নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ যদি নিজেকে ভালবাসতে পারে, তবে সবচেয়ে সুন্দর হবে৷ নিজেকে ভালবাসতে গেলে, সে তার পরিবারকে ভালবাসবে৷ আর পরিবারকে ভালবাসা মানেই একটি গ্রামকে ভালবাসা, একটি গোষ্ঠির মানুষকে ভালবাসবে৷ আর একটি গ্রাম মানেইতো সারা পৃথিবী৷ পৃথিবীর সব মানুষ, সব মানুষ সুন্দর হয়ে বাঁচবে৷ পৃথিবীতে কত বড় বড় কাজ করেছে মানুষ, একটা ছোট্ট পরিবারকে সুন্দর করা যাবে না? অবশ্যই যাবে৷একটু যোক্তিক হলেই, একটু খোলামেলা হলে, কত সমস্যা এমনিতেই মিটে যাবে৷ সম্পর্ক সহজ হলে কাজও সহজ হয়৷ আমরা চাইলেই তা করতে পারি৷
- রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
যুদ্ধ ! যুদ্ধ মানে কি ? অশান্তি, বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, গোলাগুলি, আর কিছু মানুষের অপমৃত্যু৷ শুধু মানুষের অপমৃত্যু নয়৷ প্রকৃতির উপরও সেটার হানা আসে, ঘটে অপমৃত্যু প্রকৃতিতে শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচতে চাওয়া কত নিরীহ প্রাণীকূল৷ অথচ এইসব কিছুই হবে না, যদি আমরা অন্যের অনুভুতিকে সম্মান দেখাতে শিখি, জানি, এবং করি৷
কেন যুদ্ধ হয়? হিংসা থেকেই যুদ্ধ হয়৷ বিদ্ধেষ থেকেই যুদ্ধ হয়৷সংঘাত থেকেই যুদ্ধ হয়৷ আর কখন এই হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত সৃষ্টি হয় ? যখন অন্যের প্রতি সম্মানবোধ হারিয়ে যায়৷ যখন অন্যের অনুভূতিকে আমরা সম্মান দেখাতে ভুলে যাই, তখনি সৃষ্টি হয় হিংসা, বিদ্বেষ আর সংঘাত৷ আর অবশেষে সেটা যুদ্ধে পরিনত হয়৷
ধর্ম, বর্ণ, দেশ আর ভাষা৷ এই ৪ টা ব্যাপার প্রত্যেকের অনুভুতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে৷ বড়ই স্পর্শকাতর অনুভুতিগুলো৷ আর এই ধর্ম, বর্ণ, দেশও ভাষার অনুভুতিগুলো মায়ের সমতুল্য৷
মা৷ মা এমন একটা শব্দ৷ যে শব্দের উপর কোন রকম আঘাত বা অসম্মান আমরা সহ্য করতে পারি না ৷ এই শব্দ এতটাই প্রখরভাবে আমাদের অনুভূতিকে নাড়া দেয় ৷ তাই যখন কোন সন্তান তার মাকে কেউ অসম্মান করতে দেখলে, তখন সেই সন্তানের বুকে যে যন্ত্রণা তুলে, যে ঝড় তুলে, তা সবকিছুকে লন্ডবন্ড করে তুলতে পারে৷ আর তা পারাকেই আমরা বলি সাহসিকতা ৷ বলি মায়ের প্রতি অসীম ভালবাসা৷
ঠিক তেমনি ধর্ম, বর্ণ, দেশ আর ভাষা নিয়ে যখন কেউ অসম্মান দেখায়, তখন তার প্রতি হিংস্র হয়ে উঠাটাও খুবই স্বাভাবিক এক ঝড়৷ আর যে ঝড় সৃষ্টি করে যুদ্ধের আগমনী বার্তা৷
প্রশ্ন আমার থেকে যায় এখানে, অন্যের ধর্ম, বর্ণ, দেশ আর ভাষাকে অসম্মান করা, আর অন্যের মাকে অসম্মান করা সমান কথা, তাই নয় কি? যদি তাই হয়, তবে আমি বলব, অন্যের মায়ের প্রতি যার সম্মান নেই, সে তার মাকে কখনই সম্মান করতে জানে না, সে তার মাকে কখনই ভালবাসে না, তাই নয় কি?
মানব ধর্ম, বলে একটা শব্দ আছে৷ যেটা আমরা প্রায় শিক্ষিত সমাজে ব্যবহার করতে দেখি৷ মানব ধর্ম মানে কি? মানবধর্ম মানে হল, 'কোন ধর্ম নেই, কোনো দেশ নেই, কোন বর্ণ নেই, কোন ভাষাও নেই৷ সব এক জায়গায় দাঁড়িয়ে, সব মানুষ৷'
কিন্তু যেহেতু ধর্ম আছে, দেশ আছে, ভাষাও আছে, আছে বর্ণও৷ তাহলে কিভাবে মানবধর্মকে সংজ্ঞায়িত করা যায়? আবার আমরা আর একটা ব্যাপার জানি এবং খুব ভালোভাবেই জানি, মানবধর্ম মানেই হল কোন যুদ্ধ নেই৷ তার মানে কি দাঁড়ালো? মানবধর্মকে আমরা এইভাবেও সংজ্ঞায়িত করতে পারি, 'সকল ধর্ম, বর্ণ, দেশআর ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা৷কারণ তা করা মানেই কোন যুদ্ধ নেই, যার আর এক নাম মানবধর্ম৷'
কিন্তু বড়ই অদ্ভুত ব্যাপার হল, আমরা প্রায় দেখি, এই আমরা যারা মানবধর্ম চাই, যুদ্ধ চাই না৷ যারা আবার খুব শিক্ষিত, সমাজে আছে আমাদের সম্মান, সমাজপতি আর দেশপতি৷ আমাদের অন্তরেই লুকাইত থাকে, এই ধর্ম, বর্ণ, দেশ আর ভাষা বিদ্বেষ৷ শুধু অন্তরে লুকাইত থাকলেও সেটা যুদ্ধে পরিনত হত না৷ কিন্তু আমরা সেই নামমাত্র শিক্ষিত আর সম্মানিত সমাজপতিরাই প্রকাশ্যে সেই বিদ্বেষনামা প্রচার আর প্রসার করে যাই৷ ঠেলে দেই মানুষকে যুদ্ধে৷ ঘটে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ অপমৃত্যু৷ আর এই অপমৃত্যুর দায়ী আর কেউ নয়, আমরাই৷ আমরাই হচ্ছে মানুষরুপী খুনি৷
অথচ ইচ্ছে করলেই আমরা একটা শান্তিপূর্ণ পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারি৷ যেখানে থাকবে না কোন হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত৷ সেইখানেই থাকবে না যুদ্ধ৷আর যেইখানে নেই যুদ্ধ, সেইখানেই শান্তি আর ভালবাসা নিহিত৷ আমরা আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীকে সেইখানে দেখতে চাই৷
কোন এক মনীষীর একটা লাইন পড়েছিলাম, ''প্রশংসা করতে না চাইলে চুপ করে থাক, তবু নিন্দা কর না৷''
তাঁর এই লাইনটার সাথে তাল মিলিয়ে আর একটা স্লোগান তৈরী করে, আমরা মাথায় রাখলেই যুদ্ধ নামক শব্দটাকে দূরে ঠেলে দিতে পারি৷ স্লোগানটা হচ্ছে এমন,
''কোন ধর্ম, বর্ণ, দেশ আর ভাষার প্রতি সম্মান করতে না চাইলে চুপ করে থাকব, তবু অসম্মান প্রদর্শন করব না৷''
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩১
তোমোদাচি বলেছেন: চমৎকার কথা গুলো ... খুব ভাল লাগল