নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি টিকে থাকবো তদ্দিন, যদ্দিন আমি স্বাধীন।

স্বাধীন আকন্দ

https://

স্বাধীন আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিকৃতি( গল্প অল্প)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৬

প্রতিকৃতি



বিভ্রান্ত চোখে চেয়ে আছে আহাদ।

হাতের মুঠোয় পেন্সিল। অন্য হাত ফাঁকা। চোখের পলক ফেলতে পারছে না সে।

পেন্সিল স্থির। নির্বাক হয়ে চেয়ে আছে অনেকক্ষণ।

স্বর্ণা নির্লিপ্ত। তার চোখেমুখে জড়তা নেই। শরীরে নেই কোন আড়ষ্টতা। তার একটা পোর্ট্রেইট দরকার। নিজের চেহারার। তাই সে এভাবে বসে আছে। কিন্তু আহাদের ভাবভঙ্গিতে সে কিছুই বুঝতে পারছে না।



আহাদের হাত কেঁপে ওঠে। পেন্সিলসহ। সামনের ক্যানভাসে একটা আচড়ও পড়ে নি। সে পারে নি। সে পারছে না। সুন্দরী একটি মেয়ে অর্ধনগ্ন হয়ে তার সামনে বসে আছে। সে নড়াচড়া করবে কিভাবে? এরকম যে আজ প্রথম তা অবশ্য নয়। চারুকলার কয়েকজন বান্ধবীর পোর্ট্রেইট সে এর আগে করেছে। তাদের মধ্যে কোন কুসংস্কার নেই। একজন শিল্পীর মনে কুসংস্কার থাকাও উচিত নয়। আহাদের তাই ধারণা। শিল্পের সত্যিকার সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে মনকে সংস্কার মুক্ত থাকতে হয়। এই বোধটুকু মস্তিষ্কে পৌঁছলে সেখান থেকে নির্দেশনা আসে। পেন্সিলের মাথায়। অথবা রঙতুলির।

কিন্তু আজ আহাদ পারছে না। আর সব কিছুর উপরে সে তো একজন পুরুষ। এমনটা হওয়া উচিত নয়। তার হচ্ছে। তার বোধশক্তি লোপ পাচ্ছে। মনে হচ্ছে স্বর্ণার শরীরটা সে একবার ছুঁয়ে দেখে! মোমের মূর্তির মত শরীর!

‘আহাদ ভাই, কী হলো?’ মোমের মূর্তি কথা বলে উঠলো। আহাদ চমকালো!

‘শুরু করেন। কতক্ষণ এভাবে বসে থাকবো?’



স্বর্ণা আধুনিক। খোলামনের। আর চঞ্চল। মন থেকে যা সায় আসে তা-ই সে করে। কারো ধার ধারে না। আহাদের খ্যাতির কথা সে জানে। জগতজোড়া নয়। ক্যাম্পাসে। তিন বছরের সিনিয়র। আহাদের অবিশ্বাস্য ব্যক্তিত্ব তাকে মুগ্ধ করেছিল। বান্ধবীদের সাথে এসে প্রথম কথা হয়েছিল। সেই শুরু। তারপর মাঝেমধ্যে ফোনে কিংবা ক্যাম্পাসে দেখা হলে কথা হত। না। অন্য কোন সম্পর্ক তাদের হয়নি। তবু একরকম বন্ধুত্ব বলতে যা বোঝায় ততটুকুই।

স্বর্ণার নিজের কোন কালে ইচ্ছে ছিল না। একটা পোর্ট্রেইট আহাদের কাছে করে নিবে না। তার বান্ধবীরা অনেকেই করেছে। ওদের ব্যাচে শফিক নামে একটা ছেলে আছে। এই শফিক একদিন তার নগ্ন শরীরের পোর্ট্রেইট এঁকে তাকে উপহার দিয়েছিলো। নিজের চেহারার এমন বিকৃত রূপ যে কেমন হতে পারে তা সে সেদিন দেখেছিল। ভেবেছিল তাকে একটা শিক্ষা দেয়া দরকার। পোর্ট্রেইটের জবাব পোর্ট্রেইটেই দিবে। তারপরই একদিন খোলাখুলি আহাদকে বলেছিল। অবশ্য এর মধ্যে আহাদ বাসা নিয়েছে ধানমন্ডিতে। সেই বাসাতেই আজ স্বর্ণা এসেছে।

‘আহাদ ভাই।‘ স্বর্ণা আবার ডাকলো।

আহাদ ঘামছে। কপালে ঘাম জমছে। পায়ের নিচে যেন জন্ম নিচ্ছে অস্থিরতার শেকড়। স্বর্না উঠে এল। আহাদের কাছাকাছি। ওর খালি হাতটি সে ধরলো। কম্পিত হাত ওকে চমকে দিল!

স্বর্ণা বুঝতে পারলো। এটা আহাদের দুর্বলতা নয়। মানুষ তার শরীরের কাছে জিম্মি। শরীর ডিঙ্গিয়ে হৃদয়ে পৌছা সম্ভব নয়। শরীর তার চাহিদা বড় করে তোলে। মনের দুর্বলতার সু্যোগে। আহাদেরও তাই হয়েছে। সে শরীরের কাছে পরাজিত হয়েছে। পরাজিত নয়। শরীর তো তার নিজের। নিজের কাছে পরাজয় কিসের!

স্বর্ণা আহাদকে জড়িয়ে ধরলো। ‘আহাদ ভাই। আমার পোর্ট্রেইটটা যে ভাবেই হোক দরকার। যে কোনভাবেই হোক।’

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

ই. আলম বলেছেন: ভালো হইছে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

স্বাধীন আকন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ ই. আলম ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.