নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহস্যময় পৃথিবী

ঝুলছি সময়ের কার্ণিশে, নীল কিংবা লাল সময় বুঝে। হঠাৎ হঠাৎ, নিশ্চুপ কবিতারা সময় দিশেহারা। তারপর চুপচাপ অন্তহীন সময় তবুও ঝুলে থাকার জয়। মানুষের সব বিশ্বাস আসলে অবিশ্বাস থেকে জন্ম! আমার মধ্যে আমি স্বতন্ত্র জীবন যাপন করছি! পৃথিবীটা রহস্যের, রহস্য শেষ হয়ে গেলে বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয় না।

রহস্যময় পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

" সুশীল সমাজের নাটকীয়তায় আড়াল ভগিনীর অশ্রু "

১৫ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১:০৮


একাবিংশ শতাব্দীর এই বিশ্বায়নের যুগে এসেও কত শত ভাবে নারী নির্যাতিত হচ্ছে তার ন্যূনতম ধারণা বর্তমান সমাজের সিংহভাগ মানুষেরই নাই ।



বিজ্ঞান পৌঁছে গেছে মানুষের ধারনারও বাইরে, হচ্ছে আধুনিকায়ন । কালচার এখন কোন একটি দেশের গোষ্ঠীর মাঝে সীমাবদ্ধ নাই, বিশ্ব ভাত্রিত্বর যুগে আমরা বাস করছি । বাংলাদেশেই বসে আমরা চিনা নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইন ডে শুধুই নয় পালন করা হচ্ছে হরেক রকম ফেস্টিভ্যাল । এত শত পরিবর্তন দেখা গেলো, শুধু আমদের নারী সমাজ দেখা পেল না আমদের নিয়ে সমাজের এত শত কুসংস্কার, হয়রানি, অমানুষিক নির্যাতন থেকে রেহায় ।

এখনো নারীকে দেখা যায় ভ্রূণ অবস্থা থেকেই নির্যাতনের স্বীকার, হ্যাঁ এখনকার এই বিশ্বায়ন,আধুকায়নের যুগে । জন্ম থেকে মৃত্যুর পথ পরিক্রমায় প্রতিটা স্তরে নির্যাতনের শিকার হয় গোটা বিশ্বে এই জাতটা।



নির্যাতন বলতে আমি শুধু শারিরিক নির্যাতনের কথা বুঝচ্ছি না, আছে অভিনব উপায়ে নির্যাতন আর হয়রানির ঘটনা ।



কোথায় যেন একটা রেইপের নিউজ পড়লাম। পড়ে চোখ জ্বালা করে উঠল ! এটাই বোধহয় নিয়ম একটা রেইপের স্টোরি নিয়ে পত্রিকায় কোন কলাম লিখতে হলে রগরগে, রসালো বর্ণনা দিতে হয়। মেয়েটির কোথায় কি করেছে না করেছে ডিটেইলস বর্ণনা না দিলে পাবলিক খাবেনা । ধর্ষিতার শরীরের কোথায় কেন কোন ক্ষত তৈরি হয়েছে তা লিখে পত্রিকার কাটতি বাড়াই। আজ থেকে কয়েক বছর আগে পত্র পত্রিকার পাতা জুড়ে প্রায় প্রতিদিনই থাকত রেইপ নিউজ । দুঃখজনক হলেও সত্যি সময় পাল্টেছে, কিন্তু ঘটনার পুনরাবেক্তি হচ্ছে ।



যুদ্ধশিশুটির কথা মনে করে দেখুনতো একবার । যার মাকে ক্যাম্পে রেখে দিনের পর দিন টর্চার করা হয়েছে। যে শিশুটির ক্রন্দনধ্বনি বীরাঙ্গনার অসহায় চিত্‍কারের প্রতিধ্বনি ,যার জন্মই ছিল ইতিহাসের করুনগাঁথা সেই শিশুটির কথা মনে পড়ে যায় ।

যে শিশুটির বয়স বাংলাদেশের সমান। যার জন্মকে অগ্রাহ্য করে কখনোই এই দেশের জন্ম হতে পারতনা !

আমি মাঝে মাঝে কিছু চেতনা বাজ সংবাদ রিপোটার, সাংবাদিক দেখি । তারা সুযোগ পেলেই একাত্তরের চেতনা দেখায় বেড়ায় । অতিমাত্রায় চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে তারা কিছু পাকিপ্রেমীকে একাত্তরে পাকি বীর্যে জন্ম জারজ ,তাদের মাকে ঐ সম্পর্কিত কিছু বলে গালি দেয়।



ভাবি আমরা কত নির্লজ্জ।

বীরাঙ্গনাদের লজ্জার ইতিহাসটুকুকে গালি বানিয়ে তাদেরকে অপমান করে চেতনা দেখিয়ে বেড়াই।



যেহেতু নির্যাতিত নারী প্রসঙ্গে কথা তুলেছি, সুতরাং নারীর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন কেন্দ্রিক কোন ঘটনায় অপ্রসঙ্গিক নয় ।



একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন কন্যা শিশু জন্মের পর থেকেই খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা তথা মৌলিক অধিকার প্রশ্নে পরিবার থেকেই শুরু হয় বৈষম্য মূলক নির্যাতন, সাথে শারীরিক- মানসিক নির্যাতনের ঘটনা তো বটেই।

বাল্য বিবাহ, মতের বিরুদ্ধে নারী কে বিয়ে দেয়া, বৌ পেটানো, যৌতুক, তালাক, পাথর নিক্ষেপ, দোররা মারা, নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ, অপহরণ, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, সাইবার ক্রাইম, নারী – পুরুষ বৈষম্য, মানসিক নির্যাতন, খুন

— এই রকম ফেরের ভেতর ও যে কত নির্মম অমানবিক বৈচিত্র আছে তার খবর আমরা কয়জন রাখি? আর তাদের কজনেরই খবর আর রাখি আমাদের সুশীল সমাজের কর্ণধাররা?



নারী নির্যাতন রোধের আইন, সাইবার ক্রাইম রোধের আইন ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক আইন ই হয়েছে আমাদের দেশ তথা সমগ্র বিশ্বে কিন্তু তারপর ও গোটা বিশ্বে নারী নির্যাতনের হার কমেনি বরং বেড়েছে। নিত্য অনিশ্চয়তা, আর সুশীল সমাজের লাথি, গুতা মোকাবেলা করে খড়কুটোর মতই ভেসে থাকতে হচ্ছে নারী সমাজকে । এমন কোন কর্ম ক্ষেত্র নাই যেখানে বৈষম্যর শিকার হয় না নারী । নারী নির্যাতন নিয়ে অনেক আইন আছে সুপ্রিম কোর্টের বড় বড় বইয়ের পাতায়। কিন্তু কার্যকরের বেলায় আইন থাকে শূন্যের কোটায় । দীর্ঘশ্বাস...



আমরা কতটা সচেতন ভাবে নারী নির্যাতন কে কনসেনট্রেট করে তার প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে নিয়োজিত কিংবা সচেষ্ট হই এটাই দৃষ্টনীয়। হাসি পায় যখন দেখি বিশেষ দিনগুলোতে সমাজের মুখশধারী সুশীলরা খুব সচেতন মানুষের মত নিজেদের ভার্চুয়াল ভূমিকা রাখছে, দিচ্ছে নারী অধিকারের উপর লম্বা চওড়া বানী । তাতেই তাদের কার্যরুদ্ধার আর নাম ডাক কিছু হয় বৈকি কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়না, হয়না সমতা রক্ষা । বরং এসব সমস্যার বৈচিত্রের প্রসার ঘটে। প্রতিদিন নতুন নতুন উপায়ে নির্যাতনের স্বরূপ প্রকাশ পায়।



একাত্তরের শহীদ বীরাঙ্গনা হোক কিংবা বিংশ শতাব্দীর কোন শিক্ষিত-অশিক্ষিত নারীই হোক । যুগে যুগে নির্যাতিতরা নির্যাতিত হবেই সাথে অপমানিত হবে, আরও অপমানিত হতেই থাকবে ।

--এটাই ধ্রুব সত্য ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.