নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিখার জন্য এসেছি, লিখার মতো জ্ঞান নেই বলে

জীবনের সবকিছুই অপুর্র্ রয়ে আছে, তাইতো আমি এক ছন্নছাড়া মানব

করিম বস

সর্বশক্তিমান আল্লা '

করিম বস › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাজারো ধর্মের মধ্যে এক আজব ধর্মীয় সৎকার পদ্ধতি :D

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:২৮

তিব্বতিদের বিচিত্র ধর্মীয় আচার ও মৃত্যুর পরে দেহকে টুকরো করার ধর্মীয় রীতি



আমরা বসবাস করছি হিমালয়ের দক্ষিণে কিন্তু এর বিপরিত তথা উত্তরের দেশটিই হচ্ছে তিব্বত। গণচীনের একটি স্বশাসিত অঞ্চল এটি। মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত অঞ্চলটি তিব্বতিয় জনগোষ্ঠির আবাসস্থল। তিব্বত উঁচু উঁচু মালভূমির জন্য পৃথিবীজুড়ে খ্যাত। এখানকার মালভূমির গড় উচ্চতা প্রায় ১৬,০০০ ফুট। বিশ্বের কাছে হাজার বছর ধরে তিব্বত এক বিস্ময়কর নাম। ১৯৫৯ সালে গণচীনের বিরুদ্ধে তিব্বতিদের স্বাধিকার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে অনেক তিব্বতিয় এই অঞ্চলকে গণচীনের অংশ হিসেবে স্বীকার করেনা। দালাইলামার নেতৃত্বে অসংখ্য তিব্বতি ভারত সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় বসবাস শুরু করে রাজকীয় জীবন কাটায়। সেখানে স্বাধিন তিব্বতের নির্বাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। চীন নিয়ন্ত্রিত তিব্বতের রাজধানীর নাম 'লাসা'। তিব্বতীয়দের আচার আচরণ সব কিছুই প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সম্ভবত অপ্রচলিত প্রথার কারণেই পৃথিবীর মানুষের কাছে তিব্বত ও এর অধিবাসী সম্পর্কে কোন স্বচ্ছ ধারণা নেই। এখানকার অধিকাংশ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও, তাদের মৃত্যু পরবর্তী ফুনারেল সাধারণ বৌদ্ধদের মত নয় বরং বেশ চমকপ্রদ তথা বিস্ময় বিশ্বের মানুষের কাছে। দেখা যাক তিব্বতিদের ফুনারেল পদ্ধতি।



মৃত্যুর পরে দেহ টুকরো করে শকুনকে খাওয়ানো হয় স্বজনদের সামনেই



লামা সম্প্রদায়ের তিব্বতিদের সবচেয়ে ব্যতিক্রমি আচার হলো মৃতদেহের সৎকার। এদের মৃতদেহ সৎকার পদ্ধতি খুবই অদ্ভুত তথা বিস্ময়কর। তিব্বতে stupa burial বা ‘বৌদ্ধস্তূপ’ সমাধি ও sky-burial বা ‘আকাশ সমাধি’ নামে দুটি প্রথা প্রচলিত আছে। প্রথম প্রথা শুধু উচ্চ স্তরে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বা লামাদের জন্য প্রযোজ্য। আর দ্বিতীয় প্রথাটি সাধারণ মানুষের জন্য। সাধারণ কোন তিব্বতি যদি মারা যায়, তবে ওই মৃতদেহ কাউকে ছুঁতে দেওয়া হয় না। ঘরের এক কোণে মৃতদেহটি বসিয়ে চাঁদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। মৃতদেহের ঠিক পাশেই জ্বালিয়ে রাখা হয় পাঁচটি প্রদীপ। তারপর পুরোহিত ‘পোবো লামা’কে ডাকা হয়। ‘পোবো লামা’ একাই ঘরে ঢোকে এবং ঘরের দরজা-জানালা সব বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর পোবো মন্ত্র পড়ে শরীর থেকে আত্মাকে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। প্রথমে মৃতদেহের মাথা থেকে তিন-চার গোছা চুল টেনে উপড়ে আনে লামা। তারপর পাথরের ছুরি দিয়ে মৃতদেহের কপালের খানিকটা কেটে প্রেতাত্মা বের করার পথ করে দেওয়া হয়।



এরপর শবদেহকে উলঙ্গ করে গলায় একটা রশি লাগিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় ‘লামারা’ ঢোল জাতীয় বাদ্যযন্ত্র বাজাতে থাকে। শবদেহকে নিয়ে তার গলার রশি বা চুল বেঁধে রাখা হয় একটা খুটির সাথে, তারপর ‘কসাই’ মন্ত্র পড়তে পড়তে মৃতদেহের শরীরে বেশ কয়েকটি দাগ কাটে। দাগ কাটার পর একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেই দাগ ধরে ধরে মৃতদেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হয়, যেভাবে আমাদের কসাইরা মাংসের টুকরো করে।



এ কাজ তথা আকাশ সমাধির আগের দিন মৃতদেহকে পরিষ্কার করা হয় ও সাদা কাপড়ে মুড়ে দেয়া হয়। এরপর মৃতদেহকে এমনভাবে রাখা হয়, ঠিক যেমন মায়ের গর্ভে শিশুর ভ্রূণ অবস্থান করে। এ শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ভোর শুরু হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়। শবযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বৌদ্ধ লামারা। পড়তে থাকেন ধর্মীয় বাণী, যা আত্মাকে পথ দেখায়। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর পর শববাহকরা মৃতদেহের উপর জড়ানো সাদা কাপড় খুলে ফেলেন। এরপর মৃতদেহটিকে উপুড় করে ফেলে পেছন দিক কুঠার ও কাটারি থেকে কেটে ফেলা হয়, যার মাথা বাঁধা থাকে খুটিতে। এভাবে খুব ভালোভাবে মৃতদেহটিকে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। আর দেহের হাড়গুলোকে করা হয় চূর্ণ-বিচূর্ণ। এরপর মাংসের টুকরো ছড়িয়ে দেয়া হয়, যেন শকুনরা তা খেতে পারে। তবে পুরো মৃতদেহ টুকরো করার আগ পর্যন্ত শকুনদেরকে ঘেঁষতে দেয়া হয় না।



ঐ সময় মৃতের স্বজনরা দাড়িয়ে সব দেখতে থাকে। সাধারণত শকুন দিয়ে মৃতদেহ খাওয়ানো পবিত্র বলে মনে করা হয়। তিব্বতিরা শকুনদেরকে চেনে ‘ডাকিনিস’ হিসেবে। তিব্বতীয় মতে 'ডাকিনিস'রা হলো দেবদূত। ডাকিনিসের অর্থ হচ্ছে আকাশের নৃত্যশিল্পী। তিব্বতীয়দের বিশ্বাস ডাকিনীরা মৃতের আত্মাকে স্বর্গে নিয়ে যায়। এটা হচ্ছে শান্তিময় এক স্থান, যেখানে আত্মাদেরকে পুনর্জন্মের পূর্ব পর্যন্ত রাখা হয়। এছাড়া শকুনদেরকে মৃতদেহ ভক্ষণ করতে দেয়া হলে মৃতের পুণ্য হয় বলে মনে করে সবাই, এমনকি মৃতের স্বজনরাও।



এই হচ্ছে পৃথিবীর একটি মানব প্রজাতির মৃত্যু পরবর্তী ধর্মীয় রীতি। যদিও পৃথিবীর প্রধান ৪টা ধর্ম তথা খৃস্টান, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদিরা এভাবে তাদের স্বজনদের মৃত্যুপরবর্তী দশা কল্পনায়ও আনতে পারেনা বা চায়না। অথচ তিব্বতিদের কাছে এটাই ধর্মীয় রীতি। বিস্ময়কর পৃথিবীর মানুষ আর তার ধর্মীয় রীতি

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২২

ঢাকাবাসী বলেছেন: এটাই পৃথিবীর বৈচিত্রের সৌন্দর্য। অবাক হবার কিছু নেই।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:১৪

করিম বস বলেছেন: ধর্ম গুলোর বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য
দারুণ বলছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.