নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় প্রকৌশলী। অন্তর্মুখী। কবিতা ভালোবাসি ভীষণ। লিখিও

ঋতো আহমেদ

আমার হাতের দিকে বাড়ানো তোমার হাত। হাতের ভেতরে শিখা, শত্রুতার এমন রূপ! কামনা বিভীষিকা

ঋতো আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধান্দা

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৩

অফিসের গাড়ি থেকে নেমে
প্রতি রাতে এমন টাইমেই ফিরি
৮ টা কী সাড়ে ৮ টা
কখনো হেঁটে আবার কখনো আলসেমি এলে রিক্সায়
অল্প কিছু পর আমার ফ্ল্যাট

সে রাতেও আলসেমি এলো

ভাড়া মিটিয়ে সদ‍্য কেনা জুতোয়
মুড়োনো পা-টা নামিয়েছি কী নামাইনি
অস্ফুটস্বরের কিছু একটা কানে এলো বলে মনে হলো

হয়তো আরও কটা টাকা বেশি ভাড়া দিতে হবে ভেবে
বিরক্তি ভরে তাকালাম ফিরে
আবছা আলোয় ১৬/১৭ বছরের দুটো আধোলাল চোখ
ভয় দ্বিধা ও লজ্জায় আনত
হয়ে বললো
“ স‍্যার, আমি সিরাজগঞ্জ থেকে আসছি। এখানে ১০ নাম্বারে এক পরিচিত ভাইয়ের গেরেজে উঠছি। আমার মায়ের খুব অসুখ। চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা লাগবো। রিক্সা চালাইয়া ৬ হাজার টাকা জমাইছি..”

হ‌ইছে আর বলতে হবে না
বুঝছি
ব’লে থামিয়ে দিয়ে বললাম তোমার ভাগ‍্য খারাপ
এ মুহূর্তে আমার পকেট খালি
অন‍্য কারো কাছে দেখো..

গল্পটা বিশ্বাস হয়নি আমার.. অনেকেই এমন করে
সিম্পেথি অর্জন ক’রে টাকা নেয়.. ধান্দা

শার্ট প্যান্ট খুলে মানিব্যাগটা ড্রয়ারে রাখতে গিয়ে মনে হলো
ভুল হলো কী
যদি সত্যিই ওর মা অসুস্থ হয়ে থাকে
আমি ব‍্যালকনি দিয়ে নিচে তাকালাম
রিক্সাটি নেই

আমার মতো ভদ্রলোক স‍্যারের বিরক্তি অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্যে
কতটা বিস্মিত হয়েছিল ও
কতটা কষ্ট পেয়েছিল
কতটা অপমানিত হয়েছিল
হীনমন্যতায় ডুবে যাচ্ছিলো কী

হালকা দাঁড়ির কচি মুখখানা মনে করতে চাইলাম
মা-এর কথা ভাবতে গিয়ে
মনে পড়লো নিজের মা-কে

কীভাবে পারলাম আমি
আর কী দেখা হবে ওর সাথে

আজ‌ও ওখানে নেমেছিলাম
অনেকগুলো রিক্সা অনেক অনেক মুখ.. “স‍্যার ক‌ই যাইবেন আয়েন”

আমি হেঁটে বাসায় ফিরলাম

২৩.১০.২০১৭; উত্তরা

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:০৮

বানেসা পরী বলেছেন: কিছু ধান্দবাজের জন্য আমাদের মানবিকতাটাও বিসর্জন দিতে হয় কোন কোন সময়।
আমার অভিজ্ঞতা বলি।মতিঝিলে একদিন এক লোককে দেখলাম খুব কান্নাকাটি করছে। এছেলে মারা গেছে দাফন করার সামর্থ্য নাই। আমার এত্ত খারাপ লাগল! যথাসাধ্য সাহায্য করলাম যেন আর দেরী না করে দাফন কাজ সম্পন্ন করে ফেলতে পারে। কিছুদিন পর ঐ লোককে আবার একই স্হানে দেখলাম একই ঢং করছে। নিজেকে যে কি বেকুব লাগল কি বলব! আমাকে তো চেনে না। আমি একটু জোর গলায় লোকটাকে ডেকে বললাম,এই কয় দিনেও ছেলের দাফন করেন নি? নিজের সন্তান সম্পর্কে এমন মিথ্যা কথা কিভাবে বলেন আপনি। আশেপাশের সবাইকেও ঐ লোকটির ভন্ডামীর কথা বললাম আর সবাইকে মানা করলাম উনাকে সাহায্য করতে। ওমা! আবার কিছুদিন পর দেখি একই লোকের একই কাজ। এরপর একদিন বলছিলাম যে আরেকবার আপনাকে এমন দেখলে গনপিটুনি খাওয়াবো।
যেমনটা বললেন এমন রিক্সাওয়ালাও অনেক পেয়েছি।এখন আর এই ধরণের লোকদের সাহায্য করিনা। কিন্তু আপনার মত করেই অপরাধবোধ হয় যে লোকটি আসলেই সমস্যায় নেই তো!

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯

ঋতো আহমেদ বলেছেন: হুম, এরকম অভিজ্ঞতা কম বেশি আমাদের সবার আছে।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০০

খায়রুল আহসান বলেছেন: মাঝে মাঝে আমিও এমনভাবেই সাহায্যপ্রার্থীকে অবিশ্বাস করে ফেলি, এবং সেই সাথে অবহেলাও। আবার তার পরে পরেই আপনার মত ভেবে পীড়িত বোধ করি। বিশ্বাস অবিশ্বাসের, ভাল মন খারাপ মনের এই দ্বন্দ্বটা কবিতায় বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়েছেন।
কবিতায় ভাল লাগা + +

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

ঋতো আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই। বিশ্বাস অবিশ্বাস ভালো মন্দের দ্বন্দ্ব নিয়ে আমাদের এই জীবন যাপন। কবিতায় + এ প্রীত হলাম। ভালো থাকবেন।

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:১১

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: আপনার অন্য লেখার সাথে তুলনা করলে এটার মান একটু নিচের দিকে থাকবে!:)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৭

ঋতো আহমেদ বলেছেন: পাঠকের মন্তব্য অবশ‍্য‌ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে কী, নিজের থেকে একটু আলাদা হতে চাইছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে বিলিয়ার ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.