নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবথেকে ত্যাগ স্বীকারকারী মানুষটি কে?
'মা'।
পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে আপনি আছেন, মাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করুন, মা এখন কার কথা ভাবছেন। মা আপনার কথাই ভাবছিলেন। দিনের বেশির ভাগ সময়জুড়ে এই স্নেহময়ী মা'টি আপনার কথাই ভাবেন। সন্তানের সাথে মায়ের এই আত্ত্বিক সম্পর্ক ঐশ্বরিক। এর সাথে তুলনা হয় না সবথেকে ঘণিষ্ঠ বন্ধুটির সঙ্গে, একান্ত প্রেমিকা কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে। কয়েকদিন আগে ঢাকাতেই এক মা তার সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে তিনতলা থেকে লাফ দিয়েছিলেন! শুধু মা বলেই এটা সম্ভব।
মানবজাতি ছাড়াও প্রকৃতিতে আরো কিছু বিচিত্র প্রাণী আছে যাদের মাঝে মা-প্রাণীটি সন্তানের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে। কিছু আছে যারা নিজেদের জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে!
বিবিসি অবলম্বনে এমনি কিছু মা-প্রাণীর আত্মত্যাগের কথা আজ আমি তুলে ধরছি-
১। আফ্রিকার হাতিঃ
আফ্রিকায় এক ধরনের হাতি আছে যারা ২২ মাস ধরে গর্ভধারণ করে! পৃথিবীর যত প্রাণী আছে, এমন কি মানুষসহ সবার মাঝে সবচেয়ে দীর্ঘতম গর্ভধারণ এটি!
২। এশিয়ার শিম্পাঞ্জিঃ
অরাংগুটান নামের এক প্রকার শিম্পাঞ্জী সুমাত্রায় পাওয়া যায়। এরা প্রাইমেট শ্রেণির মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘদিন(মানুষ ব্যতীত) তাদের সন্তানদের পালন-পালন করে। জংগলে কিভাবে খাবার সংগ্রহ করতে হবে, কিভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে, এইসব প্রায় নয় বছর ধরে শুধু তাদের সন্তানদের শেখাতেই পেরিয়ে যায়!
৩। ঘাতক তিমি এবং এক ধরনের ডলফিনঃ
এই জাতীয় প্রাণীগুলো জন্মের পর প্রথম এক মাস না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়! তাদের গর্ভধারিণী মা'ও কি কম যায়! সন্তানের নিরাপত্তার জন্য সেও জেগে থাকে পুরো মাস জুড়ে!
৪। কালো মাকড়সাঃ
এই জাতের মা-মাকড়সা নিজের শরীরটাই উৎসর্গ করে তার রাক্ষুসে সন্তানদের জন্য! ৬০-১৩০ টি বাচ্চা-মাকড়সা প্রথমে ফোটে নি এরকম ডিমগুলো খেয়ে ফেলে। এরপর দুর্বল ভাইবোনদের খেয়ে ফেলে। অতঃপর তাদের জন্মদাত্রী মা'কেই খেতে শুরু করে! মা-মাকড়সা চাইলেই জাল ছিড়ে পালাতে পারে। কিন্তু তা না করে সে তার সন্তানদের উৎসাহ দিতে থাকে তার শরীর খেয়ে ফেলার জন্য!
৫। পোলার বিয়ারঃ
মেরু অঞ্চলের এই ভাল্লুকগুলো তাদের গর্ভধারনের আগে শরীরে ওজন বৃদ্ধি করে। প্রায় আট মাস যাবৎ গর্ভধারনের সময় তারা না-খেয়ে থাকে!
ফলে সন্তান জন্মের পর খুব সহজে চর্বিসমৃদ্ধ দুধ খেতে পায়।
শেষ করছি আমার শৈশবের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে-
আমার শৈশব কেটেছে গ্রামে। তখন আমার বয়স হয়তো ছয় সাত হবে। আমাদের বাড়িতে বেশ বড় নাদুস-নুদুস একটি মুরগী ছিল। মুরগিটির প্রায় বিশ পঁচিশটি বাচ্চা ছিলো। বাচ্চাগুলোর বয়স পাঁচ সাত দিন হবে আর কি। এই বয়সের বাচ্চাগুলো দেখলেই ধরতে ইচ্ছে করে।
একদিন বাড়িতে কেউ ছিলো না । মা-মুরগিটি বাচ্চাগুলোসহ উঠানে ছড়ানো ধান খাচ্ছিলো। আমার কি জানি দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল! আমি একটি বাচ্চা ধরে ফেললাম! ওমনি মা-মুরগি আর বাচ্চাগুলো চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিলো। আমাকে অবাক করে দিয়ে মা-মুরগি লাফিয়ে ঠোকড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো! অপ্রস্তুত আমি ভয়ে দৌড়ে রান্নাঘরে ঢুকে দরজা লাগাতে গেলাম। বাচ্চাটি আমার হাতে তখনো ছিলো। দরজা লাগানো মাত্রই আমি শুনতে পেলাম মা-মুরগির তীব্র চিৎকার। এমনভাবে চিৎকার করলো যে কেউ ওটার গলা টিপে ধরেছে। অতঃপর চিৎকার বন্ধ। ব্যাপারখানা কী? দরজা খুলেই দেখি মা-মুরগিটি মাটিতে তড়পাচ্ছে! পরে বুঝতে পারলাম, আমার দরজা বন্ধ করার সময় ওটা লাফ দিয়েছিল। আর ওর গলাটা পড়েছিল দুই কবাটের চিপায়! তারপর ভূপাতন! আমি বাচ্চাটিকে ছেড়ে দিয়ে চিৎকার করে মাকে ডাকতে লাগলাম। মা ছিলো না। পাশের ঘরে বড় আপা ছিল। সে ছুটে এসে মা-মুরগিকে ধরে নলকূপের তলে নিয়ে পানি ঢালতে লাগলো। আমি অপরাধির মত ভীতসন্ত্রস্ত বাচ্চাগুলোর দিকে তাকালাম। মায়ের জন্য কী উৎকণ্ঠা!
খানিক পরে মা-মুরগির জ্ঞান ফিরতেই সে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো। বাচ্চাগুলো দেখেই সে আপুর হাত থেকে ছুটে গিয়ে বাচ্চাদের কাছে চলে গেলো! একটু আগে যে সে মরতে বসেছিলো তা যেন বেমালুম ভুলে গেছে!
বাচ্চাগুলো দ্রুত এসে মায়ের পাখার নিচে নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিতে লাগলো।
প্রকৃতির এই অভূতপূর্ব লীলা দেখে সেদিন আমি চমকে উঠেছিলাম! কিন্তু ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শিখলাম,তখন নিজেরই মায়ের ভালোবাসা আর ত্যাগ আমাকে আরো বেশি বিস্মিত করতে লাগলো। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার মা যেন মানুষ নন, তিনি কেবলই 'মা'!
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৩
স্বাধীন আকন্দ বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। সবসময় uncommon হয় না। কিছু common থাকেই।
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৩৩
নিয়েল হিমু বলেছেন: পোষ্ট ভাল লেগেছে । শিরনাম চয়েজ আরো বেশি ভাল হয়েছে ।
৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৩৬
নিয়েল হিমু বলেছেন: এই সুন্দর পোষ্টটি নিয়ে একটা প্লান আছে । একটু ব্যখ্যা করি ?
কিছুদিন আগে সামুতে একটা ইস্টিকি পোষ্ট ছিল । মা নিয়ে কিছু নোংরা পশুর নোংরামির বিরুদ্ধে । এখানে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আছে এখন কথা হচ্ছে আপনার এই পোষ্টটিতে হিট চাই প্রচুর পরিমাণ ।
প্রশ্ন করতে পারেন কেন হিট কেন ?
দেখুন গুগলে যখন আপনি আমি কিছু খুজব তখন গুগোল দেখবে ঐ তথ্য সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কোনটা মানুষ দেখেছে সেটা এনে দেবে সবার আগে । তো সেই হিসেবে আপনার পোষ্টে যত হিট আসবে ভিন্ন ভিন্ন ip থেকে গুগোল সার্স বারে তত আগে বা আমাদের টার্গেট পেজে চলে আসার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে ।
তাই অনুরোধ রইল মায়ের ভালবাসার যদি একটুও মুল্য থাকে তাহলে দয়া করে আপনিই আপনার পোষ্টের জন্য কমেন্ট ভিক্ষা করুন আপনার সকল ভার্চুয়াল ফ্রেন্ডদের কাছে ।
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৮
স্বাধীন আকন্দ বলেছেন: মূল্যায়ন করার জন্য ধন্যবাদ। স্টিকি পোস্টটি আমি দেখেছি। আর সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এই পোস্টটি লেখা। আমার ভার্চুয়াল বন্ধুদের কাছে ভালো লেখক হওয়ার জন্য নয়, মায়ের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই এই পোস্ট লিখেছি। তারপরও আপনার মূল্যবান মন্তব্যের কারণেই হোক আমি চেস্টা করব হিট পাবার জন্য। আপনাকে অনেক অনেক শুভকামনা বন্ধু।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:০৭
আমি অপার হয়ে বসে আছি বলেছেন: মা তো মা-ইইই।
ভালো লেখা। হাতির ব্যাপারটা জানতাম না। জেনে খুশি হলাম। মাকড়শারটাও interesting মনে হল।