা অতীন্দ্রিয়। তবে সক্রেটিস অাত্মা ও মনকে একই অর্থে ব্যবহার করেছেন। আত্মা দেহ ত্যাগ করলে জীবদেহ জড় পদার্থে পরিণত হয়। মৃত্য হলো দেহ হতে আত্মার প্রত্যাহার।
সক্রেটিস বলতেন মানুষ কখনো ঈশ্বর হতে পারে না। সব মানুষই ঈশ্বরের সৃষ্টি। ঈশ্বরের কাছে রাজা ও প্রজা সবাই সমান। মূলতোঃ রাষ্ট্রপ্রধানকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নেয়ার পরিবর্তে তিনি মৃত্যুকে মেনে নেন। তিনি বলেন- "মিথ্যার কাছে আত্মসমর্পণ করার চেয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা অধিকতর শ্রেয়।"


গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের এক অভিজাত পরিবারে খ্রীস্টপূর্ব ৪২৮ অব্দে জন্মগ্রহন করেন মহাজ্ঞানী প্লেটো। দর্শনশাস্ত্রের আদি জনক সক্রেটিসের সুযোগ্য শিষ্য ছিলেন তিনি। সক্রেটিসের দর্শনের সার্বিক ও পূর্ণ বিকাশ ঘটে প্লেটোতে। প্লেটো মনে করতেন, মানুষের আত্মা বিশ্বের মহাত্মার খন্ডিত প্রকাশ। প্লেটো বিশ্বাস করতেন, আত্মা অবিনশ্বর। তাঁর মতে, আত্মা একটি আধ্যাত্মিক দ্রব্য। আত্মা হলো, দেহাতিরিক্ত ইন্দ্রিয়-অগ্রাহ্য বুদ্ধিগম্য পদার্থ। এই আত্মাই মানুষের চেতনার মূল কারণ। আত্মা এমন একটি জিনিস যা কোনো দেহ ছাড়াই পৃথকভাবে অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে। তাঁর মতে, দেহহীন অস্তিত্ব হলো আত্মার একটি আদর্শ অবস্থা, যখন আত্মা দেহের বন্দীশালা থেকে মুক্ত হয়ে চিরকাল জন্য শাশ্বত ও পরমসত্তায় বাস করতে পারে।
প্লেটো ছিলেন এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী। ঈশ্বরই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সকল কারণের কারণ। তিনি মনে করতেন, জগতে যা কিছু আছে তার সবই বিশ্বআত্মারই খন্ডিত প্রকাশ। আর এই বিশ্বআত্মাই হলেন মহাস্রষ্টা, ঈশ্বর।


খ্রীস্টপূর্ব ৩৮৪ অব্দে গ্রীসের উত্তর পেনিনসুলার থ্রেস অঞ্চলের স্টাগিরা নামক শহরে জন্মগ্রহন করেন এ্যারিস্টাটল। তিনি দার্শনিক প্লেটোর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এথেন্সের লাইসিয়ামে এ্যারিস্টাটল প্রতিষ্ঠা করেন দর্শনশাস্ত্রের স্কুল, গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। এ্যারিস্টাটলের মতে, আত্মা দেহের অবিচ্ছেদ্য অংশ আর মন হলো একটি স্বাধীন সত্তা। আত্মা হলো, জীবনীশক্তির সমষ্টি। তিনি আত্মাকে জীবের মূল সত্তা বলে মতবাদ দেন।
এ্যারিস্টাটল ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর মতে, বিশ্বজগতের যাবতীয় বস্তুর স্রষ্টা ঈশ্বর। বিশ্বজগতের সকল বস্তুর শুরু এবং শেষ আছে। একমাত্র ঈশ্বরই স্থির, অবিনশ্বর। তাঁর কোনো শুরু এবং শেষ নেই। তিনি জীবন্ত, সদাজাগ্রত এবং সদামঙ্গলময়।



(সংকলীত)
চিত্র ও তথ্য: Internet
S. M. Zahid, Hridoya Aroneya
(মূল বইয়ের শব্দ ও বাক্যবিন্যাস অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম:D:D:D:D

৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০৫

ঋদ্ধি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: সক্রেটিস বলেছেন- নিজেকে জানো!


আর প্লেটোর বিখ্যাত বই রিপাবলিকান! আর এরিস্টটলের কথা আর কি বলব!


কিন্তু আমাদের দেশে এমন লোক নেই! যাদের নিয়ে আমরা লেখব! খুব খারাপ লাগে।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫

ঋদ্ধি বলেছেন: সমসাময়িক পন্ডিতদের তাঁদের স্বজাতি সহজে চিনে উঠতে পারে না। তাদের স্বীকৃতি মেলে তীরধানের অনেক পরে। আমাদের দেশেও হয়তো এমন পন্ডিতজন আছেন যাদের আমরা হয়তো চিনতে পারছি না। আর সক্রেটিস প্লেটো এরিস্টটল যে যুগে এসেছিলেন সে যুগে গ্রীস ছিল পৃথিবীর জন্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাঁরা যুগকে সংস্কার করে গেছেন জ্ঞান দিয়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.